আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্যাডেট কলেজের উদ্ভট পানিশমেন্টসমূহ(বা একটি মজাদার সাইন্স ফিকশন)

কিচ কিচ কুচ কুচ কাচ কাচ কোচ কোচ!!! ভাইসব! ভাইসব!! নতুন ব্লগার হইয়া একটা সাইন্স ফিকশন লিখিতে বড়ই মন চাহিতেছিল, তাই নিম্নের গল্পটি লিখিয়া ফেলিলাম। ইহা নিতান্তই মজা দেবার উদ্দেশ্যে লিখা কল্পকাহিনী, সত্য মনে করিয়া লম্ফঝম্প শুরু করিয়া জুতা ছিঁড়িয়া ফেলিলে নিজ অর্থে সেলাই করিয়া লইবেন। ক্যাটাগরি 1: ফিজিকাল পানিশমেন্ট ১/ চিকেনঃ শুনেই কি স্টার কাবাবে চিকেন গ্রিলের কথা মনে পড়ছে? পড়া অস্বাভাবিক নয়। এটি ঝকক-য় সর্বাধিক প্রচলিত পানিশমেন্ট। দুই হাত দুই পায়ের নিচ থেকে সামনে নিয়ে এসে মাথা নিচু করে দুই কান ধরতে হয়।

ফলে buttock আর মাথা এক সমান্তরালে চলে আসে, ঠিক মুরগি(চিকেন)-র মত! ২/ ডাকঃ এটা হল চিকেনের বড় ভাই। চিকেনে যেমন হাত পিছন থেকে সামনে আনতে হয়, ডাকে তেমন হাত সামনে থেকে পায়ের নিচে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে ঘুরিয়ে এনে কান ধরতে হয়। অধিকাংশ ক্যাডেটই এই কান ধরতে ব্যর্থ হয়, এবং কান ধরার আপ্রাণ প্রচেষ্টায় হাত নড়াচড়া করে। এখানেও মাথা সামনে আর buttock পিছে হবার বদৌলতে ক্যাডেট কে দেখায় হাঁস(ডাক) এর মত, তাই এর নাম ডাক (সত্যিই তাই?!) ৩/ ডাকেনঃ এইটা হইল চিকেন আর ডাকের remix. এক হাত দিয়া চিকেন আরেক হাত দিয়া ডাক। বড় অদ্ভুত! ৪/ বি চিকেন, স্টার্ট ওয়াকিঙঃ পানিশমেন্টের নামের ফার্স্ট পার্ট পইড়া কনফিউজড হবার কিছু নেই।

এখানে কিছু কিনতে বলা হচ্ছে না। যা হোক, সিনিওরের মুখ দিয়ে এই কথা বাইর হইলে চিকেন হয়ে সামনের দিকে হাঁটতে হবে। ৫/ বি ডাক, স্টার্ট ওয়াকিঙঃ বোঝাই যাচ্ছে, ডাক হয়ে সামনের দিকে হাঁটতে হবে। ৬/ হাফ চেয়ারঃ দুই হস্ত সম্মুখে প্রসারিত, দৃষ্টি ঊর্ধাকাশে, কেদারায় উপবিষ্ট- শুধু চেয়ারটা নেই। জটিল একটা পানিশমেন্ট।

৭/ গেট সিটেড, প্রসিড অনঃ সোজা বাংলায় ব্যাং লাফ। দুই পায়ের উপর ভর দিয়ে বসে বসে লাফাতে লাফাতে সামনে যেতে হবে। ৮/ হ্যান্ডস ডাউন, পুশ আপঃ সোজা বাংলায় বুক ডন। যতক্ষণ না সিনিওর থামতে বলছে ততক্ষণ বুক ডন দিয়ে যেতে হবে। ৯/ হ্যান্ডস ডাউন, ক্যাচ ইওর ইয়ারসঃ কনুই এর উপর ভর দিয়ে বুক ডনের ভঙ্গি, সাথে বোনাস কান ধরা।

১০/ হ্যান্ডস ডাউন, ক্যাচ ইওর ইয়ারস, স্টার্ট ক্রলিঙঃ ভয়াবহ পানিশমেন্ট। কনুইয়ে ভর দিয়ে হাচরে পাঁচরে সামনে যেতে হবে। কনুই অক্ষত রাখার কোন উপায় এখনও আবিষ্কার হয় নাই। হইলে বইলেন তো, ছোট ভাইদের উপকার হইব। ১১/ নাইন নাম্বারঃ এইটাও হ্যান্ডস ডাউনের মত, খালি পার্থক্যটা হল, পা রাখতে হবে অনেক উঁচুতে।

সেইটা কোন গ্রিলের সাথে হতে পারে, কাবার্ডের সাথে হতে পারে, রেলিঙের সাথে হতে পারে, এমনকি পিলারের সাথেও হতে পারে-সিনিওরের মর্জি। মাথায় রক্ত জমে যাওয়াই স্বাভাবিক। (শুধু রাগে না, anatomicallyও বটে!) ১২/ ফ্রন্টরোলঃ এইটার কথা বইলা সবাইরে লজ্জা দিলাম নাকি? সহজ বাংলায় ডিগবাজি। মাথা নিচে দিয়া সামনে এক গড়ান দেয়ারে বলে ফ্রন্টরোল। এইটা শুধু একটা পানিশমেন্ট না, একটা আর্টও বটে।

কিভাবে ফ্রন্টরোল দিলে মাথায় ব্যথা লাগবে না, কিভাবে দিলে মাথা মাটির সাথেই লাগবে না, কিভাবে দিলে সর্বোচ্চ দূরত্ব অতিক্রম করা যাবে, তা নিয়ে একটা ছোটখাটো পি এইচ ডিও করা যাবে। সকাল থেকে শুরু করলে পিটিতে ফ্রন্টরোল, প্যারেডে ফ্রন্টরোল, ব্রেকফাস্ট স্কোয়াডে ফ্রন্টরোল, ব্লকে ফ্রন্টরোল, হাউজে ফ্রন্টরোল, গেমসে ফ্রন্টরোল, ইডিতে ফ্রন্টরোল, প্রেপে ফ্রন্টরোল-এক কথায় ফ্রন্টরোল ছাড়া গতি নাই! ১৩/ ব্যাকরোলঃ ধরেন আপনি একজনের ফ্রন্টরোলের ভিডিও করলেন। তারপর সেইটা rewind করে দেখলে যেমন লাগবে, সেইটাই হল ব্যাকরোল। ১৪/ সাইডরোলঃ এইটা আর কিছু না, জাস্ট সাইডে গড়ান দেয়া। অতি সহজ, আপনারাও পারবেন।

ক্যাটাগরি 2: হ্যান্ড চার্জ ১/ বেল্ট চার্জঃ চার্জের মধ্যে সবচেয়ে কমন চার্জ হইল বেল্ট চার্জ। সাধারণত বেল্ট এক ভাঁজ কইরা বেল্টের হুক দুইটা হাতের মধ্যে নিয়া মিডল অংশ দিয়া চার্জ করতে হয়। তবে বেল্টের হুক দিয়া বা ভাঁজ না কইরাও চার্জের নজির কম না (অবশ্য আপনার বেল্টের স্বাস্থ্য আপনারেই ঠিক রাখতে হবে!) আর চার্জ করতে হবে buttock এ (কারণ ঐখানে করলে শান্তি মত পিটান যাইব, আর দাগ ও কারও চোখে পড়ব না!) ২/ হ্যাঙ্গার চার্জঃ কিছু সিনিওর আছেন যাদের এক সময় হ্যাঙ্গার শর্ট পরে। কেন? কারণ জুনিওরের পাছায় ভাংতে গিয়ে তারা আর কাপড় ঝুলাতে পারেন না(!) এই জন্য সতর্কতার সহিত তারা যার হ্যাঙ্গার তার পাছায়ই ভাঙ্গেন। (হ্যাঙ্গার ভেঙ্গে গেলেই যে ফেলে দিতে হবে এমন কিন্তু নয়।

আমাদের ...... ভাই বিখ্যাত ছিলেন তার ‘কাটা রাইফেল’ এর জন্য, যা একটি ভাঙ্গা হ্যাঙ্গার ছাড়া আর কিছুই নয়!) ৩/ চেইনঃ খুব সামান্য প্রচলিত। টয়লেটের ফ্ল্যাশ থেকে খুলে নেয়া হয়। ৪/ স্ল্যাপঃ একেবারে গণ পানিশমেন্ট। সোজা বাংলায় চড়। তাও আবার যেমন তেমন চড় নয়।

প্রতিটি স্ল্যাপের আগে একটু নাটক হয়, কমবেশি সবাইকেই এতে অভিনয় করতে হয়। তেমনি একটি নাটকের দৃশ্যঃ জুনিয়র সিনিওরের প্লেসের সামনে দণ্ডায়মান। জুনিয়রঃ অমুক ভাই yes please, মিট দিসিলেন yes please। সিনিওরঃ (খুব ভাব নিয়ে) slapping position! জুনিয়র তখন চোখ বন্ধ করে মুখ বাড়িয়ে দেবে। অতঃপর, ঠাস!!!!!!!!! মাঝে মাঝে সিনিওর উপযুক্ত সময়ে স্ল্যাপ না মেরে মজা দেখবেন।

আবোল তাবোল বকবেন। গালে হাত ছোঁয়াবেন। আর জুনিয়র চমকে লাফিয়ে উঠে চোখ খুলে ফেলবে! কারণ, কখন চড় ছুটে আসে কেউ জানে না, দেখা গেল জুনিয়র চোখ বন্ধ করে নিশ্বাস বন্ধ করে মুখ শক্ত করে চড় খেতে প্রস্তুত, অথচ কেউ চড়াচ্ছে না, কিন্তু একটু রিলাক্স হবার সাথে সাথে ২০ কেজি ওজনের চড়টা গালে আঘাত করছে! এই মনে হচ্ছে চড় আসলো, চড় আসলো, কিন্তু কখন আসবে কোন গ্যারান্টি নাই। তাই আমরা চোখ হালকা খুলে রাখার চেষ্টা করতাম যেন চড় কখন আসে বুঝতে পারি। একবার একটা মারাত্মক বাজে সিন কল্পনা করেছিলাম।

ধরুন লিফটে আমি আর আমার গার্লফ্রেন্ড, অনেক দিন পর দেখা, আমি তাকে রহস্য করে বললাম, “চোখ বন্ধ কর”। ও করল। আমি বললাম, “মুখটা সামনে বাড়াও”। ও বাড়াল। আহা, দৃশ্যটা কি রোমান্টিক! ও কি না কি ভাবছে! কিন্তু আমি ওকে একটা স্ল্যাপ মারলাম!!!!!!!!!! ৫/ ক্রসবেল্ট চার্জঃ হে হে, বুঝতেই পারতেসেন দিস পানিশমেন্ট ইজ অনলি ফর প্রিফেক্টস।

তাও সবাই না, শুধু ক্রসবেল্ট হোল্ডারস। তবে সবাইরে চুপি চুপি জানায়া রাখি, ক্রসবেল্ট দিয়া মারলে চটাং চটাং শব্দ হয় ঠিকই, তেমন একটা লাগে না!!! ৬/ চটাঃ এইটা সিজনাল। বাগান কম্পিটিশনের পরে গার্ডেন থেকে চটা তুইলা পিটান হয়। এইটা হইল সবচেয়ে ভয়ানক জিনিস, মাইরাও মজা, ব্যথাও লাগে সেই রকম, দাগও পড়ে, চিল্লানিও হয় বিশাল। ৭/ কৃষ্ণচূড়ার ডালঃ এইটা আমগো ক্লাস সেভেনের ADL …… ভাইর Xclusive… কেমন লাগিল সাইন্স ফিকশন? অছাম? শিরাম? ওহ, থ্যাঙ্কু থ্যাঙ্কু ... আবার দেখা হইবে, hasta la vista, টা টা।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.