আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মেয়েটা দেখতে সুন্দর ছিল বলে... মাসুম বিল্লাহ

একজন নির্বোধের বয়ান রাস্তার এক পাশে দাঁড়িয়ে সিগারেট টানছি, সে টানাটাও এক প্রকারের বিরক্তির টানা। পারলে সিগারেটটা চিবিয়েই খেতাম। আফসুস তার উপায় নেই। আচ্ছা কত উপায়ই তো বের হচ্ছে, সিগারেট চিবিয়ে চিবিয়ে খাওয়ার কোন বৈজ্ঞানিক উপায় কি বের করতে পারে না কেউ? মাথা থেকে এবার সিগারেট বিষয়ক গবেষনা না বের করলেই নয়। এবার চোখের গবেষনা করতে হবে দেখছি।

চোখ পড়ে সামনে কোন এক দেবীর মুখে। সত্যি সে দেবী। যে মুখের কোন পাপ নেই। ধ্যাত আতলামী বাদ, মেয়েটা বড়ই সুন্দর! তাকিয়ে থাকতেও ভাল লাগছে। আহা! মুখটা কেন সরিয়ে নাও মেয়ে? এইরে তুমি রেগে যাচ্ছ মেয়ে।

ওই শালা বেকুব রিক্সাআলা তোর তো মেয়েটার মুখের দিকে চেয়ে ভাড়া টারা চাওয়ারই কথা না। ইসরে কেন যে রিক্সার ড্রাইভার হলাম না। এই প্রথম রিক্সার চালক না হতে পারার জন্য বিরাট আফসুস হল। আহারে জীবনে কিছুই করা হল না। যাই না এগিয়ে মেয়েটা আর রিক্সাআলার মাঝখানে।

যেমন সিনেমার নায়ক শার্টের হাতা গুছিয়ে যায়, যেখানে নায়িকা মহা বিপদে পড়ে। হতভাগা আমি আজ হাফ শার্ট পড়ে বের হয়েছি। তবুও মেয়েটাকে কাছ থেকে দেখার লোভ সামলাতে না পেরে কাছে গিয়ে হাজির হলাম। ‘কি হয়েছে ম্যাডাম?’ বলে, মুখে বোকার মত হাসিটা ধরে রাখি। আমার প্রশ্ন শুনে এমন ভাবে তাকালো যেন ভূত দেখছে বা এমন প্রশ্ন জীবনে প্রথম শুনলো।

চরম অবহেলা ভরে বলল, ‘না কিছু হয়নি। ’ বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে এত সুন্দর একটা মেয়ে এমন করে কথা বলতে পারে? বলুন, মেয়েটার কথা শুনে আমার আর কি বলার থাকতে পারে? তবুও বোকার মত দাঁড়িয়ে রইলাম। ‘এইটুকু পথ, তুমি এত বেশি ভাড়া চাচ্ছ কেন?’ ‘মুনে চাইলে যাইব্যান, না চাইলে না যাইব্যান, এ্যাত কতা কন ক্যান?’ জ্বী না কথাগুলো আমি বলিনি, প্রথম বাক্যটা দেবীর আর দ্বিতীয় মধুর বাক্যটি বলেছে বেরসিক রিক্সাওয়ালা। বুঝতে পারছেন, ঘটনাটা কী? পুরানা ক্যাঁচাল, আপনার দৃষ্টিতে রিক্সা ভাড়া বেশি চাচ্ছে। রিক্সাওয়ালা মনে করছে সে ন্যায্য ভাড়াই চাচ্ছে।

‘এই বিষয়ে নিজেরই একটা অতীত আছে। একবার এক রিক্সাওয়ালাকে ইচ্ছে করেই দশ টাকা বেশি দিলাম। দেখি উল্টো কাজ করে কী রি-অ্যাকশন হয়। টাকাটা দিয়ে কয়েক সেকেন্ড থ মেরে দাড়িয়ে থাকলাম। মনে মনে আশা করছি কিছু একটা বাণী শোনার জন্য।

আঃ মাবুদ, ব্যাটা কিছুই বলল না। অপমানিত (মনে মনে ধরে নিলাম আর কি!) হয়ে ফিরে গিয়েছিলাম। ’ হায়! মেয়েটা কোথায় গেল? নাই নাই চারপাশে কোথাও সে নাই। বরং নবাবজাদা রিক্সাআলা পিছনের সিটে পা তুলে বসে আছে। না এমনি এমনি বসে নাই।

সিগারেট ফুঁকছে। যেন দুনিয়ার সব সুখ এই সিগারেটে। ওকে দেখে মনে হচ্ছে পৃথিবীতে এমন সুখী মানুষ আর একটাও নেই। জমিদারের শেষ বংশধর। হঠাৎ করে মনটাই খারাপ হয়ে গেল।

এখন যা করে ফেললাম, তা আমার উত্তেজিত মস্তিষ্কের ফলÑ‘এই বদের বাচ্চা ওই মেয়েটা যেতে চাইলো, তুই নিলি না কেন?’ ‘হেরে মুই নিমু কি, না নিমু- হ্যা আমহেরে কমু ক্যা, হে আমহের কি অয়?’ ্‘এ্যা তাইতো কি হয়?’ ইতিমধ্যে উৎসাহী কয়েকজন পাবলিক জড়ো হয়েছে কি হয় মজা দেখার জন্য। এখন উপায়, বিষয়টা একটু বাড়াবাড়ির দিকেই নিয়ে গেলাম মনে হয়।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।