আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশে বিদ্যমান কোটা ব্যাবস্থা ও আমার দৃষ্টিভঙ্গি।

যা বিশ্বাস করি না, তা লিখতে-বলতে চাই না, পারবোও না। কিন্তু যা বিশ্বাস করি, তা মুখ চেপে ধরলেও বলবো, কলম কেড়ে নিলেও লিখবো, মারলেও বলবো, কাটলেও বলবো, রক্তাক্ত করলেও বলবো। আমার রক্ত বরং ঝরিয়েই দাও, ওদের প্রতিটি বিন্দুর চিৎকার আরও প্রবল শূনতে পাবে। বাংলাদেশে পাঁচ শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর/উপজাতিদের জন্য, প্রতিবন্ধীদের জন্য এক শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ত্রিশ শতাংশ, নারী কোটা দশ শতাংশ এবং জেলা কোটা দশ শতাংশ। অর্থাৎ, কোটার জন্য বরাদ্দ আসন ৫৬ শতাংশ।

বাকি থাকে ৪৪ শতাংশ, যা মেধাবীদের প্রাপ্য! সাধারণভাবে যে কেউ বুঝতে পারবেন, আমাদের দেশে সরকারী হিসেব অনুসারে মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন দুই লক্ষাধিক। বলাই বাহুল্য তাদের অনেকে সন্তান-সন্ততি এই সুবিধাদি নেবারই অযোগ্য। এক প্রজন্ম হিসেব করলে সংখ্যাটা কয়েক লক্ষ হতে পারে সর্বোচ্চ, ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্ঠীর সংখ্যাটি নেহায়েত নগন্য তবু তারা প্রমানিতভাবে সুবিধাবঞ্চিত। আর জেলা কোঠার বিষয়টি অসাড় ও অযৌক্তিক! তার পরও, কোটা পদ্ধতির প্রয়োজন রয়েছে আমি মনে করি! কিন্তু আমার কথা একটাই, কোটায় আবেদনকারীরা কখনই যেখানে সীট পূর্ণ করতে পারছেন না, স্পষ্টতই % হিসেবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোটা দেয়া হয়েছে। আবেগের বশে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের ত্রিশ শতাংশ কোটা দেয়া হয়েছে বটে কিন্তু তার সুবিধা/লাভের গুঁড় অসহায় মুক্তিযোদ্ধারা কতোটুকু পান আর কতোটুকু অপচয় হয়ে মেধাবীদের জন্যে অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায় তা বিচারে একটু কমনসেন্সই যথেষ্ট।

বেশীরভাগ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের কোটার সুবিধা দেবার যোগ্য করারও ক্ষমতা হয়নি, অভাবে পড়াশুনার বিষয়টিই বিলাসিতা হয়ে পড়ে অনেক সময়। আর এক প্রজন্ম পরে মুক্তিযোদ্ধা জীবিত পাওয়া দুষ্কর হয়ে যাবে। সুতরাং এটা অবশ্যই কমে যাওয়া প্রয়োজন এবং প্রজন্মান্তরে চালু থাকা অবশ্যই যুক্তিহীন! আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হয়েও বলছি কারণ যা সঠিক তা সঠিকই। আর যেখানে এইচএসসি/এসএসসি তে নারীরা শ্রেয়তর ফলাফল করছে, সেখানে নারী কোটার বিষয়টি তাদের জন্যেই অপমানের- অবমাননার! এটা রাখার কোন ধরনের যুক্তি আমি খুঁজে পাই নি। এবং, প্রতিবন্ধী কোটা বৃদ্ধি করার পক্ষে থাকবে আমার অবস্থান! কোন প্রতিবন্ধী যদি শিক্ষার ইচ্ছে পোষণ করে তাহলে তাকে যেন কোনভাবেই বঞ্চিত হতে না হয়!!! অতঃপর, সমাধান? কোটা পদ্ধতি তুলে নেয়া? উত্তর হবে, না! যেহেতু প্রয়োজন এর অতিরিক্ত কোঠা প্রদান করা হয়েছে, যুক্তিযুক্ত সংখ্যা এখনই নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন করা হোক! এবং, তার সাথে সাথে নিয়ম করা হোক, কোটার প্রার্থী শেষ হবার পরে খালি থেকে যাওয়া আসনগুলো অবশ্যই মেধাবীদের মাঝে বন্টন করতে দিতে হবে! কথাগুলো প্রযোজ্য হবে মুক্তিযোদ্ধা থেকে শুরু করে উপজাতি, নারী সহ যে কোন কোঠার ক্ষেত্রে।

আর হ্যাঁ, একটা কথা মনে রাখবেন, মুক্তিযোদ্ধারা কোটার জন্যে যুদ্ধ করেন নাই, দেশের জন্যে, মাটির জন্য করেছেন, তাই তাদের গালি দিয়ে যদি কিছু হাসিল করতে চান, তাহলে আপনি উন্মাদ বৈ কিছু নন। সুবিধা বঞ্চিতরাও কারো হাতে পায়ে ধরেনি কোটার জন্য। উপজাতি, প্রতিবন্ধী, সুবিধা বঞ্চিতরা কোটার দাবীদার বটে কিন্তু তা যেন মেধাবীদের জীবন গড়তে বাধা নয়ে না দাঁড়ায় সে দিকে সবারই দৃষ্টি দিতে হবে। █ █ █ █ █ █ █ █ █ █ █ █ █ █ █ █ █ █ █ █ █ █ █ █ █ █ █ পোস্ট না পড়ে/ অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্য না করার অনুরোধ থাকবে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.