আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বেয়াদব অলির নিজের মেয়ে, মা বা স্ত্রী নেই?????

একজন নারী সংসদ সদস্যকে নিয়ে করা অলি আহমদের মন্তব্যে সংসদে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাংসদরা। একই সঙ্গে সংসদের পক্ষ থেকে অলিকে হুঁশিয়ার করার আহ্বান জনানো হয়েছে। সেইসঙ্গে অলিকে সংসদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি করা হয়। অলির বক্তব্যের বিরুদ্ধে সংসদে নিন্দা প্রস্তাব আনারও দাবি তোলা হয়েছে। রোববার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বের শেষে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে প্রথমে জাসদের মইনুদ্দীন খান বাদল ওই বক্তব্যের ব্যাপারে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

অলির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘সামনের সারির একজন সংসদ সদস্য কয়েকদিন আগে চট্টগ্রামে তার এলাকায় বক্তব্য রেখে বলেন, আমার এলাকায় এত যুবক একজন মহিলা এমপি দিয়ে কী হবে। ফরিদপুর এলাকা থেকে কিছু সুন্দরী যুবতী এনে দেওয়া হোক, তাতে যুকবকদের কিছু কাজ হবে। এটা নিচু মনোবৃত্তি। অথচ আমরা এক সঙ্গে যুদ্ধ করেছি। ’ এ সময় অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত অন্য সদস্যরা নাম জানতে চাইলে বাদল বলেন, ‘নাম জানতে চাইলে বলবো অলি আহমেদ বীর বিক্রম।

দৈনিক পূর্বকোণে এটা প্রকাশ হয়েছে। এ সংসদে ৪৫ জন নারী এমপি আছেন। তিনি এ ধরনের বক্তব্য কীভাবে দিতে পারেন। ’ বাদল আরও বলেন, ‘কেউ নিয়ম নীতি মেনে কথা বলছেন না। এক মন্ত্রী বক্তব্য দিয়েছেন, দেশে স্বৈরাচার কায়েম হয়েছে।

তাহলে আপনি রিজাইন করেন। আমাদের মতো এমপি হন, তারপর এ ধরনের বক্তব্য দেন। মন্ত্রী থাকাবস্থায় এ ধরনের কথা বলতে পারেন না। ’ এ সময় অন্য সদস্যরা নাম জানতে চাইলে বাদল বলেন, ‘আপনারা সবাই জানেন এই সংসদে দুই ভাই এমপি আছেন। ‘ এরপর তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রী জিএম কাদেরের নাম বলেন।

এ সময় সকল সদস্যরা ‘শেম, শেম’ টেবিল চাপড়ে বাদলের কথার সমর্থন জানান। সংসদে সভাপতিত্বকারী ডেপুটি স্পিকারের উদ্দেশে বাদল বলেন, ‘আপনার মাধ্যমে বলতে চাই প্লিজ আপনারা নিয়ম মেনে চলেন। দৈনিক পূর্বকোণ, আজাদী পত্রিকায় এ ধরনের বক্তব্য আছে। এগুলো পরীক্ষা করে দেখেন, তারপর সিদ্ধান্ত নেন। তাদের সতর্ক করে দেওয়া উচিত।

’ উল্লেখ্য, গত ১৮ নভেম্বর চট্টগ্রামের চন্দনাইশে এলডিপি’র সমাবেশে কর্নেল অলি আহমেদ বলেন, ‘চন্দনাইশে একজন মহিলা এমপি দিয়ে হাজার যুবকের সমস্যা সমাধান করা যাবে না, তাই বেশি করে টুঙ্গীপাড়া থেকে সুন্দরী মহিলাদের এনে চন্দনাইশে দিলে যুবসমাজের কল্যাণ হবে। ’ এরপর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, ‘আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এসেছি। আমাদের কাজ জনসেবা ও জনগণকে ভালবাসা। সমান দৃষ্টিতে দেখা। দুঃখের সঙ্গে বলতে চাই অলি আহমেদ একজন এমপিকে ইঙ্গিত করে বক্তব্য দিয়েছেন।

আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। ’ স্পিকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনি এগুলো পরীক্ষা করে দেখবেন আশা করি। যখন ৩০ জন এমপি ছিলাম তখন আমাদের এলাকা ছিল, এখন নেই। যখন কোনও এলাকা থাকে না তখন তারা দেশের যে কোনও এলাকায় কাজ করতে পারেন। তাই তাদের সেই এলাকায় সম্মান ও কাজ করার সুযোগ দিতে হবে।

আজ যখন মেয়েদের স্বাধীনতার কথা, ক্ষমতায়নের কথা বলছি তখন একজন এমপি যখন এমন বিকৃতভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে কথা বলেন তখন এ নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। অবিলেম্বে সংসদে তাকে ক্ষমা চাইতে হবে। ’ এরপর তারানা হালিম বলেন, ‘আমরা নারী হিসেবে সংসদে আসিনি। আমরা সংসদ সদস্য। এখানে নারী বা পুরুষ হিসেবে চিহ্নিত নয়।

আমাদের এক সহকর্মী যখন আমাদের রুচি দেখলেন না, তিনি পণ্য হিসেবে দেখলেন তার ধিক্কার জানাবার ভাষা নেই। ’ বিরোধী দলের নারী এমপিদের ইঙ্গিত করে তারানা হালিম বলেন, ‘তার (অলি) পেছনে যে নারী এমপি থাকেন তারা অশ্লীল ভাষায় সংসদে কথা বলেন। এতে উজ্জীবিত হয়ে অলি আহমেদ এসব কথা বলছেন। তার মতো এমপি যখন নারীকে পণ্য হিসেবে দেখেন তাহলে আমরা সব নারী এমপির কাছেও তাকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানাই। ’ তিনি বলেন, ‘অলি আহমেদ মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় দিতে পারেননি।

তার উচিত ক্ষমা চাওয়া নাহলে আমরা তার বিরুদ্ধে কথা বলতে বাধ্য হবো। ‘ এরপর বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘কয়লা ধুলে ময়লা যায় না। উনি (অলি) প্রায়ই অশোভনীয় উক্তি করে থাকেন। বিভিন্ন সময় অশালীন ঈঙ্গিত দেন। তিনি সরকারকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেন।

এখন আবার জুন। আমি তাকে বলেছি আর একটা বছর বাড়িয়ে দেন। ’ মোশাররফ বলেন, ‘চট্টগ্রামে ২ জন বেয়াদব আছে। একজন জেলে (সাকা চৌধুরী) আরেকজন বাইরে। তার (অলি) ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত।

তার কি নিজের ? এমপি হিসেবে সবাই সমান। ’ শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ‘তিনি যে অসৌজন্যমূলক কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন তাতে সব এমপিদের অধিকার মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে। তাই শুধু ক্ষমা নয়, সংসদে নিন্দা প্রস্তাব আনা উচিত। ’ এ সময় স্পিকারের উদ্দেশ্য করে সেলিম বলেন, ‘আমার অনুরোধ আপনার অধিকার বলে বিষয়টি বিশেষ অধিকার কমিটিতে পাঠান। তাকে সংসদে ডেকে আনুন।

সদুত্তর না দিতে পারলে যে শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে তা আপনি করবেন। তিনি সব এমপিতে কলুষিত করতে পারেন না। কারো সম্মানের প্রতি আঘাত এনে অন্য কোনও পন্থায় কোনও কিছু করতে চাইছেন কি-না তা ভেবে দেখা উচিত। ’ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.