আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কালো বিড়ালের প্রতিচ্ছায়ায় ঝুকির মধ্যে সামু। ব্লগার স্বাধীকার জেনারেল কেন? ২

সবুজের বুকে লাল, সেতো উড়বেই চিরকাল অপরাধি যত চালাকই হোক, কিছু না কিছু প্রমান রেখেই যায়। যে প্যাটার্নে বোন জানা আর আরিল ভাইয়ের ছবি নিয়ে কুৎসিত পোস্ট দেয়া হয়েছে, সামু থেকে বিতাড়িত গ্রুপটি একদম হুবুহু একই কাজ আগেও করেছে। আপাত দৃস্টিতে তারা সামুর সাথে জড়িত নয় বলে মনে হলেও, তাদের মাল্টি নিক এবং তাদের সমর্থনপুস্ট কিছু ব্লগার সামুতে খুবই সক্রিয়। যাদের কাজই ছিল আওয়ামি বিরোধীদের ঢালাওভাবে রাজাকার ট্যাগিং করে ব্লগ থেকে বিতাড়িত করা। মনে হচ্ছে দেশপ্রেমের নেশায় সামু এতটাই অন্ধ যে, মুখে রাজাকার বিরোধি কিছু বললেই তাকে সম্মানের আসনে বসিয়ে দেয়।

সে আসলেও কতটা আন্তরিক আর কতটা ষড়যন্ত্রি, সেই বিচার করে না। এই ভন্ড কয়েকজনের কারণেই সামুর প্রবল জনপ্রিয় এবং নন্দিত ব্লগার জুলভার্ন ভাই সামু ছেড়েছেন। অবশ্য দেরিতে হলেও কয়েকজনকে ব্যান করলেও, তারা মাল্টি নিকে বহাল তবিয়তেই আছে। জাশি যে ধোয়া তুলসি পাতা এমন কিন্তু না। তাদের কাজ তারা পরম নিষ্ঠায় করে আছে।

অর্থাৎ ৭১ এর পাপ ধামাচাপা দেবার কাজটা অন্তর্জালে খুব ভালোই করে যাচ্ছে। যেহেতু সামু থেকে একদল বিতাড়িত আর জাশিরাও সামুর সাধারণ ব্লগারদের প্রতিরোধের কারণে শক্তিহীন, তাই সামুর প্রতি এই দুই দলেরই ক্রোধ রয়েছে। জিয়নবাদিদের উচ্ছিস্টে পালিত তথাকথিত মুক্তমনাদের ইসলামবিদ্বেষকে কাজে লাগিয়ে এই দুই গ্রুপই সম্মিলিতভাবে সামুতে ওই অবস্থা সৃস্টি করেছে। লোকবলের সীমাবদ্ধতার কারণে সেদিন সামু সময়মত ব্যাবস্থা গ্রহন করতে পারেনি। হ্যা, এমন হতেই পারে।

কিন্তু সামুতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা এবং দোষিদের শাস্তি দিতে গিয়ে তারা একেবারে লেজে গোবরে করে ফেলেছে দেখছি। আমাদের দেশে পুলিশ যেমন হরতালের সময় যাকেই সামনে পায় পিকেটার বলে গারদে ঢুকায়, তেমনি এই ঘটনায় দেখা যাচ্ছে সামুও ইচ্ছামত ব্লগারদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যাবস্থা নিয়েছে। সেদিন ব্লগে উপস্থিত থাকাই যেন অপরাধ হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় দেখলাম স্বাধীকার ভাইকে জেনারেল করা হয়েছে। কেন? কি অপরাধ তার? উনি সামুর নীতিমালা ভঙ্গ করেছেন, একথা সারা পৃথিবীকে বিশ্বাস করানো গেলেও, এই ধীবরকে বিশ্বাস করানো যাবে না।

শুধু স্বাধীকার ভাই কেন? শুনলাম চেয়ারম্যান০০৭, রাফাত নুর, হেডস্যার (আরো নাকি আছে, যাদের নিক আমি জানতে পারিনি) এদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়া হয়েছে। ইসলাম বিদ্বেষি মুক্তমনা দাড়িপাল্লা পোস্ট দিলো, তার প্রতিবাদ করার নামে সামু থেকে বিতাড়িতদের চ্যালারা (সবাই না, বেশিরভাগ সুস্থধারাই প্রতিবাদ করেছেন) কুৎসিত পোস্ট দিলো, জাশিরা আলু পোড়া খেলো এবং সেই আগুনে আরো তেল ঢাললো, আর শাস্তি পেলো জাতিয়তাবাদিরা? এ কেমন বিবেচনাপ্রসুত সিদ্ধান্ত সামুর? আমি কিন্ত নিশ্চিত যে, মডু বান্ধব বলে যে একটি গ্রুপ অন্তরালে রয়েছে, জাতিয়তাবাদিদের প্রতি তাদের চরম এলার্জি আছে। এই এলার্জির কারণ ভারতের প্রতি জাতিয়তাবাদির প্রবল প্রতিবাদি অবস্থান। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, জাতিয়তাবাদিদের সামু থেকে উৎখাত করার আলু পোড়া খাবার নিমিত্তেই এই গ্রুপটি মডু বান্ধবতার সুযোগ নিয়ে স্বাধীকার ভাই এর বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যাবস্থা গ্রহনে প্রভাব খাটিয়েছে। এ কথা স্বীকার না করে উপায় নেই যে, দ্বিমুখি ষড়যন্ত্রের আক্রমনে সামুর ইমেজ অনেকটাই ক্ষুন্ন হয়েছে।

তবে আশার কথা হলো সামুর রয়েছে অগণিত নিরব ভক্ত। এরাই কিন্তু আসলে সামুর আসল শুভাকাংখি এবং সামুর শক্তির আসল উৎস। এই সাময়িক অস্বস্তি থেকে পরিত্রানের একটাই উপায়। সেটা হয়েছে সাধারণ ব্লগারদের আস্থায় নেয়া। এদের চাওয়া পাওয়াকে সম্মান দেখানো।

সবচেয়ে বড় কথা সামুর নীতিমালা প্রয়োগে, ব্যাক্তিগত অনুরাগ বিরাগ থেকে বিরত থাকা। সামু যদি নিজেই যদি ব্যাক্তিগত সম্পর্ক বিবেচনায় নীতিমালার প্রয়োগ ঘটাতে কুন্ঠিত হয়, তাহলে সামু পরিচালনায় একটা ফাটল দেখা দিবে। সেই ফাটলকে কাজে লাগিয়েই সামুর চির শত্রুরা ষড়যন্ত্র সফল করার চেস্টা চালাবে। যেহেতু সামুর নীতিমালায় স্পস্ট করে বলা আছে যে কোন রকম ধর্মীয় বিদ্বেষ তৈরি করা যাবে না, সেহেতু চিহ্নিত ইসলামদ্বেষি ব্লগারদের অতি সত্ত্বর সামু থেকে ব্যান করার মাধ্যমে সামুকে অনেকখানি পরিচ্ছন্ন করা সম্ভব। এবং নতুন নিক গজিয়ে একই কাজ করলে অঙ্কুরেই সেই ঘৃণাবাদিদের সামু থেকে বিতাড়িত করার মধ্যেই সামুর মঙ্গল নিহিত বলে আমার ধারণা।

বাকস্বাধীনতা নিয়ে পাশ্চাত্যের হিপোক্রেট নীতি (ইসলাম বিদ্বেষ বাকস্বাধীনতা কিন্ত অন্য ধর্ম নিয়ে বললে সাম্প্রদায়িকতা) অন্তত বাংলাদেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় এবং পাঠক নন্দিত ব্লগ সাইট হিসাবে সামুকে মানায় না। এটা শুধু আমার কথা না। সাথে পাচে নেই অথচ সামুতে প্রবল উপস্থিত সাধারণ ব্লগারদেরও কথা। তাছাড়া উপদেস্টাত বা উপদেশদাতা হিসাবে এখন যারা সামুতে সক্রিয়, সামুতে বিশৃংখলা ঠেকানোতে ব্যার্থতার দায়, তাদের ঘাড়েও পড়ে। তাই তাদের ব্যাপারেও ভিন্নচিন্তা করার এখনই সময়।

বাংলাদেশ আজন্ম একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। বাংলা ভাষা, দেশ আর ধর্ম এদেশের মানুষের আত্মার সাথে সম্পর্কিত। তাই এমন কোন কাজ করা ঠিক হবে না, যাতে সাধারণ ব্লগাররা অন্তর্কস্টে ভুগেন এবং সামুর প্রতি বিরুপ হন। নীতিমালা মেনে কেউ প্রতিবাদ করলে, তার বিরুদ্ধে অন্যায় শাস্তিমুলক নিলে বরং সামুর প্রতি আস্থাই কমবে। যেহেতু মেজাজ মর্জি বা ক্ষমতায় অনেকেই ক্ষমতাবান, তাই প্রতিবাদের পথটুকু বন্ধ করলে, সেই ক্ষোভ এবং কস্টের বহিঃপ্রকাশ অন্যরুপে প্রকাশিত হতে বাধ্য।

হাজার হাজার সাধারণ ব্লগারদের ভালোবাসায় ধন্য সামু চিরদিন আপন আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে আরো বিকশিত হোক, এ আমাদের সবার চাওয়া। আশা করি সামু কর্তৃপক্ষ সে পরম চাওয়াকে সম্মানের সাথে গ্রহন করবেন। যেমন কিছু কিছু ভুল ত্রুটি সত্ত্বেও এতদিন করে এসেছেন। ধন্যবাদ।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.