যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবী করছি একটা স্বাধীন জাতি যখন সংকীর্ন রাজনৈতিক এবং ক্ষমতার দ্বন্দে বেহুশ হয়ে যায় - তখন কিভাবে ধীরে ধীরে পরাধীনতার শিকলে আবদ্ধ হয়ে যেতে থাকে তার ইতিহাস আমরা জানি। সিরাজের সিংহাসন আরোহনকে মেনে নিতে পারেনি মীর জাফর আর তার সাথে যোগ দেয় বেনিয়া উমি চাঁদ আর রায় দুর্লভ। ফলাফল আমরা দেখেছি স্বাধীনতার সূর্য্য ডুবে গেলো ২০০ বছরের জন্যে। যদিও পরে আমরা স্বাধীন হয়েছি - কিন্তু আমাদের অগ্রসর শ্রেনী ততদিনে ইংরেজদের কাছে নিজেদের আনুগত্য জমা দিয়েছে। সরাসরি শাসনের শৃংখল খুলে দিলেও আমাদের সমাজের অগ্রসর শ্রেনী তাদের প্রভু হিসাবে "সাদা চামড়া" আর "ইংরেজী"কে মনের মধ্যে ধরে রেখেছে।
যার ফলাফল আমরা দেখি ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াসেও আমাদের দেশের তথাকথিত শিক্ষিত শ্রেনী কোট টাই পড়ে মেকী সাহেব সাজেন - ৫২ এর ভাষা আন্দোলনের প্রতি ভক্তিপূর্ন আবেগী কথা বললেও নিজেদের মাঝে ইংরেজী বচন ব্যবহার করে নিজেদের "ইংরেজ" হিসাবে বনেদীপনায় আপ্লুত হন - সন্তানদের ইংরেজী মাধ্যমে পড়ায়।
তারা চিন্তায় পরাধীন - দেশে স্বাধীনের চল্লিশ বছর পরও দেশ নিজের পায়ে দাড়াতে পারেনি মুলত এই মেকি ইংরেজদের কারনে। দেশে গনতন্ত্রের কথা চালু আছে - কিন্তু কর্মক্ষেত্রে এরা সবাই এক একজন প্রভু সেজে বসে থাকে। যখন নিজের পায়ে দাড়ানোর মতো সুযোগ আসে - এরা ভয় পায় - অন্যকে ভয় দেখায়। অবশেষে নিজেদের আত্নসন্মান আর স্বাধীনতা বিজর্সন দিয়ে পশ্চিমা প্রভুদের পদ যুগলকে বুকে টেনে নেয়।
(২)
বিশ্বব্যাংকের সাথে সরকারের যে টানা হেচড়া চলছিলো - তাতে নানান জন নানান ফ্লেভার মিশিয়ে নিজেদের পক্ষে ঝোল টানতে চেযেছে। অনেকে আশা করেছে যে এর থেকে বিরোদীদল সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ফায়দা লুটবে। কিন্তু তারা বিশ্বব্যাংকে চিনে না। বিশ্বব্যাংক হলো পুঁজিবাদের অগ্রসর সৈনিক - যারা সারা বিশ্বে আমেরিকার বাজারকে নিশ্চিত করে। আজকে বাংলাদেশের সরকারী প্রতিষ্ঠান আর সরকারী কর্মকর্তারা যে আকন্ঠ ঘুষ দূর্নীতিতে ডুবে আছে তার জন্যে অনেকাংশে দায়ী বিশ্ব্বব্যাঙ্ক।
এরা স্বল্প সুদে ঋন দেয় - আর সাথে দেয় শর্ত। সেই শর্তের মধ্যে সবসময় ছিলো সরকারের খরচ কমানো এবং অবশ্যই বেতন ভাতা না বাড়ানো। ফলে জীবন যাত্রার মান বেড়ে যাওয়অর সঅতে পাল্লা দিতে গিয়ে সবাই দূর্নীতিতে হাতেখড়ি নিতে হয়েছে - অবশেষে লজ্জা যখন হারিয়েই গেছে - তাহলে আর থামা কেন। আর সেই বিশ্বব্যাঙ্কই যখন দূর্ণীতি সম্ভাবনার কথা বলে শর্তারোপ করে - সরকারকে দূর্বল করে দেশের আভ্যন্তরীর নীতি নির্ধারনে নিজেদের নিয়ণ্ত্রন নিশ্চিত করে - তখন দেখি একদল আনন্দে ভেসে যাচ্ছে।
এরা আসলে চিন্তা চেতনায় গোলামীর শৃংখল ভাংগতে পারেনি।
কেন দেশের সকল মত পথের মানুষ এক হয়ে বলতে পারেনি যে - ঋণ লাগবে না - আমরাই আমাদের সেতু বানাবো। ১৩ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ রেখে যারা ১.২ বিলিয়ন ডলার চার বছরে খরচ করে নিজেদের গর্বের সৌধ তৈরী করতে ব্যর্থ হয়েছে - তাদের জন্যে গোলামী ছাড়া আর কি পথ খোলা আছে?
বিশ্ব ব্যাংক ফিরে আসছে - এই খবরে বাংলাদেশের সরকারের ভিতরে একদল দালাল আর মিডিয়ার একদল দালাল যেভাবে আনন্দ উৎসবের আয়োজন করছে - তা দেখে সত্যই লজ্জা লাগছে। কিসের বিনিময়ে এরা বিশ্বব্যাংকে আবার নিয়ে আসছে? বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি আসবে - এরা এসে দুদকের সাথে চুক্তি করবে - এরা সরকারে সাথে চুক্তি করবে। সরকার রাজনৈতিক পরাজয়ের ভয়ে গোপনে তাদের সকল শর্ত মেনে নেবে। মানুষ বোকার মতো লাফাবে - আমাদের সেতু হচ্ছে।
সুযোগ সব সময় আসে না - একটা সুযোগ এসেছিলো দেশকে আবারো মুক্তিযুদ্ধের মতো ঐক্যবদ্ধ করে নিজেদেরকে বিশ্বের দরবারে একটা গৌরবান্বিত জাতি হিসাবে উপস্থাপনের। মালয়েশিয়া পেরেছে, আর্জেন্টিনা পেরেছে, ব্রাজিল পেরেছে - কিন্তু বাংলাদেশ পারলো না - কারন সংকীর্ন রাজনৈতিক বিভেদের সুযোগে ৪০ ডিগ্রীতে টাইসুট পড়ে থাকা দালালদের জন্যেই। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।