আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সায়েন্স ফ্যান্টাসি_ পেন্টাগন

বেশ কিছুদিন ধরেই আমি সোবহান সাহেবের বাসায় যাব বলে ঠিক করে রেখেছি কিন্তু বিভিন্ন কারনে যাওয়া হচ্ছে না । প্রথমত সোবহান সাহেব আমার চেয়ে বয়সে প্রায় আড়াই গুণ বড় হবেন, তার চেয়ে বড় সমস্যা হল তিনি যে বাসায় থাকেন তাকে এক কথায় বাংলার পেন্টাগন বলা যায় । কয়েক স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা বলয় পার হয়েও অবশেষে মিনিট দশেক ধরে কি সব পরীক্ষা নিরীক্ষা চলে । অথচ তার ক্ষতি করার চিন্তা করবে এমন লোক তো দুরের কথা তার পরিবারের লোকজনকেই কখনো আসতে দেখেনি আশেপাশের কেউ । এতসব না হয় মেনেই নেওয়া যায় কিন্তু সবচেয়ে বিরক্তকর ব্যপার হল উনার বাসায় সদর দরজায় ঢুকতেই বিদঘুটে একটা রোবট এসে বলে “ লানিয়ান হাউসে আপনাকে স্বাগতম, আপনাকে কিভাবে সাহায্য করতে পারি?” দেখতে মিনি পেন্টাগন হলেও এই বাড়িটার নাম লানিয়ান হাউজ কেন রাখা হল, তা আমার মাথায় আসে না।

রোবটার প্রশ্নের উত্তরে আমি সবসময় একটা কথাই বলে থাকি, সোবহান সাহেবের সাথে দেখা করতে চাই? এর উত্তরটা কি হবে তা আমার জানাই থাকে । তো শুরু হয়ে যায় অপেক্ষার পালা । ভাগ্য ভাল থাকলে উনি আসেন, দেখা হয়, কথা হয়। আবার ভাগ্য মন্দ থাকলে অন্য আরেকটা রোবট এসে বলে “দুঃখিত জনাব ! সোবহান ভাই এখন আসতে পারছেন না । আপনি ইচ্ছে করলে আরও কিছুক্ষণ বসতে পারেন, কিংবা ইচ্ছে করলে চলেও যেতে পারেন ।

এসব কারনেই হয়ত সোবহান সাহেবের কোন কাছের মানুষ নেই । আর থাকলেও আসে না । হয়ত আসেও কিন্তু এসে ফিরে যায় । তবে সোবহান সাহেব লোকটা কিন্তু খুবই সাদামাটা । যার প্রমান পাওয়া যায় তার রোবটগুলোর কথা বার্তা শুনে ।

কি অবলীলায় তার বানানো রোবটগুলা তাকে ভাই বলে ডাকে ,শুদ্ধ বাংলা বলে । শুধু রোবটগুলার চেহারা ভাল নয় । মেয়ে না ছেলে তা বুঝার কোন উপায় নেই । কেন এরকম তা আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম । উনি কিছু না বলে শুধু হাসলেন ।

কোন রহস্যময় হাসি নয় খুব সরল হাসি । এভাবে আজকাল খুব কম মানুষকেই হাসতে দেখা যায় । তবে তাকে লোকে মনে করে উনি হলেন এই দুনিয়ার সেরা দশ রহস্যময় মানুষদের একজন । বলবেই না বা কেন? উনি এমন এক বাড়ি বানিয়েছন যার কোন নির্দিষ্ট মাত্রা নেই, আকার- আকৃতি নেই, সাজসজ্জা নেই । শুধু নির্দিষ্ট আয়তন আছে , যার মধ্যেই সব কিছু সীমাবদ্ধ ।

যখন এই বাসায় সোবহান সাহেবের বয়সে বড় কিংবা শ্রদ্ধাভাজন কেউ আসে তখন বাড়িটা হয়ে যায় খুব নম্র এবং অতিথিপরায়ন টাইপের , আবার যখন বন্ধুভাবাপন্ন কেউ আসে তখন বাড়িটা থাকে খুব এলোমেলো-অগোছালো । তবে তার স্ত্রী কিংবা বান্ধবী আসলেই বাড়ির দৃশ্যপট যায় পালটে । কোনায় কোনায়, পরতে পরতে রোমান্টিক সেন্টিমেন্ট ছড়িয়ে পরে । আবার যদি ভুল করেও কোন সন্দেহভাজন লোক এখানে এসে পরে তাহলেই এই বাড়ির আসল চেহারা পরখ করা যায় । তবে এই অভিজ্ঞতা এখানে এসে যার হয়েছে তার আর এমন অসস্থা আর থাকে না যে সে সবার কাছে এই ক্যান্টনমেন্ট মার্কা বাড়ির গুণকীর্তন করে বেড়াবে ।

তার ধারনা হবে সে যেন ভুল করে আমেরিকার পেন্টাগনে এসে পরেছে। । । চলবে............। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.