ভালো লাগে ভ্রমন করতে, ভালোবাসি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে, অবসর সময় ফেইসবুকে চ্যাটিং করি, সময় পেলে ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করি। পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়া নিয়ে দেশের সামাজিক মাধ্যমে এখন পর্যন্ত বিতর্ক চলছে। সম্প্রতি বাংলাদেশে একদিনের ঝটিকা সফরে ঢাকা আসা পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানির কাছে পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরাসরি এই প্রস্তাবে হ্যাঁ বা না বলেননি। তিনি বলেছেন, আমাদের পেছনের দিকটা ফেলে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া উচিত।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও দৃঢ় হবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন হিনা রাব্বানি। এরপরেই শুরু হয় তুমুল হৈচৈ।
সামহোয়্যারইন ব্লগে রবিউল ৮১ লিখেছেন, পাকিস্তান দেশটির সাথে এখন আমাদের কি করা উচিত? তিনি সেখানে অনেকগুলো প্রশ্ন করেছেন। বলেছেন, এক জন মুসলমান বিনা কারনে যদি অন্যজন মুসলমানের ক্ষতি করে তবে করনীয় কি? লক্ষাধিক মা বোনের ইজ্জত নিল আর লক্ষাধিক বাড়ি ঘর পুড়িয়ে ছাই করে দিল। আমাদের বুদ্ধিজীবিদের বিনা কারণে অত্যান্ত নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করল।
কি দোষ ছিল আমাদের? যারা এত বড় জঘন্য কাজ করার পরেও আজ ৪২ বছর হয়ে গেল বিন্দুমাত্র ক্ষমা চাইতেও রাজী না। তাদের সাথে আমরা কি ভাবে সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখব?তাদের সাথে আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকলেও বা কি?তারা আসলে মানুষের কাতারে পড়ে? বর্তমানে মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নিকট ১৯৭১ সালের ঘটনার জন্য ক্ষমা চাইতে বলেছেন। আপনার কি মনে হয় তারা ক্ষমা চাইবে?আরে তারা তো গণহত্যার কথাই স্বীকার করেনা। সুতরাং তারা ক্ষমা চাইবে কেন?
রেজা সিদ্দিক লিখেছেন, পাকিস্তান তার কৃতকর্মের জন্য কখনো ক্ষমা চাইবে না (এটা আমার ধারণা)। তিনি লিখেছেন, পাকিস্তানের ক্ষমা না চাওয়ার কতকগুলো কারণও বিদ্যমান।
প্রথমত:: ক্ষমা চাওয়ার সাথে সাথে আসবে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি। অবিভক্ত পাকিস্তানে পূর্ব পাকিস্তানের উপর যে লুন্ঠন চালিয়েছিল এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের যে জান মালের ক্ষতি তারা করেছে তাতেত তিনটি পাকিস্তান নিলামে তুলেও পরিশোধ করতে পারবে না। অতএব- বিষয়টি পাকিস্তানের জন্য অমীমাংশিত রাখাটাই শ্রেয়। দ্বিতীয়ত: বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখনো পাকিস্তানের প্রভাব বিদ্যমান। পাকিস্তানের অনেক প্রেতাত্মা রাজনীতিতে সক্রিয়।
অনেকে তো এখনো মাঝে মাঝে পাকিস্তান জিন্দাবাদ বলে ফেলে। ক্রিকেট খেলায় পাকিস্তান সমর্থনকে আমি মাইন্ড না করলেও পাকিস্তানী মনোজগতের প্রভাবকে কোনোভাবেই গ্রহণ করা যায় না।
জিয়া চৌধুরী লিখেছেন, কিসের ক্ষমা চাওয়া....... পাকিস্তানিদের কোন ক্ষমা নেই। তিনি অমি রহমান পিয়ালের উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেছেন, আমাগোর উপদেষ্টারাও মাশাল্লাহ একেকজন, কি যে কান পড়া দেয় বুঝি না। পাকিস্তানরে ক্ষমা চাইতে বলা হবে।
তারপর? তারা চাইলো ক্ষমা। আমরা ক্ষমা দিমু তাই না? তারপর? তারপর দেশ জুড়ে সুশীলরা রব তুলবে যারা আসল অপরাধী, সেই পাকিস্তানীদের ক্ষমা করা হইছে, তাইলে তাদের সহযোগীদের বিচার করার কি দরকার? বন্ধ করো যুদ্ধাপরাধের বিচার। তারপরও বিচার চললে আন্তর্জাতিক মহলে বলা হবে এইটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেছে আওয়ামী লীগ। তো মাথামোটা সেই উপদেষ্টারে বলি, পাকিস্তান ক্ষমা চাইছে ৭৪ সালেই, আনুষ্ঠানিকভাবেই। মুজিব বলছেন শুধু ক্ষমা চাইলে হবে না, ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
এবং পাকিস্তানের সম্পদে আমাদের যে ভাগ সেটাও দিতেও হবে। তো যদি দাবি করতেই হয়, তাইলে এইগুলাও সঙ্গে যোগ করেন।
আমার ব্লগে সন্ন্যাসী পাঠক লিখেছেন, প্রিয় হিনা, চাইলেই কি অতীত ভোলা যায়? তিনি লিখেছেন, চাইলেই কি অতীত ভুলে যাওয়া যায় বলো? তুমি পারবে ভুলে যেতে তোমার জন্মের ইতিকথা! তোমার বাবার নাম, মায়ের নাম! প্রথম স্কুলে যাওয়ার দিনটা তোমার বাবা মা কেমন এনজয় করেছিলেন তারা কি পারবেন সেটা চাইলেই ভুলে যেতে! প্রথম প্রেমে পড়া! চোখে চোখ হাতে হাত, ঠোটে ঠোট! অথবা প্রথমবারের মতো প্রিয় মানুষের সাথে মিলনের স্মৃতি! সন্তানের জন্মদান! তুমি কি ভুলে যেতে পারবে চাইলেই বিচ্ছেদের উপাখ্যান! যন্ত্রনাদায়ক স্মৃতি কি একটাও নেই তোমার? যার জন্যে রাতের পর রাত একফোঁটা ঘুমের জন্য ওষুধ খেতে হয়েছে বা খেতে হয়। চাইলেই কি দুরে সরে যাওয়া যায় সব আবেগ ছেড়ে! সব?
হিনা, আমি জানিনা বিলওয়ালকে কি করে বলবে তুমি তার মা বেনজির ভুট্টো এর হত্যাকারীদের কথা ভুলে যেতে! আমি জানিনা মালালা কে কি করে বলবে তুমি যারা তাকে গুলি করেছিল মেরে ফেলবে বলে তাদের কথা স্মৃতি থেকে সরিয়ে দিতে! ওয়াজিরিস্থানে প্রতিদিন ড্রোন হামলায় যারা মারা যাচ্ছে তাদের স্বজনরা কি চাইলেই এসব ভুলে যেতে পারবে? পারবে রক্ত আর মৃত্যুর গল্পগুলো ভুলে যেতে যা তাদের নিয়ত তাড়া করে বেড়ায়! ধর্ষিতা বোনের শাড়ীর আচল বুকে আগলে চল্লিশটা বছর যে মানুষটা কাটিয়ে এসেছে বলো তাকে কতটা বিবেকহীন হলে বলা যায় সব ভুলে যেতে? অজস্র মৃত্যু, যার দায় এখনও বয়ে বেড়াচ্ছে চল্লিশ বছরের বাংলাদেশ, অসংখ্য সন্তানহারা পিতামাতা, ভাই হারা বোন, বোন হারা ভাই, পিতা মাতা হারা সন্তান, নির্যাতনগৃহের চিহ্ন নিয়ে বেচে থাকা অসংখ্য মানুষকে কতটা পাষান হলে বলা যায় সব ভুলে যেতে? কতটা নিষ্ঠুর হলে বলা যায় এমন? আমি জানি না হিনা সত্যিই আমি জানি না।
ফেসবুকে নাজমুস সাকিব লিখেছেন, একজন ( মানবতা-বিবেক)হিনা রাব্বানি অতঃপর অতীত ভুলে যাওয়ার আহবান..।
তিনি যুদ্ধের সময়ের ছবি দিয়ে তারপর লিখেছেন, ছবিগুলো হয়ত সবার ই দেখা... সদা ক্রন্দনরত এই ছবিগুলোকে কি উত্তর দেবো আমরা ??? ...দংশনের পরও সাপুড়ের বীণের ডাকে সাড়া দিয়ে সাপ এসে বিষ তুলে চলে যায়... আরে এই বাঙালি জাতির সাথে তোর পূর্বপুরুষেরা যা করেছে তাতে সারাজীবন মাফ চাইলেও ক্ষমা পাওয়ার কথা না তোদের... অবশ্য এই আশা যারা করে যে তোরা ক্ষমা চাইবি তারা যে কি তা আল্লাহ মালুম...pakistanis are born pakis indeed but all of us are not born BANGLADESHIs...
শুভ শুভ্র লিখেছেন, এই মুহূর্তে গো আজম, নিজামির সাথে হিনাকে ঘণ্টাখানেক এককক্ষে রাখা হোক। এবং নিজামি আর গো আযমরে বলা হোক.. "টেক ইউরসেলফ" ঘণ্টাখানেক পর হিনাকে বলা হোক "আপনি ঘণ্টাখানেক আগের স্মৃতি ভুলে যান"। হিনা যদি ওই স্মৃতি ভুইলা যাইতে পারে, তবে তাঁকে মানসিক বিকারগ্রস্থ ছাড়া অন্য কিছু ভাবার উপায় নাই। আর যদি সে ঘণ্টাখানেক আগের স্মৃতি ভুলতে না পারে, তবে হিনাকে বলবো, ২/১ ঘণ্টার স্মৃতি যদি সে ভুলতে না পারে, তবে কোন মুখে বাঙালীদের দীর্ঘ নয় মাসের অসহ্য যন্ত্রণার, বেদনার দুঃসহ স্মৃতি গুলা ভুলে যেতে বলে?
ফেসবুকে আরিফ আর হুসাইন লিখেছেন, আজকে পাঁচ ঘন্টার ঝটিকা সফরে আসে। হিরা রব্বানির কাছে দিপু মনি পাকিস্তানকে ক্ষমা চাওয়ার প্রসঙ্গ তোলায় হিরা রব্বানি, "অতীত ভুলে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ" দিয়েছেন! এ কথা শোনার সাথে সাথে দিপু মনির উচিত ছিল, তার ফুলহাতা ব্লাউজের হাতা গুটায়ে, ওরে একটা বন-চটকনা মাইরে, "চলেন দিদি এবার দুইজনই অতীত ভুলে, এয়ারপোর্টের দিকে আগাই" বলা।
ফেসবুকে খালিদ হোসেন হীনাকে নিয়ে একটি কবিতা লিখেছেন।
সালেহ বিপ্লব
ভালো মানুষদের বাদ দিয়ে দুটো কথা বলি, হীনা।
শুনবে তো?
নাকি আর সব দেখন-সুন্দরীর মত তুমিও হৃদয়হীনা?
শোন হীনা,
তোমার বয়স কত, গুগল সারচ দিলেই পেয়ে যাব, নিশ্চিত।
তবে ভাইটাল মাপজোখ
গুগলের চেয়ে সেমিবুড়ো চোখ
দেখে বেশী; কিঞ্চিৎ।
ভালো পুরুষদের বাদ দিয়ে দুটো কথা বলি, হীনা।
জানি না,
বুড়োদের দাঁতে যে বিষ আছে, তুমি জানো কি না?
জানো কি, সেমি বুড়ো মানে হচ্ছে গোপনে খচরামি চর্চার বয়েস?
ঘুমিয়ে থাকার ছলে কাজের মেয়েকে চোখে গিলে নেয়ার খায়েশ,
জানো কি?
মানো কি?
জানো কি না, জানি না
মানো কি না, মানি না।
সেমি বুড়ো আমি ইন্দ্রিয়প্রেমী____
তোমার রূপেতে মুগ্ধ মুখেতে গদগদ কত বুলি,
সতেজ গোলাপ, পবিত্র মুখ, বলে মুখে ফেনা তুলি।
ফেনার আড়ালে কামনার লালা চপচপ করে গিলি,
মনে মনে কোন নির্জন দ্বীপে স্বপ্নের জলকেলি।
বিধাতা তোমায় অনেক অনেক সৌরভে মেখেছে
রুপের চমকে গুণের ঠমকে গৌরবে রেখেছে।
ধন্যি তুমি মান্যি গন্যি
তুমি যে তুলনাহীনা,
মাথায় তোমার গোবর যেটুকু
সেটাও তো পাকী, হীনা?
গুষ্টি কিলাই
আলতাবরণ, পদ্মিনী প্রিয় নারী!
মনে পড়ে গেলো, নাপাক দেশে তোমার বসত বাড়ি!
লাঙ্গলের কড়া পড়া আঙ্গুলে কবিতারও কড়া পড়ে
সেই হাত ছোঁয়া সইবে না গো তোমার পেলব দেহ-ঘরে।
অশ্ব খোঁজে তোমার জমিন, সেখানেই খোঁজো সুখ
বিষাক্ত সব সাপ ঘিরে থাকে তোমার কপোত বুক!
পুরানো কথা ভুলতে পারি না, একাত্তরের কাল,
ভুলব না, যদি ভাঁজ খুলে হও গনীমতের মাল।
সুন্দর এক ঘড়ি তুমি, কল কব্জা বিনা!
পেশয়ারী কিসমিস তুমি এতই দীনহীনা ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।