আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাধু সাধু

!

[বঙ্গে সাধুভাষার আকাল দেখিয়া ঈশ্বরচন্দ্র বেজায় ক্ষিপ্ত হইলেন। চিরকালের গোঁয়ার-গোবিন্দ তৎক্ষনাৎ পুট্‌লি গুছাইয়া বিরস বদনে নিরুদ্দেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করিলেন। উহ্‌! যে দেশে সাধুর মূল্য নাই সে দেশের শৌচাগারসমূহে পুরিষ ত্যাগেও তাঁহার ঘৃণার উদ্রেক হয়। হায়, হায়! ঈশ্বর পন্ডিত তল্পিতল্পা সমেত ভাগিয়া যাইতেছেন। আমি মুক্তকচ্ছ(!) হইয়া উহার পিছু পিছু দৌড় পাড়িলাম।

“ঈশ্বর মশায়! স্বয়ং আমি শপথ করিতেছি যে বৎসরে নিদেনপক্ষে চারি খানা ‘সাধু ব্লগ’ লিখিয়া আপনার মান ভঞ্জণ করিব। যাইতেছেন যান (এক গামলা মোটা চালের অন্ন বাচিয়া যায়), মুখখানা হাঁড়ি করিয়া রাখিবেন না। “ ঈশ্বর মুচকি হাসিলেন। ] হুম। ঠিক ধরিয়াছেন।

এক প্রকার দায়বোধ হইতেই সাধু ব্লগ রচনায় বাধ্য হইলাম। দায় যে উপযুক্ত ব্যক্তির উপরেই পড়িয়াছে উহাতে আর সন্দেহ কি। যাহাই হউক, সর্বাগ্রে একটি বিষয় পরিষ্কার করিয়া লইতে চাই। সাধু ভাষার গুরুচন্ডালী নামক এক খানা ব্যাধি রহিয়াছে। গুরুগম্ভীর সাধুর সহিত অণার্য, বেরহিস চলিত মিশাইলেই উহার প্রাদূর্ভাব হয়।

প্রশ্ন হইল এক খানা সাধু বাক্যে যদি ‘কোপা শামছু’ বাক্যাংশ খানা জুড়িয়া দেওয়া হয় উহাও কি গুরুচন্ডালী হইবে? ‘কোপা শামছু’ তো প্রমিত চলিত নহে, কথ্য। এ যুক্তি কল্কে পাইলে পাইবে, না পাইলেও তোয়াক্কা নাই। এই অধম অমন গুরু হাজারবার চন্ডাইবে। এই আমি বলিয়া রাখিলাম। শুধু ‘কোপা শামছু’?! ‘হেই ডুড’, ‘হোয়াটজ আপ?’, ‘খামো, ম্যান’, ‘অ-সাম’, ‘গুল্লি মারো’, ‘কেঁথা পুড়ি’- কিছুই বাদ যাইবে না।

অম্লান বদনে জবরদস্ত সব phrase ‘ইউজ’ করিব। সাহস থাকিলে বামুন পন্ডিতেরা শশ্মানের ছাই-ভস্ম হইতে ফিনিক্স পাখির মত পূনর্দপাদিত হইয়া আসুন না! হইয়া যাইবে এক বাউট!! সাধু সাধনার এই মাহেন্দ্রক্ষনে অধিক আস্ফালন হইতে বিরত থাকিবার সিদ্ধান্ত নিয়াছিলাম বলিয়া রক্ষা। তাহা না হইলে ভাবের ব্যাঞ্জনায়, ভাষার গাম্ভীর্য্যে ও উচ্চমার্গীয় লেখণীর গুরুভারে এই সংকীর্ন ব্লগ খানার আগা-পাশ-তলা বিদীর্ণ হইয়া যাইতো। এই ঐতিহাসিক রচনা খানা নাতিদীর্ঘ ভূমিকা মাত্র (যথোপযুক্ত লগ্নে স্টানিং সব prose ডেলিভার করিয়া দেওয়ার ইচ্ছা পোষন করি )। গালগল্প জুড়িয়া উহাকে ফিরিঙ্গি দেশের চুইংগামের ন্যায় টানিয়া লম্বা করিতে চাহিতেছি না।

এ বৎসরের জব্বারের বলী খেলা লইয়া ব্যাপক গল্প ফাঁদিবার দূর্দমনীয় ইচ্ছা বহু ক্লেশে দমন করিলাম। খেলাও জমিয়াছে এইবার! গত দশ বিশ বৎসরে এইরূপ জমজমাট বলী-ক্রীড়া দেখা যায় নাই। স্বয়ং জব্বার মাঠে নামিয়াছেন বলিয়াই বোধকরি এই রূপ। ‘প্রযুক্তিবিদ’ ছদ্ম নামে এই বৎসর তাহার মুহর্মুহ কসরৎ দেখিয়া সকলেই অভিন্ন মত ব্যক্ত করিয়াছেন-- কামাল বলী, গোলাম বলী উহার তুলনায় দুগ্ধপোষ্য শিশু মাত্র। এই অধম তো উহার ফ্যান হইয়া ক্রমাগত পাক খাইতেছে।

অজস্র সাত পাক হইয়া গিয়াছে। শাস্ত্র মতে কতবার বিবাহ হইয়াছে সেই চিন্তায় সুনিদ্রা হইতেছে না। পরম করুনাময় রক্ষা করুন। পাদটীকাঃ ঈশ্বর পন্ডিত স্বর্গোদ্যানে দুই দুইবার হার্ট ফেইলিওরের শিকার হইয়াছেন বলিয়া সংবাদ পাইলাম। অল্পের উপর দিয়া বেশি করিয়া গিয়াছে বলিয়া বোধ হইতেছে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.