রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তাঁর স্ত্রী বিয়ে ভাঙার ঘোষণা দিয়েছেন রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে। তবু মস্কোর মানুষ দ্বিধাদ্বন্দ্বে। তাদের কাছে বিবাহবিচ্ছেদের এই ঘটনা অবিশ্বাস্য। তারা ভাবতেই পারছে না, রাশিয়ার কোনো প্রেসিডেন্ট বিবাহবিচ্ছেদের কথা কল্পনা করতে পারেন। খবর বিবিসির।
মস্কোর বাসিন্দা ভ্যালেরি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি না। না আমি কিছুতেই বিশ্বাস করব না। আমাদের নেতারা এমন করতেই পারেন না। তাঁরা কখনো করেন না। ’ নাদেজদা নামের অপর একজনের কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনিও একই কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এটা গালগল্প ছাড়া আর কিছু না। গত রাতে টেলিভিশনে আমরা পুতিনের সাজে একজন ভাঁড়কে দেখেছি। ’ নাদেজদার এক কথা, ‘ভ্লাদিমির পুতিন এবং তাঁর স্ত্রী রাশিয়ার জনগণ ও ঈশ্বরের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাঁদের বিচ্ছেদ হতে পারে না। ’
রাশিয়ার মানুষের এই বিস্ময়ের পেছনে কারণ আছে।
গত ৩০০ বছরে রাশিয়ার কোনো নেতা এভাবে বিয়ের সম্পর্ক শেষ করে দেননি।
৩০০ বছর আগে পিটার দ্য গ্রেট তাঁর স্ত্রীকে সন্ন্যাসিনী (নান) হতে বাধ্য করেছিলেন। হয়তো জার পিটারের সময় টেলিভিশন থাকলে তিনিও তাঁর স্ত্রীসহ ভ্লাদিমির পুতিন ও লুদমিলার মতো টেলিভিশনে হাজির হতেন।
প্রশ্নের মুখোমুখি প্রেসিডেন্ট
ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে স্ত্রী লুদমিলার বৈবাহিক সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল বেশ আগে। তাঁদের সময়টা ভালো যাচ্ছে না, তাঁরা আলাদা থাকছেন —এমন কথা বহুদিন ধরেই ভাসছিল বাতাসে।
কিন্তু ক্রেমলিন নেতাকে এ নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন করার সাহস করে উঠতে পারছিল না কোনো সংবাদমাধ্যম। তবে গত বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানের বিরতিতে রাষ্ট্রীয় টিভির এক সাংবাদিক দুম করে প্রশ্ন করে বসলেন, ‘আপনারা আলাদা থাকছেন কথাটা কি সত্যি? বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গেছে?’
এমন অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখোমুখি হবেন প্রেসিডেন্ট, কেউ ভাবতেই পারেননি। একপর্যায়ে প্রশ্নকর্তা নিজেই বেশ ভ্যাবাচেকা খেয়ে যান।
তো কেন এই বিবাহবিচ্ছেদ?
লুদমিলার অভিযোগ, পুতিন তাঁকে সময় দিচ্ছিলেন না, আর তিনি রাষ্ট্রপতির স্ত্রী হিসেবে সারাক্ষণ নজরবন্দী হয়ে থাকতেন। কিন্তু আসলেই কি ঘটনাটা এত সরল?
কিছুদিন আগে মস্কো রেডিওতে পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তিনি কি বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন? উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ‘এগুলো মিথ্যে, বানোয়াট, কল্পনাপ্রসূত খবর।
’
এটা এখনো বোঝা যাচ্ছে না, পুতিনের এই সিদ্ধান্ত তাঁর জনপ্রিয়তায় কোনো প্রভাব ফেলবে কি না। স্থানীয় একটি পত্রিকা পুতিনকে সাবধান করে দিয়েছে এই বলে, পুতিনের গুরুত্বপূর্ণ সমর্থক বিবাহিত নারীরা হয়তো তাঁর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন। আবার এমনও হতে পারে, রাশিয়ার মানুষ তাঁর সততার প্রতি সম্মান দেখাবে। তিনি যে বৈবাহিক সম্পর্ক নিয়ে লুকোছাপা করেননি, পুতিন যে বুঝিয়েছেন তিনি ঈশ্বর নন, আর সবার মতোই সাধারণ মানুষ, এতেই হয়তো সান্ত্বনা খুঁজবেন তাঁর সমর্থকেরা। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।