আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশে দুর্নীতি বাড়ায় বিশ্বব্যাংকের উদ্বেগ:

বাংলাদেশে দুর্নীতি বেড়ে যাওয়া ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি অ্যালেন গোল্ডস্টেইন। তিনি বলেছেন, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে সুশাসন পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। আর্থিক ব্যবস্থাপনায়ও সঙ্কট দেখা দিয়েছে। টেলিযোগাযোগ ও শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রণে স্থবিরতা লক্ষ্য করা গেছে। রাজনৈতিক সংঘর্ষ, মিডিয়া ও বেসরকারি খাতের ওপর চাপ বেড়েছে।

এসব বিষয়ে বিশ্বব্যাংক উদ্বিগ্ন। গতকাল আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম) আয়োজিত ‘দুর্বল সুশাসন পরিস্থিতিতে উন্নয়ন প্রচেষ্টা’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। অ্যামচেম সভাপতি আফতাবুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মাহবুব জামিল, রোকেয়া আফজাল, সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইদুজ্জামান, সাবেক সচিব শমসের মবিন চৌধুরী, সিপিডি’র সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বক্তব্য রাখেন। গোল্ডস্টেইন বলেন, আমি বহুবার এ প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছি যে বাংলাদেশের মতো দুর্বল সুশাসনের পরিবেশে আমি কিভাবে কাজ করছি। পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্প বিশ্বব্যাংক বাদ দেয়নি বলে মন্তব্য করে গোল্ডস্টেইন বলেন, দুর্নীতির অভিযোগসহ পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের বিভিন্ন দিক নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

বিশ্বব্যাংক এ প্রকল্পটি বাতিল করেনি। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নেই পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। দুর্নীতি প্রতিরোধ প্রসঙ্গে গোল্ডস্টেইন বলেন, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়িত প্রকল্পে দুর্নীতি ও ঝুঁকি শনাক্ত করতে গত ফেব্রুয়ারিতে একটি কর্মপরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এর আওতায় সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনায় বাজেট, অডিট এবং সংসদীয় কমিটির পর্যবেক্ষণ রয়েছে। এছাড়া, স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা, আর্থিক ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ ও করপোরেট সুশাসন প্রতিষ্ঠা, ব্যাংকিংসহ সব বিষয়ে তথ্য অধিকার আইনের বাস্তবায়ন এবং থার্ড পার্টি মনিটরিং নিয়ে কাজ করছে বিশ্বব্যাংক।

তবে এসব বিষয়ে দুর্নীতি দমন সুশাসন ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের নিজস্ব ব্যবস্থাপনা থাকা উচিত। উন্মুক্ত আলোচনায় গোল্ডস্টেইন বলেন, পদ্মা সেতুর কাজ আটকে যাওয়া বাংলাদেশের জন্য একটা ট্র্যাজেডি। সাধারণ জনগণের আবেগ অনুভূতি এর সঙ্গে জড়িত। বিশ্বব্যাংক ছাড়াও এডিবি, আইডিবি এবং জাইকা পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়নে সংশ্লিষ্ট। দুর্নীতির অভিযোগ ও ক্রয় নীতিমালার স্বচ্ছতার নিশ্চয়তায় সব পক্ষের পারস্পরিক আস্থার বিষয়টি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

অ্যামচেম সভাপতি বলেন, আইনের শাসনের অভাবে দেশে খুন, গুম বাড়ছে। সাংঘর্ষিক রাজনীতি নিয়ে এগোচ্ছে বড় দলগুলো। জনগণ যদি রাজনীতিবিদদের ওপর আস্থা হারায় তাহলে গণতন্ত্র বিপন্ন হবে। পদ্মা সেতু নির্মাণে ঋণ সহায়তা প্রত্যাহার না করার জন্য অ্যামচেম-এর পক্ষে বিশ্বব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এবিষয়ে সরকারকেও মীমাংসায় আসার আহ্বান জানিয়ে আফতাব বলেন, সরকারের হাতে আর মাত্র ১৮ মাস সময় আছে।

এর মধ্যে দ্রুত বিষয়টির সুরাহা হওয়া প্রয়োজন। দেরি হওয়ার কারণে ইতিমধ্যে প্রকল্পের ব্যয় ৩০ শতাংশ বেড়ে গেছে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.