স্যান্ডি, তুমি যে ধ্বংসস্তুপ রেখে গেছো, তার ছায়ায় দাঁড়িয়ে আমি লিখছি
আমার কবিতা। আজ ৩১ অক্টোবর। কথা ছিল হ্যালোইন উৎসবে
মেতে উঠবে গোটা মার্কিন নগরী। সোনালী পাম্পকিনের ঝুড়ি নিয়ে
উৎসবমুখর শিশুরা বাড়ি-বাড়ি সংগ্রহ করবে চকলেট-ক্যান্ডি !
স্যান্ডি, তুমি কেড়ে নিয়েছো ওদের ক্যান্ডি উৎসব। যে পিতা তার
কন্যার কাছে যাবার জন্য গাড়ি চালাচ্ছিলেন, তার গাড়ির উপর
ভেঙে পড়েছে আশি বছরের পুরনো গাছ।
কালো ইলেক্ট্রিকের তার
রাস্তায় পড়ে বন্ধ করে দিয়েছে কিছু মানুষের বাড়ির বিদ্যুৎ। যে
নগরী কখনও অন্ধকার দেখেনি, সে নগরের গুগল প্রজন্ম শিখে
নিচ্ছে কীভাবে আঁধারের সাথে যুদ্ধ করতে হয়।
স্যান্ডি, আমি বঙ্গোপসাগরের তীর থেকে উঠে আসা পথিক।
দেখেছি সত্তরের ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাস। আর সুনামির আঘাতে
বিক্ষত কৃষকের পাঁজর দেখে অনুভব করেছি, কত বেদনা নিয়ে
মেঘনায় ভেসে যায় জড়াজড়ি করা পিতা-পুত্রের শব।
কোনো ঝড়ের আঁচড়ই আমাকে স্পর্শ করতে পারে না- সে কথা
আমি বলি না। মাঝে মাঝেই আক্রান্ত হই। মাঝে মাঝেই পরাজিত
জীবনের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তুফান দেখে কাঁদি। আর বলি,
হে প্রজন্ম -যে কোনো প্রতিকূলতার আগল মোকাবেলা করতে শেখো।
২৯ অক্টোবরের রাতেও আমি মাথা উচুঁ করে দাঁড়াতে চেয়েছি।
মহান
প্রভুর কাছে চেয়েছি কৃপা, আর বলেছি- সত্যের সপক্ষে মানুষের উত্থান
যেন সবসময় চিরস্থায়ী হয়। পরদিন ভোরে জেগে দেখেছি- লোনাজলে
ভাসমান পাতাল ট্রেনের পথ নিষ্কাশন করতে অন্য অঙ্গরাজ্য থেকে
ছুটে এসেছে শত শত মানুষ।
স্যান্ডি, তোমার রেখে যাওয়া ক্ষতচিহ্ন আমরা মুছে দেবোই। যে বৃক্ষে
বসন্ত ছিল- যে ঝিলে ছিল আলোময় জলের ঢেউ, সেই ফরেস্ট পার্কের
কিনারে বসে পাখিরা মাতবেই কলতানে। আর প্রেমিক-প্রেমিকা
চোখের ভাষা বিনিময় করতে করতে আগামী অক্টোবরের আগেই ভুলে
যাবে সকল নৃশংস তাণ্ডবের কথা।
কারণ মানুষ দুঃখকেই ভুলতে চায়
সবকিছুর আগে।
Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।