আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বিদ্রোহী স্নোডেন

ব্যক্তির মৌলিক স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করে গোপনে নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করছে যুক্তরাষ্ট্র—এই খবর ফাঁসের কথা স্বীকার করেছেন দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) এক সাবেক কর্মী।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তরের ঠিকাদার বুজ অ্যালেন হ্যামিলটনের অধীনে কর্মরত এডওয়ার্ড স্নোডেন দাবি করেছেন, ‘বিশ্বের সব মানুষের মৌলিক স্বাধীনতার’ স্বার্থে তিনি প্রিজম কর্মসূচির তথ্য ফাঁস করেছেন।
প্রিজম কর্মসূচির কথা প্রকাশিত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র নিন্দিত হতে শুরু করেছে বিশ্বজুড়ে। সিআইএ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইনকানুনের কোনো তোয়াক্কা না করে ইন্টারনেট ও টেলিফোনে আড়ি পেতে মার্কিন ও অন্য দেশের নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করছে প্রিজম কর্মসূচির অধীনে।
এডওয়ার্ড স্নোডেন বলেন, ‘আমি এমন কোনো দুনিয়াতে বাঁচতে চাই না, যেখানে আমি যা যা করছি বা যা বলছি সব রেকর্ড করা হচ্ছে।

এ ধরনের কোনো ব্যবস্থা আমি সমর্থন করি না এবং এর অধীনে আমি বাঁচতেও চাই না। ’
‘দ্য গার্ডিয়ান’কে দেওয়া সাক্ষাত্কারে ২৯ বছর বয়সী স্নোডেন বলেন, ‘আমার পালিয়ে যাওয়ার বা লুকিয়ে থাকার কোনো ইচ্ছা নেই। কারণ, আমি কোনো ভুল করিনি। ’ তবে স্নোডেন এ ব্যাপারে সচেতন যে, তথ্য ফাঁস করে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তোপের মুখে পড়বেন।
‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর আজ সোমবারের সংস্করণে ছাপা হওয়ার পর সেটি পত্রিকাটির অনলাইন সংস্করণে প্রকাশ করা হয়েছে।


আল জাজিরা বলেছে, স্নোডেন প্রিজম গোয়েন্দা-ব্যবস্থার এমন একটি নথি প্রকাশ করেছেন, যাতে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসএ) ও কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুারোকে (এফবিআই) গুগল, অ্যাপল, মাইক্রোসফট, ফেসবুক ও এওএলের মতো ইন্টারনেট-সেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলো থেকে নাগরিক ও ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের কর্তৃত্ব দেওয়া হয়েছে।
এ প্রকল্পের অধীনে তারা ই-মেইল, ভিডিও চ্যাট, তাত্ক্ষণিক বার্তা ও বিদেশি কোনো আলাপ, বার্তা বা ভিডিও রেকর্ড করতে পারে। এনএসএ লাখ লাখ মার্কিন নাগরিকের টেলিফোন আলাপের রেকর্ড সংগ্রহ করছে।
স্নোডেন ‘দ্য গার্ডিয়ান’কে বলেন, তিনি একসময় সিআইএর আইটি নিরাপত্তা বিভাগে কাজ করতেন। কূটনৈতিক কাজের অজুহাতে ২০০৭ সালে তাঁকে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় নিযুক্ত করা হয়।

সে সময় তিনি অনেক গোপন নথিপত্র দেখেছেন।
স্নোডেন বলেন, ‘জেনেভায় আমি যা দেখেছি, তারপর আমার সরকারের কাজকর্ম ও বিশ্বের ওপরে এর প্রভাব সম্পর্কে আমার মোহমুক্তি ঘটেছে। ...আমি বুঝতে পারলাম যে আমি যার জন্য কাজ করছি, সেটি যত না ভালো কিছু করছে, তার চেয়ে বেশি অনিষ্ট করছে। ’
২০০৯ সালে স্নোডেন কাজ ছেড়ে দেন এবং হাওয়াইয়ে এনএসএর ঠিকাদার বুজ অ্যালেন হ্যামিলটনের সঙ্গে কাজ করতে শুরু করেন। সেখানে কর্মরত অবস্থায় তিন সপ্তাহ আগে তিনি প্রিজম কর্মসূচির তথ্য ফাঁস করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।


স্নোডেন বলেন, ‘আমি আশা করি, এ ঘটনা আমাদের কাঙ্ক্ষিত দুনিয়ার জন্য সারা বিশ্বের নাগরিকদের জাগিয়ে তুলবে। ...যুক্তরাষ্ট্রের সরকার যেভাবে তার বিশাল গোয়েন্দা বাহিনীর মাধ্যমে সারা বিশ্বের মানুষের একান্ততা, ইন্টারনেট স্বাধীনতা ও মৌলিক মুক্তির শর্ত ধ্বংস করছে, তাতে আমি সচেতনভাবে এ প্রক্রিয়া সমর্থন করতে পারি না। ’
স্নোডেনের কর্মকাণ্ডের পর যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তত্পরতা নিয়ে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান জেমস ক্ল্যাপার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন স্নোডেনের তথ্য ফাঁসের ঘটনায়। তিনি বলেছেন, এমন কাজ ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’।


যুক্তরাষ্ট্রের প্র্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, ক্ল্যাপার ও অন্য কর্মকর্তারা বলেছেন, একটি গোপন আদালতের কর্মকাণ্ডের ওপর নজর রাখার জন্য প্রিজম কর্মসূচির অনুমতি দিয়েছে কংগ্রেস। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.