আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

'সাধু'- একটি অবৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী

https://www.facebook.com/blogger.sadril জা ছিক্রেট ছোছাইটি প্রাচীনকালের অজানা কোন সময়ে পৃথীবিতে জাদুবিদ্যার ব্যাপক উতকর্ষ সাধিত হইয়াছিলো। জাদুমন্ত্রে সময় পরিভ্রমন করিয়া বেড়ানো ছিলো তখনকার জাদুকরদের নিকট ডালভাত। তবে যে ব্যাপারটি তাহাদের নিকট হাড্ডি-কাবাব হইয়া উঠিলো তাহা হইলো মানুষকে সাধুকরন করিবার সদ্য আবিষ্কৃত জাদুমন্ত্রের প্র্যাকটিকাল এক্সপেরিমেন্ট। মন্ত্রের কপিরাইটের অধিকারী ছিলো প্রাচীন জাদুকরদের লইয়া গঠিত গোপন সংঘ ‘জা ছিক্রেট ছোছাইটি’। প্রশ্ন উঠিতে পারে দেবর বা ননদ থাকিতে কেন জা ।

আসলে ছিক্রেট ছোছাইটির জাদুকরেরা জাদু শব্দটি হইতে জাদু করিয়া “দু” বাদ দিয়া শুধু “জা” করিয়া দিয়াছেন। সেই হইতে জা ছিক্রেট ছোছাইটি। যাহা কহিতেছিলাম, জা ছিক্রেট ছোছাইটি সিদ্ধান্ত নিয়া বসিলো তাহাদের সাধুকরন মন্ত্র ভবিষ্যতের মানবকূলের উপর পরখ করিয়া দেখা হইবে। বহু আলোচনা-পর্যালোচনা করিয়া ২০১১-এর অস্থির সময়কালকে নির্বাচিত করিয়া সেই সময়ের বিভিন্ন দেশের রাজধানীসমূহে একেকজন গোপুন জাদুকর এজেন্ট পাঠাইয়া দেয়া হইলো। মোদের এই ঢাকা শহরে যাহারে পাঠানো হইলো তাহার কোডনাম হইলো ‘সু’।

সুউদ্দ্যেশে সুদীর্ঘ সময়পথ অতিক্রম করিয়া সুচিন্তিতভাবে সাধুকরনমন্ত্র এপ্লাই করিয়া সু অতীতের জন্য কি সুফল বইয়া লইয়া যাইতে পারে তাহাই মোরা এখন জানিবো। সু-এর মিশন-এর সূচনা সময় পরিভ্রমন করিয়া ‘সু’ ফিউচার ল্যান্ডিং করিলো ঢাকার একখান মাইনকা চিপা গলিতে। নীরব স্থান হওয়ায় তাহার এই আকস্মিক উদয় কেহ দেখে নাই। জাদুমন্ত্রে সময় পরিভ্রমন সহজ হইয়া উঠিলেও অতীত হইতে সময় ভ্রমন করা শুরু করিলে ভবিষ্যতে যে মুল্লুকে গিয়া হাজির হইবার প্রোগ্রামিং জাদুমন্ত্রে করা থাকে তাহা অনেক সময় কাজ করিতে ব্যার্থ হয়। সময় পরিভ্রমন করিয়া আসিয়া অনেক জাদুকর এজেন্ট রিপোর্ট করিয়াছে তাহাদের নাকি ফিউচার ল্যান্ডিং করিতে হইয়াছিলো “কমোড” নামক মানুষের ভবিষ্যত পয়োনিষ্কাশন যন্ত্রে।

সে এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। সু সেদিক হইতে লাকি। সাধু-সন্ন্যাসর বেশ ধারন করিয়া সু আশাবাদী সহজেই মানুষের ভীড়ে মিশিয়া যাইতে পারিবে। যুগে যুগে মানুষের বেশভুষা রিমোট দ্বারা টিভির চ্যানেল চ্যাঞ্জ করিবার স্বরূপ পরিবর্তন হইতে থাকিলেও যেকোন যুগে একখান সাদা আলখাল্লা পরিধান করিয়া,সফেদ দাড়ি রাখিয়া আর হাতে একখানা লাঠি লইয়া নিজেকে সাধু বলিয়া চালাইয়া দেয়া যায়। সে পন্থা অবলম্বন করিয়া সু তাহাকে শেখাইয়া দেয়া সাধুকরন মন্ত্র জপিলো এবং মন্ত্রের কার্যকারিতা স্বচোক্ষে ধারন করিতে মানুষের ভীড়ে মিশিয়া গেল।

সুরাজনীতির কবলে সু পল্টনে আসিয়া সু দেখিতে পায় রাজনৈতিক মিছিল আসিতেছে। মিছিল প্রতিরোধে পুলিশেরও ব্যাবস্থা রহিয়াছে। অবাক হয় সু। এই মুহুর্তে শহরের সবাই সাধু অথচ রাজনৈতিক গোলযোগ কি থামিয়া যায় নাই?তবে পুলিশের হাতে অস্ত্র,লাঠি,টিয়ার গ্যাস কিছুই নাই। মিছিল কাছাকাছি আসিতেই পুলিশেরা পকেট হইতে লিপস্টিক বাহির করিয়া নিজেদের ঠটে লাগাইতে শুরু করিলো।

পাবলিক রাস্তার দুইপাশের ভীর জমাইতে লাগিলো। সু নিজেও এসে পাবলিকের সাথে দাঁড়ায় কিন্তু যাহা সে দেখিতে আরম্ভ করিলো তাহা সে প্রত্যাশা করিবার পারে নাই। মিছিলাকারীরা গোলাপের পাপড়ী লইয়া পিকেটিং শুরু করিলো,সাথে সাথে পুলিশ একশনে গেলো। তাহারা মিছিলকারীদের যাহাকে পাইলো তাহার গালে লিপস্টিকমাখা ঠোটে চুম্বন করিতে লাগিলো। এহেন দৃশ্য দেখিয়া চারপাশের পাবলিক মজা লুটিয়া বরং উলটো দুয়ো দিতে লাগিলো।

এক মধ্যবয়স্ক পথচারীকে পাকরাও করিয়া সু জিজ্ঞেস করিলো “ভাই,এইসব কি?” পথচারীর পালটা প্রশ্ন “আপনি কোন দেশ হইতে আগত ভ্রাতা?জানেন না দেশে কি ঘটিতেছে?” কিঞ্চিত বিস্মিত হইলো সু,তাহার জানামতে এই যুগে ঢাকার মানুষের কথ্য ভাষার হইবার কথা চলিত ভাষা কিন্তু এ ব্যাক্তি সাধু ভাষা বকিতেছে কেন?তাহার মানে কি,সাধুকরন যন্ত্রের ক্ষমতার বলে মানুষও সাধু ভাষায় কথা বলে!সু-এর জানিবার উপায় নাই,সাধুকরন মন্ত্র এতটাই ইফেকটিভ ছিলো উহার কারনে এই গল্পের গল্পকার সাধু ভাষায় অদক্ষ হইয়াও গল্পটি সাধু ভাষায় লিখিতে সিদ্ধান্ত লইয়াছিলো। আমতা আমতা করিয়া সেই ব্যাক্তিকে সাধু ভাষাতেই জবাব দেয় সু “আমারে দেখিয়াই আশা করি আপনার বোধগম্য হইতেছে আমি একজন সাধু। আমি দীর্ঘদিন জনবিরল স্থানে ধ্যানমগ্ন ছিলাম। আকস্মিক শহরে আসিয়া কিছু ঠাওর করিতে পারিতেছি না”। পথচারী দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়া সুকে সুধায় “কি আর বুঝিবেন!বেবাক সাধু রাজনীতিবিদদের লইয়া দেশ বড়ই বিপাকে।

সরকারী দল ক্ষমতায় থাকিতে চায় না। তাহাদের বক্তব্য ক্ষমতায় থাকিলেই লুটপাট করিতে মন চায়। তাই তাহারা বিরোধী দলকে ক্ষমতা গছাইয়া দিবার সিদ্ধান্ত লইয়াছে। সেই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করিতেছে বিরোধীরা। তাহাদের কথা ক্ষমতায় থাকিয়া তাহারা পূর্বে বহু লুটপাট করিয়াছে,এখন আর নহে।

তাহারা গোলাপের পাপড়ি লইয়া রাজপথে পিকেটিং করিতে শুরু করিলে সরকার তাহাদের দিকে চুম্বনরত পুলিশ লেলাইয়া দিয়াছে। ”সু তবুও বুঝিতে পারে না, “কিন্তু পুলিশ দিয়া যদি বিরোধীদের দমন-পীরন করিতেই হয় তাহলে পুলিশের হাতে লাঠি থাকিবার কি কথা নহে?” পথচারী চেচাইয়া উঠে “ছি,ছি আপনি ধ্যান করিয়া সাধু সাজিয়াছে অথচ সংঘর্ষের প্রসংগ উঠাইতেছেন। আমরা বিশ্বাস করি শত্রুকে ভালোবাসায়। তাই সরকারের নির্দেশে পুলিশ বাহীনি স্টিক নয় বরং লিপস্টিক-এর উপর নির্ভর করিয়া ঠোটে চুম্বন মারফত পিকেটারদের ভালোবাসা অফার করিতেছে আর পিকেটারগন পাপড়ি ছিটাইয়া সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাইতেছে। ইস্কুল হইতে সু-এর প্রাপ্ত সুশিক্ষা সাধুকরন মন্ত্র ছাত্রজীবনে কতটুকু প্রভাব আনিয়াছে তাহা জানিতে সু এখন বসিয়া রইয়াছে ঢাকার একটি ইস্কুলের ক্লাস সিক্সের শ্রেনীকক্ষে।

সু-এর বিশ্বাস সবাই সাধু হইবার সুযোগে ইস্কুলে বেত্রাঘাত দ্বারা শাস্তি প্রদানের কোন আবকাশ নাই। ছাত্ররা পড়া শিখিয়া আসিবে,পড়া ভুলিয়া বসিলেও শিক্ষকেরা তাহাদের স্নেহ করিবে। এখনো শিক্ষক ক্লাসে আসে নাই। অন্যান্য ছাত্ররা গল্প করিতেছিলো। একজন সুকে দেখাইয়া আগাইয়া আসিয়া জানতে চাহিলো “ওহে,তুমি কে”?সু উত্তর দিলো, “আমি নতুন ছাত্র।

অর্থের অভাবে দীর্ঘকাল পড়িতে পারি নাই। তাই এই বয়স্ক জীবনে পড়িতে আসিয়াছি। আমাকে কি এই ক্লাসে নেয়া হইবে”? ছাত্রটি হাসিয়া কহিলো “কেন নহে!তুমি কি জানো না শিক্ষা সকলের লাগি উন্মুক্ত। যে কেহ যে কোন ইস্কুলে আসিয়া মাগনা শিক্ষা লইয়া জাইতে পারিবে। ডোনেশন লইয়া নো টেনশন”।

শুনিয়া সু খুশি হইয়া উঠে। সাধুকরন মন্ত্র শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক সফল। এমন সময়েই ক্লাসে শিক্ষকের প্রবেশ ঘটিলো। এক ছাত্রকে দাড় করাইয়া জিজ্ঞেস করিলেন “পড়া শিখিয়াছিস”? উত্তরে ছাত্র কহিলো,”স্যার, আমি মিথ্যে অজুহাত দাড় করাইবো না যে আমার উদরে বা চুলে অথবা নখে ব্যাথা হইয়াছিলো। আমি সত্যি কহিতেছি, কাল বিকালে আমার এক বন্ধুর সাহিত ক্রিকেট খেলিবার এক পর্যায়ে একটি আউটের doubt লইয়া মন কষাকষি এবং অতঃপর ব্যাট কষাকষি হইয়াছিলো।

সেই ব্যাটের আঘাতের ব্যাথায় আমি রজনীতে পড়া শেষ করিতে পারি নাই। মোদের আরেক বন্ধু ফেসবুকে ব্যাট কষাকষির ছবি আপলোড করিয়া বসিল। সেই ছবিতে সবার কমেন্ট পড়িতেও খানিকটা সময়ক্ষেপণ হইয়াছে”। “একেই তো সত্যি কথা বললি, তার ওপর আবার ব্যাট কষাকষি করিয়া যে জ্ঞান অর্জন করিয়াছিস,উহাই তোর বড় পাওয়া। মানুষের জ্ঞান চর্চার তীর্থস্থান হইলো খেলার ময়দান আর ফেসবুক।

তুই এই বয়সেই এই সকল স্থানে ঢু মারীতে শুরু করিয়াছিস। কাল অফিসে আসিয়া তোর সার্টিফিকেট লইয়া যাইতে ভুলবি না” এই বলিয়া শিক্ষক ছাত্রের পিঠ চাপরাইয়া দিলেন। সুপরিবহনে সু সু বাসে চড়িয়া যাইতেছে। বেপরোয়া বাস ড্রাইভারগন সাধু হইবার পর কতটা পরোয়া করিতে শিখিয়াছে সু তাহা জানিতে চায়। হেল্পার সু-এর নিকট টিকিট চাহিয়া বসে।

“আমি তো সাধু-সন্ন্যাসি মানুষ,আমার নিকট টাকাও নাই,টিকেট কিনিতেও পারি নাই” এইরূপ বলিয়া সু নিস্তার পাইতে চায়। হেল্পার সু-এর দিকে একটা টিকেট বাড়াইয়া দেয়। “ইহা রাখেন,ইহা হইলো টিকিট না দিতে পারিবার টিকিট”। এমন সময় ড্রাইভার সিট হইতে চিল্লাচিল্লির আওয়াজ ভাসিয়া আসে। বাস চলন্ত রাখিয়াই ড্রাইভার পার্শ্ববর্তী চলন্ত বাসের ড্রাইভারকে বলে “ওহে,শ্যালকপূত্র,তোমারে সাইড দিয়াছি তারপরও তুমি হর্ন বাজাইয়া যাইতেছ কেন?” পার্শ্ববর্তী বাসের ড্রাইভার হইতে উত্তর আসে,”তোমার সাইডের জননীকে জনক।

তোমারে আগে যাইতে কহিতেছি,তাহার ইঙ্গিতে হর্ন বাজাইতেছি। ট্রাফিক আইনে পড়িয়াছি,অযথা ওভারটেক করিতে নাই। ” সু-এর জন্য সুখাদ্য বাস হইতে নামিয়া সু বুঝিতে পারিলো তাহার ব্যাপক ক্ষিধে পাইয়াছে। একটি হাইফাই রেষ্টুরেন্টে ঢুকিয়া পরে সু। কিন্তু মেনুকার্ড দেখিয়া স্তম্ভিত হইতে হয়।

মেনুতে রইয়াছে “মরা মুরগির স্যান্ডুইচ,ফরমালিন দেওয়া মতস্য ফ্রাই,মেয়াদউত্তীর্ন সুপ ইত্যাদি। ম্যানেজারের দৃষ্টি আকর্ষন করিলে উত্তর পাওয়া যায়,কাষ্টমারদের নিকট নিজেদের সততা প্রময়ানে মেনুর এই বন্দোবস্ত। বিনা ভক্ষন ব্যাতিরেকে সু সেই রেষ্টুরেন্ত হইতে বাহির হইয়া একটি বিল্ডিংযের একটি ফ্ল্যাটে আসিয়া বেল বাজায়। একজন ত্রিশোর্ধ ভদ্রমহিলা দরজা খুলিলে তাহাকে সু নিজের ক্ষুধার সাথে পরিচয় করাইয়া দেয়। ভদ্রমহিলা সুকে ঘরে ঢুকাইয়া ডাইনিংইয়ে বসাইয়া নানান সুখাদ্য পরিবেশন করে।

“এই হইলো সাধুকরনের লীলা,কোন ক্ষুধার্ত চাহিবা মাত্র যেকোন বাড়িতে খাবার পাইয়া থাকে” সুখাদ্য গলাধঃকরন করিতে করিতে সু ভাবে। ভদ্রমহিলার পতি সু-এর সামনে বসিয়াই টিভিতে স্পোর্টস নিউজ দর্শনে ব্যাস্ত যেথায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ব্যাপক সমালোচনা হইতেছে। বিদেশ হইতে আগত অতিথি দলকে তাহারা হারাইয়া দিয়া অতিথিদের অপমান পূর্বক দেশের সম্মানকে রান আউট করিয়া দিয়াছে। সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক আসিয়া সাফাই গাইয়া যাইতেছে “আসলে মোরা মোদের মতো খেলিতেত পারি নাই। মোদের ইস্টাইল হইলো ব্যাটসম্যানরা উল্টো-পাল্টা শট খেলিয়া আউট হইয়া বিপক্ষ দলের জয়ের পথ সুগম কড়িয়া দিবে কিন্তু আজ কোন কারনে সবাই দায়িত্ব লইয়া খেলিয়া ফেলিয়াছি”।

এমন সময় যেই রুমনী সুকে দরজা খুলিয়া খানাপিনার আয়োজন করিয়া দিয়াছিলো তিনি হাতে সুটক্যাস নিয়া উদয় হইলেন। তাহার পতি তাহাকে সুধাইলো। “ব্যাগ-প্যাক গুছাইয়া চলিতেছো কোথায়?” স্ত্রীর পাল্টা প্রশ্ন, “শুনিয়াছি তুমি নাকি পরনারীর সহিত পরকিয়া করিয়া বেড়াও”? পতি আমতা আমতা করিয়া “ইয়ে অফিসের কাজের চাপে আসলে তোমাকে বলিবার সময় করিয়া উঠিতে পারি নাই”। জবাবে পত্নী কহিলো “কোন সমস্যা নাই। তুমি সেই নারীরে বিবাহ করিয়া সংসার পাতো।

তোমার এক বন্ধু অনেক দিন ধরিয়াই আমার ওয়েটিং লিষ্ট-এ রইয়াছে। আমি তাহার নিকট চলিলাম”। সু-এর প্রস্থান অর্ধভুক্ত অবস্থাতেই সু সেই গৃহ হইতে বাহির হইয়া একটি নীরব গলিতে অবস্থান লইয়াছে। তখন সন্ধ্যার পর আধার ঘনাইয়া আসিয়াছে। অন্যান্য মুলুকের সাধুকরন মন্ত্র এপ্লাইকারী এজেন্টদের সহিত ট্যালিপাথি কনফারেন্স করিলো সু।

সর্বত্র হইতে নানান খবর আসিতে লাগিলো। উদাহরনস্বরূপঃ -ভারতের চ্যানেলগুলোতে ক্যাট্রিনা ঐশ্বরিয়ারা গেরুয়া আলখাল্লা পরিধান করিয়া মাটিতে আসন পাতিয়া গাইয়া যাইতেছে “টাচ মি টাচ মি,ক্রেজি কিয়ারে”, ইমরান হাশমিকেও দেখা যাইতেছে ঠোট শক্ত কাপড়ে বাধিয়া ঘুরিতে ফিরিতে। -যুক্তরাষ্ট্র লাদেনের ক্লোন করিবার সিদ্ধান্ত লইয়াছে। লাদেন ব্যাতিরেকে তাহাদের বোম বোম খেলা নাকি জমিতেছে না। -ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা তাদের লইয়া বেবাক বাংলাদেশীর দলাদলির ইতিহাস জানিয়া মর্মাহত হইয়া আবহনি-মোহামেডামের জার্সি গাত্রে চাপাইয়া ফুটবল খেলিতেছে -ইউরোপীয় দেশসমূহ (বিশেষ করিয়া ইংল্যান্ড,স্পেন,ফ্রান্স আর পর্তুগাল) আফ্রিকার দেশগুলির ওপরে গত শতাব্দীতে দীর্ঘ শাসন চালাইয়া অনুতপ্ত।

তাহারা আফ্রিকার দেশগুলোর নিকট প্রস্তাব রাখিয়াছে,ইউরোপের জনগনকে আফ্রিকায় মাইগ্রেশন করিয়া দেয়া হইবে বিনিময়ে আফ্রিকার জনগনের ইউরোপে পাল্টা-মাইগ্রেশন হইবে। এতে যেমন ইউরোপীয় মানুষগন আফ্রিকার জঙ্গলে টারজান সাজিয়া এডভ্যাঞ্চার করিতে পারিবে তেমনি অনাহার আর সহিংসতার সহিত বসবাসে ক্লিষ্ট আফ্রিকান জনগনের ললাটে সমৃদ্ধ ইউরোপের হাওয়া বাতাস জুটিবে। ট্যালিপাথি কনফারেন্সে সিদ্ধান্ত লওয়া হইলো যেহেতু সাধুকরন মন্ত্রের ফল যতখানি সহজ-সরল আশা করা হইয়াছিলো তাহার নিকটবর্তী কিছু হয় নাই সেহেতু জাদুমন্ত্র পুনরায় উচ্চারন করিয়া বিশ্বকে পূর্বের অবস্থা ফিরাইয়া দিয়া এজেন্টগন অতীত গমন করিবে। ট্যালিপাথি শেষ হইলে সু যেই মন্ত্র উচ্চারন করিতে যাইবে ওমনি এক যুবক আসিয়া উপস্থিত। -“আল্লাহর ওয়াস্তে যদি কিছু প্রদান করিয়া ফেলেন তবে এই বান্দা খুশি হইবে”, সু-কে কহিলো যুবক -“তুমি কে হে?তোমারে দেখিয়া ভিক্ষুক বলিয়া ঠাওর করিতে কষ্ট হয়,অথচ ভিক্ষা মাগিতেছো”, যুবকের প্রতি সু-এর প্রশ্ন -“আজ্ঞে,আমি ভিক্ষুক নই।

আমি ছিনকারী। আপনার দয়াপূর্বক আপনাকে ছিনতাই করিতে চাই। এই মুহুর্তে খালি হাতে মাগিতেছি। আপনি কিছু প্রদান করিতে অপরাগ হইলে পকেট হইতে ছুড়ি বাহির করিয়া আপনার গলায় ঠেকাইতে অনুমতি কামনা করিতেছি। ”, যুবকে কন্ঠে বিনয় গদগদ।

-“আ...আমি সাধু মানুষ,পরনের এই আলখাল্লা ব্যাতিত আমার নিকট কিছুই নাই” -“তাই সই। আপনার সফেদ আলখাল্লা হস্তান্তর করুন। ইহাকে কাটছাট করিয়া নারীদের নয়া স্টাইলের ম্যাক্সি বলিয়া বাজারে চালাইয়া দেয়া যাইবে” সুকে তাই করিতে হইলো। যুবক ভবিষ্যত ম্যাক্সি লইয়া প্রস্থান করিলো,আর সু নগ্ন দেহ লইয়া সাধুমন্ত্র উচ্চারনপূর্বক গমন করিতে চলিলো অতীতে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.