আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু (১ম পর্ব)

(১) উড়িষ্যার ছোট শহর কটক। শহরের প্রায় কেন্দ্রে এল আকৃতির বিশাল দ্বিতল বাড়িটি চোখে পড়ার মত। মূল বাড়ির সাথে লাগোয়া ছোট ছোট কয়েকটি ঘর। এগুলো চাকরদের বসবাসের জন্য। বাড়ির মালিক জানকীনাথ বসু।

ডাকসাই্টে উকিল। আদি নিবাস পশ্চিম বঙ্গের ২৪ পরগনা জেলার কোদালিয়া গ্রামে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে আইনে ডিগ্রী লাভের কিছুদিন পর ১৮৮০ সালে কটকে আইন পেশা শুরু করেন। পরে বাড়ি ঘর করে কটকেই স্থায়ী হয়ে যান। উকালতিতে নাম ডাক হওয়ায় আয় রোজগার বেশ ভাল।

স্ত্রী প্রভাবতী দেবী। কলকাতার হাটখোলার প্রসিদ্ধ দত্ত পরিবারের মেয়ে । গৃহিণী ও ধর্মপ্রাণ মানুষ। গরীব-দুঃখী মানুষের সেবা করা ছিল তাঁর সহজাত স্বভাব। স্ত্রী-সন্তানসহ কটকে সুখেই দিন কাটছে জানকীনাথের।

২৩ই জানুয়ারি ১৮৯৭, বসু পরিবারের জন্য একটি বিশেষ দিন। এদিনে প্রভাবতী দেবী তার নবম সন্তান জন্ম দেন। শিশুটি পরবর্তীতে শুধু বসু পরিবারই নয় সমগ্র ভারতবর্ষের গর্বের প্রতীক হয়ে দাড়ান। [এক সময় সাধারন ভারতীয়রা তাকে নেতাজী বলে সম্বোধন করবেন। কবি গুরু রবীন্দ্রাথ তাকে 'দেশনায়ক' উপাধিতে আখ্যায়িত করবেন] শিশুটির নাম রাখা হয় সুভাষ চন্দ্র বসু ।

(২) পাঁচ বছর বয়সে সুভাষ কটক প্রোটেষ্ট্যান্ট ইউরোপীয়ান স্কুলে (বর্তমান নাম স্টিওয়ার্ট স্কুল) ভর্তি হন। মিশনারী পরিচালিত ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল। মূলত ইউরোপিয়ান ও এংলো ইন্ডিয়ানরা স্কুলটির ছাত্র। মেধা ও বুদ্ধিমত্তার জন্য সুভাষ সকল শিক্ষকের প্রিয় পাত্র হয়ে উঠেন। এই স্কুলে তিনি ৭ বছর পড়াশুনা করেন।

১৯০৯ সালে সুভাস বসু কটকের রাভ্যেনশ কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হলেন। একই বছরে পিতা জানকীনাথ কটক পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরে তিনি সরকারী উকিল ও পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। [ ১৯১২ সালে তিনে বাংলার আইন সভার সদস্য হিসেবে যোগ দেন এবং রায় বাহাদুর উপাধিতে ভুষিত হন। পরে তিনি সরকারী উকিল ও পাবলিক প্রসিকিউটর পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং রায় বাহাদুর উপাধি ত্যাগ করেন] ব্যপ্টিস্ট মিশন ইউরোপীয় ধাচের পরিবেশ ও চাল-চলনে সুভাষ হাপিয়ে উঠেছিল।

রাভ্যেনশ কলেজিয়ট স্কুলে এসে সুভা্ষ হাপ ছেড়ে বাচল। তাছাড়া স্কুলটির হেড মাস্টার বেণী মাধব দাস তার অতি প্রিয়। দর্শন, অর্থনীতি ও ইতিহাসে হেড মাস্টারের ছিল অগাধ পান্ডিত্য। আদর্শ শিক্ষক হিসেবে তার খ্যাতি রয়েছে। এক সময়ে চট্টগ্রাম কলেজের শিক্ষক ছিলেন তিনি।

তার হাতে এটি একটি আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। তিনি ছিলেন আদর্শবান, সমাজ সেবক, দেশ প্রেমিক। বালক সুভাষের মনোজগতে গভীর রেখাপাত করেন বেণী মাধব। বলা যায় সুভাষ বসুর দেশপ্রেমের বীজ বোপন হয় বেণী মাধবের হাতে। এছাড়াও স্বামী বিবেকানন্দ দ্বারা সে বেশ প্রভাবিত হন।

এসময় সমাজ ও দেশের সমস্যা বালক সুভাষের মনে পীড়া দিত। ১৯১২ সালে কটকে কলেরার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে তিনি কয়েকজন বন্ধুসহ কলেরায় আক্রান্ত রোগীদের সেবায় ঝাপিয়ে পড়েন। (৩) ১৯১৩ সালে সুভাষ প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশগ্রহ্ন করেন। সুভাষ অত্যন্ত মেধাবী হলেও পরীক্ষার পূর্বে পড়াশুনায় অমনোযোগী হয়ে পড়েন। এসময় তিনি সমাজ সেবা এবং শ্রীরামকৃষ্ণ ও স্বামী বিবেকানন্দের বই পুস্তক ও দর্শন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

আধ্যাত্মিক উন্নতি করার জন্য যোগ অভ্যাস শুরু করেন। ফলে সুভাষ অসাধারন রেজাল্ট করবে এমন প্রত্যাশা কেউই করেনি। কিন্তু সকলের চমকে দিয়ে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করলেন। সরকারিভাবে কুড়ি টাকা বৃত্তি পেলেন। বৃত্তির টাকা দীন দুঃখীর সেবায় দান করে দেন।

১৯১৩ সালে কলকাতা প্রেসিডেন্সী কলেজে আই.এ ভর্তি হলেন। আই.এ. পড়ার একপর্যায়ে মানব সেবার উদ্দেশ্যে তিনি গৃহ ত্যাগ করেন। এসময় তিনি ভারতবর্ষের বিভিন্ন তীর্থস্থান ঘুরে বেড়ান। কয়েক মাস পর বাড়িতে ফিরে আসেন। বাড়িতে আসার পর তিনি টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে অনেক দিন ভোগেন।

১৯১৫ সালে আই.এ. পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেন। পরীক্ষার কিছুদিন পূর্বে লেখা পড়ায় মনোযোগ দিলেন। পূনরায় সবাইকে চমকে দিয়ে সুভাষ আই.এ. পরীক্ষায় মেধাস্থান অর্জন করে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হলেন। ১৯১৫ সালে একই কলেজে বিএ ভর্তি হলেন। কলেজের ইংরেজী প্রফেসর ছিলেন Mr. E.F. Oaten ।

ই এফ অটেন ছিলেন ভারত বিদ্বেষী ও বর্ণবাদী। তিনি প্রায় ভারত ও ভারতবাসীদের জন্য অপমানসূচক মন্তব্য করতেন। অটেন একদিন ক্লাস রুমে অনুরূপ আচরন করলে একদল ভারতীয় ছাত্র তাকে আক্রমন করে বসে। অটেনকে বেদম প্রহার করা হয়। উক্ত ঘটনার নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে সুভাষ চন্দ্র কে কলেজ থেকে বহিস্কার করা হয়।

স্কটিশ চার্চ কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন স্যার আশুতষ মুখার্জীর। তার আগ্রহ ও সহযোগীতায় ১৯১৭ সালে সুভাষ বসু স্কটিস চার্চ কলেজে দর্শনে বিএ(অনার্স) ভর্তি হলেন। ১৯১৯ সালে ডিস্টিংশনসহ ১ম শ্রেণীতে বিএ পাশ করেন। (৪) পিতা জানকীনাথের ইচ্ছে সুভাষ ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস(আই সি এস) পরীক্ষায় অংশগ্রহন করুক। সকল ভারতীয় মেধাবী ছাত্রই আই সি এস পাশের স্বপ্ন দেখত।

আই সি এস পাশের জন্য বিলেতে প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষা হত। ইংরেজ ও ভারতীয়রা মেধাবীরা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করত। অল্প কয়েকজন তুখোড় মেধাবী ও সৌভাগ্যবানরাই পরীক্ষায় পাশ করতেন। মেধাবী হলেও সুভাষ ছিল একটু অন্য ধাচের। আই সি এস পরীক্ষায় অংশগ্রহনের বিষয়ে সুভাষের মোটেও আগ্রহ ছিল না।

কিন্তু পিতার ইচ্ছে পূরনে তিনি নিজের ইচ্ছে বিসর্জন দিলেন। ১৯১৯ সালে আই সি এস পরীক্ষায় অংশগ্রহনের জন্য ইংল্যান্ডে পাড়ি জমালেন। ১৯২০ সালে ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস এ-পরীক্ষা দিলেন। পরীক্ষায় তিনি মেধা তালিকায় চতুর্থ স্থান অধিকার করেন (লিখিত পরীক্ষায় প্রথম)। সে বছরেই তিনি ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসে (আইসিএস) যোগ দেন।

বিবেকানন্দ্রের দর্শন ও বেনী মাধবের আদর্শে যিনি উজ্জীবিত, যার সমগ্র দেহ মন জুড়ে রয়েছে দেশ প্রেম তিনি কিভাবে ইংরেজদের গোলামী করবেন? বিপ্লব-সচেতন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ১৯২১ সালের এপ্রিল মাসে তিনি ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস থেকে পদত্যাগ করে ভারতে ফিরে আসেন। এই প্রথম কোন ব্যাক্তি ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস থেকে পদত্যাগ করলেন। এই প্রসঙ্গে সুভাষের বক্তব্য, "কোনো সরকারের সমাপ্তি ঘোষণা করার সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থা হল তা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া"। (১) উড়িষ্যার ছোট শহর কটক। শহরের প্রায় কেন্দ্রে এল আকৃতির বিশাল দ্বিতল বাড়িটি চোখে পড়ার মত।

মূল বাড়ির সাথে লাগোয়া ছোট ছোট কয়েকটি ঘর। এগুলো চাকরদের বসবাসের জন্য। বাড়ির মালিক জানকীনাথ বসু। ডাকসাই্টে উকিল। আদি নিবাস পশ্চিম বঙ্গের ২৪ পরগনা জেলার কোদালিয়া গ্রামে।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে আইনে ডিগ্রী লাভের কিছুদিন পর ১৮৮০ সালে কটকে আইন পেশা শুরু করেন। পরে বাড়ি ঘর করে কটকেই স্থায়ী হয়ে যান। উকালতিতে নাম ডাক হওয়ায় আয় রোজগার বেশ ভাল। স্ত্রী প্রভাবতী দেবী। কলকাতার হাটখোলার প্রসিদ্ধ দত্ত পরিবারের মেয়ে ।

গৃহিণী ও ধর্মপ্রাণ মানুষ। গরীব-দুঃখী মানুষের সেবা করা ছিল তাঁর সহজাত স্বভাব। স্ত্রী-সন্তানসহ কটকে সুখেই দিন কাটছে জানকীনাথের। ২৩ই জানুয়ারি ১৮৯৭, বসু পরিবারের জন্য একটি বিশেষ দিন। এদিনে প্রভাবতী দেবী তার নবম সন্তান জন্ম দেন।

শিশুটি পরবর্তীতে শুধু বসু পরিবারই নয় সমগ্র ভারতবর্ষের গর্বের প্রতীক হয়ে দাড়ান। [এক সময় সাধারন ভারতীয়রা তাকে নেতাজী বলে সম্বোধন করবেন। কবি গুরু রবীন্দ্রাথ তাকে 'দেশনায়ক' উপাধিতে আখ্যায়িত করবেন] শিশুটির নাম রাখা হয় সুভাষ চন্দ্র বসু । (২) পাঁচ বছর বয়সে সুভাষ কটক প্রোটেষ্ট্যান্ট ইউরোপীয়ান স্কুলে (বর্তমান নাম স্টিওয়ার্ট স্কুল) ভর্তি হন। মিশনারী পরিচালিত ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল।

মূলত ইউরোপিয়ান ও এংলো ইন্ডিয়ানরা স্কুলটির ছাত্র। মেধা ও বুদ্ধিমত্তার জন্য সুভাষ সকল শিক্ষকের প্রিয় পাত্র হয়ে উঠেন। এই স্কুলে তিনি ৭ বছর পড়াশুনা করেন। ১৯০৯ সালে সুভাস বসু কটকের রাভ্যেনশ কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হলেন। একই বছরে পিতা জানকীনাথ কটক পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

পরে তিনি সরকারী উকিল ও পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। [ ১৯১২ সালে তিনে বাংলার আইন সভার সদস্য হিসেবে যোগ দেন এবং রায় বাহাদুর উপাধিতে ভুষিত হন। পরে তিনি সরকারী উকিল ও পাবলিক প্রসিকিউটর পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং রায় বাহাদুর উপাধি ত্যাগ করেন] ব্যপ্টিস্ট মিশন ইউরোপীয় ধাচের পরিবেশ ও চাল-চলনে সুভাষ হাপিয়ে উঠেছিল। রাভ্যেনশ কলেজিয়ট স্কুলে এসে সুভা্ষ হাপ ছেড়ে বাচল। তাছাড়া স্কুলটির হেড মাস্টার বেণী মাধব দাস তার অতি প্রিয়।

দর্শন, অর্থনীতি ও ইতিহাসে হেড মাস্টারের ছিল অগাধ পান্ডিত্য। আদর্শ শিক্ষক হিসেবে তার খ্যাতি রয়েছে। এক সময়ে চট্টগ্রাম কলেজের শিক্ষক ছিলেন তিনি। তার হাতে এটি একটি আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। তিনি ছিলেন আদর্শবান, সমাজ সেবক, দেশ প্রেমিক।

বালক সুভাষের মনোজগতে গভীর রেখাপাত করেন বেণী মাধব। বলা যায় সুভাষ বসুর দেশপ্রেমের বীজ বোপন হয় বেণী মাধবের হাতে। এছাড়াও স্বামী বিবেকানন্দ দ্বারা সে বেশ প্রভাবিত হন। এসময় সমাজ ও দেশের সমস্যা বালক সুভাষের মনে পীড়া দিত। ১৯১২ সালে কটকে কলেরার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে তিনি কয়েকজন বন্ধুসহ কলেরায় আক্রান্ত রোগীদের সেবায় ঝাপিয়ে পড়েন।

(৩) ১৯১৩ সালে সুভাষ প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশগ্রহ্ন করেন। সুভাষ অত্যন্ত মেধাবী হলেও পরীক্ষার পূর্বে পড়াশুনায় অমনোযোগী হয়ে পড়েন। এসময় তিনি সমাজ সেবা এবং শ্রীরামকৃষ্ণ ও স্বামী বিবেকানন্দের বই পুস্তক ও দর্শন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। আধ্যাত্মিক উন্নতি করার জন্য যোগ অভ্যাস শুরু করেন। ফলে সুভাষ অসাধারন রেজাল্ট করবে এমন প্রত্যাশা কেউই করেনি।

কিন্তু সকলের চমকে দিয়ে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করলেন। সরকারিভাবে কুড়ি টাকা বৃত্তি পেলেন। বৃত্তির টাকা দীন দুঃখীর সেবায় দান করে দেন। ১৯১৩ সালে কলকাতা প্রেসিডেন্সী কলেজে আই.এ ভর্তি হলেন। আই.এ. পড়ার একপর্যায়ে মানব সেবার উদ্দেশ্যে তিনি গৃহ ত্যাগ করেন।

এসময় তিনি ভারতবর্ষের বিভিন্ন তীর্থস্থান ঘুরে বেড়ান। কয়েক মাস পর বাড়িতে ফিরে আসেন। বাড়িতে আসার পর তিনি টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে অনেক দিন ভোগেন। ১৯১৫ সালে আই.এ. পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেন। পরীক্ষার কিছুদিন পূর্বে লেখা পড়ায় মনোযোগ দিলেন।

পূনরায় সবাইকে চমকে দিয়ে সুভাষ আই.এ. পরীক্ষায় মেধাস্থান অর্জন করে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হলেন। ১৯১৫ সালে একই কলেজে বিএ ভর্তি হলেন। কলেজের ইংরেজী প্রফেসর ছিলেন Mr. E.F. Oaten । ই এফ অটেন ছিলেন ভারত বিদ্বেষী ও বর্ণবাদী। তিনি প্রায় ভারত ও ভারতবাসীদের জন্য অপমানসূচক মন্তব্য করতেন।

অটেন একদিন ক্লাস রুমে অনুরূপ আচরন করলে একদল ভারতীয় ছাত্র তাকে আক্রমন করে বসে। অটেনকে বেদম প্রহার করা হয়। উক্ত ঘটনার নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে সুভাষ চন্দ্র কে কলেজ থেকে বহিস্কার করা হয়। স্কটিশ চার্চ কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন স্যার আশুতষ মুখার্জীর। তার আগ্রহ ও সহযোগীতায় ১৯১৭ সালে সুভাষ বসু স্কটিস চার্চ কলেজে দর্শনে বিএ(অনার্স) ভর্তি হলেন।

১৯১৯ সালে ডিস্টিংশনসহ ১ম শ্রেণীতে বিএ পাশ করেন। (৪) পিতা জানকীনাথের ইচ্ছে সুভাষ ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস(আই সি এস) পরীক্ষায় অংশগ্রহন করুক। সকল ভারতীয় মেধাবী ছাত্রই আই সি এস পাশের স্বপ্ন দেখত। আই সি এস পাশের জন্য বিলেতে প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষা হত। ইংরেজ ও ভারতীয়রা মেধাবীরা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করত।

অল্প কয়েকজন তুখোড় মেধাবী ও সৌভাগ্যবানরাই পরীক্ষায় পাশ করতেন। মেধাবী হলেও সুভাষ ছিল একটু অন্য ধাচের। আই সি এস পরীক্ষায় অংশগ্রহনের বিষয়ে সুভাষের মোটেও আগ্রহ ছিল না। কিন্তু পিতার ইচ্ছে পূরনে তিনি নিজের ইচ্ছে বিসর্জন দিলেন। ১৯১৯ সালে আই সি এস পরীক্ষায় অংশগ্রহনের জন্য ইংল্যান্ডে পাড়ি জমালেন।

১৯২০ সালে ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস এ-পরীক্ষা দিলেন। পরীক্ষায় তিনি মেধা তালিকায় চতুর্থ স্থান অধিকার করেন (লিখিত পরীক্ষায় প্রথম)। সে বছরেই তিনি ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসে (আইসিএস) যোগ দেন। বিবেকানন্দ্রের দর্শন ও বেনী মাধবের আদর্শে যিনি উজ্জীবিত, যার সমগ্র দেহ মন জুড়ে রয়েছে দেশ প্রেম তিনি কিভাবে ইংরেজদের গোলামী করবেন? বিপ্লব-সচেতন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ১৯২১ সালের এপ্রিল মাসে তিনি ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস থেকে পদত্যাগ করে ভারতে ফিরে আসেন। এই প্রথম কোন ব্যাক্তি ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস থেকে পদত্যাগ করলেন।

এই প্রসঙ্গে সুভাষের বক্তব্য, "কোনো সরকারের সমাপ্তি ঘোষণা করার সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থা হল তা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া"।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।