আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাভার অভিজ্ঞতাঃ অব্যাহত থাক এই হাত বাড়িয়ে দেয়া।

২৫শে এপ্রিল দুপুরের দিকে শিপু(blogger Shipu bhai) আসে বনানীতে। designallaince এর অফিসে অনুদানের টাকা পৌঁছে দেয়ার জন্য। তারা টাকা নিচ্ছেন না। অগত্যা কিছু টর্চলাইট কিনে দিয়ে ফিরে যায় সে। এদিকে মাত্র ১৫-২০ মিনিটে আমার অফিসের (BJIT Ltd.) রুবন ভাইয়ের উদ্যোগে ৩০,০০০ টাকা তোলা হয়ে যায়।

রুবন ভাইয়ের বন্ধু শিপলু ভাই (ছবির Ash T-shirt with helmet) ৫টায় বনানী চলে আসেন। ( ছবির সর্ব ডানে সবুজ গেঞ্জি পড়া হাতে হেলমেট শিপু ভাই আর বেগুনি শার্ট পরিহিত আমি) Photocredit:banglanews24.com তখনি রুবন ভাই আর শিপলু ভাই রওনা দিয়ে দেন। উদ্দেশ্য ৭টার আগে শাহবাগের টিমটা সাভারে যাবার আগেই টাকাটা পৌঁছে দেয়া। অফিস থেকে বের হতে আমার প্রায় ৮টা বেজে যায়। রুবন ভাইকে ফোন দিলে তিনি জানান গণজাগরন মঞ্চ টাকা নিচ্ছে না।

তারা তখন নবাবপুর গ্রীল আর কংক্রীট কাটিং টুলস কিনছেন। আরো কিছু টাকা জোগাড় হয়ে গেছে তা দিয়ে হেলমেট, ছোট-বড় হ্যামার, প্রচুর কাপড়ের গ্লাভস, সার্জিক্যাল গ্লাভস, ডাস্ট প্রোটেকশন গ্লাস, টর্চ, ছেনি ইত্যাদি কেনা হয়ে গেছে। সব নিয়ে তারা শাহবাগ চলে আসবেন। আমি শিপুকে ফোন দিই শাহবাগ আসার জন্য। ও আমার আগেই পৌঁছে যায় মোটরবাইকে ওর ম্যানেজারকে নিয়ে।

ছবির হাটে গিয়ে দেখি সাভার থেকে ব্লগার অনির্বাণের ফোন পেয়ে শিপু অস্থির। ওর ভাষ্যমতে সাভারে অক্সিজেন লাগবে প্রচুর। ব্লগারদের দেয়া অনুদানের ৩০,০০০ টাকা ছিলো শিপুর কাছে। ওরই বুদ্ধিতে বাইকে করে তিনজন চলে যাই সার্জিক্যাল মার্কেটে। কেনা হয় প্রায় ৫০টি অক্সিজেন ক্যানিস্টার, সার্জিক্যাল মাস্ক, গ্লাভস, ব্যান্ডেজ।

এরইমধ্যে রুবন ভাই জানান তারা সরাসরি সাভার যেতে চান তাই পিকাআপ ভাড়া করে ফেলেছেন। দশটার কিছু পর প্রেসক্লাব থেকে রুবন ভাইদের পিকআপটা শিপু আর আমাকে তুলে নেয়। একটি বাইক আর পিকআপ নিয়ে আমাদের সাভারে যাত্রা শুরু। ফার্মগেট থেকে উঠেন ব্লগার কাল্পনিক আর রুবন ভাইয়ের দুজন বন্ধু। গাবতলী থেকে ব্লগার আমিনুল।

রানা প্লাজার ঠিক সামনে আমরা থামি। একদম সামনে থাকা স্টকে রাখি ব্লগারদের টাকায় কেনা অক্সিজেন এবং অন্যান্য সামগ্রী। কাটিং টুলসগুলো জোড়া লাগাতে নেমে যান শিপলু ভাই। ছবিটা তখনকার। ঐ প্রকান্ড ধ্বংসস্তুপের সামনে দাঁড়িয়ে অনেক অস্থির লাগছিলো।

অক্সিজেন ক্যানিস্টারগুলো নিমেষের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। আফসোস লাগছিলো টাকা না থাকায় আরো অক্সিজেন ক্যানিস্টার কিনতে পারলাম না বলে। ঐ সময়টায় ঐ জিনিসটার চাহিদাই ছিলো সবচেয়ে বেশি। গর্বে বুকটা ভরে যাচ্ছিল মানুষের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণ দেখে। দেশের এবং দেশের বাইরে থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন নাম না জানা অগুনতি মানুষ।

এই বাঙ্গালী জাতিটাই আসলে একটা অদ্ভুত জাতি। এরা আবারো প্রমাণ করে দিলো মানুষ মানুষেরই জন্য। অব্যাহত থাক এই হাত বাড়িয়ে দেয়া। স্যালুট বাঙ্গালী। জয় হোক মানবতার।

 ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।