আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তেতুল ফল, জিভে পানি,আল্লামা শফি, ধর্ম ,নারী শিক্ষা ও লিঙ্গ বৈষম্য

সম্প্রতি আল্লামা শফির বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। তার বক্তব্যে লুল পুরুষদের মুখের লুল টপটপ করে পড়ছে। আর তথাকথিত তেতুল আর লুল মিলে নতুন লুলিয় পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। শফি সাহেব তার বক্তব্যে মেয়েদের তেতুল ফলের সঙ্গে তুলনা করেছেন। এই ব্যাপারটি নিয়ে আমার তেমন কোন ইমপ্যাকট হয়নি।

ওটা তার সুষ্ট নাও হতে পারে। ওনি হয়তো ওনার ওস্তাদের কাছ থেকে শেনেছেন। তবে শিক্ষার ব্যাপারে চাকুরীর ব্যাপারে মোদ্দাকথা নারীর অধিকার ও ক্ষমতায়নের ব্যাপারে তার বক্তব্যে খটকা লেগেছে। মানুষ অনেক সময় ভুল বলে ফেলে বেশি বা কম ও বলে ফেলে। তাই বক্তব্যের শেষে একট দোয়া পড়ার কথা আছে দোয়াটি হলো সুবহাল্লাহি ওয়া বিয়ামদিহী সুবগানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয় আসতাগ ফিরুকা ওয়াতুবু ইলাইক।

এই দোয়া পাঠ করে বক্তা অনিচ্ছাকৃত ভুল থেকে ক্ষমা পাবেন ও তার গুনাহ নেকি দ্বারা পূরণ করা হবে। শফি সাহেব না হয় ক্ষমা পেলেন। যারা তার বক্তব্যে দূর্বল পয়েন্ট নিয়ে এত আগ্রহী। তারা কি তার মূল বক্তব্য বুঝার চেষ্টা করেছেন। কিংবা তার ভুল ভাঙানোর কোন প্রচেষ্টা নিয়েছেন! ব্যাপক একটা কনফিউসড অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

বেশ কিছু ইস্যু কেমন জটিলতায় ঘুরপাক খাচ্ছে। নারীরা কি চান ?পুরুষরা কি চান ? আর ধর্মই বা কি বলে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ। অবগেলিত নারী। নারীরা নির্যাতীত আর কত কি? নারী পুরুষ পরস্পরের কাছে খুবই আকর্ষনীয়।

আদিম পোষাকে সুন্দরী রমণী দেখলে পুরুষের যে অবস্থা হয় পুরুষের দেখলে নারীদেরও ঠিক একই অবস্থার সৃষ্টি হয়। লালনের ভাষায় ‘ এ যে যৌবনকাল কামে চিত্ত কাল ’। তাই নারী পুরুষ ‍দুই দলকে রুচিশীল পোষাক পরিধানের ব্যাপারে বলা হয়েছে। পারস্পরিক সীমাহীন আকর্ষণ না থাকলে বোধ করি মানব জাতি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে যেত। যেহেতু পরস্পরের প্রতিআকর্ষণ না থাকলে তারা বংশবৃদ্ধির প্রক্রিয়ায় যেত না।

তাহলে বংশবৃদ্ধি বন্ধ। স্রষ্টা তাই সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। পশ্চিমা বিশ্বে নারীপুরুষ অবাধ মিলামেশার ফলে দেখা যায় পনের বছর বয়সে যৌনতার এমনকি প্রেগনেনসির মত ঘটনা ঘটে থাকে। সব ক্ষেত্রে কিন্তু ধর্ষণ ব্যাপারটা ঘটে না। তেতুলের মত ব্যাপার আছে বলেই পারস্পরিক সম্মতিতে ব্যাপারটা ঘটে।

মেয়েরা বিয়ের অনেক আগেই ভারজিনিটি হারায়। পুরুষরা মেয়েদের পণ্য ,ভোগ্য পণ্য ব্লা ব্লা ব্লা অনেক কথা বলা হয়। আচ্ছা মেয়েরা কি পুরুষদের ভোগ্য হিসেবে দেখে না। পুরুষরা কি তাদের কাছে আকর্ষণীয় নয়। তাহলে একটা পুরুষের প্রেমে মেয়েরা পরে কেন।

জীবন দিতে ই বা চায় কেন? নারীও তো পুরুষকে যৌন মিলনে বাধ্য করে। এমন ঘটনা আছে। ঘটছে। বিয়ে হওয়াটাকি মেয়েদের কাছে অপমান জনক? মনে হয় না। যারা লেসবিয়ান তাদের কথা আলাদা।

যারা তা নন বিয়ে ব্যাপারটা কিন্তু সম্মানজনক ব্যাপারই বটে। প্রেগন্যান্ট হয়ে যওয়া কি নারীর জন্য শাস্তি। সন্তানের মা হওয়ার ব্যাপারে কিন্তু নরীদেরই তীব্র আকুতি থাকে। মা ব্যাপারটা তো সবচেয়ে সম্মানের। যে সকল মেয়েরা সেটাকে অপমানজনক ভাবতে চায়।

তারা তাদের মাকে নিয়ে কখনো কি চিন্তা করে না। সেই মা যদি তাদের গর্ভে ধারণ না করতেন তাহলে আজ কোথায় থাকতেন তারা। মেয়েরা যে বাবার ভক্ত হন বেশি। বাবা কি একজন পুরুষ নন। সেক্স ব্যাপরাটা নারী পুরুষ দুজনের জন্যই উপভোগ্য করে সৃষ্টি করা হয়েছে।

এবং সরাসরি বলা হয়েছে বিয়ে করা পৃথবীতে একমাত্র জান্নাতি নিয়ামত। এবং তার বৈধতার সীমারেখা টেনে দেয়া হয়েছে। সেক্স ব্যাপারটা নিয়ে ওয়াজ মাহফিলে হুজুর রা খোলামেলা বক্তব্য দেন। ব্যাপারটা কেমন যেন মনে হলেও এটা কিন্তু অনস্বীকার্য যে পাশ্চাত্য বিশ্বে শিশু বয়স থেকেই এ ব্যাপারে যথেষ্ট খোলামেলা জ্ঞান বিতরণ করা হয়। আলেমরা বক্তব্যে জ্ঞান দান করার চেষ্টা করে থাকেন।

তাদের শিক্ষাগত ব্যবস্থাপনা বা ত্রুটির কারণে ভাষা অনেক ক্ষেত্রেই আভীজাত্য বর্জিত হয়। তাদের বাংলা ভাষা জ্ঞান বা দক্ষতার কমতি আছে বলতে হয়। তারা তেতুলের কথা বললেও সেটি যত্রতত্র খাওয়ার কথা বলেন না। জিভে পানি আসলেও তা সংবরণ করেন। তেতুল বলাতে ভয়াবহ পাপ হয়নি।

সেটি অনৈতিক ভাবে আয়ত্ত করতে যাওয়া পাপ। ধর্মতো পারস্পরিক স্বীকৃতির সেক্সকে নিষিদ্ধ ও শাস্তিযোগ্য করেছে যদি তা সামাজিক ও ধর্মীয় স্বীকৃতির মাধ্যমে না ঘটে। লিভ টুগেদার হারাম। ধর্ষণ সে তো বহুদূরে। সম্প্রতি নারী নির্যাতনের ব্যাপারটি বেশ জোড়েসুরে আলোচিত হচ্ছে।

একজন নারীকে অত্যাচারের পিছনে তার শা্শুড়ী ননদ নামক ব্যক্তিটি জড়িয়ে পরছে। তিনি কিন্তু একজন নারী। আদিমযুগে নারী শাসিত সমাজ ব্যবস্থার কথা জানা যায়। অথচ সময়টা আদিম যুগ। নারীর ক্ষমতায়ণ ব্যাপারটা গুরুত্ব সহকারে দেখলেই হয়।

সেটি নিশ্চিৎ করতে পারলেই হলো। শিক্ষার ব্যাপারে প্রত্যেক নরনারীর উপর বিদ্যা অর্জন সমানভাবে ফরজ করা হয়েছে। হাশরের মযদানে ৫টি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে কেউ বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না। তার মধ্যে একটি কতটুকু এলেম শিখেছো ও তার উপর কতটুকু আমল করেছো। হাদীসটি নারী পুরুষ সবার জন্য প্রযোজ্য।

মনগড়া কোন কিছু ইসলাম সমর্থন করে না। মানুষ তার নিজস্ব দর্শন দিয়ে বোধ করি সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। তাই স্রষ্টা পরিপূর্ণ জীবন বিধান কোরআন দিয়েছেন। এইবার একটু বয়ান করি মনোযোগ দিয়ে শুনেন। আমার আপনার পৃথিবীর সবমানুষের হেদায়েত বা সফলতা রয়েছে দ্বীনের মধ্যে।

সফলতা হলো জাহান্নাম থেকে মুক্তি আর চিরশান্তির জান্নাত লাভ। দুনিয়াবী কোন চিজ আসবাবের মধ্যে সফলতা নাই। দ্বীন কি জিনিস?দ্বীন হলো আল্লাহর হুকুম আর নবীর তরীকা। আর তা জানতে হলে অবশ্যই জ্ঞান অর্জন করতে হবে। নারীপুরুষ নির্বিশেষে সকলের।

নারী শিক্ষা তাই বাধ্যতামূলক। ধর্ষণের কামনা নফস থেকে আসে। প্রত্যেকটা পাপ রিপু থেকেই আসে। পাপের তথা অন্যায়ের ব্যাপারে ধর্ম শাস্তির বিধান রেখেছে। নারী পুরুষ দুজনকে ই নিয়মের বাধনে বেধে দিয়েছে ধর্ম।

ধর্ম কিন্তু পুরুষ শাসন নয়। শাসন ব্যবস্থায় পুরুষ থাকলেও স্রস্টা কিন্তু নারী ও নন পুরুষ ও নন্ । এসবের উর্দ্ধে । পুরুষ কর্তৃক সৃষ্ট নিয়ম হলে সেখানে পক্ষপাতিত্বে ব্যাপারটা আসে। এটুকু করা যায় নারী পুরুষের অধিকারের ব্যাপারে আল্লাহর নির্দেশনা কি? বা কতটুকু।

নারীরা যদি নিজেদের সৌন্দর্য অশালীন ভাবে প্রকাশ করে পুরুষের রিপুকে জাগিয়ে তুলেন আর পুরুষরাও যদি কুরুচীপূর্ণ পোষাক পরে মেয়েদের রিপুকে জাগিয়ে তুলেন সে ক্ষেত্রে কিন্তু দুজন ই দোষী সাব্যস্ত হবেন। নারী-পুরুষ ব্যাপারটা না ভেবে মানুষ হিসেবে ভাবাটাই যুক্তি সঙ্গত। নারীকে গর্ভধারণ করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। পুরুষকে দেয়া হয়নি। পুরুষকে শারীরীক ভাবে বেশি শক্তিশালী করা হয়েছে।

কঠোর পরিশ্রম করা সক্ষমতা দিয়ে। সভ্যতার ক্রমবিকাশে তাই নারী ও পুরুষ দুজন মিলেই সমান ভূমিকা রেখেছে। নারী ও পুরুষকে পরস্পরের উপর নির্ভরশীল করে সৃষ্টি করা হয়েছে। একই প্রজাতির মানুষ। তারা লিঙ্গ বৈষম্য নিয়ে বড় কোন বিভেদ এ জড়িয়ে পরা অনুচিৎ।

কতজন নারী নারী বাদী আছেন? কত জন পুরুষ তাদের ক্ষমতায়নের বিপক্ষে?তাদের নির্যাতন করছে। এগুলো মাথায় রাখতে হবে। সমাজে সুশাসণ প্রতিষ্ঠা হলে । নারী পুরুষ পরস্পরকে প্রতিযোগী না ভেবে সহযোগী ভাবলেতো হলো। অপরাধীর কোন নারী পুরুষ ভেদাভেদ নাই।

তাদের শাস্তি নিশ্চিৎ করার বিধান করে তা প্রয়োগ করতে হবে। নারী পুরুষকে কোর আনে পরস্পরের পোষাক হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। তাই বলি পোশাকবিহীন একজন মানুষকে কতটুকু দৃষ্টিকটু লাগবে,অসম্পূর্ণ লাগবে। পাগল ছাড়া কোন ব্যক্তি কি পোশাক বিহীন অবস্থায় থাকতে পারে? নারী পুরুষ মিলেই মানুষের পূর্ণাঙ্গ সত্ত্বা। বিজ্ঞ ব্লগারগন কি বলেন? সুবহাল্লাহি ওয়া বিয়ামদিহী সুবগানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয় আসতাগ ফিরুকা ওয়াতুবু ইলাইক।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৪২ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।