আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তুমি পারো সোনা (পারসোনা!)

রহস্যময় গ্যালাক্সি ঘুরে, অসীম আকাশে উড়ে আর সাগরের অতল গভীরে ডুবে আমৃত্যু পান করতে চাই ভালোবাসার অমৃত সুধা... বিদিশাকে খুব ছোটবেলা থেকেই অনেকে জিনিয়াস বলেই জানতো ৤ এখনো কম না৤ কাজে কর্মে সবকিছুতেই একটা জিনিয়াস ভাব থাকবেই৤ আর ভদ্রতা করে বিদিশা বলত-কি যে বলিস তোরা! আমি আবার জিনিয়াস কিসের? যাক্ সে কথা, আসল কথায় আসি৤ স্কুলে পড়ার সময় অনর্গল কথা বলতে পারতো সে৤ এখনো বলে, তবে রয়ে সয়ে, জায়গা বুঝে৤ স্কুলে বিজ্ঞানমেলা হচ্ছিল৤ দুইপক্ষ৤ দুইপক্ষের দু’টি দলে দু’জন শিক্ষক নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন৤ ছাত্র-ছাত্রীরা অপর পক্ষের ছুঁড়ে দেয়া উত্তর না পারলে সর্বশেষে দলের শিক্ষক উত্তর দেবার কথা৤ হঠাৎ বিপত্তি হলো৤ একটি প্রশ্নের উত্তর বিদিশা ঠিকমতো বুঝতে না পেরে তার দলের শিক্ষককে পাস করে দিল৤ শিক্ষকও পারলেন না৤ তিনি ছিলেন অবশ্যই অংকের শিক্ষক৤ কিন্তু পারলেন না৤ প্রশ্ন ঘুরে বোনাস হিসেবে চলে গেলো প্রতিপক্ষের কাছে৤ প্রতিপক্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে উত্তর মিলল না৤ সেই পক্ষের শিক্ষকের উত্তর দেবার পালা৤ না উনিও পারলেন না৤ আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতা৤ বুঝুন অবস্থা! বিচারক হিসেবে ঢাকা থেকে বাঘা বাঘা স্কুলের শিক্ষকগণ এসেছেন৤ এবার বুঝি স্কুলের শিক্ষার মান নিয়েই টানাটানি অবস্থা৤ এতক্ষণে বিদিশা অংকটির উত্তর কষে ফেলেছে৤ উঠে দাঁড়িয়ে মডারেটরকে বলল- উত্তরটা কি আমি দিতে পারি? নিয়মের কিছু এদিক সেদিক করে উত্তরটি গ্রহণ করার জন্য অডিয়েন্স থেকে রিকোয়েস্ট আসলে মডারেটর তা গ্রহণ করলেন৤ উত্তর শুনে বিচারকগণ যারপর নাই প্রশংসা শুরু করলেন৤ বিদিশাও কথার ফাঁকে বলে দিলেন এটা শুধু তার কৃতিত্ব নয় শিক্ষকের অবদানই মূখ্য৤ প্রতিযোগিতা শেষে স্কুলের ছাত্র-ছাত্র, শিক্ষকগণ, অভিভাবকগণ সবাই বলে উঠলেন- তুমি পারো সোনা! ক্লাসে একবার কোন এক বিষয়ের পড়া না পারার কারণে শিক্ষক বিদিশাদের কাউকেই বেত দিয়ে আঘাত করতে ছাড়ছিল না৤ সেদিন বিদিশাও প্রচন্ড মার খেলো৤ প্রধান শিক্ষকের কাছে নালিশ করেও কোনো লাভ হচ্ছিল না৤ নতুন শিক্ষক, মাত্র কিছুদিন হলো স্কুলে জয়েন করেছেন৤ প্রধান শিক্ষক হয়তো আরও কিছুদিন তাকে দেখতে চাচ্ছেন৤ এই কারনে হয়তো কিছু বলছেন না৤ আরেকদিন সামাণ্য একটা কারণে ক্লাসের সবাইকে মারার জন্য বেত বের করেছেন তার ডেস্ক থেকে৤ ঠিক সেই মুহূর্তেই বিদিশা বলে উঠল- স্যার, আপনার হাতে কি ওটা? শিক্ষক বললেন- ফাজলামো করিস আমার সাথে? মার কাকে বলে আজ বুঝবি সবাই৤ বিদিশা বলল- স্যার, ভালো করে খেয়াল করুন, আপনার হাতে ওইটা বেত না সাপ! সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে ক্লাস রুম থেকে চিৎকার করতে করতে বের হয়ে গেলেন স্যার৤ শিক্ষকদের কমন রুমে গিয়ে কোন রকমে পড়িমরি করে বসলেন৤ এরপর থেকে ওই শিক্ষক আর ক্লাসে বেত নিয়ে ঢুকতেন না৤ তবে ঘটনা পরবর্তী কিছুদিন বিদিশা প্রধান শিক্ষকসহ সবার কাছ থেকে একটি বাক্যই শুনল- তুমি পারো সোনা! বিদিশা এখন কোথায় আছে কি করছে সে প্রশ্ন হয়তো পাঠক আপনাদের মনে উঁকি দিতে পারে, তবে এটা বলা যাবে যে বিদিশার খোঁজ না জানলেও সেই চরিত্রটি এখনো এদিক সেদিক খুঁজে পাওয়া যাবে হরহামেশা৤ বিউটি পার্লারে গেছে সুইটি৤ গোপন একটি ছোট্ট কক্ষে নিয়ে বিউটি এক্সপার্ট বলল- ম্যাডাম এখানে আপনি ইউনিফর্মটা পরেন আর এই অফারলিস্টটা পড়ে দেখেন কোন সেবাটা আপনি আমাদের কাছ থেকে নেবেন৤ সুইটি দেখলো ছবি সহ অনেক কিছুর অফার ওই লিস্টটাতে আছে৤ দেখতে একটা পরিপূর্ণ বিউটি ম্যানুয়েল৤ ভালই লাগলো সুইটির৤ একটু পর সামনের দেয়ালে সাঁটা প্লাজমা টিভিটা অটোম্যাটিক্যালী অন হলো৤ ভিডিও চিত্র দেখানো শুরু হলো৤ ভিডিওতে লিস্টের অফারগুলোর অডিওভিজ্যুয়াল দেখা গেলো৤ বাহ্ চমৎকার সার্ভিস, অস্ফূট স্বরে সুইটি উচ্চারণ করল৤ হঠাৎ স্ক্রীনের একপাশে ভেসে উঠলো মিস সুইটি, বিউটি এক্সপার্ট কি আপনার সেবায় প্রবেশ করবে? এতো কিছু দেখে সুইটি অফার চয়েজ করতেই ভুলে গিয়েছিল৤ সম্বিৎ ফিরে পেয়ে হ্যাঁ সুচক ইঙ্গিত দিতেই দরজা ঠেলে একজন বিউটি এক্সপার্ট ভেতরে ঢুকল৤ হাফপ্যান্ট পরা৤ বুকজোড়া ভাসমান৤ চোখের ভ্রু জোড়া যেন তলোয়ারের মতো করে উপরের দিকে তোলা৤ কোমল, মোহনীয় ভঙ্গীতে বলল- ম্যাম, কোনটা শুরু করবো? সবশেষ করে বাসায় ফিরে গেলো সুইটি৤ কিছু কমন বিষয় সুইটকে তাড়া করতে থাকলো৤ আচ্ছা, স্ক্রীনে আমার নাম ভেসে উঠলো৤ আমার কাছে আসার অনুমতি চাইল৤ বাইরের কোন কন্ট্রোল প্যানেল থেকে আমার পোশাক পরিবর্তনের কোন চিত্র কি কম্পিউটারে রেকর্ড করা গেছে? চারপাশে ক্যামেরা তো দেখলাম না৤ তবে প্রাজমা টিভিতে আমার নাম ইনপুট দেয়া গেলে আউটপুট দেয়া কি সম্ভব নয়? ম্যাসাজ চলার সময় তো টিভিটা অটো অফ হয়ে গিয়েছিল৤ অনও তো অটো হয়েছিল৤ অবশ্যই তাহলে তারা কন্ট্রোল করছে ওই টিভিটা তাদের কোন গোপন কক্ষ থেকে? প্রশ্নগুলো প্রশ্নই রয়ে গেলো৤ কাউকে বলল না৤ অনেক দিন পর স্কুলে পড়াকালীন এক বান্ধবী সুইটির বাসায় এসেছে একটি রাত যাপনের জন্য৤ ঢাকায় কি এক জরুরী অফিসিয়াল কাজ করতে হবে তার৤ ভুলে মোবাইলটা রেখে গেছে বিছানার ওপর বাইরে বেরুনোর সময়৤ বিছানাটা ঠিক করে সুইটি বাইরে বের হবে ঠিক এমন সময় মোবাইলটা বেজে উঠলো৤ রিসিভ করতে করতে লাইন কেটে গেলো৤ মোবাইলের ফোরকী বাটনের বাম পাশের বাটনটিতে আঙ্গুলের চাপ পড়তেই ভিডিও লিস্ট বের হলো৤ থ্রিজিপি কিছু ভিডিও ফাইল দেখলো সুইটি৤ কৌতূহল বশতঃ একটি থ্রিজিপি'র প্লে তে চাপ দেয়ার সাথে সাথেই মুখাবয়ব ঢেকে দেয়া যে নারীটির দিগম্বর ভিডিও চলতে থাকলো সে আর কেউ নয় এই সুইটি৤ সুইটি নিশ্চিত ওই দিনের ম্যাসাজ পার্লারের সেই ভিডিও চিত্র৤ পার্লারের নামটা এখনো চোখে ভাসে৤ এখন আরও সুনাম পাশাপাশি দূর্নামও করেছে৤ পারসোনা৤ এই কাহিনী নতুন নয়৤ অনেক আগের৤ যে কাহিনীর চিত্রনাট্য লেখা হয়েছে পারসোনার সৃষ্টিলগ্ন থেকে সেই কাহিনী ফিল্ম হয়ে বনানীতে মুক্তি পেলো৤ মোবাইলটা ছুঁড়ে ফেলে বিছানায় চোখমুখ বুঁজে কষ্টে, ঘৃণায় কাঁদলো সুইটি আর উচ্চারণ করলো- পারসোনা, তুমি পারো সোনা!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।