আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটা রোমান্টিক গপ্পো

চারদিকে এতো জীবিত মানুষ...মাঝে মাঝে লজ্জাই লাগে নিজেকে মৃত দেখলে.. সময়টা ২০০৫ এর। স্থানঃ সরকারি বিজ্ঞান কলেজ। ফার্মগেট। বাসার সবাই দেশের বাড়িতে গেছে। এদিকে আমাদের কলেজে আবার সাইন্স ফেয়ার শুরু হবে।

তাই আমি যাই নাই। ফ্রেন্ডের বাসায় থাকবো। ভিকারুননিসানুন আসবে,হলিক্রস আসবে,বিএএফ শাহীন আসবে। আমাদের তো তখন পাঙ্খা অবস্থা। আমরা কলেজের মোটামুটি সবচেয়ে বদ ব্যাচ।

ক্লাস মিস থেকে শুরু করে ভাইস প্রিন্সিপালের সাথে দাড়িয়াবান্ধা খেলার অভিজ্ঞতাও আছে কারো কারো। হুট করে সাইন্স ফেয়ারের কথা শুনে আমরা সবাই চরম সিরিয়াস। নিয়মিত ক্লাসে ঢুকি। বড়ভাইদের সালাম দেই। এমন করতে করতে সাইন্স ফেয়ার শুরু হয়ে গেলো।

ফালু সাহেব উদ্বোধন করলেন। আমি স্কাউটে নাই। হুট করে মাথায় স্কাউট এর ফ্রেন্ডদের মধ্যে একজনরে বললাম,আমি থাকবো ভলান্টিয়ারে। বন্ধুতো টাশকী!!!!কাহিনী কি!!অনেক কষ্টে,কাহিনী ঝামেলা শেষ করে ঢুকলাম ভলান্টিয়ার গ্রুপে। আমি আর অদিতি।

আমাদের দিলো সরকারী বিজ্ঞানের নতুন বিল্ডিঙ্গের ২তলায়। বাইরের থেকে ছেলেদের স্কুল আসছে ওই রুমে। মেজাজ খারাপ। এইজন্য কি ভলান্টিয়ার হইছি নাকি?অদিতিকে বললাম,দোস্ত কিছু কর। লাঞ্চ এর সময় স্কাউট গ্রুপের বড় ভাইকে গিয়ে ধরলাম।

বললাম ৩তলায় ভিকারুননিসার রুমে দিতে হবে আমাদের। কিছুক্ষন কথাবার্তার পরে ভাইয়া রাজি হলো। শুরু হলো আমার কাহিনী প্রথম ধাপ। লাঞ্চের পরে গিয়ে ঢুকলাম ভিকারুননিসার মেয়েরা যেই রুমে ছিলো সেই রুমে। আমি আর অদিতি তো পুরা ভাবে আছি।

এরমধ্যে দেখে নিচ্ছি চারপাশ। হঠাত করেই চোখে চোখ পড়লো। Eyes-u eyes-u meet-u meet-u অবস্থা । প্রথমে বুঝতে পারি নাই। কিছুক্ষণ পরে আবার তাকালাম।

একই কাহিনী। অদিতিকে কাহিনী বললাম। ও বললো,চালাইয়া যা। প্রথম দিন এইভাবে শুধু আমারই মনে একটু উত্থাল-পাত্থাল শুরু হইলো(পরে তার কাছে শুনেছি তিনি নাকি প্রথম দিনে কিছুই দেখেননি)। রাতে ফ্রেন্ডের বাসায় তো আমার আর ঘুম আসে না।

ওরা ৩জন থাকত ওর রুমে। ২টার দিকে বসলাম কার্ড খেলতে। খেলতে খেলতে ভোর। নাস্তা করতে বের হলাম। এসে ছোট্ট একটা ঘুম দিয়ে নিলাম।

কিছুক্ষণ পরেই উঠে দৌড় দিলাম কলেজে। গিয়ে সাথে সাথে ৩তলায়। আগের রুমেই। দেখলাম তিনি এসে পড়েছেন। অনেকে আসছেন।

প্রজেক্টের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করছে। তিনি কথা বলছেন। মাঝে মাঝে মনে হয় আমার দিকেও একটু তাকাচ্ছেন। আমি তো ভলান্টিয়ারের কাজ ছেড়ে সব ভুলে তার টেবিলের কাছেই দাঁড়িয়ে থাকি। মনে নেই,কি যেন একটা সমস্যা হচ্ছিলো।

আমাকে বললো অনেকক্ষন পরে। আমি তো হাতে চান্দের বাত্তি পাইলাম। যা যা করা লাগে করলাম। এরমধ্যেই দুপুর হয়ে গেলো। স্যার এসে বলে গেলো,লাঞ্চের সময় থেকে শুরু করে যতক্ষণ না পর্যন্ত স্যাররা বলবেন ততোক্ষন পর্যন্ত রুমের দরজা বন্ধ থাকবে এবং মেয়েরা সবাই রুমের ভেতরে থাকবে।

কেউ বের হবে না,কেউ ঢুকবেও না। জানিয়ে দিলাম সবাইকে। ওহ। আমাদের দুইজন মানে আমার আর অদিতিরও রুমের থেকে বের হওয়া চলবে না। ঠিক আছে।

সবচেয়ে বিরক্তিকর পরিস্থিতে তখন। রুমে শুধু আমরা দুইটা ছেলে। আর বাকি সব মেয়ে। খালি চিতকার,চেচামেচি......হুট করেই দেখলাম করিডরে একটা ছেলে হাটাহাটি করছে। আমাদের জানামতে তখন পুরা বিল্ডিং বন্ধ।

কেউ ঢুকতে পারা কথা না। দেখলাম ছেলেটা তাদের টেবিলের দিকে আসার চেষ্টা করছে। ছেলেটা দরজার কাছাকাছি আসতেই আমি গেলাম। আমাকে বললো ভেতরে ঢুকতে চায়। আমি বললাম,ভাইয়া এখন তো প্রজেক্ট শো বন্ধ।

আপনি কিছুক্ষণ পরে আসেন। এরমধ্যেই তিনি এগিয়ে আসলেন আমার দিকে। পেছন থেকে ডাক শুনে ঘুড়ে দাড়ালাম। কিন্তু পড়ে যাওয়ার অবস্থা হলো আমার। তিনি কথা বলতে আসছেন আমার সাথে।

বললেন যেই ছেলেটি আসছে সে তাদের এক ফ্রেন্ডের বড় ভাই। আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থেকে তার কথা শুনলাম। বললাম,আপু আমাদের কিছু করার নেই। উনি বললেন,দেখেন না ভাইয়া কিছু করা যায় কিনা। আমি বললাম,ঠিক আছে।

দেখছি। একবন্ধুকে ডাক দিলাম। তাকে বললাম ছেলেটিকে পুরো ফেয়ার ঘুড়িয়ে দেখাতে। কেউ কিছু বললে যাতে বলে একজন কম্পিটিটরের ভাই। সেই বড় ভাই(!) কে নিয়ে আমার বন্ধুটি গেল।

আমি তো তখন উড়তেছি। তিনি বললেন থ্যাঙ্কস। সবাই থ্যাঙ্কস দিলো তাদের টেবিলের। আমাকে আর পায় কে। এতক্ষণে ইনফিল্ট্রেট করার চান্স পেলাম।

এরপরে কিছুক্ষণ পরপরই তাদের সামনে যাই,তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করি। এর মধ্যেই স্যার এসে বলে দিলো রুম ওপেন করে দিতে। অনেকক্ষণ বন্ধ থাকার ফলে তখন পানির মত ছেলেরা ঢুকতে লাগলো। আমার আর অদিতির তো মাথা খারাপ অবস্থা। এরপরেই সেই কাহিনী......কোন একটা স্কুলের এক ছেলে একটা প্রজেক্টের মেয়েদের কমেন্টের ডায়রীতে খারাপ কিছু লেখে সম্ভবত।

মেয়েরা তাদের মিস কে কথাটা জানায়। রীতিমত গন্ডগল লেগে যায়। আমি আর অদিতি যাওয়ার পরে মেয়েরা আমাদের জানালো। এরপরে আমি কলার ধরে ছেলেটাকে টেনে নিয়া আসলাম আর অদিতি হাল্কা দুই একটা দিতে থাকলো(কি দিলো তা নিশ্চই আর বলতে হবে না)। মারামারি দেখে যে মেয়েদের টেবিলে ঘটনা হইছে তাদের একজন হঠাত নাই হয়ে গেলো।

মানে অজ্ঞ্যান। আমাদের তো মাথায় বাড়ি। অদিতিকে ছেলেটার ব্যবস্থা করতে বলে আমি আবার ফিরে আস্লাম। এসে দেখি সবাই পানি পানি বলে চিৎকার করছে কিন্তু এতোগুলো মেয়ে কারো কাছেই পানি নেই। আঙ্কেল(আরেক বন্ধু) কে পাঠালাম পানি আনতে।

পানি আসলো। ছিটানো হলো মেয়েটার মুখে। সুস্থ হলো। এতক্ষণে আরেকদিকে তাকানোর কথা খেয়ালই ছিলো না। হুট করেই তাকিয়ে দেখি তিনি আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।

আবার একটা হার্টবিট মিস করলাম। এরপরে আসলাম তাদের দিকে। জিজ্ঞেস করলাম তারা ঠিক আছে কিনা। কিছু দরকার কিনা। বললো না।

আবারো থ্যাঙ্কস পেলাম তাদের থেকে। এরপর টুকটাক কথা চলতে থাকলো। তখনো নাম জিজ্ঞেস করার সাহস পেলাম না। এরমধ্যেই ২য়দিন শেষ। আজকের দিনের ফলাফলে আমি সন্তুষ্ট।

পারলে সংবাদ সম্মেলন করি টেষ্ট খেলা অধিনায়কের মত ২য়দিনের সাফল্যের কথা ভেবে। এইদিন আর বাসায় গেলাম না। অনেকক্ষণ আড্ডা দিলাম সেজান পয়েন্টে। আড্ডা দিয়ে ১১টার দিকে ফ্রেন্ডের বাসায়। ওরে আপডেট দিলাম।

অপেক্ষার রাত......কখন শেষ হবে আল্লাহ মালুম!!!!!কোনমতে রাতটা পার হলেই আমি পুরা উসাইন বোল্টের মত দৌড় দিলাম মিরপুর থেকে। কলেজে ঢুকে ব্যাগটা রেখেই খোজ নিলাম তিনি আসছেন কিনা। ততক্ষণে আমাদের পুরা সার্কেলে খবর হয়ে গেছে। “বাবু আটকাইয়া গেছে বড়শীতে”। কিছুক্ষণ পরেই তারা আসলেন।

আমার তো অবস্থা খারাপ। আজকেই ফেয়ার শেষ,কিছু একটা করতেই হবে। কিছু একটা বলতেই হবে। এরমধ্যেই বনি বাজি ধরলো। এক প্যাকেট সিগারেট।

আমি নাকি মেয়েটার সাথে কথাও বলতে পারবো না। মাথা তো আরো খারাপ। এরমধ্যেই গেলাম তার সামনে। কথা হলো টুকটাক। কিছুক্ষন পরে বেরসিকের মত ফালু সাহেব এসে পড়লেন।

মানে সময় শেষ। সবাইকে কলেজের অডি তে যাওয়ার জন্য বলা হলো। আমি তো আর যাই না। তাদের সাথে সাথে গেলাম। তিনি গিয়ে বসলেন।

আমি থাকি ফাকে ফাকে। তাকে যেখান থেকে দেখা যায় সেখানে। আমার তখন ধুকপুক চলছে। যদি আর কথা না হয়...যদি আর দেখা না পাই... আস্তে আস্তে পুরস্কার দেয়াও শেষ হয়ে যায়। আমাদের কলেজ প্রথম আর সম্ভবত তাদের প্রজেক্টাই ২য় হয়।

একসময় তারা বের হয়ে যাবেন বুঝতে পারছি। তখন স্কাউটদের গলার স্কার্ফটা খুলে আমি দৌড় আবার। কারণ তখনও স্কাউটদের অডি ছাড়তে বলা হয় নাই। কিসের নিয়ম নির্দেশ...আমি তো তখন দিশেহারা...যখন সিড়ি দিয়ে নামছেন তিনি তখন কথা হলো। কেমন যেন মিটিমিটি একটা হাসি।

আমি আবার হার্টবিট মিস করলাম। চলে যাচ্ছেন। কি করবো,শুধু তাদের কলেজের গাড়ির সামনে দিয়ে হাটাহাটি করছি। কি করা যায়। হঠাত বুদ্ধি পেলাম।

বনিকে ধরলাম,মামা,তোরে এক প্যাকেটে সিগারেট এখনি দিমু। এই নাম্বারটা দিয়া আয়। কত কষ্টে যে একটুকরা কাগজ আর কলম পাইলাম। লিখে দিলাম নাম্বার আর নিচে বাবু(আমার নাম)। এরপরে আস্তে আস্তে তাদের গাড়ি ভরে উঠলো।

চলে গেলো। তখনি কেমন যেন খালি খালি লাগছিলো......তারপরেও শান্তনা ছিলো অন্তত নাম্বার দিতে পেরেছি। এরপরে একটু একটু মন খারাপ নিয়া বাসার দিকে গেলাম। গিয়ে নাহিদকে কল করলাম(যার বাসায় থাকছি)। বললাম আমি শাহ আলীতে পুল ক্লাবে।

ও বললো ওর একটু দেরী হবে। আমি যেন ওয়েট করি। আমি গেলাম। কয়েকজনের সাথে আড্ডা দিচ্ছি। হুট করেই মোবাইলে দেখলাম অনেকক্ষণ আগে আসা একটা মেসেজ বক্স এর সিগন্যাল।

ওপেন করলাম। লেখাছিলঃ babu,ami Tammi.amar to mobile nei.tomar Jodi TnT number thake tahol ei number a msg dio.ami call korbo. আমি তো কিছুই বুঝলাম না(কত্ত গাধা ছিলাম)। নাহিদ আসলো। অনেকক্ষণ খেললাম বিলিয়ার্ড। রাতে বাইরেই খেলাম।

তারপরে সারারাত কার্ড খেল্লাম। কেন যেন তার কথা মনে ছিলো না। হয়তো অবচেতন মন ভেবেছিলো হয়তো আর কখনোই তার সাথে দেখা হবে না,কথা হবে না,চশমা পরা চোখের ফাকে দেখবো না দুষ্ট হাসির ঝিলিক... সকালে ঘুম থেকে ঊঠতে পারি নি। মোবাইলে চেক করতে গিয়ে আবার দেখলাম মেসেজটা। কেমন অদ্ভুত!!!তাম্মি কে?আমার নাম জানে,আমি চিনি না!!!!কি আজিব!!!নাহিদকে ডেকে উঠালাম।

কোচিং ছিলো প্লেন মসজিদে। বাসে উঠলাম। প্রথমে ফার্মগেট তারপরে এলিফ্যান্ট রোড। বিআরটিসির ডাবল ডেকারে উঠলাম। দুপুর তখন।

উপরে পুরাই খালি। আমি আর নাহিদ,হয়তো আরো দুই একজন ছিলো। হুট করেই আমার মাথায় কি যেন ক্লিক করলো। আরি!!!!!কাল না একটা মেয়েকে আমি নাম্বার দিলাম!!!!সাথে সাথে মোবাইল বের করে মেসেজ পাঠানোর সময়টা দেখলাম। মিলে যাচ্ছে।

সন্ধ্যার কিছু আগে পাঠানো। বাসের মধ্যেই আমি বিশাল কইরা একখান চিৎকার দিলাম। নাহিদ জিজ্ঞেস করলো ঘটনা কি। ওরে বললাম। তারপরে পুরা ঘটনা বোঝা গেলো।

বাস থেকে নেমেই কার্ড কিনলাম। কল করলাম মেসেজ পাঠানো হয়েছে যে নাম্বার থেকে সেই নাম্বারে। আমতা আমতা করে বললাম,আমার নাম বাবু। কাল তাম্মি আমাকে এই নাম্বার থেকে মেসেজ পাঠিয়েছে। ওর টিএন্ডটি নাম্বারটা দেয়া যাবে কিনা।

ওপাশ থেকে বলা হলো,তিনি তাম্মির সাথে জিজ্ঞেস করে নেবেন। আমি যেন পরের দিন কল করি। আমি তো কথা বলার শেষে দুইটা লাফ দিলাম বিশাল বিশাল... এরপরে তাম্মি নিজেই কল করলো। কথা হলো। তার নাম্বার নিলাম।

কথা হলো। অনেক কথা...অনেকক্ষন...আমি পাগল হয়ে উঠেছি দেখা করার জন্য। স্থান সময় ঠিক হলো। বেইলী রোডের গলপিয়াতে দেখা হবে। আমি হরাইযন দাড়িয়েছিলাম...কলেজ ড্রেসে।

তিনি আস্লেন,রিকশা থেকে নাম্লেন। তারপরে ছোট্ট করে একটা চিতকার,ইউনিফর্মে কেন??এখনো হাসি মনে হলে... কথা বল্লাম...কথা হলো...অনেকক্ষণ গলপিয়াতে বস্লাম। যাওয়ার সময় হলো। রিকশা ঠিক করে দিলাম...একা একা চলে গেলো বাই বলে...আমাকে বললোও না যে আমি কোথায় যাবো/ওর সাথে রিকশায় উঠবো কিনা কারণ আমি মগবাজার যাবো বাস ধরতে। ওর বাসার রাস্তাতেই।

চলে গেলো রিকশার হুড তুলে দিয়ে...আমি আবার একা। দাড়িয়ে থাকলাম। কিছুক্ষণ। একা একা। খুব একা... সময় ২০১১ স্থানঃশাহবাগ,জাদুঘরের সামনে।

আমিঃতুমি কই? সেঃ আমি ল্যাব থেকে বের হইছি। কোথায় তুমি? আমিঃআমি শাহবাগে। আসিফভাইর জন্য যে সমাবেশ করছি ওইখানে। সেঃআমি আসবো? আমিঃআসো। এসে চলে যাও।

দেখা করে। কিছুক্ষণ পরে তিনি আসলেন। এসে ডাক দিলেন। আমি তখণ ব্যস্ত কথা বলায় আন্দোলনের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে। আমি গেলাম।

গিয়ে একটু করে হাতটা ধরলাম। বললাম,চলো,চা খাই। চা খেলাম। পরে বললাম,তুমি চলে যাও। এখানে তোমার থাকা লাগবে না।

বললো,কিচ্ছু হবে না,থাকি। আমি জোর করে পাঠিয়ে দিলাম বাসায়। আমাকে বলে গেলো সাবধানে থাক্তে। আমি বললাম,থাকবো। আবার আমি ব্যস্ত ও চলে যেতেই।

খেয়াল নেই কোনদিকেই। হুট করেই মোবাইল বের করে দেখি ৮৭টা মিসকল। মোবাইল সাইলেন্ট ছিলো। টের পাইনি। আম্মু,আব্বু,আপু,তিনি...সবাই কল করেছেন।

দেখতে দেখতেই আবার তার কল। রিসিভ করলা। উদ্বিগ্ন একটা কন্ঠ...খুব রাগের সাথেই বললো,কই তুমি?কল পিক করো না কেন?সবাই টেনশন করতেছে বাসায়...আমি বললাম,সাইলেন্ট ছিলো। টের পাই নাই। সর্যিা।

এরপর বাসায় কথা বললাম। তারপরে আবার ওর সাথে... এই হচ্ছে ও আর আমি। তাম্মি আর আমি। সেই ২০০৫ এর গলপিয়া থেকে যে একদিন চলে গিয়েছিলো একা সে এখন আমার সাথেই। প্রতিটা সময় যে সাথে থাকে।

এই ভালোবাসা,এই ঝগড়া। একদিন হুট করে হাত ধরে ফেলেছিলাম। কিছু না বলেই। সেই হাত এখন আমার হাত ধরে। আমাকে টেনে নেয়...২০০৫ থেকে ২০১১।

এখন সে আমার। রাত পার করে দেই কথা বলে...তবুও যেন তার কথা শেষ হয় না। আমি অবাক হয়ে থাকি। আমার মত একটা কাঠখোট্টা ছেলের সাথে কেউ এভাবে কথা বলতে পারে?যখন হাসে,অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি। চশমার ভেতর থেকেও যেন তার চোখ কথা বলে আমার সাথে...অসম্ভব প্রিয় ওর চুল আমার।

পাগল হয়ে থাকি...কখন ওর চুল ছুতে পারবো... ৬বছর পার হয়ে গেছে...ওর আর আমার। যেদিন ও মেসেজ দিয়েছিলো,জাতীয় সঙ্গীতের ২য় লাইন শুধুই আমার জন্য,পাগলে হয়ে ওকে কল করেছিলাম। শুধু ওর মুখ থেকে শোনার জন্য। বলে নি। শুধু বলেছিলো,মেসেজতো দিয়েছি।

বলাতে পারি নি। শুনতে পারি নি,সেই আকাংখিত কথাটি। দেখা হতো না। কথা হতো না। দুইজনেরই পরীক্ষা।

তারপরে ইন্টার পাশ করে দুইজনের ভার্সিটি...আর ও আর আমি। খুব রাগ হয় আমার কাজকর্মে। আমি নাকি খালি দেশ দেশ করি। কি হবে এসব করে। কেন ওকে সময় দেই না।

কেন মিছিলে থাকি,কেন মিটিং এ থাকি। অনেক অভিযোগ। অভিযোগ আর অভিযোগ... জানি কিসের ভয় থেকে বলে এসব। বলাটাই স্বাভাবিক। আমিও শুনিনা ওর কথা।

জানি দুইদিন পরে আবার ওই আমাকে বলবে এইটা দেখ,ওইটা নিয়ে কাজ করা উচিত। নিজেই আবার আমাকে বলবে। আমাদের গল্পটা খুব সাধারণ। কিন্তু আমার চোখে প্রতিটা সময় ধরা আছে। প্রতিটা সেকেন্ড।

প্রতিটা সময় এখনো দেখতে পাই। সবচেয়ে মজার ছিলো মিরপুর থেকে বাসা চেঞ্জ করে যখন মগবাজারে আসলাম,তখন হুট করেই গলিতে ঢোকার মুখ দেখি ডাক্তারের গলি লেখা। আমি তো অবাক। এক পরিচিতকে বলে দিয়েছিলাম বাসা খুজতে। তিনি এই গলিতেই বাসা দেখেছেন।

যখন বাসা ঠিকাঠাক হলো তখন বললাম আমরা ডাক্তারের গলিতে বাসা নিয়েছি। ও তো অবাক। কারণ হুট করেই বাসা চেঞ্জ করেছিলাম। ও বললো কোথায়?আমি বললাম,মসজিদের সাম্নের গলিতে। তখন ফুটবল বিশ্বকাপ চলে।

২০০৬। আমি বল্লাম,আমি আমাদের বাসার ছাদে। ওর ছোট ভাই আবার ফ্রান্সের সাপোর্টার। বললো দেখো তো কোন বাসার ছাদে ফ্রান্সে পতাকা দেখা যায় কিনা। খুজতে খুজতে দেখি ঠিক রাস্তার অপর পাশেই মাত্র ৯টা বিল্ডিং পরেই একটা বাসার ছাদে ফ্রান্সের পতাকা।

বিল্ডিঙ এর বর্ণনা দিতে তিনি উচ্ছসিত কন্ঠে জানালেন,হ্যা। এইটা। আমি চিন্তা করলাম,এই ছিলো কপালে?হুহ...এখন তিনি মাঝে মাঝে আমাকে ফোন করেন। তাজিম(ওর ছোট ভাই)কে পাঠাইছি। আচার খাইতে ইচ্ছা করতেছে।

প্রান এর আমস্বত্ত। কিনে পাঠাও...আমি আবারো চিন্তা করি...হায়রে আল্লাহ!!!!এই ছিলো কপালে???? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.