আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সোহেল ও স্বর্ণা

লেখতে পারি না ভাল কিন্তু পড়তে ভালবাসি স্বর্ণা নামের একটা মেয়ে ছিল। সে ছিল অনেক মোটা সোটা। কলেজে পড়তো যখন তাকে সবাই হাতির মত মুটকি বলতো। স্বর্ণার কোন দোষ ছিল না। সে ছিল অসুস্থ।

তাদের ফ্যামিলিতে এই অসুখটা অনেকের। অল্প ভাত খেলেও মোটা হয়। বান্ধবীরা তাকে এই নিয়ে খেপাইতো। একদিন স্বর্ণা মনের দু:খে জানালার পাশে বসেছিল। তখন তার বান্ধবী তাকে তোকাইতে লাগলো, এই মুটকি সইরা বস।

ইট ভেঙ্গে পড়বে। রিক্সা দিয়ে যখন সে যেতো তখন দুর থেকে ছেলেরা তাকে টিজ করতো। স্বর্ণা মনে মনে লাভ করতো একটা ছেলেকে। ওর নাম সোহেল। সোহেল স্বর্ণার বাসায় সামনে দিয়ে যাবার সময় স্বর্ণার দিকে চেয়ে থাকতো।

সোহেল জিন্সের প্যান্ট পরতো, সাথে টি শার্ট। অনেক খেলা ধুলো করতো, এজন্য সোহেলের শরীর ছিল খুব আকর্ষণীয়। আল্লাহ মেয়েদের কে অপেক্ষা করার শক্তি দেয় কিন্তু ভালবাসার প্রকাশ করার সাহস দেয় না। স্বর্ণা সোহেলের দিকে তাকিয়ে থাকতো। সোহেল কোন দিন স্বর্ণাকে দেখতো না।

একদিন স্বর্ণার এক বান্ধবী মুমু তার বাসায় বেড়াতে এসেছে। মুমু সুন্দরী মেয়ে। তার চোখ গুলো বড় বড় আর খুব স্লিম ফিগার। মুমুকে অনেক ছেলে পছন্দ করে। স্কুলে থাকতে তাকে চিঠি দিতো, এখন ফোনে জ্বালায়।

মুমু স্বর্ণাকে বললো, সোহেল তাকে ভালবাসে। স্বর্ণা শুনে খুব কষ্ট পেয়েছিল। সোহেলকে সে ভাবতো শুধু মাত্র তার। মুমু বলেছিল, সোহেল একদিন বাসার সামনে যাবার সময় তাকে একা পেয়ে প্রেম নিবেদন করে। মুমুও তখন রাজী হয়।

তারপরে যখন মুমু বাসায় চলে গেল স্বর্ণা গোপনে অশ্রুপাত করেছিল। স্বর্ণার যে বড় ভাই সে ছিল সোহেলের সমবয়সী। ভাইয়ার সঙ্গে কথা হতো যখন স্বর্ণা চাইতো সোহেল উপরে আসুক। একদিন বৃষ্টির দিনে ছেলে পেলেরা সবাই ঘিরে আসছে। ওর ভাই বলেছিল, সোহেল উপরে আসো।

সোহেল এসেছিল। তখন স্বর্ণা তাকে একটা টাওয়েল এনে দিয়েছিল। এক কাপ চা এনে দিয়েছিল। দুর থেকে সে সোহেলের জন্য উদাস হয়ে গেলো। তবে মুটকি একটা মেয়ে যত ভাল চা বানাতে পারুক তাকে কেউ দেখে না।

স্বর্ণা প্রতিদিনই সোহেল কে দেখতো। কিন্তু একবার অনেকদিন তাকে দেখতে পেল না। টেনশনে স্বর্ণা তখন কি করবে বুঝতে পারছিল না। অনেকদিন পরে সে ভাইয়ের সঙ্গে বাসায় ঢুকতে দেখলো সোহেল কে। দেখেই চমকে উঠেছিল।

কি সুন্দর ফর্সা ছেলেটার চাপা ভেঙে গেছে, চোখের নিচে কালি। স্বর্ণার ভাইয়া তখন একটু নিচে গেছে। তখনই স্বর্ণা চা বিস্কুট নিয়ে ঢোকে। তারপর বলে ভাইয়া, আপনি কি অসুস্থ। সোহেল বলে, না।

তাহলে এমন হল কি করে? স্বর্ণার আচরণে অবাক হয় সোহেল। মেয়েটার চোখের দিকে তাকানোর পরে চমকে ওঠে সোহেল। স্বর্ণা এত মোটা কিন্তু তার চোখের ভিতর অনেক মায়া মমতা। সোহেলের তখন মনে হয় সুন্দরী অণেক মেয়ে দেখেছে কিন্তু এত দরদ দিয়ে কেউ তাকে দেখে নি। সোহেল এর পর খুব ঘনিষ্ট হয়েছিল মেয়েটার।

বহু বছর পর স্বর্ণার সঙ্গে সোহেল চাঁদের আলোয় গল্প করতে বসেছিল। স্বর্ণার গর্ভে তখন একটা মেয়ে। দুজন দুজন কে ভালবাসে।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।