আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

‘সাম্বা’দের স্বপ্নপূরণের মহড়া

বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ হিসেবে নানাবিধ হ্যাপা সামলাতে হচ্ছে ব্রাজিলকে। স্টেডিয়াম নির্মাণ, সংস্কার, অবকাঠামো উন্নয়ন—সবকিছু সময় ধরে শেষ করতে নাভিশ্বাস উঠছে আয়োজক দেশটির। কিন্তু এগুলো তো আর ব্রাজিলের সাধারণ মানুষের দেখার বিষয় নয়। তাদের স্বপ্ন শুধু বিশ্বকাপ শিরোপাটিকে ঘিরে। নিজ দেশে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপ শিরোপাটা যেকোনো মূল্যে জিততে চায় ব্রাজিলের ফুটবলপাগল মানুষ।

আর এবারের কনফেডারেশনস কাপে সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণের মহড়াতেই নামতে হবে ফেলিপে স্কলারির শিষ্যদের।
কনফেডারেশনস কাপের সবচেয়ে সফলতম দল ব্রাজিল। এখন পর্যন্ত তিনবার এই শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছে দলটি। আর এবার ব্রাজিলের সামনে আছে টানা তৃতীয়বারের মতো কনফেডারেশনস কাপ জয়ের হাতছানি। স্বাগতিক দেশ বলেই হয়তো এবার ব্রাজিলিয়ান ফুটবলারদের ওপর প্রত্যাশার চাপটা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি থাকবে।

আর এই চাপ সামলে এগিয়ে যেতে পারাটাই হবে ব্রাজিলের প্রধান চ্যালেঞ্জ।
দীর্ঘদিন ধরেই ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল। ২০১০ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায়ের পর আর কোনো উল্লেখযোগ্য সাফল্যই নেই এই লাতিন ফুটবল পরাশক্তির। কোপা আমেরিকা, লন্ডন অলিম্পিকের ব্যর্থতা মাথায় নিয়ে কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হয়েছে মেনো মেনেজেসকে। এরপর তাই ব্রাজিলের বিশ্বকাপ স্বপ্নপূরণের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে পরীক্ষিত হাতে।

২০০২ সালে ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ জেতানো লুইস ফেলিপে স্কলারির তত্ত্বাবধানেই কনফেডারেশনস কাপ আর বিশ্বকাপ জয়ের মিশনে অংশ নেবেন নেইমার-অস্কার-দানি আলভেজরা।
দ্বিতীয় দফায় কোচের দায়িত্ব নিয়ে শুরুটা অবশ্য খুব হতাশাজনকভাবে করেছেন স্কলারি। প্রথম ছয় ম্যাচে হারের মুখ দেখেছেন চারটিতেই। একটি ড্র, জয় মাত্র একটি ম্যাচে। নবনির্মিত ঐতিহ্যবাহী মারাকানা স্টেডিয়ামের উদ্বোধনী ম্যাচে দুয়োধ্বনিও শুনতে হয়েছে স্কলারিকে।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করার পর ‘গাধা গাধা’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়েছিল মারাকানা স্টেডিয়ামের গ্যালারি। ফিফার সর্বশেষ র্যাঙ্কিংয়েও শোচনীয় অবস্থা পাঁচবারের বিশ্বকাপজয়ীদের। অবনমনের নতুন রেকর্ড গড়ে তারা নেমে গেছে ২২ নম্বরে। সব মিলিয়ে খানিকটা কোণঠাসা অবস্থার মধ্যে থেকেই এবারের কনফেডারেশনস কাপে অংশ নিতে যাচ্ছে ব্রাজিল। তবে ফ্রান্সের বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচে ৩-০ গোলের জয়টাই হয়তো আত্মবিশ্বাসের জোগান দেবে ব্রাজিল শিবিরে।

আর এখন নিশ্চয়ই এই জয়ের সুখস্মৃতিটাই দীর্ঘায়িত করতে চাইবেন স্কলারি।
ব্রাজিল কনফেডারেশনস কাপ জয়ের মিশনে নামছে পুরোপুরি তারুণ্যনির্ভর একটি দল নিয়ে। এই দলটা এখনই বিশ্বকাপ জয়ের মতো বড় সাফল্য অর্জনের জন্য প্রস্তুত হয়েছে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে অনেকেরই। কিন্তু ব্রাজিলের সাধারণ মানুষ ১৯৫০ সালের মতো নিজ দেশের মাটিতে আরেকটি বিশ্বকাপ ব্যর্থতার মুখোমুখি হতে চায় না কোনোভাবেই। কোচ স্কলারিও বিশ্বকাপের মহড়া কনফেডারেশনস কাপ জয়টাকে অভিহিত করেছেন দলের ‘দায়িত্ব’ হিসেবে।

এখন এই বিশাল দায়িত্বের বোঝাটা নেইমার, অস্কার, লুকাসদের মতো তরুণেরা ঠিকঠাক সামলাতে পারবেন কি না, সেটাই দেখার বিষয়। অনেক গুঞ্জন শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত রোনালদিনহো আর কাকাকে কনফেডারেশনস কাপ মিশনে অন্তর্ভুক্ত করেননি স্কলারি।
স্বাগতিক হিসেবে ব্রাজিল ইতিমধ্যেই ফেবারিটের তকমাটা গায়ে জড়িয়ে ফেলেছে। গ্রুপ পর্বে তাদের প্রতিপক্ষ ২০১২ ইউরোর রানারআপ ইতালি, মেক্সিকো ও জাপান। প্রতিপক্ষ হিসেবে কাউকেই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই ব্রাজিলের।

ইতালি তো শিরোপা জয়েরই অন্যতম প্রধান দাবিদার। মেক্সিকো তো বটেই, এশিয়ান কাপজয়ী জাপানও ঘটিয়ে দিতে পারে অঘটন। তাই নাটকীয় কোনো পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য শুরু থেকেই সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে ব্রাজিলকে। ১৫ জুন জাপানের বিপক্ষে ম্যাচটি দিয়ে কনফেডারেশনস কাপ মিশন শুরু করবে স্বাগতিকেরা। রয়টার্স।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.