আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্টিভ জবসের জীবনীর অনুবাদ-১

ব্লগিং শুরু করলাম ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিষয়েও রাখতে হবে দৃষ্টি আমি নিজে একজন ছোট উদ্যোক্তা। বিশ্বের বড় কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সফল উদ্যোক্তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা না থাকলেও পরিচয় আছে আমার। এদের দুটি বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয়। বড় উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ী হতে চাইলে সম্ভবত বেশি গুরুত্বপূর্ণ এগুলোই। প্রথমত. স্বপ্নদর্শী (ভিশনারি) হতে হবে আপনাকে।

ব্যবসার চড়াই-উতরাই সম্পর্কে ঠিকঠাক ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন। তা সত্ত্বেও একটা স্বপ্ন সামনে রেখেই স্বজ্ঞার (ইনটিউশন) সহায়তায় নির্ধারণ করতে হবে গতিপথ। আপনি যে পণ্য তৈরি করছেন বা করবেন, সেটির বর্তমান বাজার কেমন, ভবিষ্যতে কেমন হবে— বুদ্ধিমত্তা দিয়ে পুরোপুরি উপলব্ধি করা যায় না এসব। এ ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে হবে স্বজ্ঞাকে। আগে ভাবা হতো, এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই; এটি কুসংস্কার মাত্র।

এখন অনেক মনোবিজ্ঞানীই বলছেন, মস্তিষ্কের একটি ফ্যাকাল্টি (অংশ) আছে, যেটি তার দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও বুদ্ধিমত্তা অনুসারে অবচেতনভাবে মানুষের ভবিষ্যেক প্রভাবিত করে। স্বজ্ঞা মূলত এটিই। অনেক সফল উদ্যোক্তাকেই দেখেছি, যাদের মধ্যে বিষয়টি প্রবল। অনেক সময় বাজার বুঝতে না পারলে স্বজ্ঞা অনুসরণ করেন তারা; আবার সফলও হন। স্টিভ কিন্তু এটি ব্যবহার করতেন বিপণন কৌশলে; পণ্য ডিজাইনে তার বড় নির্ভরতা ছিল যৌক্তিক কল্পনাশক্তি।

তিনি একবার বলেছিলেন, ইতালিয়ান আমেরিগো ভেসপুচি যখন ১৪৯৭ সালে কলম্বিয়া (যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রদেশ) পৌঁছেন, তার কাছে ম্যাপ ছিল না। তিনি সেখানে এসেছিলেন শুধু বড় স্বপ্ন নিয়ে। আরেক ধরনের সফল উদ্যোক্তা দেখেছি, যারা স্বপ্নদর্শী নন অথচ ম্যানেজার হিসেবে অসাধারণ। এরা প্রতিষ্ঠানের ক্লিনার থেকে সিইও পর্যন্ত প্রত্যেক কর্মী সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজখবর রাখেন। কার কোথায় দুর্বলতা, কে কোনটায় দক্ষ— এসব তাদের নখদর্পণে।

এ ধরনের উদ্যোক্তা কর্মীদের ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারেন। আগাপাছতলা জানা থাকে বলে এরা ত্রুটি কৌশলের সঙ্গে লুকিয়ে পণ্যের গুণকেই আকর্ষণীয় রূপে উপস্থাপন করেন। স্টিভ কর্মীদের বিষয়ে সম্যক জ্ঞান রাখতেন। আবার সামান্য ত্রুটিযুক্ত পণ্যও তিনি ক্রেতাকে গছিয়েছেন, এটা কল্পনাতীত। তাহলে কোন দলে ফেলা যায় স্টিভকে? প্রশ্নটি করেছিলাম টাইম ওয়ার্নার গ্রুপের সিইও জেফ বিউকেসকে।

তিনি জবাব দিয়েছিলেন, দুটি গুণের অতুলনীয় সমন্বয় ছিল স্টিভের মধ্যে। সে আমার ব্যবসায়িক প্রতিপক্ষ ছিল; কিন্তু আশ্চর্য বোধ হতো যখন দেখতাম, এ ভদ্রলোক ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিষয়েও প্রখর দৃষ্টি রেখে একের পর এক যেন ‘স্বপ্নে পাওয়া’ পণ্য দেখাচ্ছেন বিশ্বকে। জেফের কথায় গুরুত্ব না দিয়ে উপায় কী! টাইম ম্যাগাজিন, ওয়ার্নার ব্রস ও নিউ লাইন সিনেমা, সিএনএন, এইচবিও, কার্টুন নেটওয়ার্ক টিভি চ্যানেলের মতো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে চালাচ্ছেন তিনি। স্টিভের বৈশিষ্ট্য ছিল তিনি প্রথমে স্বপ্ন দেখতেন; সেটিকে বড় করতেন মনের মধ্যে। তারপর সুযোগ পাওয়া মাত্র তার বাস্তবায়নে উঠেপড়ে লাগতেন।

আইম্যাকের (ম্যাক পিসি) মতো একটি ডিজিটাল হাবের স্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন সেই ১৯৭৬ সালে। কিন্তু তখনই সেটাকে বাস্তবে রূপ দেয়া সম্ভব ছিল না। ২০০০ সালে তিনি বুঝতে পারলেন প্রযুক্তির উন্নয়ন তার মনমতো স্তরে পৌঁছেছে। সে সময় পর পর আইপড, আইফোনের মতো পণ্য বাজারে ছাড়লেন— যেগুলোর ডিজিটাল হাব হলো আইম্যাক। এ সময় স্টিভ দেখেছিলেন আইক্লাউডের স্বপ্নও।

আমাকে বলতেন, দেখবে একদিন ইন্টারনেটে রাজত্ব করবে ক্লাউড কম্পিউটিং। সে সময় ইন্টারনেট অবকাঠামো কিন্তু ক্লাউডিংয়ের যথেষ্ট উপযোগী ছিল না। ফলে ২০১০ সালের দিকে স্টিভ যেই দেখলেন সুযোগ মিলেছে— গড়ে তুললেন এক বিশাল অ্যাপল সার্ভার আইক্লাউডস। স্টিভ নিয়মিত খোঁজখবর রাখতেন অ্যাপল ও পিক্সারের ছোটখাটো বিষয়েও। এমনটিও দেখা গেছে, মানবসম্পদ বিভাগ জানে না— আজ অমুক কর্মচারীর জন্মদিন।

কিন্তু স্টিভ হয় নিজে উপহারসহ চলে গেছেন তার বাড়িতে, নয় তো অফিসেই আয়োজন করেছেন অনুষ্ঠান। এসব কারণেও কর্মীরা তার প্রতি বিশ্বস্ত ও শ্রদ্ধাশীল থাকতেন। অ্যাপল পণ্যের বাহির ও ভেতরের ডিজাইন নিয়ে স্টিভ কেমন খুঁতখুঁতে ছিলেন, তা আগেই বলেছি। তবু ছোট একটা বিষয় বোধহয় বাদ পড়ে গেল। তা হলো, স্টিভ একবার কয়েক মাস ব্যয় করেছিলেন আইম্যাকের ভেতরের স্ক্রুগুলোর রঙ ও আকার নিয়ে।

জোনাথান আইভ তাকে যত ডিজাইন দেখান— কোনোটাই পছন্দ হয়নি। শেষে নিজেই বসে পড়লেন স্ক্রুর ডিজাইন ঠিক করতে। সূত্রঃ ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত দেখেন তো এই বাংলা শব্দগুলোর ইংলিশ জানেন নাকি? আমি জানি  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।