আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাজা ত্রিদিব রায়ের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড

চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়ের পিতা ত্রিদিব রায় ১৯৩৩ সালের ১৪ মে জন্মগ্রহণ করেন। উল্লেখ্য চাকমা রাজা ত্রিদিব রায় মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশর মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসে স্থায়ীভাবে পাকিস্তান গমন করেন। পাকিস্থান সরকার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বিশেষ দূত হিসেবে ঐ বছরই তাকে ব্যাংকক প্রেরণ করেন। তিনি ১৯৭২ সালে জাতিসংঘে পাকিস্তান দলের নেতৃত্ব দেন এবং বাংলাদেশের জাতিসংঘের সদস্যপদ গ্রহণের বিরোধিতা করেন। রাজা দেবাশীষ রায়ের পিতা ত্রিদিব রায় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেন।

তিনি বর্তমানে পাকিস্তানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। বাংলাদেশে সম্ভব নয় বিধায় রাজা দেবাশীষ রায় থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে ত্রিদিক রায়ের সঙ্গে শলা-পরামর্শের জন্য রাজা দেবাশীষের জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং ত্রিদিব রায়কে দেশে এনে বিচারের ব্যবস্থা করা উচিত। রাজা ত্রিদিব রায় ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে ফেডারেল মন্ত্র্র্রী হিসেবে জুলফিকার আলী ভূট্টোর মন্ত্রীসভায় যোগদান করেন। তিনি ১৯৭৫ থেকে ১৯৮১ সালে তিনি দক্ষিণ আমেরিকার ০৫টি দেশের রাষ্ট্রদুত হিসেবে আর্জেন্টিনায় গমন করেন এবং ১৯৯৫ সালে পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৫ সালের মে মাসে তাকে প্রতিমন্ত্র্রীর মর্যাদায় এ্যাম্বাসেডর এ্যাট লার্জ নিয়োগ করা হয়।

গত ০২ এপ্রিল ২০০৩ তারিখে পাকিস্থানের প্রধানমন্ত্রী জাফরুল্লাহ জামলী তাকে দপ্তর বিহীন ফেডারেল মন্ত্রী নিয়োগ করেন তার লিখিত (The Departed Melody) বই এ তার সম্পর্কে আরো অধিক অবগত হওয়া যাবে। উল্লেখ্য পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসী হয়েও ত্রিদিব রায় স্বাধীন বাংলাদে প্রতিষ্ঠায় কোন ভূমিকা রাখেন নি। রাজার স্বর্গীয় মাতাসহ বাংলাদেশ এবং ভারতের অনেক শুভাকাংখী তাকে পাকস্তিানের পক্ষ ত্যাগ করে তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ অবলম্বনের জন্য অনুরোধ করলে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। এ সময় তার মাতার সাথে তিনি বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। তবে রাজা ত্রিদিব রায় যখন ডিসেম্বর ১৯৭২ সালে পাকিস্থানে ফেরত আসেন তখন পাকিস্থানের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মি: ভুট্টো সহ মন্ত্রীসভার সকলে তাকে ‘জাতীয় বীর’ হিসেবে লাল গালিচা সম্বর্ধনা দেন।

পরবর্তীতে পুরস্কার হিসেবে আজীবন মন্ত্রীত্ব লাভ করেন। রাজ ত্রিদিব রায় প্রায়শ:ই গর্ব করে বলতেন যে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে যে দুজন প্রার্থী আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে নির্বাচন না করে জয়লাভ করেন তার মধ্যে তিনি(ত্রিদিব রায়) একজন। নির্বাচনে জয়ের জন্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বলীয়ান হতে হবে, এ কথা তিনি তা প্রকাশ্যে প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি পাকিস্তান সরকারের একটি বিশেষ প্রতিনিধি দল নিয়ে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে গমন করলে সেখানে কর্মরত বাঙ্গালীরা তাকে তার নিজ মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করতে অনুরোধ জানায়, কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন এবং সর্বপ্রকার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি বাংলাদেশের পক্ষ না নিয়ে পুণরায় পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তন করেন। অপরদিকে দেবাশীষ রায়ের সাথে তিনি সর্বদা যোগযোগ রক্ষা করেন এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বায়ত্বশাসনের জন্য চাকমা রাজা দেবাশীষ রায়কে বিবিধ কুমন্ত্রণা দেন।

উল্লেখ্য, ত্রিদিব রায় বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী নন, তিনি যা ১৯৭১ সালে বিভিন্ন ভাবে প্রমাণ করেছেন। রাজা ত্রিদিব রায় এর ০৩ জন স্ত্রী রয়েছে: বর্তমানে তিনি দ্বিতীয় স্ত্রী রত্না রায় ও তার মেয়ে রাজকুমারী প্রিয়া এবং প্রথম স্ত্রী রানী আরতী রায় এর ছেলে ইন্দ্রাশীষ রায় সহ পাকিস্তানে বসবাস করছেন। তৃতীয় স্ত্রী আর্জেন্টিনার নাগরিক তার ছেলে পদ্মা গহীন হেইল কে নিয়ে ফ্রান্সে বসবাস করছেন। রানী মাতা প্রথম স্ত্রী আরতী রায় এর ০৩ জন ছেলে এবং ০২ মেয়ের মধ্যে রাজা দেবাশীষ রায় চাকমা রাজা হিসেবে অভিষিক্ত হয়েছেন। বর্তমানে রাজা দেবাশীষ রায় তাদের পরিবারকে নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে দাবী করলেও রাজা ত্রিদিব রায় পাকিস্তানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।

এ ক্ষেত্রে তিনি তার পিতার অবস্থান কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন, তা জনগণ জানতে চায়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.