আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যেখানে দেয়ালে হেলান দিয়ে চাঁদনী রাতে জোসনা দেখবেন, একদম একা।

অনেকটা ঝড়ের মতোই পেলাম সংবাদটা। তিনি আর নেই। চলে গেছেন সবাইকে ছেড়ে। না চাঁদনী রাতে তার প্রিয় নুহাশ পল্লিতে তার মৃত্যু হয় নি। নিউ ইয়র্ক এর হাই রাইজ বিল্ডিং এর মাঝে তার মৃত্যু হয়েছে।

যেখানে চাঁদনী রাতের কোন স্পর্শ ছিলোনা। সবার মত আমারও গল্পের বই পড়ার শুরু হয়েছে হুমায়ুন আহমেদ এর হাত ধরে। সেই “আমার ছেলেবেলা” দিয়ে শুরু। তার পর কত বই পড়া হয়েছে। তবে বই থেকে বেশি নাড়া দিয়েছিল তার “কোথাও কেউ নেই” নাটকটি।

সেই বাকের ভাইয়ের ফাঁসি কিংবা মুনার একাকীত্ব। সেই ছোটবেলায় তেই মনে গভীর রেখাপাত করেছিল। বাকের ভায়ের জন্য সেদিন আমিও কেঁদেছিলাম। তারপর এলো আজ রবিবার। কঙ্কা কিংবা তিতলি ভায়ার কথা কি করে ভুলি।

কিন্তু এ কি। শ্রদ্ধেয় মানুষটির নামে সবাই দেখি কানাঘুষা করে। মেয়ের বান্ধবীর সাথে নাকি তার প্রেমের সম্পর্ক। হেসে উড়িয়ে দেই। এ কি সম্ভব।

বন্ধুদের গালি দেয়। মিডিয়ার সৃষ্টি বলে বিশ্বাস করি। সে বিশ্বাস নিয়েই বেচে থাকি। ২০০১ অথবা ২০০২ সালের দিকের কথা। জনকণ্ঠ তে একটি খবর ছাপা হয়।

যাতে হুমায়ুন আহমেদ আর শাওন এর সম্পর্কের কথা ছাপা হয়। মিথ্যে বলে বিশ্বাস করি। কিন্তু একি! পরদিন স্যার এর উত্তর দেন। যাতে তিনি বলেন অভিনেত্রী শাওন এর কাছে তিনি লজ্জিত। তিনি রিপোর্ট কে হলুদ সাংবাদিকতা বলে আখ্যায়িত করেন।

কিন্তু এক বারের জন্যও “শাওন এর সাথে সম্পর্ক নেই এ কথা বলেন নি”। একটু হোঁচট খায় বিশ্বাসে। তবে চূড়ান্ত আঘাত আশে তার পরদিন। যেদিন প্রথম বারের মত মুখ খুলেন গুলতেকিন। যাতে কয়েকটি বিষয় পরিষ্কার হয়।

১. হুমায়ুন এবং শাওনের মাঝে সম্পর্ক আছে!!!!! এবং তা অনেকদিনের। ২. এ অসম সম্পর্ক থেকে বের হয়ে আসার জন্য তিনি নিজে, তার মেয়ে শিলা, বিপাশা অনেক বুঝিয়েছে। এবং কি জাফর ইকবাল স্যার পর্যন্ত অনেক বুজিয়েছেন। কিন্তু তিনি এ ঘোর থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন নি। সবসময় স্যার এর জন্য প্রার্থনা করতাম, যাতে সার এ ঘোর থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন।

আমার প্রার্থনা কবুল হয়নি। পরবর্তীতে তারা বিয়ে করেন। কি কারণে জানি না সবার মত আমিও সেদিন খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। সময় যেতে থাকে। একদিন খবর পাই হুমায়ুন স্যার ক্যানসারে আক্রান্ত ।

কলন ক্যানসার । যাতে রোগী সুস্থ হলেও ৫-৬ বছর এর বেশি বাচে না। অদ্ভুত এক কষ্ট পেলাম। এ ক্ষণজন্মা মানুষটি এর কয়েক বছর মাত্র বাঁচবেন!! স্যার সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আসলেন। ফিরে গেলেন তার নুহাস পল্লীতে ।

সান্নিধ্য পেলেন তার সন্তান্সম গাছগুলোর । আবার আমেরিকায় গেলেন চিকিৎসার জন্য। কিন্তু এবার হেরে গেলেন। ফিরে গেলেন না ফেরার দেশে। স্যার এবার থাকবেন তার সাড়ে তিন হাত এর নতুন ঘরে।

যেখানে দেয়ালে হেলান দিয়ে চাঁদনী রাতে জোসনা দেখবেন, একদম একা। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.