আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জ্বিন (ছোটদের গল্প)

اللهم هب لي الحجة البالغة والحكمة الموهوبة শুক্রবার দিন সকাল থেকেই ছোট মামা বাড়ির বিভিন্ন কাজে ভীষন ব্যাস্ত হয়ে পড়লেন। রানাদের বাড়ির পুর্ব দিকে যে বেড় ছিল তার মধ্যে রাজ্যের সব গাছ পালা ভর্তি হয়ে ছিল। আম কাঠাল লিচু থেকে শুরু করে কুল গাছ পর্যন্ত ৭/৮ টি প্রজাতির প্রায় অর্ধশত গাছ শাখা প্রশাখা বিস্তার করে এক সাথে লুটো পুটি করছিল। ছোট মামার দায়িত্ব ছিল গাছের অপ্রয়জনীয় ডালপালাগুলো ছেটে দেওয়া যাতে প্রতিটি গাছ স্বাধিনভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ পায়। সেদিন তার খুব খাটুনি হয়ে গিয়েছিল।

কাজে কর্মে তিনি খুবই দ। ফজরের সালাতের পর থেকে শুরু করে সকালের খাবার খাওয়ার আগেই বেশিরভাগ কাজ সেরে ফেললেন। ইচ্ছা ছিল কাজ শেষ না করে সকালের খাবার খাবেন না কিন্তু বেশিন ুধা চেপে রাখতে না পেরে কর্মবিরতি দিতে বাধ্য হলেন। খাওয়া দাওয়া দ্রুত সেরে নিয়ে আবার কাজ শুরু করলেন কাজ শেষ হলে মা বললেন নারকেল গাছে উঠতে পারিস? মামা কিছু না বলে হুড় হুড় করে নারকেল গাছে উঠে পড়লেন। রানাদের নারকেল গাছ প্রায় ৩/৪ তলা বাড়ির সমান উচু।

ছোট মামাকে অত দ্রুত উঠতে দেখে রানার গা শিউরে ওঠে। মামা কিন্তু ঠিকই উপরে উঠে গেল। ঝপ ঝপ করে কয়েকটি ডাব নিচে ফেলে নেমে আসবেন এমন সময় ডান দিকে মুখ ঘুরিয়ে কি যেন দেখতে লাগলেন। বেশ কিছুন সেদিকে তাকিয়ে থেকে আস্তে আস্তে নেমে এলেন। নিচে নেমেও মামা চিন্তিত মনে কি যেন ভাবছিলেন।

দুপুরে খেতে খেতে মামা মাকে বললেন নারকেল গাছ থেকে পশ্চিম দিকে বেশ দুরে একটা পুরোন বাড়ি দেখতে পেলাম ওটা কি বলতে পারো? মা বললেন শুনেছি ওটা আগে জমিদার বাড়ি ছিল। আমি বিয়ের পর থেকেই অরকমই দেখে আসছি। কখনও ওখানে কাউকে বাস করতে দেখিনি। জমিদার বাড়ির কথা শুনে মামার আগ্রহ যেন দ্বীগুন বেড়ে গেল। খাওয়া দাওয়া ভুলে আপার সাথে ঐ নিয়েই আলোচনা করতে থাকলেন।

কথা বলতে বলতে বললেন আমি আর রানা আজই ওটা দেখতে যাব। না না তার দরকার নেই। শুনেছি ওখানে নাকি জীন থাকে। দিন রাত কোন সময়ই ওখানে কেউ যায় না। ওখানে গেলেই নাকি কি সব ভুতুড়ে কান্ড দেখা যায়।

বহু দিন থেকে ও বাড়িতে মানুষ বাস করে না তো তাই। গভীর উদ্বেগ নিয়ে ছোট ভাইকে নিষেধ করেন রানার মা। মামা কিন্তু নাছোড়বান্দা। চোর ডাকাত, জিন পরী কোন কিছুতেই তার ভয় নেই। বেশ কিছন তর্ক বিতর্ক করে আপাকে রাজী করালেন তবে শর্ত হল সন্ধার আগে ফিরে আসতে হবে।

মামা সে শর্তে রাজী হলেন। কিন্তু সন্ধার আগে ফিরতে হলে এখুনই রওয়ানা হওয়া চায়। খাওয়া দাওয়া সেরে নিয়েই লম্বা জামা আর টুপি পরে রানাকে নিয়ে মামা জমিদার বাড়ি দেখার জন্য রওয়ানা হলেন। জমিদার বাড়িটা বেশ দুরে। বেশিরভাগ রাস্তাই তে খামার আর পরিত্যাক্ত জমির ভিতর দিয়ে যেতে হয়।

সকালের দিকে আসলে দুএকজন কৃষক বা রাখালের দেখা মেলে কিন্তু এই ভর দুপুরের সময় কাউকেই দেখা যাচ্ছে না। মামা এক মনে হেটে চলেছেন। রানার মনে কিন্তু বিভিন্ন্ চিন্তা বাসা বাধছে সত্যি সত্যিই যদি কোন জিন পরীর সাথে সাাত হয়ে যায় তবে কি ভয়ংকরই না হবে! রানা একটু পেছনে পড়ে গিয়েছিল জিন পরীর কথা মনে হতেই মামার কাছাকাছি চলে এসে প্রশ্ন করে মামা জিন বলে কি সত্যিই কিছু আছে ? হ্যা অবশ্যই আছে। আল্লাহ কোরআনের ভিতর বলেছেন আমি জিন ও মানুষকে আমার ইবাদত করার জন্যই সৃষ্টি করেছি। তাছাড়া আদম আর হাওয়াকে যে শয়তান ধোকা দিয়ে জান্নাত থেকে বের করে সেও তো জিনই ছিল।

এ কথা শুনে রানার ভয় আরও বেড়ে যায়। মামা ওর মনের অবস্থা বুঝতে পারেন। নিজের ডান হাত দিয়ে ওর বাম হাত শক্ত করে ধরে দ্রুত পথ চলতে লাগলেন। ছোটমামা রানার হাত ধরার পর থেকে রানার আর ভয় করে না। ছোট মামার উপর তার খুব আস্থা।

একনাগাড়ে অনেন পথ চলে রানা হাটার শক্তি হারিয়ে ফেলে। মামা অনুমান করার চেষ্টা করেন সঠিক পথে এসেছেন কিনা। তিনি সুর্য দেখে পথ নির্নয় করে বরাবর পশ্চিম দিকেই এসেছেন। কিন্তু নারিকেল গাছ থেকে জমিদার বাড়িটি যতদুর মনে হয়েছিল তাতে করে এতনে পৌছে যাওয়াই উচিৎ ছিল। পথ ভুল হয়ে যাওয়ার সম্ভবনাই বেশি।

প্রথমে মনে করেছিলেন পথে কাউকে জিজ্ঞাসা করে সহজেই জমিদার বাড়ি পৈাছে যাবেন। কিন্তু জিজ্ঞাসা করার মত কাউকে পাওয়া যাচ্ছেনা যাবে বলে মনেও হচ্ছে না। মামা এবার হাটার আগ্রহ পুরোপুরি হারিয়ে ফেলেন। ভুল পথে দ্রুত হেটে লাভ কি! একটা গাছের নিচে পরিষ্কার ঘাসের উপর বসে কিছুন বিশ্রাম নিলেন। বিশ্রাম তো নই আসলে মাথা নিচু করে গভীর চিন্তায় ডুবে গেলেন।

আর কিছুণ দেরি করলেই ফিরতে রাত হয়ে যাবে। রানা সাথে না থাকলে অবশ্য কোন সমস্যা ছিল না। কিন্তু রাতে এই তে খামারে চলাফেরা করতে রানার নিশ্চয় ভয় করবে আপা দুলাভাইও চিন্তাই পড়ে যাবে। এসব ভেবে সান্টুমামা দারুন বিরক্ত হন। এখন করনীয় কি সেটাই ঠিক করতে পারছেন না।

কিছুন এদিক সেদিক তাকিয়ে মনে করার চেষ্টা করেন নারকেল গাছের মাথা থেকে জমিদার বাড়ির আশপাশে কি কি গাছ পালা দেখেছিলেন। তার মনে পড়ল একটি ছোট পুকুরের পাড়ে যে ৩/৪ টি তাল গাছ দেখেছিলেন তার নিকটেই ছিল জমিদার বাড়িটি। এতনে যদি জমিদার বাড়ির কাছাকাছি চলে এসে থাকেন তবে তাল গাছের সারিটি খুজে পেতে মোটেও কষ্ট হবে না। রানারা যে গাছের ছায়ায় বসে ছিল ছোটমামা দ্রুত সেটিতে উঠে গেলেন। চারিদিকে চোখ বুলিয়ে তালগাছগুলো খুজতে লাগলেন।

রানা আগ্রহ আর ভয়মাখা দৃষ্টিতে মামার দিকে চেয়ে থাকে। দুতিন বার ডানে বায়ে তাকাতেই মামার মুখে হাসি ফুটল। তাল গাছ নই তিনি স্বয়ং জমিদার বাড়িটিকেই দেখতে পেয়েছেন। সামনেই যে গাছ পালার সারি তার ঠিক পিছনেই রয়েছে ওটি। মামা আর এক মুহুর্ত দেরি করলেন না।

দ্রুত নেমে এসে রানার হাত ধরে টানতে টানতে গাছের সারি গুলো পার হতে লাগলেন। ওপারে যাওয়ামাত্র জমিদার বাড়িটি দৃশ্যমান হল। বহুদিনের পুরোনো ভগ্নপ্রায় একটা বাড়ি। বাড়িটির চারিদিকে তো বটেই এমনকি ২/৩ ফুট চওড়া দেওয়াল ভেদ করে বিভিন্য ছোট বড় গাছ গাছালি বের হয়েছে। বাড়িটি দেখেই রানার মনে ভয়ের সঞ্চার হয় একেবারে ভুতুড়ে বাড়ির মতই দেখাচ্ছে ওটি।

ছোটমামা স্থির দাড়িয়ে কিছুন অবস্থা পর্যবেন করেন। রানার দিকে না তাকিয়েই বলেন এটা একটা জমিদার বাড়ি। এখানে এক সময় বড় কোন জমিদার বসবাস করত। যাদের অনেক জমিজমা, টাকা পয়সা থাকে তাদের জমিদার বলে। এখানে তারা কত আমোদ ফুর্তি করেছে তারপর বাড়ি,জমিজমা, টাকা পয়সা ফেলে দুনিয়া থেকে বিদায় হয়ে গেছে।

তাদের কি লাভ হল ! তাদের টাকা পয়সা কি কোন কাজে আসল ! দুনিয়াতে যে টাকা জমিয়ে পাহাড় বানাবে গাড়ি বাড়ির মালিক হবে একদিন সেসব ফেলে তাকে চলে যেতে হবে। কিন্তু আখিরাতে আল্লাহ যাকে জান্নাত দেবেন তাকে চিরকাল সেখানে রাখবেন। সেখানে সে চিরকাল যুবক থাকবে তার বয়স বাড়বে না। তার পোশাক, বাড়ি, গাড়ি কোন কিছুই পুরনো হবে না। সেখানে রাত নেই, ঘুম নেই।

সারাদিন কেবল আনন্দ আর ফুর্তি করবে। দুনিয়াতে চাকুরী পেয়ে বড় বাড়ির মালিক হওয়ার চেয়ে জান্নাত পাওয়া অনেক ভাল। জান্নাত পেতে হলে ভাল আমল করতে হবে। কথাগুলো বলতে বলতে মামা বাড়িটির কাছাকাছি হতে থাকেন। মামা যতই ওটির নিকটে যাচ্ছেন রানার মুখ ততই লাল হতে থাকে।

সে মনে মনে ভাবে মামা কি ওই বাড়ির ভিতরে যাবে নাকি? এই ভুতড়ে বাড়িটির ভিতরে যাওয়ার কথা মনে হতেই রানার দেহ পানিশুন্য হয়ে যায়। তার কেবলই মনে হতে থাকে ভিতরে ঢোকার সাথে সাথেই মিচমিচে কালো একটা ভুত লম্বা লম্বা দাত বের করে হি হি করে হেসে উঠবে। রানা খুব করুন কন্ঠে বলে ভিতরে না গেলে হয় না ? মামা হাসেন, বলেন তাহলে আর এতদুর আসলাম কেন ? তুই কি ভয় পাচ্ছিস নাকি ? রানা মাথা নাড়ে। সান্টুমামা সুরা ফাতিহা পড়ে রানার গায়ে ফু দেন। নিজের গায়েও ফু দিয়ে নেন।

তারপর বলেন আর কোন ভয় নেই। জিনেরা কোরআনের আয়াতকে ভয় করে বুঝলি ? রানার ভয় অনেকটা দুর হয়। মামা যখন কোরআন পড়ে গায়ে ফু দিয়ে দিয়েছে তখন আর কিসের ভয়! মামা একটা চিকন গাছ গোড়া শুদ্ধ উপড়িয়ে পাতাগুলো ঝেড়ে ফেলে একটা লাঠির মত বানিয়ে নেন। তার পর রানাকে বলেন ভিতরে যাবি না বাইরে দাড়িয়ে থাকবি ? বাইরে একা একা দাড়িয়ে থাকার প্রশ্নই ওঠে না। দুহাত দিয়ে মামার বাম হাত আকড়িয়ে ধরে রানাও মামার সাথে ভুতুড়ে বাড়িটির ভিতরে প্রবেশ করে।

বাড়িটির ভিতরে অমাবশ্যা রাতের মত অন্ধকার, কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। আস্তে আস্তে একটু একটু করে ফরসা হতে হতে এক সময় আবছা আলোকিত হয়। সেই আলোতেও ঘরের ভিতরে সুন্দর নকশাগুলো অল্প অল্প বোঝা যাচ্ছিল। রানা ভাবে সত্যি সত্যিই যারা এখানে বসবাস করতো তারা নিশ্চয় ধনী ছিল। ধনী না হলে কি আর এমন বাড়ি বানানো যায় ! কিন্তু তারা পরপারে চলে গেছে এভাবে যে কেউই দুনিয়াতে বাড়ি গাড়ি বানাবে তাকে সেই বাড়ি ফেলে চলে যেতে হবে।

তারচে বরং আখিরাতে বাড়ি বানানোর চেষ্টা করাই ভালো। আখিরাতে বাড়ি বানাতে হলে টাকা কামায় করতে হয় না, ইট সিমেন্ট কিনতে হয় না কেবল ভাল আমল করতে হয়। বাইরে থেকে যতটা ভয় করছিল ভিতরে এসে কিন্তু রানার তেমন কোন ভয়ই করছে না। নির্ভয়ে মামার সাথে এদিক সেদিক দেখতে দেখতে অনেক সময় পার হয়ে যায়। হঠাৎ বাইরের দিকে থেকে একটা বিকট শব্দ শোনা যায়।

কুকুর আর বিড়াল সংঘর্ষ বাধালে যেমন করে তেমন শব্দ। রানা মামাকে জাপটে ধরে। ভয় নেই , ভয় নেই বলতে বলতে মামা বাইরে বের হয়ে আসেন। চারিদিকে সতর্ক দৃষ্টি ফেলে দেখতে থাকেন আসলে কি ঘটেছে কিন্তু কিছুই চোখে পড়ল না। রানা কিন্তু পিছনের দিকে তাকিয়ে একটা ভয়ানক জিনিস দেখতে পায়।

ভয়ে সে কথা বলার মত শক্তিও হারিয়ে ফেলে। ডান হাত দিয়ে মামার জামা ধরে টান দিয়ে হাঁসের মত ফিস ফিস করে বলে -মামা দেখো ! মামা তাকিয়ে দেখেন। পাকা জামের মত কালো মোটা একটা বিড়াল। চোখ গোল্লা গোল্লা করে তাদের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে যেন এই স্থানে দুজন মানুষকে দেখে সে অতিব রাগান্বিত হয়েছে। মামা মাটি থেকে ছুড়ে মারার মত কয়েকটি ইট পাথর গুছিয়ে নিয়ে বিসমিল্লাহ বলে বিড়ালটির দিকে ছুড়তে থাকেন।

বিড়ালটি কিন্তু ঠাই দাড়িয়ে থাকে একটুও নড়াচড়া করে না। রানা ভয়ে আড়ষ্ঠ হয়ে যায় বহু কষ্ট করে গলা দিয়ে কেবল একটা কথাই বের করতে পারে মামা জিন নয় তো ? মামা মাথা নাড়তে নাড়তে বলেন হতে পারে। ভয় নেই, শুধু দেখ কি করি। মাামা কি করবে বোঝা যাচ্ছে না তবে মামার মধ্যে সাহস দেখে রানার ভয় কিছুটা প্রশমিত হয়। মামা নিশ্চয় কিছু একটা করবেন।

মামা উচু কন্ঠে আযান দিতে আরম্ভ করলেন। রানা একপলকে মামার মুখের দিকে চেয়ে রইল। আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার এতদুর বলতেই ঝোপ ঝাড়ের ভিতর দিয়ে কোন কিছু দ্রুত গেলে যেমন শব্দ হয় তেমন শব্দ শোনা গেল। মামা আযান দিতে দিতেই বিড়ালটি যেখানে ছিল সেদিকে মুখ দিয়ে ইশারা করলেন। রানা পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখল বিড়ালটি আর নেই।

সেদিককার ঝোপঝাড় গুলো তখনও নড়ছিল। জন্তুটি পালিয়েছে , খুব দ্রুত পালিয়েছে। মামা কিন্তু তখনও আযান দিচ্ছিলেন। আযান পুরো শেষ করে মুচকি হাসলেন। ওটা একটা শয়তানই হবে বুঝেছিস ? বলতে বলতে একস্থানে বসে পড়লেন।

তার পাশে রানাও বসে পড়ল এখন আর তার একটুও ভয় করছে না। আযান দিলেই যদি জিন পালিয়ে যায় তবে বৃথা ভয় পেয়ে লাভ কি! সে এখন নিশ্চিন্ত মনে মামার সাথে গল্প ফেদে বসে। -মামা শুধু কি জিনেরাই শয়তান হয় ? -শয়তান জিনও হয় মানুষও হয়। মাামার কথা শুনে রানা ভীষণ অবাক হয়। মানুষ আবার কিভাবে শয়তান হয় ! মামা বলতে থাকেন শয়তানের কাজ হল মানুষকে ভুল বুঝিয়ে জাহান্নামী করা।

যেসব মানুষ নিজেরা আল্লাহর হুকুম মানে না আবার অন্যদের আল্লাহর হুকুম মানতে দেয় না তারাই শয়তান। দেখ বর্তমানে যারা পুলিশ যারা সরকার তারা কি আল্লাহর হুকুম মেনে চলে ? আল্লাহ বলেছেন চোরের হাত কাটতে তারা কি তা করে ? রানা মাথা নাড়তে নাড়তে বলে না। মামা বলেন যদি কেউ চোর ধরে হাত কেটে দেয় এরা তার কি করবে জানিস ? -জেলে দেবে। এই তো কয়েকমাস আগে বাবা একদিন বললেন পত্রিকাতে খবর এসেছে এক ইমাম সাহেব নাকি এক মেয়েকে ১০০ বেত মেরেছে বাবা বললেন এটাই ইসলামের সঠিক শাস্তি, সেই ইমাম সাহেবের নাকি জেল হয়েছে। -তাহলে এসব পুলিশ আর এম,পি মন্ত্রীরা নিজেরাও ইসলাম মানে না আবার অন্য কেউ ইসলাম অনুযায়ী বিচার করলে তাকে বাধা দেয়।

এরাই মানুষ শয়তান বুঝলি। আল্লাহ কোরানে সুরা আনআমে বলেছেন, মানুষ এবং জিন শয়তানরা নবীদের সাথে শত্র“তা করে। নবীদের সাথে শত্র“তা মানে ইসলামের সাথে শত্র“তা কোরআনের সাথে শত্র“তা, হকপন্থি আলেমদের সাথে শত্র“তা। তুই শেখ আবু রায়হান এর নাম শুনেছিস ? রানা খুব টেনে বলে হ্যা....... বাবা প্রায় প্রতি দিন তার কথা বলেন। তিনি বলেছিলেন আল্লাহর আইন দিয়ে বিচার করতে হবে।

ইয়াহুদি খৃষ্টান আর মানুষের তৈরী করা আইন মানিনা। তাকে ফাঁসিতে দেওয়া হয়েছে। ছোটমামার চোখ দিয়ে ছল ছল করে পানি গড়িয়ে পড়ে। চোখ মুছতে মুছতে বলেন, - এসব আলেমদের সাথে যারা শত্র“তা করে, যারা হক কথা বলে, কোরানের কথা বলে তাদের যারা হত্যা করে তারা সবাই শয়তান, তারা জাহান্নামী। আল্লাহ সুরা বুরুজে বলেছেন যারা মুমিনদের কষ্ট দেয় তাদের তিনি জাহান্নামের আগুনে পুড়িয়ে প্রতিশোধ নেবেন।

আল্লাহ ওদের ধ্বংস করে ছাড়বেন। এসকল নেতাদের যারা মেনে চলে সম্মান করে তাদেরও জাহান্নামী হতে হবে। শেখ আবু রায়হানের মত আলেমরাই আমাদের নেতা। তিনি ইসলামের জন্য জীবন দিয়েছেন। যে ইসলামের জন্য জীবন দেয় তাকে শহীদ বলা হয়।

শেখ আবু রায়হান একজন শহীদ। এখন অনেক আলেম আছে যারা সরকারের কথামত চলে , সরকারের কাছে বেতন নেয়, তারা পাপী , তারাও জাহান্নামী। তাদের আল্লাহ কিয়ামতের দিন কঠিন অপমানিত করবেন। কথা শেষ করে মামা বেশ কিছুন নিরব থাকেন। শেখ আবু রায়হানের জন্য তার খুব দুঃখ হচ্ছে।

রানারও তার জন্য দুঃখ হয়। মামাকে আজ যেভাবে কাঁদতে দেখল বাবাও শেখ আবু রায়হানের কথা বলতে বলতে প্রায় সেভাবেই কেঁদে ফেলেন রানার মাও কাঁদেন। এত মুমিনকে যারা কাঁদায় আল্লাহও তাদের কাঁদাবেন। জাহান্নামে কাঁদতে কাঁদতে তাদের চোখে পানি গড়িয়ে পড়ার মত গর্ত হয়ে যাবে। বইটি সম্পূর্ণ পেতে, Click This Link  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।