দুষিছে সবাই, আমি তবু গাই শুধু প্রভাতের ভৈরবী! শিক্ষা আমাদের দেশে কমার্শিয়াল হয়ে গেছে সেই কবে। গৃহ শিক্ষক রাখা আর প্রাইভেটে যেয়ে পড়া সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থার একটা অংশ মাত্র। সেই কমার্শিয়াল শিক্ষায় ছোটলোকি জিনিসটা প্রবেশ করে ফেলেছে ভালভাবেই। সম্প্রতি দেখা দুটা ঘটনা তারই প্রতীয়মান যেন।
ঘটনা ১:
এক বন্ধু মোটামুটি ভালরকমের সচ্ছল ফ্যামিলির ছেলে।
নিজের হাত খরচ টা উঠানোর জন্য ও সামান্য শখের বসে প্রাইভেট পড়াতে ইচ্ছুক ছিল। এক যায়গায় ঠিক করে দিলাম। কিছুদিন প্রচলিত রেটে টিউশন ফী দেওয়ার পর ছাত্রের পিতা এসে বলল, একটু অর্থকষ্টে রয়েছে। কিছু টাকা কম নিতে পারবে কিনা। বন্ধুবর রাজী হয়ে গেল কিছুটা দায়িত্ববোধের খাতিরে।
সেই সাথে ছাত্রকেও যথেষ্ট ভাবে সাহায্য করতে লাগল পড়াশোনার উন্নতির জন্য। সে পরিবার কিছুদিন যেতেই অর্থকষ্টের নমুনা স্বরূপ দুটো এসি কিনে ফেলে। এসি প্রয়োজনীয় জিনিস বটে!
এর পর এই মাসের শেষে বেতন দেওয়ার সময় জিজ্ঞেস করল আমার বন্ধুটির কোনরকম অর্থসমস্যা আছে কিনা। বন্ধুটি না উত্তর দেওয়াতে লজ্জাজনক একটা অংকের টাকা তুলে দিয়ে দিল। যুক্তি হিসেব বলল, “ প্রাইভেট একটু বেশি হয়ে গেছে, তাই তোমাকেই “একটু” কম দেওয়া শুরু করলাম কিছু মনে করো নাহ” !!
ঘটনা ২:
গরীব ঘরের এক ছাত্র।
যথেষ্ট মেধাবী না হলে প্রতিকূলতার মধ্যেও ভাল রেজাল্ট করে থাকে। ক্লাস নাইনে, তাই সমাজের সাথে তাল মিলানোর জন্য একটা বিজ্ঞান প্রাইভেটে দেওয়া হল। প্রাইভেট শিক্ষকের সাথে ভাল রকমের সু সম্পর্ক থাকার সুবাদে এবং তার চমৎকার পসার থাকার কারনে তাকে পুরো ব্যাপার টা জানানো হল এবং তার বেতনের অর্ধেক টাকায় পড়াতে পারবে কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি রাজী হন।
একমাস যেতে সে ছাত্র আর পড়তে রাজি নাহ। “ক্যান ব্যাটা তোকে এত কমে পড়াচ্ছে তাও তুই পড়াবি নাহ, তোর কিসের সমস্যা” ।
ঝাড়ি মারার পর সে উত্তর দিল তার সারমর্ম হচ্ছে, “ স্যার কম নিলেও তিনি কোনরূপ কেয়ার নেন নাহ, বুঝতে চাইলে এড়িয়ে যান। কিন্তু ফুল বেতন ধারীদের যথেষ্ট আগ্রহে নিয়ে কাছে ডেকে পড়া বুঝয়ে দেন তার সামনে”। ছাত্রটির শেষ কথা, “আমি যদি পড়া না বুঝতেই পারি তাহলে কি লাভ যেয়ে বলেন?”
এই হল আমাদের সমাজের ছোট মানসিকতার নমুনা । অর্থের কাছে কিছুই বড় নাহ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।