আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হরতাল ও গণমাধ্যম

তারুণ্যের শক্তিতে জাগুন এই দেশ। ছিনিয়ে আনুক নতুন সকাল হরতাল এলেই গণমাধ্যমে সাজ সাজ রব পড়ে যায়। হরতালের ইভেন্টগুলো কাভার করা গণমাধ্যমের দায়িত্ব। কোথায় কি হচ্ছে, সরকারের প্রচেষ্টা কি? বিরোধীদের প্রচেষ্টা কি তার সবগুলোই ছেকে আনা সংবাদকর্মীদের কাজ। সংবাদকর্মীরা সমাজের দর্পণ।

অতএব তারাই তো তুলে আনবেন বাস্তব চেহারা। তবে বর্তমান সময়ে এই দর্পণ আর তাকছে না। কাকে কাকের মাংশ খায় না অতএব সংবাদ কর্মীদের সমালোচনা বা তৎপরতা নিয়ে কোনো লেখা হয় না। অনেক ক্ষেত্রে সংবাদকর্মীরা ইভেন্ট তৈরিও করেন। যেমন হরতালের সময়গুলোতে কোনো টিভি চ্যানেলের গাড়ী চলতে থাকে পুলিশ অনুসরণ করে কারণ সংবাদকর্মীরা আগেই জেনে যায় কোথায় কি হবে? যেমন সকাল ৬ টা থেকে ৮টার মধ্যে যাত্রাবাড়ীর ইভেন্ট শেষ।

৮টা থেকে ১০ টার মধ্যে বাড্ডা, বিশ্বরোডে দু চারটা ককটেল ফুটবে। মিছিল হবে। ১০ থেকে ১১টার মধ্যে মিরপুর এলাকায়। কিছু ভাঙচুর হবে, মিছিল হবে ককটলেও ফুটবে। ১১টার পর হরতালের আর কোনো ঘটনা ঘটবে না।

তবে পরদিন হরতাল থাকলে বিকেলে কারওয়ান বাজারে কিছু ঘটনা ঘটবে। এই যে খবর আমি বলছি, ইচ্ছে করলে হরতালের দিনের ঘটনাগুলো মিলিয়ে নেওয়া যায়। অনেকসময় বিশেষ করে টিভি চ্যানেলের সংবাদকর্মীরা ফোন করেন নেতাদের- কি ভাই কোথায় কি হবে? আজ তো ভাল কিছু পেলাম না। তখন নেতা কর্মীরা সময় বলে দেন নির্দিষ্ট জায়গার কথা বলে দেন এবং সংবাদ কর্মীরা হাজির হয়ে যান। তার মানে সংবাদ কর্মীরা ইভেন্ট তৈরিও করেন বটে- খালি কাভার করেন না।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ। দিগন্ত টিভি অনুষ্ঠান কাভার করতে ববহার করেন অটোরিক্সা। কারণ লেভেল ওয়ালা গাড়ী ব্যবহার করলে পুলিশ অনুসরণ করবে। আবার এই অটোরিক্সায় খালি নিজেরা নয়, অন্য টিভি চ্যানেলের সাংবাদিকদেরও আমন্ত্রণ জানান। রিপোর্টার আর ফটোগ্রাফারা সিনেমার মতো এই দৃশ্য গুলো পায় কেমন করে এ প্রশ্নটা আমার বরাবরই ছিল।

কিন্তু যখন এক তরুন সাংবাদিকের কাছ থেকে এই ঘটনাগুলো জানলাম তখন মনে হলো বিষয়টি আমাদের বিবেচনায় আনা উচিত। অনেক সময় পিকেটারদের উদ্বুদ্ধ করেন কোনো কোনো রিপোর্টার। বিশ্বজিতকে যেদিন কোপানো হলো- সেদিনও একজন রিপোর্টারই বিশ্বজিত আহত অবস্থায় কোন পথে যাচ্ছে সেটি দেখিয়ে দিয়েছিল-- এটা সাংবাদিকরা জানেন। তাহলে বিষয়টি দাঁড়ালো কি? সংবাদ একটি পণ্য এবং যেন তেন প্রকারে এই পণ্য তৈরি করে আমাদের গেলাতে হবে। সাংবাদিকরাও বা কি করবেন? এ রকম দু একটা ছবি না পেলে তার তো চাকরি থাকবে না।

দুই দিনের হরতাল শুরু হবে কাল সকাল থেকে। এই রুটিন বা তৎপরতা আমরা দেখতে পাবো সারা দিন। গণমাধ্যম কর্মীরা উস্কে দেবেন ঘটনা ঘটানোর জন্য যাতে একটা ভাল ইভেন্ট কাভার করা যায়। হরতালও তাহলে একটা ইভেন্ট? এক প্রাণবন্ত আকর্ষণীয় হরতাল করার জন্য যা যা করা দরকার তাই করা যাবে। আমি জানি আমাদের সাংবাদিক বন্ধুরা ভীষণ ক্ষেপে যাবেন এই লেখা পড়ে।

আর আমারা এই তথ্যগুলো যদি মিথ্যে হয় তাহলে আমি নিজেই সবচেয়ে বেশি খুশী হবো। কাক কি কাকের মাংশ খেতে চায়? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.