আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রূপকথার ধাঁধাঁ ::“বৌ” কে পাবে? উত্তর চাই!!!

পথ হারা পাখি কেঁদে ফিরি একা!!! ধাঁধাঁ-টি ফিলিপাইনের একটি বিখ্যাত রূপকথা। অনেক আগে পড়েছিলাম। ভুলিনি। আপনাদের ভালোলাগতে পারে এই প্রত্যাশায় দিলাম। রূপকথাটি শুনে দেখুন এবং ভালোলাগলে অবশ্যই উত্তর দিবেন।

দুই ভাই রাজপুত্র। একজন বড় ভাই অন্যজন ছোট ভাই। বড় ভাইয়ের শিকার করার বেশ রকম শখ। একদিন বড় রাজপুত্রের ইচ্ছে হলো গহিন বনে শিকার করতে যাবে। এই কথা শুনে ছেট ভাই অর্থাৎ ছোট রাজপুত্রও বড় ভাইয়ের সাথে শিকারে যেতে চাইলো।

সেই সাথে বড় রাজপুত্রের স্ত্রীও স্বামীর সাথে যাবার জন্য প্রচন্ড আকুতি মিনতী করলেন। বড় রাজকুমার শেষ পর্যন্ত তার স্ত্রী এবং ছোট ভাইকে শিকারে নেবার জন্য সম্মতি দিলেন। তিনজন বেশ আনন্দের সাথে গহিন বনের দিকে রওয়না হলেন। নির্জন এক বনে একটি ছোট কুড়েঘর খুঁজে পেলেন। কুড়েঘরের সামনে চমৎকার একটি সচ্ছ পানির জলাশয়।

কয়েকদিন ওখানেই থাকার বন্দবস্থ করলেন। রাত শেষে সকাল হলো। যখন বড়রাজ কুমার শিকারে যাবেন ছোট ভাইও প্রস্তুতি নিলেন বড় ভাইয়ের সাথে যাবার জন্য। বড় রাজকুমার ছোট রাজকুমারের উদ্দেশ্যে বললেনঃ “শোন্ ছোট! তুই আর আমি যদি একসাথে শিকারে যাই তাহলে তোর ভাবির যদি নিরাপত্তার সমস্যা হয়, বনে এমনিতেই যন্ত্রু, জানোয়ার, সাপ-কোপের ভয় আছে। তুই তোর ভাবিকে দেখিস, তারপর পালাক্রমে তুইও শিকারে বেড় হতে পারবি।

” অনিচ্ছা সত্বেও বড় ভাইয়ের আদেশ আর ভাবির নিরাপত্তার জন্য ছোট ভাই থেকে গেলো। সকাল গড়িয়ে বিকাল হলো। বড় রাজকুমার শিকার থেকে ফিরে এলো। এসে দেখে কুড়েঘরের সামনের ছোট্ট জলাশয়ে তার স্ত্রী গোসল করছে। আর ছোট ভাই সবেমাত্র গোসল করে উঠেছে।

বড় ভাইয়ের চোখ ছানাবড়া। মানুষের মনতো! বড় রাজকুমারের মনে হঠাৎ করে সন্দেহের বীজ প্রস্ফুটিত হলো। তিনি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলেন না। বড় রাজকুমার বর্জ্র চিৎকারে গর্জে উঠে ছোট ভাই ও স্ত্রীকে বললেনঃ “আমি স্বপ্নেও ভাবিনি তুমি এত বড় চরিত্রহীনা। ছিঃ ছিঃ ছিঃ।

” অবলা নারী এই মিথ্যে অপবাদের রেশে কেঁদে দিলেন। বড় রাজকুমার একটুও না দমে ছোট ভাইয়ের উদ্দেশ্যে বললেনঃ “তুই তো আমার ভাই। এই ছিলো তোর মনে। ” ছোট রাজকুমার আর সহ্য করতে পারলেন না। বড় ভাইকে বললেন- “ভাইয়া! তুমি কিন্তু মিথ্যে সন্দেহ করছো।

ভাবি আমার কাছে পরম পূজনীয়। তোমার মন এত নিচ। ” বড় রাজকুমার কেমন যেনো হয়ে উঠলের। খাপ থেকে চকচকে ধারালো তরবারি বেড় করে বললেনঃ “ছোট! এখন তোদের দু’জন কে কতল করা ছাড়া আমার উপায় নেই। তুই তো জানিস।

কিছু কিছু অপরাধের ক্ষমা হয় না” ছোট রাজকুমার বললেনঃ “ভাইয়া! তুমি মিথ্যে অপবাদ দিচ্ছো। এখনও বলছি নিজেকে সামলাও। যদি তুমি আমার কোনো দোষ প্রমান করে কিংবা বড় সত্যি কোনো অপরাধের জন্য আমার সামনে তরবারি ধারণ করতে আমি নিজ ইচ্ছায় মাথা পেতে দিতাম। যেহেতু তুমি আমার নির্দোষ ভাবি আর আমাকে মারতে চাচ্ছো। আমিও ন্যায়ের জন্য তোমার সাথে তরবারী ধারন করতে প্রস্তুত” বড় রাজকুমারের সন্দেহ একটুও দমলো না।

ছোট রাজকুমার তার তরবারী বেড় করলেন। দুই ভাইয়ের মধ্যে শুরু হয়ে গেলো তুমুল যুদ্ধ। অবলা বেচারীর তাকিয়ে দেখা ছাড়া উপায় নেই। যুদ্ধ চলছে তো চলছে। দুজনেই সম মাপের যোদ্ধা।

কেউ কাউকে ধরাশায়ী কিংবা দুর্বল করতে পারছে না। হঠাৎ এক আশ্চর্য কান্ড ঘটল। দুজন একই সাথে শরীরের সমস্ত বল দিয়ে ঘার উদ্দেশ্য করে তরবারী চালালো। তরবারীতে তরবারীতে ঘষা লাগার কথা। কিন্তু টাইমিং মেলেনি।

ফলাফল হলো দু’জনেরই শরীর থেকে মাথা আলাদা হয়ে গেলো। বড় রাজকুমারের স্ত্রী বিলাপ করতে লাগলেন- “ হে জীবন দেবতা এ-কি হলো। একদম বিনা কারণে দু’টো ভালো মানুষের প্রাণ গেলো। আর আমি বিধবা হলাম আর সেই সাথে এই গহিন বনে আমি কি করবো!!!” জীবন দেবতার মায়া হলো। তিনি ঐ অবলার কাছে মানুষ্যরূপ নিয়ে এসে বললেন- “মা’গো তুমি কোনো চিন্তা করো না, আমি দুই ভাইকে জীবিত করে দিচ্ছি।

তুমি শুধু ওদের শরিরের সাথে মাথাটা ধরে রেখো। আমি মন্ত্র পড়ার সাথে সাথে জীবিত হয়ে যাবে। " দু’জনেই জীবিত হয়ে গেলো। কিন্ত একটা ভুল হয়ে গেলো। তারাতারি করতে গিয়ে ও ভালোভাবে লক্ষ্য না করার কারণে ছোট ভাইয়ের শরীরে বড় ভাইয়ের মাথা আর বড় ভাইয়ের শরীরে ছোট ভাইয়ের মাথা লেগে গেলো।

এখ আপনাকে বলতে হবে- “বৌ-টি কে পাবে?” ছোট ভাইয়ের শরীরে বড় ভাইয়ের মাথাওয়ালা মানুষটি নাকি বড় ভাইয়ের শরীরে ছোট ভাইয়ের মাথাওয়ালা মানুষটি? ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৮২ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।