নিতান্তই একজন জুনিয়র ব্লগার। আমরা বাংলাদেশীরা দিনের পর দিন ভেজাল খাইতে খাইতে পেটের এমন বেহাল দশা বানাইয়া ফেলছি যে,
এখন খাঁটি জিনিস খাইলে তা আমাদের পেটে সয় না...। ।
আমাদের বিল্ডিঙের প্রায় সবার ফ্লাটেই একজন দুধওয়ালা সবসময় দুধ দিয়ে যেত, লোকটা থেকে প্রায় সব ফ্লাটের মানুষের দুধ রাখার কারণ হলঃ মিল্কভিটা ও অন্যান্য প্যাকেটজাত দুধ থেকে তার দেয়া গরুদুধ তুলনামূলক ভাবে ভালো ছিল।
যাইহোক,
কিছুদিন আগে একদিন সকালে উঠে দেখি আমাদের উপরের নিচের সব ফ্লাটের(যারা যারা লোকটা থেকে দুধ নিত) বাসিন্দারা ওই দুধওয়ালার সাথে চিল্লাচিল্লি করছে।
কি নিয়ে চিল্লাচিল্লি হচ্ছে তা জানার জন্য সামনে গিয়ে শুনি,
লোকটা এর আগের দিন সবার বাসায় যেই দুধ দিয়ে গেছিলো, তা খেয়ে প্রায় প্রত্যেক ফ্লাটের মানুষের পেটখারাপ হয়ে গেছে।
তাই সবাই দুধওয়ালাকে বকাবকি করছে আর বলছে তার থেকে আর দুধ নিবে না হেন তেন...।
তখন আমি দুধওয়ালাকে জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কাহিনী কি? কিছু মিশাইছিলা টিশাইছিলা নাকি?
দুধওয়ালা লোকটা তখন বললঃ ভাই, প্রত্যেকদিনই দুধে কমবেশি পানি মিশাই কিন্তু গতকাল আমার ছেলে জন্মগ্রহণ করেছে, সেই খুশিতে গতকালের দুধে একটুও পানি না মিশাইয়া সবার বাসায় দিছি, কিন্তু এখন শুনি সবার এমন অবস্থা...। ।
যাইহোক, ওইদিন আমিও লোকটার কথা পুরোপুরি বিশ্বাস করি নাই, ভেবেছিলাম লোকটা হয়তো কোন কিছু মিশাইছিল বা কোন কারসাজি করছিলো।
এ গেল আগের কথা...
এবার গতকালের কথা বলি,
গতকাল আমাদের গ্রামেরবাড়ী থেকে ফুপু এসেছিলো, সাথে করে নিজেদের পালা গরুদুধ,পিঠা,মাছ ইত্যাদি হাবিজাবি আরও অনেক কিছু নিয়ে এসেছিলো...। । এসে ফুপু আমাকে বলছে দুধটা খেয়ে দেখ, ঢাকায় খাঁটি দুধ সবসময় পাবি না...। । আমি দুধ তেমন একটা খাই না তারপরও বললাম পরে খাব...।
।
আজকে সকালে সেই দুধ আমাকে গরম করে দেয়া হইছিল, আমিও খেলাম... খেয়ে বুঝলাম আমরা প্রতিদিন প্যাকেটজাত যেই দুধ খাই, সেটার স্বাদ আর এটার স্বাদ পুরাই ভিন্ন...। ।
কিন্তু দুধটা খাওয়ার পর থেকেই আমার মনে হচ্ছে যেন পেটে গুড়গুড় গুড়গুড় শব্দ করছে, আমার কেমন যেন মনে হচ্ছিল দুধটা আমার পেটে হজম হয়নি...। পেটে এই গুড়গুড় শব্দ নিয়েই ক্লাসে গেলাম, ক্লাস করে বিকেলে বাসায় ফিরেই বুঝতে পারলাম যে আমার বাথরুমের সাথে সম্পর্ক হতে যাচ্ছে... ঠিক ঠিকই সন্ধ্যা থেকে বাথরুমের সাথে আমার ভালো একটা সম্পর্ক হয়ে গেল... যা এখনো চলছে...।
।
নিজের এমন অবস্থায় আজ আবার সেইদিনের সেই দুধওয়ালার কথা মনে গেল, এখন মনে হচ্ছে সেইদিন সেই দুধওয়ালা আসলেই সত্যি কথা বলেছিল, আমরা সবাই শুধু শুধুই তাকে সেইদিন অবিশ্বাস করেছিলাম।
পরিশেষে বলি,
বর্তমানে দেশে আমার এতো পরিমানে ভেজাল খাচ্ছি যে, খেতে খেতে নিজের পেটটাকেই ভেজাল বানিয়ে ফেলছি, যেই পেটে এখন আর খাঁটি খাদ্য সয় না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।