আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের সংবিধান লঙ্ঘন !

মুহুর্তকে বিনোদন ভাবতে চাই! বাংলাদেশের একজন মানুষ তাঁর জীবদ্দশায় “আদালত অবমাননা” শব্দদ্বয় যতবার শোনেন অন্য যেকোনো দেশের মানুষ তার ১০০ ভাগের এক ভাগও শোনেন কিনা সন্দেহ। পান থেকে চুন খসলেই অবমাননা! সম্মানের ভিত্তিটা মনে হয় খুবই দুর্বল! আপনার কি মনে হয় না “আদালত অবমাননা” ধারনাটিই “বাক স্বাধীনতার” সাথে সাংঘর্ষিক? শুধু তাই না শর্ষের মধ্যে যে কত বিশাল ভুত লুকিয়ে আছে তা আমরা অধিকাংশ নাগরিকই জানি না অথবা খেয়াল করি না। যাঁদের সবচেয়ে বেশি জানা উচিত তাঁরা জানেন কিন্তু মানেন না এমন কি কাউকে জানতে দিতেও চান না! ব্যাপারটা একটু খোলাসা করা দরকার – আদালত অবমাননার অভিযোগে অভিযুক্ত হউয়ার শতভাগ ঝুঁকি মাথায় নিয়েই লিখছি। বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের “হাই কোর্ট বিভাগ” এবং “আপীল বিভাগ” উভয় বিভাগের ‘বিচারকেরা’ নিজেদের ‘বিচারপতি’ হিসেবে পরিচয় দিতে পছন্দ করেন, ভালবাসেন। কিন্তু মজার ব্যপার হচ্ছে সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশে একজন মাত্র বিচারপতি থাকার কথা! সংবিধানের ৯৪ অনুচ্ছেদে পরিস্কার বলা আছে - (১) “বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট” নামে বাংলাদেশের একটি সর্বোচ্চ আদালত থাকিবে এবং আপীল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ লইয়া তাহা গঠিত হইবে।

(২) প্রধান বিচারপতি (যিনি “বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি” নামে অভিহিত হইবেন) এবং প্রত্যেক বিভাগে আসন গ্রহনের জন্য রাষ্ট্রপতি যেরূপ সংখ্যক ‘বিচারক’ নিয়োগের প্রয়োজন বোধ করিবেন, সেইরূপ সংখ্যক অন্যান্য ‘বিচারক’ লইয়া সুপ্রিম কোর্ট গঠিত হইবে। সংবিধানের কোথাও প্রধান বিচারপতি ছাড়া অন্য কাউকে বিচারপতি বলা হয় নি। ইংরেজি ভার্শনে ‘বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি’ এর স্থলে “CHIEF JUSTICE OF BANGLADESH” এবং ‘বিচারক’ এর স্থলে “JUDGE” পদবী ব্যবহার করা হয়েছে। Paragraph-94: Establishment of Supreme Court (1) There shall be a Supreme Court for Bangladesh (to be Known as the Supreme Court of Bangladesh) comprising the Appellate Division and the High Court Division. (2) The Supreme Court shall consist of the Chief Justice, to be known as the Chief Justice of Bangladesh and such number of other Judges as the President may deem it necessary to appoint to each division. ব্যাপারটাতে কোন অস্পষ্টতা আছে কি? তারপরও এই অন্যায্য পদবীটাই এখন বাংলাদেশের উচ্চ আদালতের বিচারকদের অলংকার এবং অহংকার! যাঁরা আদালত অবমাননা এবং বিচারবিভাগ অবমাননা নিয়ে এত বেশী অনুভূতিপ্রবন তাঁরা নিজেরাই যে নিজেদের নামের পূর্বে, সুপ্রিম কোর্টের ক্যালেন্ডারে, বক্তৃতায়, বহনকারী গাড়ির পতাকায়, নিজের পরিচয় দানে এবং এমনকি বাড়ির নাম ফলকে “বিচারপতি” শব্দটি ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত সংবিধান অবমাননা করে চলেছেন,তার বিচার কে করবে? সুপ্রিম কোর্ট কে বলা হয় সংবিধানের রক্ষক। এক্ষেত্রে কি রক্ষক স্বয়ং ভক্ষক হয়ে যাচ্ছেন না? আরো বেশি অবাক হই যখন দেখি প্রথম আলো, ইত্তেফাক,সমকাল, কালের কন্ঠ, DAILY STAR অথবা BDNEWS24 এর মতো শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমগুলোও একই ভুলের পুনরাবৃত্তি করে প্রকারান্তরে ভুলটাকেই বৈধতা দিয়ে দিচ্ছে! বিচারের দন্ড যার হাতে, যিনি চাইলে পত্রিকার সম্পাদক অথবা জাঁদরেল সরকারী আমলাকেও ঘন্টার পর ঘন্টা কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, যার হাতে আমরা সঁপে দিয়েছি আমাদের পবিত্র সংবিধান রক্ষার গুরুদায়িত্ব - তিনি কেন সংকির্ণতার উর্দ্ধে উঠতে পারবেন না? তিনি কেন নিজের নামের সাথে জুড়ে দেবেন এমন একটি পদবী যা মোটেও তাঁর প্রাপ্য নয়? যে ব্যক্তি দেশের সর্বোচ্চ আইন (সংবিধান) কে অবমাননা করেন, অন্য কোন অবমাননার বিচার করার নৈতিক অধিকার কি তাঁর থাকা উচিত? একটা লিংক দিলাম।

এখানে সংবিধান এর ৯৪ থেকে ১১৬ অনুচ্ছেদ পর্যন্ত দেয়া আছে। এই অংশটাতে বিচার বিভাগের গঠন সম্পর্কে বলা আছে। আরো CLARIFICATION চাইলে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে দেয়া সংবিধানের সর্বশেষ সংস্করণ পড়ে নিতে পারেন লিংক সংগৃহীত: মন্তব্য করতে সরাসরি চলে যান এখানে ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.