রফিকুল ইসলাম :ঃঃঃঃ----
চলতি মাসেই উৎপাদনে যাচ্ছে সিরাজগঞ্জ ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্লান্ট। ডুয়েল ফুয়েল(গ্যাস ও ডিজেল)ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিকে আগামী বছরের মধ্যে কম্বাইন্ড সাইকেলে পরিণত করে আরো ৭৫ মেগাওয়াট বাড়তি বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব আবুল কালাম আজাদ।
১৯ অক্টোবর থেকে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করেছে কেন্দ্রটি। ০১ নভেম্বর শুক্রবার ১৫৪ মেগাওয়ার্ট উৎপাদনের রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ২০ নভেম্বর বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে যাবে কেন্দ্রটি।
এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ পড়বে মাত্র ১.৯০ টাকা।
বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব জানান, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি গ্যাস ও ডিজেল দিয়ে পরিচালনা করার সুযোগ রাখা হয়েছে। এখানে গ্যাস ব্যবহার করা হলে দৈনিক গ্যাস প্রয়োজন পড়বে ৩৪ এমএমসিএফ(মিলিয়ন ঘনফুট) আর ডিজেল ব্যবহার করা হলে দৈনিক ডিজেল লাগবে ৯০০ টন।
শুক্রবার বিকেলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পরিদর্শনকালে সচিব বলেন সেচ মৌসুমের আগে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি উৎপাদনে আসতে পারায় আমার জন্য সুখকর একটি সংবাদ। আমি যথা সময়ে উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত করার সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন পিডিবির চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহাব খান, পিডিবির জনসংযোগ পরিদপ্তরের পরিচালক সাইফুল হাসান চৌধুরীসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
গ্যাসের স্বল্পতা দেখা দিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিজেলে চলে যাবে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। গ্যাস সংকটের বিষয়টি মাথায় রেখেই এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
আগামী অক্টোবর নাগাদ কম্বাইন্ড সাইকেলে রূপান্তর শেষ হলে একই পরিমাণ জ্বালানি দিয়েই বাড়তি ৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। আর তখন কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা হবে ২২৫ মেগাওয়াট।
জানা গেছে, পাওয়ার প্লান্টের নি:সরিত জ্বালানি দিয়ে হিট রিকভারি স্টিম জেনারেটরের মাধ্যমে তৈরি হবে বাষ্প। আর সেই বাষ্প দিয়ে স্টিম টারবাইম চালানো হবে। আর তাতেই বাড়তি ৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হবে উৎপাদনে।
সিম্পল সাইকেল থেকে কম্বাইন্ড সাইকেলে যেতে বাড়তি ব্যয় হবে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা। আর সিম্পল সাইকেল পাওয়ার প্লান্টটি স্থাপনে ব্যয় হয়েছে ৭৯৯ কোটি টাকা।
সে হিসেবে মোট খরচ গিয়ে পড়বে প্রায় ১৪শ কোটি টাকায়।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রকল্প পরিচালক এটিএম জাহাঙ্গীর কবির জানান, এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের লাইফ টাইম ধরা হয় ১৫ থেকে ২০ বছর। তবে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে সার্ভিসিং এর মাধ্যমে ৩০ বছর পর্যন্ত চালানো হয়।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি ও চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমর্পোট অ্যান্ড এক্সর্পোট কর্পোরেশন(সিএমসি)।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনার পরিচালিত হবে।
এখান থেকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড(পিডিবি)বিদ্যুৎ কিনে নিবে। গ্যাস দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা গেলে প্রতি ইউনিটের উৎপাদন খরচ পড়বে ১.৯০ টাকা। এর মধ্যে জ্বালানি খরচ ৯৯ পয়সা আর ৯০ পয়সা ধরা হয়েছে নির্মাণ ও পরিচালনার ব্যয়।
বিদ্যুতের দাম এখনও নিশ্চিত হয়নি বলে জানিয়েছেন নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোরশেদ আলম।
তিনি জানান তারা পিডিবির কাছে ইউনিট দর ২.৫০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে।
যাতে কোম্পানি মুনাফা দিয়ে নিজস্ব মুলধন বাড়াতে পারে। তারা মুনাফায় অর্জিত অর্থ আগামীতে বিনিয়োগ করতে চায়।
পিডিবির পক্ষ থেকে ইউনিট প্রতি দর ২.২০ টাকা করার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
সিরাজগঞ্জ জেলার সয়দাবাদ এলাকায় স্থাপিত এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি হবে বর্তমান সরকারের সময়ে উৎপাদনে আসা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে ৩২তম। এর আগে ৩১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে এসেছে বর্তমান সরকারের সময়ে।
যার মোট উৎপাদন ক্ষমতা হচ্ছে ২ হাজার ৬০১ মেগাওয়াট।
অন্যদিকে বর্তমান সরকার এ পর্যন্ত ৫৯টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এ গুলো হচ্ছে ৩টি রেন্টাল, ১৭ টি কুইক রেন্টাল, ১৯ টি আইপিপি ও ২০টি সরকারি খাতে। যার মোট উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে ৭ হাজার ৬৪৯ মেগাওয়াট।
আগামী ৬মাসের মধ্যে আরও প্রায় ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব আবুল কালাম আজাদ।
এর মধ্যে রয়েছে, খুলনা, হরিপুর ও মেঘনাঘাটসহ বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।