আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হিমু থানায়

একজন বাস্তববাদী মানুষ আজ আবার বেশ গরম পড়ছে । অনেক রৌদ্র । এই রৌদ্রকে বলে কাক মরা রোদ । রাস্তার পাশ দিয়ে হাটছি । একটু দুরেই আখের রসের দোকান ।

আখের রস খাচ্ছি । সাথে বরফ কুচি । বেশ আরাম লাগছে । এমন সময় পিছন থেকে কে যেন ডাকল । এই যে হিমু ভাই ।

ও, তমাল। বাদুরতলা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ছেলেটা । বেচারা গালফ্রেন্ড নিয়ে ব্যাপক ঝামেলাতে আছে। আরেকটা রসের গ্লাসের জন্য বললাম। দোকানি দিয়ে গেল।

ছেলেটা বলছিল তার কথা। যাকে সে পছন্দ করে সে প্রেমেই রাজি না। হুম। মেয়েটার নাম কি? শিলা। আমাদের অনেক দিনের পরিচয় ।

আমরা কথাবাতায় অনেক ক্লোজ হয়েছিলাম। কিন্তু এখন সে বলে যে সে ইন্টারেস্টেড না । হুম। । পারলে আমার জন্য কিছু করবেন ।

হুম। । ছেলেটা চলে গেল। আজকালকার ছেলেরা এর মত মোটেই ব্যাকডেটেড না । একদিন সকাল।

হঠাৎ কুক্করুত কুক্করুত শব্দ । মাজেদা খালার ফোন । হ্যা্লো হিমু, তুই কই রে। একটা ইন্টারেস্টিং ব্যাপার আছে। তুই তাড়াতাড়ি বাসায় আয়।

বাসায় ঢুকতেই খালা এক গাল হেসে বললেন, ড্রয়িং রুমে আয় । যা ঘটেছে তা হল, তোর খালুর ফুফাত ভাই এসেছিল আমাদের বাসায়। ও আমাকে বলে খালুর টয়োটা কারটা নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছিল। তোর খালু গাড়ি খুজে না পেয়ে পুলিশকে ফোন করল। এখন উনি পুলিশের হাতে আটক।

এই ত? ঠিক ধরেছিস। আমার সাথে থানার দারগার কথা হয়েছে। তুই একটু যা। তোর খালু যেতে রাজি হচ্ছেনা। থানায় দারগা সাহেব এর সাথে কথা হচ্ছে ।

তিনি আমার দিকে না তাকিয়েই বসতে বললেন। তোমার নাম ? হিমু। পুরা নাম হিমালয়। তিনি বেশ মনোযোগের সাথে পত্রিকার পাতায় চোখ বুলাচ্ছেন। তার ভুড়িটা টেবিল এর সাথে ঠেসে ধরে বললেন, আচ্ছা হিমু, পত্রিকার দুটা বিষয়ের মাঝে পাথক্য বলোতো।

জি। “সরকারের কালো টাকা সাদা করার প্রক্রিয়ার বৈধতা” আর “বাদুরতলা বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষাথী শিলা দিতীয়বারের মত আপত্তিকর অবস্থায় ভদ্রা থেকে পুলিশের হাতে আটক” এর মাঝে পাথক্য কি? একটা মানুষের আধুনিক প্রবৃত্তি, আরেকটা আদিম । অসাধারণ। ও। তোমার আগমনের কারণ কি? একজন লোক গাড়ি সহ আটকা পরেছেন।

দারগা সাহেব এবার ও না তাকিয়ে বললেন , ওকে অলরেডি দুবার ডলা দেয়া হয়েছে। কিছুতেই বলতে রাজি না তার দলের লোকদের কথা। ওকে রিমান্ডে দেয়া হবে। ঢাকা থেকে স্পেশাল টিম কল করা হয়েছে। এবার আমার দিকে তাকালেন।

ও আপনাকে বসিয়েই রেখেছি। কি খাবেন? চা না কফি? এমন সময় দারগা সাহেবের ফোনটা বেজে উঠল। তিনি উঠে কথা বলতে বলতে চলে গেলেন। আধা ঘন্টা পর এক জন চা নিয়ে এসে বললেন, দারগা সাহেব আজকে আর আসবেন না। উনি স্ত্রীর সাথে শপিং এ গেছেন।

আমি থানা থেকে বের হয়ে হাটা শুরু করলাম। আজকের বিকালটা পদ্মার পাড়ে কাটালে ভাল হয়। দক্ষিণা বাতাসের সাথে রুপবতীদের মিলন মেলা। (চলবে……) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।