কিবোর্ড নস্ট তাই লিথতে পারি না। বান্দরবান ভ্রমন এর খুটিনাটি: নীলগীরি থেকে জাদীপাই ঝরনা এবং ছবি ব্লগ: পর্ব ০২-বগালেক
ছবি ব্লগ বান্দরবান ভ্রমন এর খুটিনাটি: নীলগীরি থেকে জাদীপাই ঝরনা: পর্ব ০১- নীলগীরি
কেওক্রাডাং বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। (একথা শুনে আমাকে অনেকে বকা দিতে পারে, তবে বকা দেয়ার আগে নীচের অংশটুকু পড়ে নেল)
পাথর দিয়ে তৈরী কেওক্রাডাং ফলক
এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় জেলা বান্দরবানে অবস্থিত। এক সময় এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ ছিল। আধুনিক গবেষণায় এই তথ্য ভুল প্রমাণিত হয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ তাজিং ডং। অবশ্য এখনও অনেক নির্ভরযোগ্য সূত্রে কিওক্রাডাংকে সর্বোচ্চ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, যা সম্পূর্ণ ভুল। এমনকি বাংলাদেশের বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তক এবং সিআইএ ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুকে এখনও একে সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে।
কেওক্রাডাং ছাউনি ও আমরা কয়েকজন
অবস্থান ও উচ্চতা: কিওক্রাডাং বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলায় অবস্থিত। অর্থাৎ বান্দরবানেরও দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত।
এর ভৌগোলিক স্থানাংক হচ্ছে ২১°৫৭′০০″উ, ৯২°৩০′৫৩″পূ। একসময় যখন একে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মনে করা হতো তখন এর উচ্চতা পরিমাপ করা হয়েছিল ১,২৩০ মিটার। কিন্তু অধুনা রাশিয়া কর্তৃক পরিচালিত এসআরটিএম উপাত্ত এবং জিপিএস গণনা থেকে দেখা গেছে এর উচ্চতা ১,০০০ মিটারের বেশি নয়। শৃঙ্গের শীর্ষে সেনাবাহিনী কর্তৃক উৎকীর্ণ যে ফলক দেখা যায় তাতে এর উচ্চতা লেখা হয়েছে ৩,১৭২ ফুট। জিপিএস সমীক্ষায় উচ্চতা পাওয়া গেছে ৯৭৪ মিটার (৩,১৯৬ ফুট)।
এই পরিমাপটি রুশীয় পরিমাপের সাথে খাপ খায়। এসআরটিএম উপাত্ত এবং মানচিত্রের মাধ্যমে এই পরিমাপ করা হয়েছে। অবশ্য বর্তমানে রুশীয় এসআরটিএম উপাত্ত এবং ইউএসজিএস-এর মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে কিওক্রাডাং-এর প্রকৃত অবস্থান এটি নয় (উপরে উল্লেখিত ভৌগোলিক স্থানাংকে নয়)। তারা এ স্থান থেকে আরও উত্তরে কেওক্রাডাং-এর অবস্থান সনাক্ত করেছেন এবং এর উচ্চতা ৮৮৩ মিটার পরিমাপ করেছেন।
নামকরণঃ কিওক্রাডং শব্দটি মারমা ভাষা থেকে এসেছে।
মারমা ভাষায় কিও মানে 'পাথর', ক্রো মানে 'পাহাড়' আর এবং ডং মানে 'সবচেয়ে উঁচু'। অর্থাৎ কিওক্রাডং মানে সবচেয়ে উঁচু পাথরের পাহাড়।
বগালেক থেকে যাত্রা শুরু সময় একখান ছবির পোজ দিয়া দিলাম
যাতায়াতঃ কেওক্রাডাং যাওয়ার জন্য আপনাকে বগালেক হয়ে যেতে হবে। বগালেক থেকে কেওক্রাডাং যেতে প্রায় ২.৩০/৩.০০ ঘন্টা সময় লাগবে। তবে ব্যাক্তি ভেদে পার্থক্য হতে পারে।
সম্পূর্নটাই হাটা পথ।
আমার যাতায়াতঃ খুব সকালে ওটে রেডী হয়ে নাস্তার পর্ব সেরে নিলাম সিয়াম দিদির কাছ থেকে। ইতি মধ্যে ২৫ জনের দলের ১৩ জনের কেওক্রাডাং যাওয়ার সাধ ঘোলে মিটাতে হলো । কারন তারা বগালেকে গিয়ে সামনে যাওয়ার আর সাহস পাচ্ছিল না। অবশেষে অনেক কথা এবং যুক্তির পর আরো কয়েক জন শক্তি পেল যাওয়ার জন্য।
এবার আমরা মোট ১৯ জন হলাম।
যারা যাবো তারা একসাথে ছবিতে পোজ মারলো একখান
এবার যাত্রা শুরু। সকাল ৬.৩০ মিনিটে আমাদের যাত্রা শুরু। কিছু হাটার পর পরলো ঘন জঙ্গল।
ঘন জঙ্গলের মধ্যে হাটা শুরু
ঘন পাহাড়ের মাঝে আমরা রাস্তা চলেছি একা
কোন পাহাড়ী মেয়ের পাইনাতো দেখা
গাইড বলল এই পথেই আমাদের যেতে হবে।
কি আর করা ঘন জঙ্গলে হাটা শুরু মাঝে মাঝে পাহাড়ী কলা আর পেপে দেখতে পেলাম একজনতো অতি উৎসাহী হয়ে কলা এবং কয়েকটি পেপে ছিড়ে ফেললো। মুহুর্ত্যে দেখা পেলাম একজন পাহাড়ী দাঁ হাতে একজন কি যেন বলছে আর আমাদের দিকে তেড়ে আসছে। ভয় পেল সবাই কিন্তু গাইডের সহযোগীতায় পার পেলাম।
পাহাড়ী পেপে গাছ, থেতে অনেক সুস্বাদু
হঠাৎ গাইড আমাদের বললো দেখেন মামারা জোঁক কীভাবে লাফালাফি করতেছে। জোঁকের লাফালাফি দেখতে দেখতে ইতিমধ্যে একজন জোকাক্রান্ত হয়ে পড়লো।
প্রায় ঘন্টা খানেক হাটার পর দেখতে পেলাম একটি ঝরনা। গাইড জানালো এটার নাম চিংড়ি ঝরনা।
চিংড়ি ঝরনা
চিংড়ি ঝরনা
চিংড়ি ঝরনা
দেখে খুব পুলকিত হলাম । কারন এর চেয়ে বড় ঝরনা আমি আর দেখি নাই এবং খুবই সুন্দর ও মনোরম পরিবেশ মনে হলো আমার কাছে। কিছু ছবি ও পাঁ ভিজিয়ে আবার হাটা শুরু।
বেশ কিছু খন হাটার পর পৌছালাম কুমি পাহাড় । তারপর দার্জিলিং পাড়া ।
জাদীপাই ঝরনায় বিশ্রাম নিচ্ছি আমরা কয়েকজন
দার্জিলিং পাড়ায় হালকা নাস্তা করে আবার হাটা। সকাল ৯.৩৫ মিনিটে আমরা ১১জন পৌছালাম লক্ষ্যে অর্থ্যাৎ কেওক্রাডাং । ওঠে ওয়াহুহুহু করে এক চিৎকার সবাই মিলে ।
সর্বোচ্চ চূড়ায় ওঠার উল্লাস
সর্বোচ্চ চূড়ার ছাউনি কেন বাদ যাবে
পাহাড়ে জুম চাষ
পাহাড়ে মেঘের খেলা
কেওক্রাডাং উঠার সর্বশেষ সিড়ি
যার হোটেলে আমরা দুপুরে খাব
বাকী সবাই পিছনে। মেঘে ভাসছি এবং কিছুখন বিশ্রাম, নাস্তা এবং দুপুরের খাবার এর অর্ডার দিয়ে আবার যাত্রা শুরু। উদ্দেশ্য জাদীপাই ঝরনা। ওখানের লোক বললো আমাদের জঙ্গলি গরু খাওয়াবে।
......................................চলবে ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।