আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাপেক্সের নতুন গ্যাস ক্ষেত্র আবিস্কার, এ আমার অহংকার, এ আমার আত্মবিশ্বাস!

কোন প্রকার বিদেশি সহয়তা ছাড়াই বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড(বাপেক্স) হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের জেলার অধীন রশিদপুরে এ গ্যাস ক্ষেত্রটিতে তিন টিসিএফেরও (ট্রিলিয়ন কিউবিক ফিট) বেশি নতুন গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে। যেখানে বিদেশি কম্পানির ত্রিমাত্রিক জরিপে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ব্যয় হয়েছে ১৬ লাখ থেকে ৬০ লাখ টাকা প্রর্জন্ত সেখানে বাপেক্সের ব্যয় হয়েছে মাত্র ১১.৫ লাখ। তারা স্বল্পতম সময়ে স্বল্পতম খরচে যে আন্তজার্তিক মানের দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন তা রীতিমত প্রশংসনীয়। আমরা কেবল গ্যাসই পাইনি, পেয়েছি নতুন আত্মবিশ্বাস!! বর্তমানে দেশে দুই হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করছে পেট্রোবাংলা। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিন প্রায় সাড়ে সাতশ মিলিয়ন ঘনফুট ঘাটতি রয়েছে।

বর্তমানে বিটিএমএ’র সদস্যভুক্ত টেক্সটাইল মিলগুলো গ্যাসভিত্তিক জেনারেটর থেকে ১২শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। কিন্তু গ্যাস প্রেসার ৫০ পিএসআই থাকার কথা থাকলেও অনেক সময় সেটা ১২ পিএসআই তে নেমে আসে। ফলশ্রুতিতে টেক্সটাইল মিলগুলো তার ক্ষমতার সর্বোচ্চ ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ব্যবহার করতে পারে। ফলে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে শত শত শিল্প প্রতিষ্ঠানের, ক্ষতিগস্থ হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রফতানী খাত পোশাক শিল্প। এভাবে চলতে থাকলে ধ্বংসের মুখে পড়বে রফতানী খাতগুলো, বাংলাদেশ বাজার হারাবে তৈরী পোশাকের।

আমাদের জাতীয় সম্পদ গ্যাস অনেকটা গরীবের সুন্দরী বউয়ের মত। গরীবের সুন্দরী বউ আসলেই বিপদের কারন, আমাদের মত একটি গরিব দেশের জন্য প্রাকৃতিক সম্পদ ও হয়েছে সে রকম। ভুল জরিপের তথ্য দিয়ে কত তাড়া তাড়ি আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ নিঃশেষ করা যায় তার সকল আয়োজন নিয়ে ব্যাস্ত পরাশক্তি আমেরিকা, ভারত ও তাদের মুনাফাখেকো কোম্পানি গুলো। এর কিছুদিন আগে আমেরিকা ডক্টর ইউনুসের অজুহাত দেখিয়ে কনোকো ফিলিপসের সঙ্গে পিএসসি স্বাক্ষরের চাপ দিতে থাকে. উত্তোলিত গ্যাসের শতকরা ৮০ ভাগ কনোকো-ফিলিপস পাবে এবং বাংলাদেশ পাবে ২০ ভাগ. আবার তারা এই ৮০ ভাগ গ্যাস এলএনজি’র মাধ্যমে রপ্তানী করতে পারবে, রপ্তানীর তালিকায় সম্ভাবনাময় দুটি দেশ আমেরিকা ও ভারত। গত ৬ জুন মন্ত্রিপরিষদে পিএসসি পাস হলে ডক্টর ইউনুসকে নিয়ে আমেরিকার মাথা ব্যাথার অবসান ঘটে।

এর আগে মার্কিন কোম্পানি অক্সিডেন্টাল এবং কানাডিয়ান কোম্পানি নাইকোর হাতে গ্যাস ব্লকে বিস্ফোরণের, এশিয়া এনার্জির সেই বিতর্কিত ওপেন পীট পদ্ধতিতে কয়লা আহরণ, এসব ঘটনার পরেও কোন সরকারই ওই কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে কোন প্রকার ক্ষতিপূরণ আদায় করতে পারেনি। আমাদের প্রধান দুটো দলই সাম্রাজ্যবাদী শক্তির ওপর নির্ভর করে ক্ষমতায় থাকতে চায়। তারা মনে করে তাদের ক্ষমতার প্রধান উৎস হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদ। যদিও দল দুটো ভোট চায় জনগণের কাছে, আর জনগণের কাছ থেকে ভোট নিয়ে এবং জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে স্বার্থ রক্ষা করে সাম্রাজ্যবাদীদের এবং দেশীয় কমিশনভোগীদের। আমাদের পেট্রোবাংলা ও বাপেক্সের এক্সপ্লোরেশন সাফল্যের হার (কুপ খনন বনাম গ্যাসের সন্ধান লাভ) খুবই ভাল।

অতীতে গ্যাসের বড় মজুদগুলো পেট্রোবাংলা ও বাপেক্সের মাধ্যমে আবিস্কৃত হলেও তাদেরকে স্বআবিস্কৃত ক্ষেত্রগুলোর গ্যাস উত্তোলনের দায়িত্ব থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, সরকার বিমাতাসুলভ আচরন করে সব ব্লক বরাদ্দ দিয়েছে মুনাফাখোর বিদেশী কোম্পানীগুলির কাছে!! যার খেসারত দিতে হয়েছে জ্বালানি পরিস্থিতি আরও নাজুক করে ফেলার মাধ্যমে,এখন রিজার্ভ থাকা এমন ব্লকগুলি থেকে যদি একের পর এক এরকম ব্যর্থতা আসতে থাকে, তাহলে আমাদের শিল্প, অর্থনীতি তথা আমাদের জ্বালানী নিরাপত্তার ভবিষ্যত কি!!! ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.