আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রুদ্ধশ্বাস নাটকের পর ইংল্যান্ডের হাসি

সেভাবে আবেদনই করেননি। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করার সময়ও খুব আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছিল না। আলিম দারের আঙুল যখন উঠল, জেমস অ্যান্ডারসনের বুঝি বিশ্বাস হচ্ছিল না তখনো। কিছুক্ষণ থমকে থেকে ভোঁ-দৌড়! পেছনে সতীর্থদের কেউ তখন লাফাচ্ছেন, কেউ ছুটছেন, কেউ দুহাত ছুড়ছেন শূন্যে। উত্তেজনা, চমক, রোমাঞ্চ আর আবেগের চড়াই-উতরাই পেরিয়ে এমন একটা জয়—এই উদ্যাপনের কি আর ধরাবাঁধা ভাষা থাকে?
ঘটনার ঘনঘটায় ঠাসা চারটি দিন শেষে জমজমাট থ্রিলারের মতোই ট্রেন্ট ব্রিজের শেষ দিন লুকিয়ে রেখেছিল চূড়ান্ত রোমাঞ্চ।

অ্যান্ডারসনের দুর্দান্ত বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়া যখন খাদের কিনারায়, অভাবনীয় এক শেষ জুটিতে রুখে দাঁড়ালেন হাডিন-প্যাটিনসন। তবে শেষরক্ষা হলো না। শেষের নায়ক হয়ে ম্যাচটা নিজের করে নিলেন অ্যান্ডারসন।
শেষটায় যদিও থাকল খানিকটা বিতর্ক, অ্যান্ডারসনের মতো আলোচনায় ডিআরএস-ও। হাডিনের যে কট বিহাইন্ডে ম্যাচের সমাপ্তি, সেটিতে আউট দেননি আম্পায়ার আলিম দার।

ম্যাট প্রায়র ছাড়া ইংলিশদের কারও আবেদন সপ্রতিভ ছিল না। তবে দুটি রেফারেলই হাতে, অ্যালিস্টার কুক তো রিভিউ চাইবেনই। হট স্পটেও পরিষ্কার ধরা পড়েনি ব্যাটে বলের ছোঁয়া। তবে শব্দটা শোনা গেছে পরিষ্কার। সেটির ওপর ভিত্তি করেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন টিভি আম্পায়ার।

ডিআরএসে স্নিকোমিটার ব্যবহারের নিয়ম নেই। তবে পরে স্কাই স্পোর্টসের স্নিকো নিশ্চিত করেছে ব্যাটে বলের ছোঁয়া। নইলে ডিআরএস বিতর্কের আগুনে ঘি পড়ত আরও।
বিতর্কটাও তো আসলে উত্তেজনারই অনুষঙ্গ! শেষটা অ্যান্ডারসনের হাতে হোক বা ডিআরএস-বিতর্কে, প্রতীকী হয়ে থাকবে দুটোই। অ্যাগার-সিডল-বেলদের ছাপিয়ে ম্যাচের সত্যিকার নায়ক তো অ্যান্ডারসনই।

শেষ দিনের চারটি উইকেটই তাঁর। এই ম্যাচে এত বিতর্ক যে, বিতর্ক দিয়ে শেষটাও মানিয়ে যায়। সবচেয়ে বেশি মানিয়ে যাচ্ছে আসলে ম্যাচটাই। এত আলোচনা-আলোড়নের অ্যাশেজের শুরুটা যেমন হলো, টেস্ট ক্রিকেটের জন্য তা দারুণ এক বিজ্ঞাপন। অ্যাশেজকে ঘিরে উত্তেজনা আর প্রত্যাশার পারদটাও চড়চড় করে ওপরে উঠে গেছে আরও।


হাডিন-অ্যাগার সকালে নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দিয়েছিলেন ঘণ্টা খানেক। ইংল্যান্ড দ্বিতীয় নতুন বল নিতেই দৃশ্যপটে অ্যান্ডারসন। টানা দুই ওভারে অ্যাগার ও স্টার্কের পর ফেরালেন খানিকটা প্রতিরোধ গড়া সিডলকেও। অ্যান্ডারসনের বলেই স্লিপে সিডলের সহজ ক্যাচ ছাড়া কুক শাপমোচন করলেন দুর্দান্ত এক ক্যাচে। লাঞ্চের তখন আধঘণ্টা বাকি।

তখন কজনই ভেবেছিল, নির্ধারিত সময়ের আধঘণ্টা বাড়ানোর পরও লাঞ্চ দেখবে পঞ্চম দিনের ট্রেন্ট ব্রিজ!
অ্যাশেজের জন্যই বাতিলের খাতা থেকে ফেরানো হয়েছে হাডিনকে। সেটার প্রতিদানও দিলেন দুর্দান্ত এক ইনিংসে। শেষ ব্যাটসম্যান প্যাটিনসনও খেললেন দারুণ সব শট। পায়ের পেশিতে টান পড়ায় অ্যান্ডারসন বাইরে চলে যাওয়ায় হঠাৎই ইংলিশদের মনে হচ্ছিল দিশেহারা। এমনকি দ্রুত লাঞ্চে যাওয়ার জন্য চক্ষুলজ্জা ভুলে সময়ক্ষেপণের পথ বেছে নিলেন স্টুয়ার্ট ব্রড।

উঁকি দিচ্ছিল তখন ১৯৯৪ সালের করাচি, শেষ জুটিতে ৫৮ রান তুলে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাকিস্তানকে জিতিয়েছিলেন ইনজামাম ও মুশতাক। শেষ পর্যন্ত করাচি নয়, ফিরে এল ২০০৫ অ্যাশেজের এজবাস্টন। ব্রেট লি ও মাইকেল কাসপ্রোউইচের ৫৯ রানের শেষ উইকেট জুটিতে অস্ট্রেলিয়া হেরেছিল ২ রানে। ব্যবধানটা এবার বেশি, তবে রোমাঞ্চ-উত্তেজনার ব্যবধানটা বোধ হয় তা নয়!।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.