আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

[ইতিহাসের এই দিনে] চৌধুরী মোহাম্মদ সালমান শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ মৃত্যুবরণ করেন (৬ই সেপ্টেম্বর, ১৯৯৬)

হা হা হা পায় যে হাসি!!! ৮৫-৮৬ সালের দিকে হানিফ সংকেতের গ্রন্থনায় কথার কথা নামে একটি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান প্রচারিত হত। এর কোন একটি পর্বে 'নামটি ছিল তার অপূর্ব' নামের একটি গানের মিউজিক ভিডিও পরিবেশিত হয়। হানিফের সংকেতের স্বকন্ঠে গাওয়া এই গান এবং মিউজিক ভিডিও দুটোই অনুষ্ঠানের জন্য বিশেষভাবে নির্মিত। একজন সম্ভাবনাময় সদ্য তরুন তার পরিবারের নানারকমের ঝামেলার কারনে মাদকাসক্ত হয়ে মারা যায়, এই ছিল গানটার থিম। গানের প্রধান চরিত্র অপূর্বর ভূমিকায় অভিনয়ের মাধ্যমেই সালমান শাহ মিডিয়াতে প্রথম আলোচিত হন।

তখন অবশ্য তিনি ইমন নামেই পরিচিত ছিলেন। মিউজিক ভিডিওটি জনপ্রিয়তা পেলেও নিয়মিত টিভিতে না আসার কারনে দর্শক আস্তে আস্তে ইমনকে ভুলে যায়। আরও কয়েক বছর পর অবশ্য তিনি আব্দুল্লাহ আল মামুনের প্রযোজনায় পাথর সময় নাটকে একটি ছোট চরিত্রে এবং কয়েকটি বিজ্ঞাপনচিত্রেও কাজ করেছিলেন। ১৯৯৩ সালের ২৫শে মার্চ। ঈদুল ফিতর।

হিন্দি কেয়ামত সে কেয়ামত তক ছবির কপিরাইট বৈধভাবে কিনে আনন্দমেলা সিনেমা লিমিটেড পরিচালক সোহানুর রহমান সোহানকে দিয়ে তৈরী করে কেয়ামত থেকে কেয়ামত। সেসময়কার জনপ্রিয় মডেল আনন্দবিচিত্রা সুন্দরী মৌসুমীর সাথে অভিনয় করেন অপেক্ষাকৃত স্বল্প পরিচিত ইমন। প্রযোজকগোষ্ঠি অবশ্য ততদিনে পারিবারিক নামকে একটু কাটছাট করে তার পর্দা নাম ঠিক করেছেন সালমান শাহ। খলনায়ক ডন (সাম্প্রতিক ছবি) নায়ক-নায়িকা ছাড়াও এই ছবিতে ডন নামের এক তরুন খলনায়কের অভিষেক ঘটে। বেশিরভাগ ছবিতে যেহেতু তরুন নায়কের কাউন্টার পার্ট হিসেবে একজন তরুন খলনায়কের প্রয়োজন হয়, সালমানের সাথে সাথে ডনের ক্যারিয়ারও দাঁড়িয়ে যায়।

সালমান নিজেও ডনকে যথেষ্ট সহযোগিতা করে উপরে ওঠার সুযোগ করে দেন এবং তার প্রায় সব ছবিতেই ডনের উপস্থিতি ছিল। একসাথে প্রচুর কাজ করতে করতে ডন সালমানের পারিবারিক বন্ধু হয়ে ওঠে। কাকে বেশি সুদর্শন, স্মার্ট লাগছে? কেয়ামত থেকে কেয়ামত ছবির ব্যবসা বা সালমানের জনপ্রিয়তা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নাই। সালমান সম্বন্ধে শুধু এটুকু বলা যায়, বাংলাদেশি বাংলা ছবির প্রায় ৫০ বছরের ইতিহাসে সেই প্রাচীন আমলে রহমান এবং নায়করাজ রাজ্জাকের পর সালমানই একমাত্র নায়ক যিনি সর্বমহলে তার গ্রহনযোগ্যতা তৈরী করতে এবং তরুনদের স্টাইল আইকন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছিলেন। বাংলা ছবির নায়কদের মধ্যে সালমান ছাড়া অন্য কারো ফ্যাশন, স্টাইল লোকে তার আগে বা পরে কখনোই অনুসরন করেনি।

শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেনী হয়ত অনভ্যাস, সিনেমা হলের পরিবেশ এবং তার অভিনীত ছবিগুলির মানের কারনে হলে যায়নি, কিন্তু নায়ক হিসেবে সালমানকে বরণ করে নিয়েছিল। (সালমান শাহ, শমী কায়সার, তমালিকা কর্মকার অভিনীত নাটক নয়ন (১৯৯৫) জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকাবস্থায় তিনি বিটিভির নিজস্ব প্রডাকশন মামুনুর রশীদের ধারাবাহিক ইতিকথা এবং আরও কিছু প্যাকেজ নাটকেও অভিনয় করেন। বিটিভির নিজের নাটক, এমনকি প্যাকেজ নাটকের শিল্পীদেরও যে সামান্য পারিশ্রমিক সেটা সালমান কোন ছবির এক শিফটের কাজ করেও এর চেয়ে বেশি পেতেন। কিন্তু নিজের তারকা ইমেজকে তিনি বাংলা ছবির তথাকথিত নিয়মিত দর্শকদের মধ্যে সীমিত না রেখে সার্বজনীন জনপ্রিয়তা পেতে চেয়েছিলেন এবং একাজে তিনি দুর্দান্তভাবে সফল। নীলা চৌধুরী এবং সামিরা পেশাগত জীবনের এই ব্যাপক সাফল্যের রঙিন জগতের পেছনে সালমানের একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন ব্যক্তিজীবন ছিল।

মা নীলা চৌধুরী ছিলেন এরশাদ আমলের ৩০ জন সংরক্ষিত মহিলা সাংসদের একজন। এরশাদ মূলত তার বান্ধবীদেরকেই এই ৩০টি আসনে সংসদে বসার সুযোগ দিয়েছিল। সে হিসেবে নীলা চৌধুরীর স্বভাবচরিত্র খুব সুবিধাজনক না। মা-বাবার সাথে সালমানের সম্পর্ক কখনোই খুব ভাল ছিল না। নায়ক হিসেবে সাফল্য পাওয়ার কয়েক মাস পরই সালমান বিয়ে করেন জাতীয় দলের প্রাক্তন উইকেটকিপার-অধিনায়ক শফিকুল হক হীরা এবং থাইল্যান্ডের নাগরিক চট্টগ্রামের বিউটিপার্লার ব্যবসায়ী লুসির কন্যা সামিরাকে।

সালমান-শাবনুর জুটি তুমুল জনপ্রিয়তা পাওয়ায় তারা একসাথে প্রচুর ছবিতে কাজ করতে থাকেন। সালমানের সর্বমোট মুক্তিপ্রাপ্ত ২৭টি ছবির ১৪টিতেই তার নায়িকা ছিলেন শাবনুর। স্বাভাবিকভাবেই এই জুটিকে নিয়ে ইন্ডাস্ট্রির ভেতরে-বাইরে কানাঘুষা শুরু হয়। স্ক্যান্ডাল ব্যাপক আকার ধারন করলে সালমান একটি সংবাদ সম্মেলন ডেকে খুব শিঘ্রি সবার সামনে শাবনুর ও সামিরাকে একসাথে নিয়ে লং ড্রাইভে যাবার ঘোষনা দেন। তিনি আশা করছিলেন, এই লং ড্রাইভের ছবি পত্রিকায় এলে মানুষের মনে এই ত্রিভুজ প্রেম নিয়ে সব সন্দেহ ভেঙে যাবে।

দূর্ভাগ্যজনকভাবে, সেই সময় আর তিনি পাননি। ১৯৯৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় 'প্রেমপিয়াসী' ছবির ডাবিং করতে যান সালমান শাহ। সেখানে তাঁর সহশিল্পী ছিলেন নায়িকা শাবনূর। কিছুক্ষণ পর সালমান তাঁর বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরীকে ফোন করে বলেন, তাঁর স্ত্রী সামিরাকে নিয়ে এফডিসির সাউন্ড কমপ্লেক্সে আসার জন্য। শ্বশুরের সঙ্গে সাউন্ড কমপ্লেক্সে এসে সামিরা দেখতে পান সালমান ও শাবনূর ঘনিষ্ঠভাবে খুনসুটি করছে।

সালমান প্রায়ই এ ধরনের খুনসুটি করতেন। সামিরাকে উত্তেজিত করে তুলতেন। কিছুক্ষণ পর কমর উদ্দিন চলে গেলে সামিরাও দ্রুত গাড়িতে ওঠেন। অবস্থা খারাপ দেখে একই গাড়িতে ওঠেন সালমান শাহ ও চিত্র পরিচালক বাদল খন্দকার। সালমানের সঙ্গে কথা বন্ধ করে দেন সামিরা।

তাঁকে বোঝাতে থাকেন বাদল। বেরিয়ে যাওয়ার সময় সালমান এফডিসির প্রধান ফটকের সামনে নেমে আড্ডা দেন, যা এর আগে কখনো করেননি। রাত ১১টার দিকে নিউ ইস্কাটন রোডের ইস্কাটন প্লাজার বি-১১ নম্বর ফ্ল্যাটে পেঁৗছে দিয়ে বিদায় নেন বাদল খন্দকার। সামিরাও তখন ঘরে। সাড়ে ১১টার দিকে সালমান বেডরুমে গিয়ে টিভি দেখেন।

তখনো তাঁদের মধ্যে কথা বন্ধ। ১২টার দিকে সালমানের মোবাইলে একটি ফোন আসে। তিনি বাথরুমে গিয়ে কথা বলে বেরিয়ে টিভি বন্ধ করে অডিও ক্যাসেট ছাড়েন। এ সময় আরো একটি ফোন আসে। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়।

উত্তেজিত হয়ে সালমান মোবাইল ফোনসেটটি ভেঙে ফেলেন। ক্ষুব্ধ সামিরা ব্যাগ গুছিয়ে ধানমণ্ডি ২৭ নম্বরে ফুফুর বাসায় যাওয়ার জন্য রওনা হন। সালমানের পিএ আবুল ইন্টারকমে দারোয়ানকে গেট না খুলতে নিষেধ করেন। সামিরা ফিরে এলে সালমান তাঁকে ফুফুর বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। ৬ সেপ্টেম্বর সকালে 'তুমি শুধু তুমি' ছবির শুটিংয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সালমান ঘুমাতে থাকেন।

বাজারে পাঠানো হয় তাঁর দেহরক্ষী দেলোয়ারকে। এ সময় কমর উদ্দিন তাঁর ছেলের ফ্ল্যাটে আসেন। সালমানকে বলেন, মা, ভাই ও তাঁকে নিয়ে সিলেটে যাবেন। এ সময় সিদ্দিক নামের এক প্রযোজকও আসেন। কমর উদ্দিন ও সিদ্দিক চলে যাওয়ার পর সামিরা তাঁর বেডরুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন।

সকাল ১১টার দিকে সালমান ঘুম থেকে উঠে দুই কাজের মেয়ের একজনকে ডেকে চা ও পানি খান। কিছুক্ষণ পর ড্রেসিংরুমে ঢুকে ভেতর থেকে দরজা লক করে দেন। ঢোকার আগে আবুলকে বলে যান, আমাকে যেন কেউ ডিস্টার্ব না করে। সাড়ে ১১টার দিকে আবুল সামিরাকে জাগিয়ে বলেন, অনেকক্ষণ আগে ড্রেসিংরুমে ঢুকলেও তাঁর কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। সামিরা দরজার ডুপ্লিকেট চাবি খুঁজতে থাকেন।

পৌনে ১২টায় ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে আবুল ও সামিরা ড্রেসিং রুমের দরজা খুলে দেখেন ফ্যানের সঙ্গে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে আছেন সালমান। সামিরা ও দুই কাজের মেয়ে সালমানকে উঁচু করে ধরেন। পাশের বাসার কাজের মেয়ে দড়ি কেটে সালমানকে নামিয়ে আনেন। দড়িটি ছিল ব্যায়ামের যন্ত্র থেকে বের করা। সালমান ফ্যান পর্যন্ত ওঠেন ঘরে থাকা একটি কাঠের মই দিয়ে।

নামানোর পর পাশের বাসার কাজের মেয়েটি বলে, 'শরীর এখনো গরম। উনি মরেননি। ' তখন মাথায় ও গায়ে তেল মালিশ করা হয়। এ সময় মে ফেয়ার বিউটি পার্লার থেকে সামিরার বান্ধবী রুবি এসে শুশ্রূষায় অংশ নেন। হাউজিং কমপ্লেক্সের ম্যানেজারও আসেন।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চলচ্চিত্রের প্রোডাকশন ম্যানেজার সেলিম এসে সালমান শাহকে মরার মতো পড়ে থাকতে দেখে সালমানের বাবা কমর উদ্দিনকে খবর দেন। খবর পেয়ে কমর উদ্দিন, সালমানের মা নীলা চৌধুরী, ভাই শাহরান ছুটে আসেন ঘটনাস্থলে। তাঁরা গিয়ে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য লিফট দিয়ে নামাতে যান। এ সময় লিফটের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ১৫ মিনিট দেরি হয়। পরে তাঁকে নামিয়ে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

সেখানকার চিকিৎসকরা তাঁকে ভর্তি করতে অস্বীকৃতি জানালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। (এই সম্পূর্ন প্যারাগ্রাফটি দৈনিক কালের কন্ঠের সৌজন্যে) সিলেট শহরে শাহজালালের মাজারের পাশের কবরস্থানে সালমানের শেষ বাসস্থান সালমান শাহর বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরী রমনা থানায় অপমৃত্যু মামলা করেন। পরবর্তী সময়ে মা নীলা চৌধুরী সালমানের স্ত্রী, শ্বশুর, শাশুড়িসহ কয়েকজনকে আসামি করে আদালতে হত্যা মামলা করেন। এই পর্যায়ে পুরো ব্যাপারটি খুবই নোংরা পর্যায়ে চলে যায়।

নীলা চৌধুরী অভিযোগ করেন, সামিরার সাথে বিতর্কিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল এবং এ দু'জন মিলে সালমানকে হত্যা করেছে। সামিয়া পালটা অভিযোগ করেন যে নীলা চৌধুরীই আজিজ ভাই সহ অনেক পুরুষকে তার বাড়িতে নিয়ে আসত এবং এটা নিয়ে সালমান ও তার বাবা নীলার উপর ক্ষুদ্ধ ছিলেন। এছাড়া সামিরা পুরো ঘটনার জন্য সালমান-শাবনুরের প্রেমকেও দায়ী করে। আজিজ মোহাম্মদ ভাই নানা ধরনের গুজব দিয়ে এসময় পত্রিকা আর ফিল্মি পত্রিকাগুলি সয়লাব হতে থাকে। শোনা যায়, মারা যাবার কিছুদিন আগে এক ফিল্মি পার্টিতে সালমান আর আজিজ ভাইয়ের মধ্যে সামিরাকে নিয়ে প্রচন্ড কথা কাটাকাটি হয়, এক পর্যায়ে সালমান আজিজ ভাইয়ের গলা চেপে ধরেছিলেন।

পৃথক আরেক ঘটনায় শোনা গেল, সামিরার সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল খলনায়ক ডনের এবং ডনই আজিজ ভাইয়ের সহায়তায় সালমানকে খুন করেছে। পুলিশ সালমানের ফ্ল্যাট তালাশ করতে গিয়ে সামিরার সেক্স টয়জ উদ্ধার করে সেগুলি পরীক্ষা করছে এবং এগুলির ব্যাপারের সামিরার বাবা হীরাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন, এই ধরনের কুরুচিপূর্ন ছবিও জাতীয় দৈনিকে ছাপা হচ্ছিল। বহু অনুসন্ধান করেও অবশ্য পুলিশ খুনের স্বপক্ষে কোন প্রমান পায়নি, আগাগোড়া এটা আত্মহত্যা বলেই তাদের কাছে মনে হচ্ছিল। লম্বা একটি বিরতির পর সালমান শাহের মৃত্যুরহস্যের সর্বশেষ চমকটি ঘটে '৯৭ সালের জুলাই মাসে। ততদিনে প্রায় মৃত এই মামলায় পুলিশকে নড়েচড়ে বসতে বাধ্য করে এক বেকার তরুন।

তিনি হঠাৎ আবির্ভূত হয়ে পুলিশের কাছে সালমান হত্যাকান্ডে নিজে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং ঘটনার বিস্তারিত বর্ননা দেন। তার ভাষ্যটি ছিল এরকম - তারা বেশ কয়েকজন লেদার জ্যাকেট পড়ে কোমরে মোটা দড়ি বেঁধে রওনা হন সালমান শাহকে হত্যার উদ্দেশ্যে। সালমানের ফ্ল্যাটে পৌঁছে সবাই মিলে সালমানকে প্রথমে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে ঘুমের ইঞ্জেকশন দেয়। সালমান অচেতন হয়ে পড়লে গলায় ফাঁসের দড়ি বেঁধে সিলিং এর সাথে ঝুলিয়ে তাকে হত্যা করে। এই পুরো ঘটনার সময় সামিরা এবং আজিজ মোহাম্মদ ওখানেই ছিল এবং ঘটনার তদারকি করছিল।

পুলিশ এবং সাংবাদিকগোষ্ঠি এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রথম থেকেই বিশ্বাস করেনি বরং পুলিশের ধারনা জন্মায়, নীলা চৌধুরী তার নিজের ইগোর কারনে সামিরা এবং আজিজ মোহাম্মদের উপর প্রতিশোধ নিতে এই ছেলেটাকে ভাড়া করেছেন। বিশেষ করে তার গল্পে আজিজ ভাইয়ের মত লোকের ঘটনাস্থলে উপস্থিতির বিষয়টি সন্দেহের উদ্রেক করে। পুলিশের এই অবস্থান অবশ্য আজিজ মোহাম্মদের চাপে পড়েও হতে পারে। কয়েকবার জিজ্ঞাসাবাদ করার পর বক্তব্যে নানা অসংগতি লক্ষ্য করে এবং খুব বেশি সিনেমাটিক মনে হওয়ায় পুলিশ কয়েকদিন পরই তার বক্তব্য পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করে দেয়। এরপর এই মামলার আর কোন অগ্রগতির কথা শোনা যায়নি।

মামলাটি নাকি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পড়ে আছে। আদালতসংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের অবশ্য দাবি, মামলাটি নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। সালমানের বাবা কমরউদ্দিন চৌধুরীর বেশ কয়েক বছর স্বাভাবিক মৃত্যু ঘটে। নীলা চৌধুরী জাতীয় পার্টি ছেড়ে এখন আওয়ামী লীগের নেত্রী। শাবনুরের ক্যারিয়ার বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়লেও রিয়াজকে জুটি করে সামলে ফেলেন।

খলনায়ক ডন অবশ্য এত সৌভাগ্যবান ছিলেন না। তার বাজার একেবারেই পড়ে যায় এবং মিশা সওদাগর সে স্থানটি দখল করেন। সামিরা ঘটনার কয়েক বছর পর আবার বিয়ে করে এখন সংসারী। আজিজ ভাই কি করছেন, কেমন আছেন সেটা আগের মত এখনও রহস্যজনকই আছে।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।