আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আরেকটি শাওন কাহিনী

যারা শাওন গসিপ পছন্দ করেন তাদের জন্য: [বাংলানিউজে ‘নুহাশপল্লীতে হুমায়ূনের দাফন, অন্তরালের ঘটনা’ শিরোনামে আবু তাহের খোকনের অনুসন্ধানী এবং তথ্যবহুল প্রতিবেদনটি পড়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পাঠক একটি প্রতিক্রিয়া পাঠিয়েছেন আমাদের ‍কাছে। তিনি হুমায়ূন আহমেদের মরদেহ বহনকারী এমিরেটস এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে হুমায়ূনের দ্বিতীয় স্ত্রী শাওনের সহযাত্রী ছিলেন। তিনি ওই ফ্লাইটে শাওনকে ঘিরে তার কিছু অভিজ্ঞতা বাংলানিউজের পাঠকদের সঙ্গে শেয়ার করতে চেয়েছেন। ই-মেইলে ইংরেজিতে পাঠানো ওই চিঠি এখানে বাংলায় তুলে ধরা হলো] “আমি লক্ষ্য করেছি, ড. হুমায়ূন আহমেদের দাফন নিয়ে খবরের অন্তরালের কিছু খবর আপনারা সামনে আনছেন। আমার মনে হয়, এমিরেটসের সেই ফ্লাইটে আমার দেখা কিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের সঙ্গে আমার শেয়ার করা উচিত; ওই ফ্লাইটে করে শাওন, তার মা ও তার দুই সন্তান যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরেছেন।

টুকরো টুকরো ঘটনার শুরু হয় দুবাই বিমানবন্দর থেকে, যা ছিল এ রকম: আমি সে সময় বিজনেস লাউঞ্জে ছিলাম। তবে শাওন ও তার পরিবারের কাউকে বিজনেস লাউঞ্জের কোথাও দেখলাম না। আমি ধারণা করলাম, এখানে তাদের সরকারের পক্ষ থেকে প্রথম শ্রেণীর টিকেট দেওয়া হয়েছে। ১০ মিনিটের মধ্যেই ওই পরিবারটি আমার দৃষ্টিগোচর হলো; তহুরা আলী এমপি তার দুই নাতির হাত ধরে এগিয়ে আসছেন। তার সঙ্গে শাওনের বয়সী এক তরুণীকেও দেখলাম (তবে তিনি ওই অভিনেত্রীর চেয়ে ঢের বেশি সুদর্শনা) এবং ওই তার সঙ্গে শাওনের চেহারার অনেক মিল।

তিনি হয় তো তার জ্ঞাতি বোন বা বড় বোন হবেন বলে আমার ধারণা। তাদের সঙ্গে আরো দুই বা তিন জন ছিলেন যাদের মধ্যে একজন পুরুষ; তিনি বিজনেস ক্লাস কেবিনের পেছনের দিকে একটি আসন নিয়েছিলেন। শাওন ঠিক তার মায়ের পেছনেই ছিলেন আর তাকে বেশ ফুরফুরে লাগছিল। তার চেহারায় কোনো শোকের বা বিষন্নতার ছাপ দেখতে পাইনি (ঢাকায় পৌঁছার পর আমরা তাকে যেমন দেখেছিলাম ঠিক তার বিপরীত)। তিনি (শাওন) প্রথমে প্রথম সারিতে বসলেন কিন্তু যেহেতু এটি একজন বাংলাদেশি সরকারি কর্মকর্তার জন্য বরাদ্দ ছিল তাই তিনি এবং তার সন্তানদের চতুর্থ সারিতে যেতে হল শেষ পর্যন্ত।

যখন আসন গ্রহণ করলেন, দেখা গেল বিজনেস ক্লাসের আরামদায়ক পরিসেবা ভালই উপভোগ করছেন। তখন তিনি তার বাচ্চাদের সঙ্গে খেলছিলেন। এমনকি তাদের সঙ্গে কৌতুকও করছিলেন। তহুরা আলীকে খুব ক্লান্ত মনে হচ্ছিল এবং তিনি বাচ্চাদের থেকে দূরে একটি আসনে বসেন। চার ঘণ্টার পুরো সময়টা তিনি ঘুমিয়েছেন।

ফ্লাইটের পরবর্তী অংশে বাচ্চারা তাদের মা এবং অন্য সেই মেয়েটির সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়ে। ওই ফ্লাইটে কয়েকজন জার্মান নাগরিক সিমেন্স কোম্পানির হয়ে ঢাকায় আসছিলেন। দেখা গেল, শাওন সুদর্শন এক বাংলাদেশি তরুণের সঙ্গে বেশ গর্বিত ভাব নিয়ে কথা বলছিলেন। তাদের আলোচনায় কান পেতে শুনতে পেলাম, ওই তরুণ একজন ব্যবসায়ী এবং তিনি যুক্তরাজ্য থেকে ফিরছিলেন। ঢাকায় বিমান থামার পর ওই তরুণ প্রথমেই বিমান থেকে নেমে অদৃশ্য হয়ে যান এবং শাওনও সম্ভবত খুব খুশি হলেন এ কারণে যে, তার এইসব প্রাঞ্জল অভিনয় দেখার জন্য ওই তরুণ শেষতক উপস্থিত ছিলেন না।

ঢাকায় আসার পর বাড়িতে বসে টিভিতে আমরা যে দৃশ্য দেখলাম তা ছিল ঠিক বিপরীত। ফ্লাইটে যা করেছিলেন আর ফেরার পর ক্রন্দনরত শাওন---দুটোকে মেলানো যায় না! আশা করি, আমার বর্ণিত এ অভিজ্ঞতা হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যু, তার মরদেহ দেশে নিয়ে আসা এবং দাফন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার অন্তরালের দৃশ্যপট সম্পর্কে অনুসন্ধিৎসু সবাইকে একটি পরিষ্কার ধারণা দেবে । বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১২ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।