আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটা ধাধার উত্তর দিবেন?

একসময় দেখলাম, সবই কল্পনা, বাস্তবতায় শূন্য পৃথিবী। একটা ব্যাস্ত রাস্তা। তার উপরে একটা ফুট ওভারব্রীজ। বলুন তো কেন এই ফুটওভারব্রীজটি দেওয়া হয়েছে? উত্তর কে দিতে পারবে? এই একটি আচরণ থেকে পুরো বাঙ্গালী জাতির জাতিগত দৈন্যতা প্রকাশ পেতে পারে। জাতিগতভাবে আমরা চরম স্বার্থপর।

হীনমন্যতা সম্পন্ন, ও হিংসুটে। আমাদের অন্তরটাকে যদি সত্য সত্যই বের করে আনা যেত, তাহলে এ থেকে যে পরিমাণ দুর্গন্ধ ছড়াত, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যারা প্রতিদিন সকালে উঠে বাসে করে অফিসে যান, তারা কি কখনও ভেবে দেখেছেন এই যে বাসের হেল্পার, ড্রাইভার লোক নিতেই থাকে নিতেই থাকে, অথচ আপনি সিটিং এ যাবেন বলে টিকেট কাটছেন? এর উত্তর একটাই। লোভ। জাতিগতভাবে আমরা প্রচন্ড লোভি।

খেয়াল করে দেখুন। এই ছবিটার দিকে, রাস্তাটা ফুটওভার ব্রীজ দিয়ে পার হওয়াটাই কি নিয়ম নয়? তাহলে এই লোকগুলো কেন তা হচ্ছে না? লোভ, লালসা, তাদের ওভারব্রীজে ওঠতে যে কষ্টটা করতে হয় সেটা তারা করবে না। তবে, রাস্তা পার হতে গিয়ে যদি এক্সিডেন্ট হয়ে কেউ মারা যায়, তখন আমাদের চরিত্রের আরেকটা নোংরা জিনিস বেড়িয়ে পড়ে। সেটা হলো নৃশংসতা। আমরা উন্মত্ততার সাথে গাড়ি ভাঙ্গা শুরু করি, আমরা উদ্দাম হয়ে জ্বালাও পোড়াও করি।

এই যে বাসের কথা বলছিলাম, আপনারা আমার লেখা পড়ে বলবেন, ভাই এতো মানুষ, একটা বাস যদি তার ধারণ ক্ষমতার বেশি লোক না নেয়, তাহলে সবাই গন্তব্যে পৌছাবে কেমন করে? এটা হলো সিম্পলি এডাপশন। অর্থাৎ আমাদের চরিত্রের এমন একটা পরিবর্তন যাকে আমরা বলি এবনরমাল ফিক্সেশন। সাইকোলোজির ভাষায় আরকি। এই বাস মালিকদের যে পরিমান টাকা আছে, ইচ্ছা করলেই তারা রাস্তায় আরও বেশি বাস নামাতে পারে। কিন্তু তারা সেটা করবে না।

কেন? কারণ, এতে খরচ বাড়বে, বাস প্রতি লোক কমে যাবে, সুতরাং লাভও কম!!!!! এবার আসুন, এই নোংরা চরিত্রের আমাদের আরেকটি স্বরূপ উন্মোচন করি। রাস্তাঘাটে ময়লা ফেলা। সেদিন বাসে করে মহাখালি থেকে বাসায় আসতে ছিলাম। পাশে একটা লোক উঠলো। তার হাতে একটা বাদামের প্যাকেট।

সে বাদাম খাচ্ছে আর বাসে ফেলছে। আমার কাছে ব্যাপারটা প্রচন্ড দৃষ্টিকটু লাগল। আমি উনাকে বললাম, ভাই, এই বলে আমার প্যান্টের পকেট থেকে একগাদা সেন্টারফ্রেস আর হ্যাপিডেন্টের খোসা বের করলাম। করে বললাম, দেখেন, বাসায় গিয়ে ডাস্টবিনে ফেলবো বলে, পকেটে করে ময়লা নিয়ে ঘুরছি। আর আপনি এত লোকের যাতায়াতের মাধ্যম এই বাসটাকে নোংরা করছেন।

কেন রে ভাই? উত্তরটা ভয়ংকর নোংরা, বাসটা কি আপনার বাপের? আরেক শ্রেণীর লোভি কুকুর দেখা যায় (আমার ফ্যামিলির কেউ কেউ এদের মধ্যে পড়ে) শেয়ার বাজারে। টাকা খাটাইয়া লাভ করুম। বইসা বইসা আয়। আজ ১০০ দিলে কাল ২০০ হইবো, কাল ২০০ দিলে পরশু ৪০০ হইবো। আর এই বাজারে যখন মন্দা হয়, তখন আমাদের নোংরা চরিত্রের স্বরূপ বেড়িয়ে আসে, আমরা আবার জ্বালাও পোড়াও করি।

এতক্ষণ তো সাধারণ মানুষের কথা বলছিলাম। ভাবুন একবার, এই সাধারণ মানুষগুলাই যখন অসাধারণ হয়ে উঠে!!!! মানে VIP হয়ে যায়, তখন তারা কি পরিমান খারাপ হয়? একটা ছোট্ট উদাহরণ দেই। ৩০০ কোটি টাকা দিয়ে সরকার যখন এমপিদের জন্য ট্যাক্স ফ্রি গাড়ি কিনলো, তখন একটা লোকেরও মনে হলো না, এসব মানুষের ট্যাক্সের টাকা। এগুলো দিয়ে এসব করা যায় না। মানে তারা এত পুলিউটেড।

আমার মনে হয়, আমাদের ধরে ধরে পশ্চিমা দেশের চিড়িয়াখানায় রাখা উচিৎ। সেখানে খাচার উপরে লেখা থাকবে, একটা খাবার ছুড়ে দেখুন, এরা কেমন একজনকে পারায় আরেকজন খায়...দেখুন এরা কতটা ইন্ডিসিপ্লিড জাত! আর কিছু বললাম না...অন্তরের দুর্গন্ধ নিজের নাকে লাগতে শুরু করেছে!  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.