বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবনূর। প্রয়াত চলচ্চিত্রনির্মাতা এহতেশামের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আগমন ঘটেছিল তাঁর। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে শাবনূর উপহার দিয়েছেন অসংখ্য ব্যবসাসফল ছবি। কিন্তু কয়েক বছর ধরে চলচ্চিত্রের একসময়ের এই ব্যস্ত তারকা কিছুটা অনিয়মিত। এখন নিয়মিত বলা যায় শুধু তাঁর অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ আসা-যাওয়ার বিষয়টাই।
এমনকি শাবনূর যে দেশে আসেন কিংবা দেশ ছাড়েন, সেটাও নীরবেই ঘটে। সপ্তাহ দুয়েক আগে আবারও অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন তিনি। এখন আছেন সিডনিতে। আজ রোববার নানা বিষয় নিয়ে প্রথম আলো ডটকমের সঙ্গে কথা বলেন
শাবনূর
। তাঁর সঙ্গে যখন কথা হয়, তিনি তখন সিডনিতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে দাওয়াত খেতে গেছেন।
শাবনূরের সঙ্গে কথা বলেছেন
মনজুর কাদের
।
হঠাত্ করে ওজন কমাতে ব্যস্ত হয়ে গেলেন...
হঠাত্ হঠাত্ ওজন বেড়ে যায়, তাই ওজন কমাতে হয়। আর এটা করি শুধু নিজের তাগিদে।
আর কত দিন নিজেকে নায়িকা হিসেবে দেখতে চান?
এটা আসলে বলা যায় না। আমি নিজে নায়িকা থাকতে চাইলেই তো হবে না।
দর্শক যত দিন চাইবে, তত দিন নায়িকা হিসেবে দেখতে চাই। আমি নিজেও দেখেছি, দর্শক আমাকে নায়িকা হিসেবেই দেখতে চাইছে।
বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া আসা-যাওয়াটা আপনার নিয়মিতই হয়ে গেছে। এর কী কারণ?
আমার ভাই-বোনেরা অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করেছে। তারা ওই দেশের নাগরিকত্ব পেয়েছে।
আমার পরিবারের অন্য সদস্যরাও এরই মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব পেয়েছে। পরিবারের সদস্যদের কারণেই বছরের তিনটা মাস অস্ট্রেলিয়ায় থাকতে হয় আমাকে। কয়েক বছর ধরেই গ্রীষ্মের ছুটির সময়টা আমি কোনো শুটিংয়ের শিডিউল রাখি না। ওই সময়টায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে থাকি। আর এটা সবাই জানেন।
সেখানে কি থিতু হওয়ার কথা ভাবছেন?
পৃথিবীর অনেক দেশেই ঘুরেছি আমি, কিন্তু বাংলাদেশের মতো এত শান্তি কোথাও পাইনি। আমি এ দেশেরই নাগরিক। এই দেশ আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। আজকে আমি যে শাবনূর, তা কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসার জন্যই। তাই অস্ট্রেলিয়ায় থিতু হওয়ার ব্যাপারে আমার নিজের কোনো ইচ্ছা নেই।
অনেক নির্মাতারই অভিযোগ যে আপনি ঠিকঠাক শিডিউল না মেনে অস্ট্রেলিয়া আসা-যাওয়া করায় ছবির শুটিং তাঁরা সময়মতো শেষ করতে পারেননি...
আমি আগেই বলেছি, অস্ট্রেলিয়ায় আমার যাওয়া-আসার বিষয়টি পরিচালক থেকে শুরু করে চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট সবাই জানেন। এখন কোনো ছবির শিডিউল দেওয়ার পর যদি সেই পরিচালক তাঁর জন্য নির্ধারিত সময়ে ছবির শুটিং শেষ করতে না পারেন, তাহলে তার দায়ভার শিল্পী হিসেবে আমি কেন নিতে যাব! এ ক্ষেত্রে পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে নির্মাতা ও প্রযোজকের ওপর। সঠিক সময়ে ছবির শুটিং শেষ করতে না পারার জন্য শিল্পীরা কোনোভাবে দায়ী নন বলেই আমি মনে করি।
আপনার বিয়ে নিয়ে বারবারই নানা কথা রটেছে। এ বিষয়ে আপনিও কখনোই সরাসরি কিছু বলেননি।
বিয়ে নিয়ে আপনার কী বক্তব্য?
বিয়ে খুবই স্বাভাবিক একটা বিষয়। মেয়ে হয়ে জন্মেছি যেহেতু, আজ অথবা কাল বিয়ে করতেই হবে। আর যখন বিয়ে করব, তখন বলব। এতে কোনো সমস্যা দেখছি না। গুজবের খবরে অনেকবারই বিয়ে দেওয়া হয়েছে আমার।
এটা আমি নিজেও শুনেছি। একেক সময় একেকজনের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এসব বিষয়ে আমি কখনোই বিচলিত হই না। এগুলো আমি মজা হিসেবেই নিই। তবে আমি বলতে চাই, এখনো বিয়ে করিনি, করলে অবশ্যই জানাব।
বিয়ে নিয়ে আপাতত কোনো ভাবনাও নেই?
বিয়ে নিয়ে এখন কিছুই ভাবছি না। কেউ যদি কাল এসে বিয়ে করতে চান এবং আমার যদি পাত্র পছন্দ হয়ে যায়, তাহলে কালই বিয়ে করে ফেলব।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র আপনাকে অনেক কিছুই দিয়েছে। আপনি সে চলচ্চিত্রের জন্য কি কিছু ভাবছেন?
আমি যখন কাজ শুরু করি, তখনো ভাবিনি শাবনূর হব। মন দিয়ে কাজ করে গেছি।
আর তাই আমি কখনো মনে করি না ভেবেচিন্তে কিছু করা যায়। চলচ্চিত্র নিয়ে অনেক কিছুই করার ইচ্ছা আছে। আমি চলচ্চিত্রে নির্মাতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার স্বপ্ন দেখি। চলচ্চিত্রনির্মাতা হিসেবে যা করা যায়, তা করে যাব।
আপনাকে নিয়ে এত গুজব রটে কেন? গুজব উপভোগ করেন?
গুজব মাঝেমধ্যে কিন্তু অনেক ভালো।
আর আমি নিজেও গুজব খুব উপভোগ করি। আমি তো এহতেশাম দাদুর হাত ধরে চলচ্চিত্রে এসেছিলাম। শুরুর দিকেও নানা ধরনের গুজব আমাকে নিয়ে হতো। এখনো চলছে। বলতে পারেন, গুজব আমার পিছু ছাড়েনি।
প্রথম দিকে এসব গুজব আমাকে বেশ ভাবাত। পরে আমি বিষয়গুলো নিয়ে এহতেশাম দাদুর সঙ্গে কথা বলতাম। তিনি আমাকে বলতেন, “তোমাকে নিয়ে সবাই ভাবে. তাই গুজব উঠছে। আর যেদিন তোমার কোনো অবস্থান থাকবে না, সেদিন তোমাকে নিয়ে কেউ কোনো গুজব ছড়াবে না। ” তবে আমাকে নিয়ে এখনো যখন নানা গুজব হয়, তখন মনে হয় আমি ফুরিয়ে যাইনি।
’।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।