আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুক্তির গান গাওয়া এই মানুষটাকে বাঁচাতে হবে। একটু এগিয়ে আসবেন প্লিজ?

'কিছু মাতাল হাওয়ার দল... শুনে ঝড়ো সময়ের গান... এখানেই শুরু হোক রোজকার রূপকথা... / কিছু বিষাদ হোক পাখি... নগরীর নোনা ধরা দেয়ালে কাঁচ পোকা সারি সারি... নির্বান নির্বান ডেকে যায়...' আপডেটঃ আগামী ১৪ অক্টোবর রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরে শহীদ জিয়া মিলনায়তনে কামরুদ্দিন আবসারের চিকিৎসা তহবিল গঠনে সহযোগিতার্থে একটি 'সঙ্গীত সন্ধ্যা' আয়োজন করা হয়েছে। গান গাইবেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীরা, কৃষ্ণকলি ইসলাম ও গণসঙ্গীতশিল্পী কফিল আহমেদ সহ অনেকে। টিকেট মূল্য ৫০০ টাকা ও ১০০০ টাকা। টিকেট কোথায় পাওয়া যাবে তা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয় জানিয়ে দেয়া হবে। এখানেও জানিয়ে দেয়া হবে।

অদ্ভুত অভিমান সবার। যারা আমাদের জাগাবে তারা সবাই চলে যাচ্ছে একজন একজন করে। সেন্ট্রাল হসপিটালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে গত ১৫ দিন ধরে নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন এমনই এক অভিমানি গানের পাখি। কামরুদ্দিন আবসার। অবদান রেখেছেন একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে।

এরপর কন্ঠে তুলে নিয়েছিলেন গনসংগীত। স্বাধীনতা পরবর্তি সময়ে তার হাত ধরেই একটা বড় পথ পেরিয়েছিলো বাংলাদেশের গনসংগীত। যার গানে অগুনিত মানুষের রক্তে কাপন ধরতো, জেগে উঠার আহ্বান থাকতো যার গানে তিনিই এখন ঘুমিয়ে আছেন আই সি ইউ তে। গত ১১ তারীখ রাত নয়টায় হঠাৎ স্ট্রোক করলেন। নেয়া হলো ডাক্তারের কাছে।

ডাক্তার জানালেন ব্রেইন স্ট্রোক। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে অনেক। ডাক্তার আরো বললেন অস্ত্র পাচার লাগবে। ১৩ সেপ্টেম্বর করা হলো অত্যান্ত ঝুকিপূর্ন একটি অস্ত্রপাচার। কিন্তু জটিলতা কাটলো না।

এখনও এই মানুষটা আছেন ভয়াবহ ঝুকির মধ্যে। শ্বাস কষ্ট হচ্ছে প্রচন্ড। কিডনি, লিভার, ব্লাডে ধরা পড়েছে ইনফেকশন। শ্বাস নালীতেও হয়েছে আরেকটি বড় অস্ত্র পাচার। অসাড় হয়ে আছে শরীরের বা-দিকটা।

প্রতিদিন লাগছে দুই ব্যাগ করে রক্ত। আই সি ইউ-র বিছানায় শুয়ে শুয়ে প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর সাথে লড়ছেন তিনি। "আমার দু’ডানায়, ঢেউয়ের দোলায়, নীল শুধু নীল" তার গাওয়া গানের মতোই ব্যাথায় মুহূর্তে মুহূর্তে নীল হয়ে যাচ্ছেন এই গন সংগীত শিল্পী। গলায় গান নিয়ে কামরুদ্দিন আবসার ছুটে বেড়িয়েছেন দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। গানই ছিলো তার সব।

টাকা পয়সা, ধন সম্পদ কোন কিছুর দিকেই তার মনোযোগ ছিলো না কোন কালে। গান গেয়ে ছুটে বেড়ানো কামরুদ্দিন আবসারের হয়তো টাকার দরকার ছিলো না, কিন্তু আই সি ইউতে মৃত্যুর সাথে লড়াইরত কামরুদ্দিন আবসারের যে টাকার বড্ড প্রয়োজন। প্রতিদিন লাগছে কাড়ি কাড়ি টাকা। তার একমাত্র ছেলে আদনান মুকিত দীপ্র। রস+আলোর নিয়মিত রম্য লেখক।

বাবার এতো ব্যায়বহুল চিকিৎসার ভার এই সদ্য কৈশোর পেরুনো ছেলে আর কতো বহন করবে? কিভাবে বহন করবে? এগিয়ে এসেছিলেন আশে পাশের মানুষরা। অন্য অনেক গন সংগীত শিল্পি পাশে আছেন যতোটুকু সম্ভব। কিন্তু আর কতো? এতো দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসার খরচ কিভাবে জুটবে? তবে কি হেরে যাবেন এই গন সংগীত শিল্পী? আমরা কি একটু হাত বাড়িয়ে দিতে পারি না? আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার চারুকলা ছবির হাটে সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত একটি গন সঙ্গীতের কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে। ঐ কনসার্টের শুভেচ্ছামূল্য মাত্র ১০০ টাকা। প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত টিকেট পাওয়া যাবে ছবির হাটেই।

এছাড়া তার চিকিৎসার্থে প্রতিদিন চারুকলায় ছবি বিক্রি করা হচ্ছে। চারুকলার শিক্ষার্থীরা দিন রাত খাটছেন সেখানে। ছবি ও টিকিট থেকে পাওয়া টাকার পুরোটাই যাবে শিল্পি কামারুদ্দিন আবসারের চিকিৎসা তহবিলে। মুক্তির গান গাওয়া এই মানুষটাকে বাচানোর জন্য আয়োজন করা ঐ কনসার্টে আপনাকে আমি আশা করতেই পারি। আসবেন তো? সমস্যার কারনে হয়তো আসতে পারবেন না অনেকেই।

কিন্তু একটা টিকেট তো কিনতে পারি নিশ্চয়ই! মাত্র একশটা টাকা দিয়ে একটা টিকেট! একদিন না হয় মোবাইলে একটু টাকা কম রিচার্জ করলাম, একদিন না হয় একটা বার্গার কমিয়ে খেলাম, একদিন না হয় একটু যায়গা রিক্সায় না গিয়ে হেটে গেলাম। ঢাকা কিংবা দেশের বাইরে যারা আছেন তারাও টিকিট কিনে নিতে পারেন। টিকিটের মূল্য পাঠানোর ঠিকানাঃ ডাচ বাংলা ব্যাকং লিমিটেড। হিসাবের নাম : ফেরদৌসি বেগম একাউন্ট নম্বর : 115-101-325383 ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।