আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অপ্রিয় সত্য

আলেমদের অনৈক্যে ইসলাম যা হারালো .চৌধুরী হাফিজ আহমদ /মুসলিম বিশ্বে যে অনৈক্য বা কোন্দল লক্ষ্য করা যায় তার কারণ নির্ণয় করা প্রায় অসম্ভব হলেও একটি ব্যাপারে মোটামুটি ধারনা করা যায়। ইসলাম শান্তির ধর্ম তার মাঝে কোন ফাঁক নেই। যাহারাই আজ সমাজে বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র বা কোন্দলে লিপ্ত রয়েছেন তা মোটেই ইসলাম ধর্মে নেই। যদিও ধর্মে নেই তবুও কুচক্রিরা মুসলমান পরিচয় দিয়ে ধর্মের দোহাই দিয়ে তাহারা তাদের অপ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তাহাতে যে ক্ষতি হচ্ছে তা উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর।

আর এ সবের মূলে যে কারণটি রয়েছে তা হলো আলেম সমাজের ইখতেলাফ বা অনৈক্য। এ কথাটি ধ্রুব সত্য যে আলেমরাই হচ্ছেন ওরাসাতুল আম্বিয়া। তাহারাই সমাজের কর্ণধার। তাই বলে আলেমদের মধ্যে ছোটখাটো মত পার্থক্য থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। আলেমদের মত পার্থক্য রহমত স্বরূপ।

এই কথাটি যে তাৎপর্য নিয়ে ব্যাপক শাস্ত্রীয় মর্যাদা লাভ করেছিল তা আগেকার উলামায়ে কিরামগণ যথার্থ প্রমাণ করে গেছেন। ইসলামের ব্যাপক প্রসারের সাথে সাথে সমকালিন দেশে দেশে যে সমস্যা দেখা দেয় এসব সমস্যার কুরআন সুন্নাহ সম্মত সমাধানের নাম ইজতিহাদ- আর এই ইজতিহাদের বিজ্ঞান ভিত্তিক রূপ হল ইলমে ফিকহ উসুলে ফিক্্হ তারিখে ফিকহ। এসব সমস্যার কুরআন হাদিস ভিত্তিক সমাধান দিতে গিয়ে ইমাম, ফকীহ-মুজাদ্দিদ মহাদ্দিস ও মুফাসসিরগণ যে চিন্তা ভাবনা ও গবেষণা করেছেন তাই ইজতিহাদের ফসল। চিন্তা গবেষণার ক্ষেত্রে মনীষীগণ প্রায়ই মতপার্থক্য করতেন। মতপার্থক্য করায়ই সমাধানের উপায় উপদানা বৃদ্ধি পায়।

ফলে তাদের মতপার্থক্য প্রকারান্তরে রহমত রূপ লাভ করে। কুরআনের তাফসিরে, হাদীসের ব্যাখ্যায় এবং ইজতিহাদে তারা কোন কোন ক্ষেত্রে একে অপরের বিরোধী মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু বিরোধী মনোভাবকে তারা কখনও ঘৃণা-অশ্রদ্ধা বা কটাক্ষ করেননি। বরং পরম শ্রদ্ধা ও অধিক মর্যদার সাথে বিরোধী মতবাদের সঠিক মূল্যায়ন করেছেন। তারা এত উদার ও ন্যায় পরায়ন ছিলেন যে একজন সামান্য লোকের বিরোধী মতামত কুরআন ও হাদীস ও যুক্তির ভিত্তিতে অধিক গ্রহণযোগ্য হলে তা গ্রহণ করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করতেন না।

***************** হলেও সত্য যে আজকের **************** বিলকুল বিপরীত। বর্তমান যুগের আলেম সমাজ অবহেলিত নিপীড়িত ও নিগৃহীত, তাতে কোন সন্দেহ নেই। এই অবহেলার মূল কারণ নির্ণয় করা তার প্রতিকারের ব্যবস্থা করাই ছিল বর্তমান আলেম সমাজের কর্তব্য- বা দায়িত্ব। মসজিদ মাদ্রাসা খানকাহ জ্বিন সাধনা দোয়া তাবিজ ঝারফুক ও মিলাদের উপর নির্ভরশীল আলেম সমাজ অচেতনায় এতো মগ্ন যে নিজেদের অবহেলিত জীবন পদ্ধতির উপলব্ধি পর্যন্ত হারিয়ে ফেলেছেন। যেখানে সামাজিক অবমাননা থেকে নিজেদের উদ্ধার করে নিজ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হওয়ার জন্য ঐক্যবদ্ধ প্রচেস্টা করা উচিত সে সময়ে তারা নিতান্ত তুচ্ছ ব্যাপার নিয়ে এমন সব কান্ড করেছেন যা দেখে খুব শত্রুরা পর্যন্ত হাসি সঙবরণ করতে পারছে না।

দোয়াল্লিন- যোয়াল্লিন, আযানের দোয়ায় হাত উঠানো-নামানো-কিয়াম-লাকিয়াম-টুপি লম্বা কিংবা গোল হওয়া-কোর্তা ছোট বড় হওয়া মাযহাব মেনে চলা না চলা-দেওবন্দী-বেরলভী, ওয়াহারী। নষামী জৌনপুরী- খারেজী-ছুন্নি-এসব সামান্য ব্যাপার নিয়ে আলেমগণ একে অন্যের বিরুদ্ধে যেভাবে ঝাপিয়ে পড়েছেন তাতে আলেম নামের অপমানই হচ্ছে। এসব তুচ্ছ ব্যাপারে আলেম সমাজ দলে উপদলে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এ সব সামান্যই বলতে হবে যে সমাজে হত্যা, নারী নির্যাতন, ধর্ষন, চুরি, রাহাজানী, শয়তানী অহরহ চলছে। তাদের সাথে যোগ দিয়েছে কিছু সংখ্যক সরলমতি সাধারণ লোক।

সরল নিরক্ষর কিংবা ইসলামী শিক্ষা বিবর্জিত কিছু সংখ্যক শিক্ষিত লোকদের সমর্থনকে সম্বল করে দলের নেপথ্যে আলেম নেতা ভিন্ন মতাবলম্ব ধর্মীয় দলের উপর সরাসরি আক্রমন করে বসেছেন। যারা তুলনামূলক ভাবে কিছুটা সংযত তারাও এ ব্যাপারে নিষ্ক্রিয়তায় দলের সংযত নেতা অপর দলের নেতা ও অনুসারীদের কাফের ফাসেক-বেইমান-মুরতাদ ইত্যাকার ফতওয়াবাজী করে আত্মপ্রসাদে মত্ত্ব-ইদানিংকালে পাক ভারত বাংলাদেশ ও উপমহাদেশে ওলিকুল শিরোমনি আল্লাম মোজাদ্দিদে মিল্লাত, হাদিয়ে যামান- মুরশিদে মুকাম্মিল- হুজুরে আলা- ক্বিদওয়াতুছ ছালিকিন- যুবদাতুল আরেফিন- আশেকে রাসুল জেহাদী আনসারী যুক্তিবাদী চিশতিয়া গাউসিয়া ইত্যাদি লকবধারীদের সংখ্যক এতো বেড়ে গেছে যে- যত্রতত্র এসব লক্ববধারীদের বিজ্ঞাপন, সাইবোর্ড ও ক্যানভ্যাসার পাওয়া যায়। কিছুদিন আগের সাথী --- দেখা গেছে প্রত্যেক মুরদিই নিজের পীরকে একজন মুজাদ্দিদ মুর্শিদে ুকামেল কিংবা হাদিয়ে জামান হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে চোখ বন্ধ করে অনুকরণ কিংবা অনুসরন করে থাকে। অথচ এ দুর্লভ অমূল্য লকব ধারী তথাকথিত মুজাদ্দিদ তো দূরের কথা সাধারণ মুসলমানের খাতায়ও তাদের নাম থাকাটাই দুষ্কর। এসব হুজুরে আলার বেশধারী নাম সর্বস্ব আলেম কিংবা পীর সমাজকে এভাবে প্রতারিত করছে।

আলেম নামের অন্তরালে এরূপ কলংকজনক তৎপরতার পরিনতিতে, সাহিত্যিক সাংবাদিক, উপন্যাসিক, গলপকার, প্রবন্ধকাররা সমগ্র আলেম সমাজ তথা ইসলামকে উপহাস ও হেয় প্রতিপন্ন করে তাদের লেখনী চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে জনগণ বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ ও জ্ঞানীগুণী পন্ডিতদের একটা অংশ আলেম তথা ধর্ম বিমুখ হয়ে যাচ্ছে। আরেক শ্রেণীর নাম সর্বস্ব আলেম পীর বা হুজুর কিবলাহ নাম নিয়ে অত্যন্ত বিলাস বহুল জীবন যাপন করছেন তা আদৌ ইসলামে সমর্থনযোগ্য নয়। মুরীদের আর্থিক অবস্থা ও সংখ্যার উপর এমন পীর কিবলার অবস্থা স¤ন্ন নির্ভরশীল। সুতরাং অপেক্ষাকৃত অবস্থা স¤ন্ন মুরীদানের প্রতিই তিনি সংবেদনশীল।

হুজুর কিবলাহ নিজের পীর বা ওয়ালেদ মহতরম থেকে পাওয়া কিচু তাবিজ ও বিভিন্ন উদ্ভট তদবীরের মাধ্যমে ব্যবসায়ে উন্নতি কাজের সফলতা, মোকদ্দমার রায় বিপদে মুক্তি, পুত্র সন্তান লাভ ভাগ্য গণনা, যা কোরান হাদীস বিরোধী ইত্যাদির প্রভাব ফেলে মুরীদকে মাঝে মধ্যে মোহান্ধ করে ফেলে। আর মুরিদও আবেগের বশবর্তী হয়ে তাকে ফেরেশতা সমতুল্য জ্ঞানে ভত্ িও শ্রদ্ধা করে। তাকেই ইহ ও পরকালের মুক্তির কান্ডারী মনে করে আত্মতৃপ্তি লাভ করে। পীর বাবা মুরিদের দেওয়া হাদীয়া ও নানা ধরনের উপহার সামগ্রীর ক্ষেত্রে হালাল ও হারামের বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা না করে অমৃত সুধার মত তা সেবন করতে থাকেন। মুরীদ হুজুর কিবলার দৃস্টি আকর্ষণের জন্য অনেক মূল্যবান দ্রব্য সামগ্রী ও আকর্ষণীয় হাদিয়ার ব্যবস্থা করে থাকে।

এসব তথাকথিত পীরকেবলা দের কোরআন সুন্নাহ বিরোধী ভ’মিকার প্রেক্ষিতে সমাজের এক শ্রেণীর লোক অপকর্ম করতে কোন দ্বিধাবোধ করেন না। অবৈধ উপায় অবলম্বনকারী কন্ট্রাক্টর ইঞ্জিনিয়ার সাপ্লায়ার, ই¤োর্টার, মিনিস্টার, ঘুষখুর জুয়াপরী বিদেশী দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী, ধনপতি, চাকুরিজীবী ও মদ বেবশায়ীরা মহামূল্যবান হাদিয়া সহ হুজুরের হুজরায় উপস্থিত হলেন। পীর ওলিয়ে কামেল হুজুর কেবলা বৈধ-অবৈধের কোন প্রশ্ন উল্টা পন্্ না করে বিনাবাক্যে লোভনীয় আকর্ষণীয় হাদিসগুলো পকেটস্থ করলেন। হাদিয়া পেশকারী লোকদের সর্বাঙ্গ জাতীয় স¤দ আত্মসাতের ও হারাম ব্যবসার পাপে ভর পুর হওয়া সত্ত্বেও তার দৃঢ় বিশ্বাস যে যামানার হাদিয়ে জামান মোজাহিদে মিল্লাত আমার পীরানে পীর অতিশয় সন্তুস্ট। সুতরাং আমার পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে না- জান্নাত আমার অতি কাছে হাত বাড়ালেই পেয়ে যাব।

এভাবে এসব হুজুররা দুর্নীতিপরায়ন ধনাঢ্য শ্রেণীকেও অবেধ কাজে পরোক্ষভাবে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। আরেক শ্রেণীর আলেম আছেন যারা মুরব্বইয়ানে কেরামগণের প্রতি এতো শ্রদ্ধাশীল যে তারা সত্যিকার অর্থে কোরআন হাদীসের অনুসরণ করছেন কি না তা উপলব্ধি করা কঠিন। এই শ্রেণীর আলেমরা কথা-বার্তায় বক্তৃতা বিবৃতিতে উঠা বসায় চলাফেরায় শুধু বুযুর্গানে দ্বীনের উদ্ধৃতিই দিয়ে থাকেন। মনে হয় যেন তাদের কাছে কোরআন হাদীস গৌন আর বুজর্গানে দ্বীনের কথা মুখ্য। যেমন করে অনেক বুজুর্গানে দ্বীনের আবিস্কৃত উসুল ও ৪/৫ চিল্লাকেই ধর্মের একমাত্র খেদম ত বা মাপ কাঠি মনে করেন।

অন্য কোন খেদমতের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা বা গরজ নেই এবং সেসব করে খেদমতের প্রয়োজন আছে বলে তারা মনেও করেন না। অথচ এই উসুল ভিত্তিক জীবন পদ্ধতিতেও ইসলামের চিন্তা গবেষণা, জ্ঞান বিজ্ঞান জেহাদী চেতনাকে বিসর্জন দিয়ে প্রকারান্তরে যারা মানুষকে একটি অসহায় নির্জীব প্রাণী মনে করে থাকে তাদেরই চিন্তা বিকাশে সহায়তা করা হয়। ফলে সমাজের একটি অংশ ইসলামের বিশালত্য সুদুর প্রসারিত ও চিরন্তন তা ও স্বাশত তাকে স¤ূর্ণ অস্বীকার করে সংকীর্ণ গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চায়। আলেম সমাজের উল্লেখিত অস¤ূর্ণ বৈধ অবৈধ তৎপরতার প্রতিক্রিয়া সমাজের শিক্ষিত অশিক্ষিত লোকেদের উপর প্রকট হয়ে উঠে। অশিক্ষিত লোকেরা সঠিক পথের পথিকৃত অনেক আলেমদেরকে হুবহু অনুসরণ করতে থাকে।

শিক্ষিত লোকদের এক শ্রেণীর ধর্মের বাহকদের অবহেলিত হীন অবস্থা দেখে বিসদৃশ মনে করে একে বিসর্জন দেয়। ধর্মকে প্রগতি, উন্নতি ও উচ্চাভিলাসের অন্তরায় মনে করে। সুতরাং ধর্ম নেশাগ্রস্ত আফিম নাস্তিকব্যবাদের এ সেøাগানের সাথে তাহারাও সুর মেলায় এবং মুসলমানদের বেশে নাস্তিক্যবাদের পদলেহন করতে থাকে। সালমান রুশদী তাসলিমা নাসরিন, হুমায়ুন। দাউদ হায়দারদের কলপনা বিলাস লেখা ও উদভ্রান্ত ও উদ্ভটকারিদরে লেখা কবিতা বুশ সহ বিশ্ব নেতৃত্বের মানবতা বিবর্জিত উক্তি এর সাথে মুসলিমদের কিছু কিছুর আস্তালন পূর্ণ উক্তি এসব নাস্িতক্যবাদের বহিঃপ্রকাশ।

সমসাময়িক জ্ঞান বিজ্ঞান, অর্থনীতি, রাজনীতি, চেতনা বর্জিত পীর বা বুজর্গ পুরস্তেিত নিমজ্জিত কারো কারো ভ’মিকায় শিক্ষিত লোকদের আরেক শ্রেণীর ধর্মের সাথে রাজনীতি, অর্থনীতি অংক ভুগোল, বিজ্ঞান, চিকিৎসা, ক¤িউটার বিদ্যার আদৌ স¤র্ক নেই বলে দৃঢ় বিশ্বাস, রাজনীতি, অর্থনীতি, পরিবার নীতি এগুলো কদর্য্য বৈষয়িক দুনিয়াদারী। ধর্ম পবিত্র স্বর্গীয় পরলৌকিক। সুতরাং পবিত্র ধর্মের সাথে রাজনীতি, অর্থনীতির মত অপবিত্র জিনিষের মিশ্রণ হতে পারে না। এ দর্শনের উপর ভিত্তি করেই এ শ্রেণীর শিক্ষিত গণের মতামত তাদের কথায় ও আচরণে মূর্ত হয়ে উঠে। তারা সদা সর্বদা কোন পীর বা বুজর্গ কর্তৃক দেওয়া উসুল বা তরীক্বার নির্ধারিত যিকর আযকার, মোরাক্বাবা, মোশাহাদায় আত্মনিবেদিত।

তাদের বদ্ধমূল ধারণা, হুজুর বা মুরব্বীদের বেটে দেয়া দোয়া তাছবীহ, নিয়ম উসুলই মুক্তির একমাত্র উপায়। ধর্মীয় চিন্তা-গবেষণা, রাজনীতি অর্থনীতি, জনসেবা ইত্যাদি ইবাদত আখেরাতের মুক্তির তেমন কার্যকরী উপাদান নয়। আলেম সমাজের মনগড়া তৎপরতায় কিংবা অস¤ূর্ণ ভ’মিকায় অথবা যুগপোযোগী কার্যকর কর্মসূচীর অভাবে যদি সমাজে রুশদী মার্কা লেখক কামরুল মার্কা শিলপী, সামসুর রাহমান ব্রান্ড কবির সৃস্টি হয় কিংবা ধর্মনেশা গ্রস্ত আফিস এর সেøাগান দেওয়া হয় অথবা প্রবন্ধকার, লেখক, গলপকার, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, ঊপন্যাসিক, স¤পাদকদের কলমে ধর্মকে উপহাস করা হয় কিংবা ধর্মকে রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, পরিবার নীতি, চিকিৎসা, জ্ঞান বিজ্ঞান থেকে স¤ুর্ন বিসর্জন দিয়ে মসজিদ মাদ্রাসা, খানক্বাহ ও হুজরার চার দেয়ালে আবদ্ধ রাখার প্রবণতা দেখা দেয় তবে কি সে জন্য আলেম সমাজও দায়ী নন? আলেম সমাজের অপরিপক্কতার দরুণ অর্জিত অবমাননা থেকে নিস্কৃতি দেয়ার অভিপ্রায়ে, কুরআন হাদীসের অনুশাসনকে সামগ্রিকভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কোন মর্দে মুজাহিদ ধর্মের সমন্বয়ে কর্মের আহ্বান জানালে উপরোল্লিখিত রকমারী ভ’মিকা পালনকারী আ্মলেগণ তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠে তারা জনগণকে বুঝাতে থাকে এ একটা নতুন মতাবাদ। খবরদার। এদের খপ্পরে পড়লে ঈমান থাকবে না।

ইসলামের নামে তারা রাজনীতি করছে! তওবাা স্তাগ ফিরুল্লাহ! এসব জেঁকে বসা হুজুরগণ বিনাশ্রমে অর্বাচীন মুরীদের হাদীয়া তোহফায় পেটের মেদ বাড়াচ্ছেন। যুবক গদ্দিন শীন পীর কেবলা পিতৃতুল্য বৃদ্ধ মুরীদ দিয়ে হাত পা টেপাচ্ছে। আর এ পদ্ধতিতেই তারা ইসলামের একক মহা সাধক, খাদেম ও মস্ত বড় অলীয়ে কামেলের লেভেল শরীরে ধারণ করছেন। ইদানিং বিলঅতে পত্রিকান্তরে বিজ্ঞাপন দিয়ে নিজেকে আল্লাহর আবেদ জাহির করে সরল প্রাণ নাগরিকদের দোয়া তাবিজের কথা ও কোরআনী আমলের দ্বারা রোগ নিরাময় করার ঘোষণা দিয়ে রীতিমত প্রতারণা করা হচ্ছে। ক্যান্সার রোগের আনসার নেই আজো, এইডসের ভয়বহতা সহ অজানা অনেক রোগ যেখানে চিকিৎসকরা নিয়মিত গলদঘর্ম হচ্ছেন তার ঔষধ আবিষ্কষ্কার করার জন্প পবিত্র কালামুল্লাহে পর্যন্ত চিকিৎসা শাস্ত্রের উল্লেখ রয়েছে সেখানে ঐ সব বিজ্ঞাপনী খান্দানী পীর অলিরা ৭ দিনের মধ্যে সমস্যা সমাধানের গ্যারান্টি দিয়ে কোরআনের সাথে ধৃস্টতা দেখাচ্ছে।

ওাসুল (সঃ) বদর, ওহোদ, খন্দকের যুদ্ধে নিজে অংশগ্রহণ করে অকুতোভয়ে সৈন্য চালনা করেছেন, রক্ত দিয়েছেন, অনাহারে অর্ধাহারে জীবন ধারণ করেছেন। আর্তের সেবা থেকে রাজ্য পরিচালনা সব কাজই তিনি স্বহস্তে করেছেন। মসজিদ কিংবা খানকাহে বা হুজরায় বসে তাছবীহ তপজপ করে, ফুকের মাধ্যমে কোমল বিছানায় শুয়ে ইসলামী রাস্ট্র প্রতিষ্ঠা করেননি রাসুলের আদর্শ সার্বজনীন, সর্বকালের অবিনস্বর। এ আদর্শ অনুকরণের মধ্যেই ইসলঅমের সত্যিকার খেদমত নিহিত। হুজরা খানকাহ্্ কিংবা মসজিদে বসে যিকির আযকার, তালিম তাওয়াজ্জুহ, তাছবীহ তাহলীলের মাধ্যমে ইসলামের প্রসার হয়নি সুতরাং যারা খানক্বাহ বা হুজরাকে আকড়িয়ে ধরে ইসলাঅমের সহজ ক্লেশহীন পৌরহিত্য করছেন আর যারা এ থেকে বেরিয়ে এসে ইসলামের দুরুহ ও কস্টকর পথকে আকড়ে ধরার আহ্বান জানাচ্ছেন তাদের ডাকে সাড়া দিন।

আয়াসের ইসলামকে ছেড়ে বাস্তবতার ইসলামে আসুন। দেখবেন সারা বিশ্বে ইসলামের হারানো সোনালী যুগ আবার ফিরে আসবে শুধু মাত্র গুটি কতেক লোকের পৌরহিত্য করতে হবে না বরং সমগ্র জগতই আপনাকে সাদর সম্ভাষণ জানাবে। পৃথিবী স্বর্গরাজ্যে পরিণত হবে। আশার কথা যে, অনেক বিলম্বে হলেও কিছু আলেম উলামায়ে হক্কানী পীর মাশায়েখ বুজর্গ খানক্বাহ ছেড়ে ময়দানে পা রাখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে শুরু করেছেন। এ ময়দানে নিবেদিত প্রাণ ব্যক্তি ও উৎসাহ দাতাদের যারা পথ ভ্রস্ট বলে আখ্যায়িত করতেন, তাদের আজ সে ময়দানে কাজ করার প্রবণতা সত্যিই আশার আলো।

আমার বাসনা তারা যেন ময়দানে আবারও ভুল না করেন, গোঁড়ামী ও বুজর্গীর উচ্চাভিলাসে ছিটকে না যান। তারা যেন ব্যক্তিত্বের আবেশে নয় কুরআন হাদিসের সঠিক অর্থে কাজ করে যান। অতীতের নির্জনতা, নিস্ক্রীয়তা ও স্বহিংসতায় গোমরাহীর অযথা ফতওয়াবাজীর দরুন তওবা করা মহত্বের লক্ষণ। তুচ্ছ ব্যাপার নিয়ে আত্মহননে মত্ত্ব আলেম, ধর্মের নামে পেশাদারিত্বে নিমজ্জিত আলেম, অপূণাঙ্গ ভ’মিকা গ্রহণকারী আরৈম সকলের কর্ম তৎপরতার বৈধ অংশকে আমরা শ্রদ্ধাভরে স্বাগত জানিয়ে অতীব অবেধ ভ’মিকার জন্য তওবা করত ময়দানে ঝাপিয়ে পড়ার আহ্বান জানাই। আলেম সমাজের অনেকেই এখন দেশে বিদেশে ইসলামী আন্দোলনে প্রকাশ্যে অংশ নেওয়ার শপথ গ্রহণ করে নজীর স্থাপন করতেছেন।

শুধু শরিক হয়েই নয়, উন্মুক্ত ময়দানে সঠিক, যুগপোযোগী, কুরআন-হাদীস ভিত্তিক কর্মসূচীর আওতায় ইসলাঅমের বিজয় পতাকা উড্ডীন করার কাজে ব্যপৃত থাকুন। এটাই আজকের দিনে আকুল মিনতি। ালেলম সমাজ পার¯রিক ভোদাভেদ ভুলে এক কাতারে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ না করার দরুন গোটা ইসলঅমী সমাজ যা হারালো তার পুনরুদ্ধারের এটাই একমাত্র পথ যে আলেমদের এখতেলাফ ছিল রাহমত স্বরূপ সে এখতেলাফ আজ যেন যহমত (অভিশাপ) হয়ে না দাঁড়ায়। আসুন আমরা সবাই চেস্টা করি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.