আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একজন নিরপেক্ষ লোক চাই……

...............................................................................................................................................................। আমি কোন সংবিধান বিশেষজ্ঞ নই। আমি কোন বিজ্ঞ লোকও নই। সমাজের আট দশজন মানুষের মত আমিও একজন। গনতান্ত্রিক অধিকারের উপর ভর করে আমি হয়ত মনের ক্ষোভ প্রকাশ করার সাহস পাচ্ছি।

আমার কাছে অতীত সকল ইতিহাসই ধোঁয়াশা। সুতরাং যাই জানি তাও অস্পষ্ট। এবং তার জন্য দায়ী শুধুমাত্র আমাদের রাজনৈতিক সংঘর্ষ। অতীত ইতিহাস,গনতন্ত্র সম্পর্কে আমার সূক্ষন/খুব কম ধারনা থাকলেও বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বেশ অবগত। গনতন্ত্রের এমন অসাংবিধানিক খেলা আর কোথাও হয় বলে আমার জানা নেই।

খেলাটা বেশ উপভোগ্য হলেও আনন্দের চেয়ে দঃখটাই বেশি পাই। কারন এ খেলায় কখনো শান্তি আসেনা,দেশ নিয়ে জুয়া খেলা হয়। সংবিধান নিয়ে আমি কোন কথা বলবোনা,তবে তত্ত্বাবোধায়ক সরকার সম্পর্কে আমার একটু বলার আছে। কেউ বলছে তত্ত্বাবোধায়ক সরকার আর থাকছেন না। আবার কেউ তত্তাবোধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবেনা।

তত্ত্বাবোধায়ক সরকারের আবির্ভাব কিভাবে হয়েছিল তা আমরা জানি। আবার তত্তাবোধায়ক সরকারকে যে হেয়প্রতিপন্ন করা হয়েছে তাও আমরা জানি। গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রে তত্ত্বাবোধায়ক সরকারের বাধ্যবাধকতা আছে বলে আমার জানা নেই। তাহলে নির্বাচন কমিশন কিসের জন্য?নির্বাচনের জন্য যদি তত্ত্বাবোধায়ক সরকারেরই দ্বারস্থ হতে হয় তবে নির্বাচন কমিশন ভেঙ্গে দেয়া উচিত। কিন্তু এটা হবে গনতন্ত্র বিরোধী।

গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন থাকতে হবে। আশেপাশে কয়েকটি গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রে যেভাবে পরিচালিত হচ্ছে। ক্ষমতা শেষে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন দিয়ে নতুন সরকার নির্বাচন করেন এবং তিনি পরবর্তী সময় দেশ পরিচালনা করেন। অবশ্য আমাদের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। কারন আমাদের রাজনীতি আর তাদের রাজনীতির মাঝে বিস্তর ফারাক।

আদালতের রায়ে তত্ত্বাবোধায়ক সরকার আর থাকছে না তবে প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে পরবর্তী দুটি নির্বাচন তার অধীনে দেয়া যেতে পারে। বর্তমান সরকার দৃঢ় ভাবে জানিয়ে দিয়েছে তারা তত্ত্বাবোধায়ক সরকারের বিপক্ষে পক্ষান্তরে বিরোধী দলও বলছে তারা তত্ত্বাবোধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবেনা। এজন্য তারা সরকারের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করছে,হরতালের ডাক দিচ্ছে। আমরা আম জনতারা অযথাই কষ্ট ভোগ করছি। বিরোধী দল বলছে আমরা জনগনের কথা চিন্তা করেই কর্মসুচি নিচ্ছি।

সরকার দল বলছে আমরা ও জনগনের ভালো চাচ্ছি। সব ভালোর ভিড়ে আমাদের সময় বেশ খারাপই যাচ্ছে। তাদের ধর্মে নমনীয়তা বলে কোন কথা নেই। কেউ সমঝোতায় আসতে রাজি নয়। আমরাও কম নয় বিভক্ত হয়ে কেউ এদের পিঠে আবার কেউ ওদের পিঠে হাত চাপড়ে বাহবা দিচ্ছি বা সায় দিচ্ছি।

গত তত্ত্বাবোধয়ক সরকারের সময়কালের কথা আমাদের সকলেরই জানা। রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের হয়রানি করেছেন বলে হয়ত বর্তমান সরকার চাচ্ছে এর বিকল্প । যাতে গনতান্ত্রিক সরকার ছাড়া কেউ কিছু করতে না পারে। আমি এতে দোষের কিছু দেখছিনা। গত তত্ত্বাবোধায়ক সরকারকে যারা ক্ষমতায় বসিয়েছেন অর্থাৎ বর্তমান বিরোধী দল,তারা নিজেরাই নিজেদের পছন্দের পাত্রকে গাল মন্দ করেছেন।

তখনকার সকল পরিস্থিতির জন্য তারাই দায়ী। এখন আবার তারাই তত্ত্বাবোধায়ক সরকারের জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। আবার নিয়মানুযায়ী যিনি পরবর্তীতে তত্ত্বাবোধায়ক সরকার হবেন তারা তাকেও মানবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছে। মানলাম না হয় মানল। কিন্তু পরবর্তী নির্বাচনে যদি তারা পরাজিত হয় তখন আবার তত্ত্বাবোধায়ক সম্পর্কে নানা বাজে মন্তব্য শুরু করবে।

শুধু তারা নয় নির্বাচনে যে দলই পরাজিত হবে তারাই তাকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করবে। তাহলে কি লাভ? শুধু শুধু একজনকে তত্ত্বাবোধায়ক হিসেবে দাড় করিয়ে তার আত্নসম্মান নষ্ট করে। বরঞ্চ বিরোধীদলের উচিত তত্ত্বাবোধায়ক সরকারের বিকল্প কি হতে পারে সে বিষয়ে সরকারকে অবহিত করা। তবে একটা করা যেতে পারে তা হল নির্বাচন কমিশনকে আরো শক্তিশালী করে এর উপর আস্থা রেখেই নির্বাচনে অংশগ্রহন করা। শুধু শুধু তত্ত্বাবোধায়ক সরকারের পিছনে দোড়ে লাভ নেই।

এটা নিশ্চিত যে চাঁদের দেশ থেকে কাউকে এনে তত্ত্বাবোধায়ক সরকার বানালেও আপনারা নির্বাচনের পর পরাজিত হলে উভয়ই আগের মতই বলবেন এবং ওনাকে দোষারোপ করবেন। যদি প্রচলিত নিয়মের বাইরে এসে কাউকে তত্ত্বাবোধায়ক সরকার বা বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে বানানো যায় তাদের পছন্দমত হয়,তবে মন্দ হয়না। এক্ষেত্রে সকল রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনের আগে অঙ্গীকার নামায় সই করতে হবে। অঙ্গীকার নামা হবে এরকম যে-নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক আমরা মেনে নেব এবং কাউকে উদ্দেশ্য করে কোন প্রকার অশালীন মন্তব্য করব না। তা না হলে দেখা যাবে পরে এই মহামান্য ব্যক্তিকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হবে,আত্নসম্মান নিয়ে টানাটানি শুরু হবে।

ইতমধ্যে হয়ত বিজ্ঞজনদের মনে এ নিয়ে ভয় কাজ করছে,কখন যে কার উপর এ দায়িত্ব অর্পিত হয়। কিংবা কাকে নিরপেক্ষতার তালিকা হতে বাদ দিয়ে দেয়। বর্তমান সরকারকে বলছি এখনো অনেক সময় বাকি। জনগনের মন জয় করার সুযোগ এখনো আছে। বিরোধী দলকে বলছি অযথা হরতাল ডেকে জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন হবেন না।

সময় কারো জন্য বসে থাকেনা। ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হবেই। অতএব নিজেদের সামর্থ্যের অপপ্রয়োগ না করে ধৈর্য ধরুন,সর্বচ্চো শালীনতা বজায় রেখে নজির স্থাপন করুন,ভবিষ্যতের রুপ রেখা এখনই আকতে শুরু করুন যাতে পরবর্তীতে ক্ষমতায় গেলে কাজে লাগাতে পারেন। রাস্তায় নামলেই জনগনের মন জয় করা যায় না,শালীনতাকে মনে রাখুন জনগনের মন ঠিকই জয় করতে পারবেন। সকলে ক্ষমতার লোভ পরিহার করুন,ক্ষমতার বাইরে থেকে সরকারকে সহযোগিতা করুন সেটাই জনগনের মনে বেশি নাড়া দেবে।

মনে রাখবেন জনগনই সকল ক্ষমতার উতস। বর্তমান প্রেক্ষাপটের শেষ কি হবে সৃষ্টি কর্তাই ভালো জানেন। তবে মনে হচ্ছে একজন নিরপেক্ষ লোকের বেশি প্রয়োজন হতে পারে। হবেন কেউ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার?রাজি আছেন কেউ নিরপেক্ষ হতে???আত্নসম্মান গেলে যাক,কিছুদিন তো দেশের দায়িত্ব পাবেন,তখন না হয় পুষিয়ে নেবেন? ২২ জুলাই,২০১১ মোঃজাহিদুল হাসান রাশেদ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.