আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছিচকে চোর বনাম সম্মানিত (?) চোর-

আমাদের সুন্দর এ সমাজে ছোট-বড়, ধনী-নির্ধন, ভালো-মন্দ এক কথায় নানা ধরণের লোক বসবাস করে থাকে। বেঁচে থাকার তাগিদে কেহ করছেন ব্যবসা, কেহ করছেন চাকুরী। অদক্ষ, অযোগ্য কিংবা বখাটে কিছু লোক চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইকে পেশা হিসেবে নিয়ে জীবন সংগ্রামে বেঁচে থাকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই সর্বযুগেই ঘৃণিত একটি কাজ। এ অপকর্মটি আমাদের সমাজে মূলত তিনভাবে সংঘটিত হচ্ছে।

যথা- প্রথমত : ছিচকে চোরের মাধ্যমে। এদের কাজ হচ্ছে মসজিদ থেকে জুতা চুরি, গাড়ী থেকে মোবাইল, অর্থ কিংবা স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়া। অথবা রাতের আধারে গৃহে প্রবেশ করে মূল্রবান সম্পদ কেড়ে নেয়া। দ্বিতীয়ত : সম্মানিত (?) চোরের মাধ্যমে। এ শ্রেণির চোরেরা সাধারণত মন্ত্রী, এমপি, সচিব থেকে শুরু করে অফিসের পিয়ন পর্যন্ত হয়ে থাকে।

তারা সাধারণ মানুষকে জিম্মী করে অথবা ভয় ভীতি দেখিয়ে ফাইল আটক করে অর্থ কড়ি হাতিয়ে নেয়। তারা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অনেক সময় অন্যের জমি পর্যন্ত দখলে নিয়ে নেয়। তৃতীয়ত : মহাজন চোরের মাধ্যমে। এ শ্রেণির চোরেরা সুদী কারবারের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে সর্বসান্ত করে দেয়। বিচিত্র আমাদের সমাজ।

আমরা ছিচকে চোরকে কোনভাবে ধরতে পারলে সম্মিলিতভাবে উত্তম মধ্যম, দিয়ে চরমভাবে আহত করি, অনেক সময় জীবন হরণ করতে পর্যন্ত দ্বিধা করি না। পক্ষান্তরে সম্মানিত (?) চোর ও মহাজনকে অর্থ কড়ি দিয়ে (বাধ্য হয়ে) নিজেকে ধন্য মনে করি। আমরা শুধু তাদেরকে ঘুষই দেই না বরং তাদেরকে স্যার বলতে বলতে হয়রান হয়ে যাই। তাদের সাথে হাত মিলাতে পারলে কিংবা ছবি তুলতে পারলে নিজেকে ধন্য মনে করি। কিন্তু কেন? চোর-সে ছিচকে চোর হোক কিংবা সম্মানিত চোর, সে কিন্তু মহান আল্লাহর নিকট চোর হিসেবেই চিহ্নিত।

ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, আমরা ছিচকে চোরকে মারতে পেরে খুশি হই। হতে পারে তার চুরির পরিমাণ আপনার এক জোড়া জুতো, কিছু অর্থ অথবা একটি মোবাইল। কিন্তু যে সকল সম্মানিত চোর আপনাকে লক্ষ লক্ষ টাকা দিতে বাধ্য করে অথবা আপনার কোটি টাকার জমি দখলে নিয়ে নেয় তাকেতো আমরা সম্মান দিয়েই কথা বলি। তাদেরকে স্যার বলে কথা বলতে দ্ধিধা করি না। আমরা কী একটি বারও মনে করি না যে, চুরি সে যেই করুক না কেন সে কিন্তু চোর হিসেবেই পরিগণিত।

ছিচকে চোরের সাথে আমাদের যে আচরণ সম্মানিত চোরগণ কী এই আচরণ পাওয়ার যোগ্য নন। বরং তারা ছিচকে চোর অপেক্ষা অনেক বেশী শাস্তি পাওয়ার যোগ্য। এ দুনিয়াতে তাদের শাস্তি না হলেও তারা যে মহান আল্লাহর নিকট শাস্তি পাবে তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। কারণ তিনি ন্যায় বিচারক। আসুন আমরা সবাই শপথ করি নিজেও চুরি করব না, অন্যকেও চুরি করতে সহায়তা করবো না।

আমরা যদি এই শপথ নিয়ে এগিয়ে যেতে পারি তাহলে আমরা জাতি হিসেবে দ্রুত উন্নতি লাভে সক্ষম হবো। আমরা দুর্র্নীতিতে বরংবার আর চ্যািম্পয়ন হবো না। কোন মন্ত্রী, এমপি বা আমলা সরকার পরিবর্তনে অর্থ আত্মসাৎ, জমি দখল কিংবা ঘুষ ্কেলেংকারীর দায়ে জেলে যাবে না। ছিচকে চোরদের প্রতিও অনুরোধ ইহকালীন সম্মান হারানোর সাথে সাথে পরকালীন জীবনকেও ধ্বস করো না। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।