পেপার পড়ছিলাম। সেখানে পড়লাম, খাঁচায় না রেখেও কীভাবে পাখি পোশা যায়। যেই ভাবা সেই কাজ। আমার বারাব্দায় পাখির বাসার জন্য মাটির পাত্র দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখলাম। বর্ষাকালে যেন পানি না জমে থাকে সেজন্য পাত্রে ফুটো থাকা চাই, এমন পাত্র।
আরেক পাত্রে খাবার। দেখি এবার পাখিরা ঐ পাত্রে নিজেরাই বাসা বাঁধে কি না?
ভাত খাবার লোভে চড়ুই, বুলবুলি, শালিক, কাক এমনকি হাড়িচাচা নানারকম পাখিরা এল। চড়ুই পাখিরা তাদের ঠোঁটে করে দু একটা খড় নিয়ে এসেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাসা আর কেউ সেখানে তৈ্রি করল না। হয়ত ডিম ফুটালে বাচ্চাগুলো এই বাসাতে নিরাপদ থাকবে না, এই ভেবে।
তবে পাখিরা মাঝে মাঝে পাত্রটাতে বসে থাকত, এই যা!আমি প্রতিদিন খাবার দিয়ে রাখতাম। দুজন নিয়মিত খাবার খেতে আসত। দুটা বুলবুলি পাখি। একজন খেত, অন্যজন একটু দূরে বসে পাহারা দিত। এইভাবে পালা করে ওরা খাবার খেত।
প্রথম প্রথম আমি মনে করতাম একটা পাখিই বুঝি আসে। অবশ্তা নিরাপদ বোঝার পরে ওরা দুজন এক্সাথেই আসত। অন্য পাখিরা আর তেমন আসত না। বুঝলাম এখানে জায়গা দখলের একটা ব্যপার আছে। অবশ্য দাঁড়কাকটা খুব জ্বালাত।
আমাকে যেন আপখিরা চিনতে পারে তাই আমি ওদের টুইটুই বলে ডাকতাম। আমি টুইটুই করলে ওরাও আমার কথা জবাব দিত, ‘’ টুইটুই’’।
এই পাখিগুলোর একটা ব্যাপার আমি লক্ষ্য করে রীতিমত তাজ্জব বনে গেলাম। পাখিদের টাইম সেন্স। মারাত্নক!!!ওরা ঘড়ি ধরে ঠিক ১০টায় একবার আর ১১টায় একবার আসত।
তারপর আর খবর নেই। চারদিক নিশ্চুপ হয়ে যেত ওদের অনুপ্সথিতিতে। আমি খাবার নিয়ে অপেক্ষায় থাকতাম। ওরা আবার আসত ঘড়ি ধরে ঠিক ৩টায়। এর এক মিনিট আগেও না, পরেও না।
এ এক রহস্য আমার কাছে। আমি দেখতাম, টুইটুইরা উড়ে উড়ে আসছে। আর ঘড়ির কাঁটায় ঠিক ৩টা। কোন্দিন এর হেরফের হয়নি।
এভাবেই চলছিল।
কিন্তু দেশে হঠাৎ বার্ড ফ্লুর আশংকা করা হল। আমার ভাইয়া কার্ফু জারি করে দিল, এইসন পাখি টাখি যেন বাসায় আর না আসে। আমি ভার্সিটি থেকে বাসায় ফেরার আগেই আম্মার তদারকিতে বারান্দা থেকে পাখির জন্য বসানো পাত্রগুলো ভেঙ্গে ফেলা হল।
পর্ব ১। Click This Link
পর্ব ২।
http://www.somewhereinblog.net/blog/eijeduniya/29435623 ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।