দ্য বেঙ্গলি টাইমস ডটকম ডেস্ক জার্মানিতে চলতি বছরই অভিবাসীদের দেয়া হবে ব্লু-কার্ড। যারা সেখানে পড়াশোনা করেছেন, কাজ করতে চান, তাদের জন্য জার্মানিতে থাকা এবং কাজ খোঁজা অনেক সহজ হবে এর ফলে। ব্লু-কার্ডের সাহায্যে অভিবাসীদের জার্মানিতে থাকা অনেক সহজ হবে। তবে যারা এই কার্ড পাবেন তাদের অবশ্যই প্রমাণ দেখাতে হবে যে তারা জার্মানিতে পড়াশোনা করেছেন, জার্মান ভাষায় তাদের বেশ ভালো দক্ষতা আছে। ম্যাসিডোনিয়ার মেয়ে বিলইয়ানা স্টোয়ানোভস্কার কাছে জার্মানি হলো অপূর্ব এক দেশ।

২৫ বছর বয়সের এই তরুণী জার্মানির সব কিছু দেখে মুগ্ধ। স্কোপিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিলইয়ানা মেশিন তৈরির বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করেছে। গত মাসে সে এসেছে জার্মানিতে। স্কোপিয়ে এবং জার্মানির একটি বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে যে প্রগ্রাম চালু করেছে তারই অধীনে কয়েক মাসের জন্য বিলইয়ানা এসেছে জার্মানিতে। তবে ব্লু-কার্ড পেতে হলে তাকে সবার আগে পড়াশোনা শেষ করতে হবে।

এ বছরেই ব্লু-কার্ড দেয়া শুরু করতে পারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো। ব্লু-কার্ডের অধীনে নতুন করে ভিসা নেয়ার প্রয়োজন পড়বে না। আগে স্টুডেন্ট ভিসায় শুধু পড়াশোনা করা যেত। কাজের অনুমতি সেই ভিসায় দেয়া থাকত না। ব্লু-কার্ডের কল্যাণে একই ভিসায় সবকিছু অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

ব্লু-কার্ডের জন্য পড়াশোনা শেষ করে যে-কেউই কাজের সন্ধানে নেমে পড়তে পারবে। ভিসার স্ট্যাটাস পাল্টানোর জন্য সেই ছোটাছুটি থেকে এখন অভিবাসীরা মুক্ত থাকবে। ব্লু-কার্ড থাকলে যেকোনো সময়, যেকোনো দিন জার্মানিতে প্রবেশ করা যাবে। জার্মান সংসদের নিম্নকক্ষ এবং উচ্চকক্ষে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। কবে হবে তা এখনও জানা যায়নি।

তবে জানানো হয়েছে, প্রতিবছর প্রায় সাড়ে তিন হাজার ব্লু-কার্ড দেয়া হবে যোগ্য অভিবাসীদের। বিলইয়ানা যদি ব্লু-কার্ড পেতে চায় তাহলে তাকে জার্মানিতে অবশ্যই একটি কাজ পেতে হবে। সেই কাজের চেষ্টা করতে হবে ম্যাসিডোনিয়াতে বসেই। কাজের সঙ্গে তার পড়াশোনার যোগ থাকতে হবে। এখন পর্যন্ত কোনো চাকরি অবশ্য খুঁজে পায়নি বিলইয়ানা।

তবে শুধু চাকরি পেলেই হবে না। বছরে অন্তত ৩৩ হাজার ইউরোর উপার্জন দেখাতে হবে। এটা সহজ নয়। কেউ যখন নতুন চাকরিতে ঢোকে তখন কখনোই তাকে এত বেতন দেয়া হয় না। জার্মান অর্থনীতি ইনস্টিটিউটে কাজ করছেন ইলোনা রিজেন।

তিনি জানান, বেকার থাকার পর অত্যন্ত দক্ষ একজন জার্মানের পক্ষেও সম্ভব নয় বছরে ৩৩ হাজার ইউরোর চাকরি খুঁজে পাওয়ার। তবে বিলইয়ানা একা নন। বুর্কিনা ফাসোর রেমন্ড ইলবুদু সেখানকার একটি মন্ত্রণালয়ে কাজ করছেন। তিনি ছোটবেলা থেকেই জার্মান ভাষা শিখেছেন। কারণ তিনি যে স্কুলে পড়তেন সেখানে জার্মান ভাষা শেখা বাধ্যতামূলক ছিল।

৩৮ বছর বয়স্ক রেমন্ড তার পরিবার নিয়ে জার্মানিতে আসতে চান। আরেকবার পড়াশোনা করতে চান। তিনি জানান, জার্মানির জীবনযাত্রা বুর্কিনা ফাসো থেকে অনেক বেশি উন্নত। ব্লু-কার্ডের নিয়মনীতি শোনার পর রেমন্ড জার্মানিতে আশার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে জার্মানিতে আগে থেকেই একটি চাকরি খুঁজে পেতে হবে—এই শর্ত পূরণ করা বেশ কষ্টকর।

রেমন্ডকে জানানো হয়েছে, তাকে বছরে ৪৪ হাজার ইউরো উপার্জন দেখাতে হবে। বুর্কিনা ফাসোতে অর্থের এই বিশাল অঙ্ক শুধুই একটি স্বপ্ন। তাহলে কি ব্লু-কার্ড শুধু স্বপ্নই থেকে যাবে? সূত্র : ডিডব্লিউ। তথ্যসূত্র- Click This Link ।