আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শিশু অধিকার সংক্রান্ত একটি সচেতনতা মূলক নাটিকা

অরুণালোক শিশুতোষ নাটিকা সকলের তরে সকলে আমরা রচনায়: তৈয়ব খান চরিত্র ক্রম নাম পরিচিতি বয়স ১ হাজি মুখলেসুর রহমান গ্যারেজ মালিক ৫০-৫৫ ২ আম্বিয়া ফজলুর মা ৩৫-৪০ ৩ ফজলু গ্যারেজকর্মী ও ছাত্র ১০-১২ ৪ বুলবুল ঐ ঐ ৬ রেশমা গৃহ পরিচারিকা ও ছাত্রী ঐ ৭ ময়না গৃহ পরিচারিকা ও ছাত্রী ঐ ৮ কদম হোটেল বয় ও ছাত্র ঐ ৯ পটল হোটেল বয় ও ছাত্র ঐ ৯ মোমতাজ শিক্ষিকা ২৫-৩০ ১০ মাহবুব এনজিও কর্মকর্তা ৩৫-৪০ ১১ আমজাদ আলী সমাজ সচেতন ব্যক্তিত্ব ঐ প্রথম দৃশ্য স্থান ঃ মুখলেস মিয়ার রিক্সার গ্যারেজ কাল ঃ দিন পাত্র/পাত্রী ঃ মুখলেস + আম্বিয়া + বুলবুল + ফজলু। [নির্দেশিকা ঃ মঞ্চে গ্যারেজের আবহ ফুটিয়ে তুলতে রিক্সার পুরোনো কিছু টায়ার-টিউব-রিং, দু’একটা কার্টুন বক্স, স্পুক, সলিউশনের খালি কৌটা ইতিউতি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা যেতে পারে। এর সাথে একজোড়া পুরোনো টেবিল চেয়ার থাকবে। নাটকে বৈচিত্র আনতে পা-ুলিপিতে কয়েকটি অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। তবে অভিনেতা- অভিনেত্রীরা যদি পা-ুলিপির ভাষা উচ্চারণে ব্যর্থ হয়, সেক্ষেত্রে যে কোন অভিনেতা-অভিনেত্রী যে কোন ভাষা ব্যবহার করতে পারবে]।

মঞ্চের পর্দা সরে গেলে সাদা লুঙ্গি-পাঞ্জাবি পরিহিত পাকা দাড়ি সংবলিত হাজি মুখলেস মিয়া প্রবেশ করবে। তার হাতে একটা টালিখাতা ও একটি ফাইল থাকবে। মুখলেস প্রবেশ করতে করতে অপেক্ষাকৃত উচ্চস্বরে সংলাপ বলবে। উল্লেখ্য যে, ভাষায় পুরোনো ঢাকার টান থাকবে। মুখলেস ঃ ভাতিজা বুলবুল, কৈ যাইয়া হান্দাইলা? আবে জলদি আহো, খবর আছে।

(বলতে বলতে মঞ্চে রাখা টেবিলের বিপরীতে রক্ষিত চেয়ারে গিয়ে বসে ড্রয়ার টেনে ক্যালকুলেটর বের করবে। তারপর টালিখাতা ও ফাইল মেলে ধরে একবার খাতা ও ফাইল থেকে দেখে দেখে ক্যালকুলেটরে হিসেব করতে থাকবে। মিনিট খানেক পর এ অবস্থায় বুলবুল প্রবেশ করবে)। বুলবুল ঃ (ময়মনসিংহের আঞ্চলিক ভাষায়) চাচা আমারে ডাকচইন? মুখলেস ঃ (হিসেব থেকে মুখ তুলে বুলবুলকে দেখে চেহারায় একটা অমায়িক হাসি ফুটিয়ে তুলে-) হ ভাতিজা, ডাকছিলাম তো, মাগার সবাইরে তো দেখতাছি না, গেলো কই ছব? যাও সবাইরে খবর দেও, তোমাগো লিগা ছুন্দর একখান খোয়াব আছে। খোয়াবটা পুরা করন লাগবো।

যাও ছবাইরে আইতে কও। (ফাইলে পূণঃ মনযোগ, বুলবুলের প্রস্থান এবং আম্বিয়া ঢুকবে। তার পেছনে বুলবুলের সমবয়সী ফজলুকে দেখা যাবে)। আম্বিয়া ঃ (প্রবেশ মুখে মুখলেসের দিকে তাকিয়ে বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায়) আস্সালামু আলাইকুম। ফজলু ঃ (মায়ের অনুকরণে) আস্সালামু আলাইকুম।

মুখলেস ঃ (নারী ও শিশুকণ্ঠের যুগপৎ সালামের আওয়াজে ক্যালকুলেটরের হিসেবে ব্যস্ত আঙ্গুল থেমে যাবে। কৌতুহলী দৃষ্টি দিয়ে আগতদের খানিক দেখে-) ওলাইকুম ছেলাম। মাগার... (চিন্তিত স্বরে) তুমাগো তো চিনবার পারলাম না? আম্বিয়া ঃ (ফোৎ করে নাকে শব্দ করে কেঁদে ফেলবে। মায়ের কান্না দেখে ফজলুর চেহারা কাচুমাচু হয়ে যাবে) আমনে আমাগরে চিনবেন না। তয় মুই আমনের কাছে একখান সাহায্য চাইতে আইছি।

মুখলেস ঃ (প্রশ্নবোধক দৃষ্টি মেলে) ঠিক বুঝার পারলাম না? (একটু থেমে) তুমি কোন ধরনের সাহায্য চাইবার লাগছো? আম্বিয়া ঃ (কাঁদো স্বরে, ফজলুকে দেখিয়ে) মোর এই দুই ফোটা পুলাডারে থুইয়া, মোর স্বোয়ামী মইরগ্যা গ্যালে। মুই অহন চোহে মুহে আন্দার পাই... (কান্না)। মুখলেস ঃ (বিরক্ত হয়ে) মর জ্বালা, কান্দা থামাও। যা কইবার চাও, পরিষ্কার কইরা কও। ফজলু ঃ (চেহারায় কাচুমাচু ভাব) আমার বাজান গতবছর গাড়ি এক্সিডেন্টে মইরগ্যা গেলে।

হ্যাতে মোরা বিষম বেদপে আছি। মোরা দুইদিন ধইরা কিছুই খাই নাই। মুখলেস ঃ (স্বগোক্তি) যত মরা ধরা কি হালায় আমার কাছেই আহে... আম্বিয়া ঃ কাউরে বুলান....? মুখলেস ঃ না না, কাউরে ডাকি না। মাগার কও দেহি তোমাগো আমি কেমতে ছহযোগিতা করবার পারি? আম্বিয়া ঃ (আশান্বিত হয়ে) মুই আম্নের থন কোনো টাহা চাই না। আমনে মোর পোলাডারে কামে লাগান।

মুর হেতেই অইবে। মুখলেস ঃ (অধিকতর বিরক্ত হয়ে) মর জ্বালা! অখন তোমার পুলারে আমি কামে নিমু কেমতে? এমনেই তো আমার এইহানে চাইরজন পোলাপান কাম করতাছে। জাগা তো ফাঁকা নাই। আমার ছোট্ট একখান গ্যারেজ। কাজ কাম তেমুন নাইক্যা..........অখন (দাড়িতে হাত বুলাতে থাকবে)।

আম্বিয়া ঃ (হন্তদন্ত হয়ে) আমনে মোগো দয়া করেন বাইজান। মুই আমনের কাছে বিক্কা চাই না, খালি একখান কাম চাই। হের বাজান বাইচ্চা থাহলে মুর কারো দুয়ারে যাওন লাগতে না... মুখলেস ঃ (খানিকক্ষণ চিন্তা করবে। তারপর ফজলুর দিকে তাকিয়ে) ঐ মিয়া, লেহাপড়া কিছু জানো? অংক বুজ? যুগ বিয়োগ বুজ? ফজলু ঃ (চেহারা উজ্জ্বল হয়ে উঠবে) হয় চাচা, মুই ক্যালাস ফোরের ছাত্র। ফার্স্ট বয়।

আম্বিয়া ঃ ছেলের কথার সমর্থনে) হয় বাইজান। মোগো ফজলূ কেলাসের ফাস্ট বয়। কিন্তুক, ওর বাপের মরণে কপালে তো দুই বেলা ভাতই জোটে না। তাই ঠিক করছি, মুই একটা বাসাবাড়িত কাম লমু আর ওরে একটা কাম ধরাইয়া দিমু। ও সারা দিন কাম কইরা সন্ধ্যায় বাড়ি যাইয়া পড়াশোনা করবো।

ওরে মুই লেহাপড়া শিখামু। কিন্তুক............. (নিরাশায় বুকের গভীর থেকে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসবে)। মুখলেস ঃ (চিন্তিতভাবে স্বগোক্তি) আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে আসে নাই কেহ অবণী ‘পরে/ সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে.......... আম্বিয়া ঃ কাউরে বুলান? মুখলেস ঃ (চিন্তার তার ছিন্ন হওয়ায় হকচকিয়ে..) উন... না না, কাউরে ডাকি না। না না ডাকতাছি। হয় ডাকতাছি... (গলা চড়িয়ে) ভাতিজা বুলবুল.... কই যাইয়া হান্দাইলা..... দৃশ্যান্তর দৃশ্য দুই স্থান ঃ ছিন্নমূল শিশুদের পাঠশালা।

কাল ঃ দিন পাত্র/পাত্রী ঃ পটল + রেশমা + ময়না + কদম + মোমতাজ + বুলবুল + ফজলু এবং সম্ভব হলে অতিরিক্ত ২/৩জন শিশুশিল্পী। নির্দেশিকা ঃ মঞ্চ থেকে প্রথম দৃশ্যে ব্যবহৃত চেয়ার টেবিল বাদে গ্যারেজের সরঞ্জাম সরে যাবে এবং পাঠশালার আবহ ফুটিয়ে তুলতে একটি ব্ল্যাকবোর্ড থাকবে। টেবিলের উপর ডাস্টার-চক রাখা থাকবে। শিক্ষার্থীদের বসার জন্য কয়েক জোড়া বেঞ্চ রাখা যেতে পারে। তবে জোগার করা সম্ভব না হলে মঞ্চের মেঝে দুই সারি মাদুর বিছিয়ে রাখতে পারলে ভাল।

তবে মাদুর বা বেঞ্চ এমনভাবে থাকবে, যাতে দর্শকরা শিক্ষার্থীদের চেহারার সিংহভাগ দেখতে পায়। এক্ষেত্রে ইংরেজি ‘ভি’ আকৃতি অনুসরণ করা যেতে পারে। মঞ্চের পর্দা সরে গেলে কাঁধে স্কুল ব্যাগ নিয়ে কলরব করতে করতে জনাচারেক (সংখ্যাটা বেশিও হতে পারে) ছেলেমেয়ে মঞ্চে প্রবেশ করবে। শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে (মাদুর/ বেঞ্চ) আসনে বসতে বসতে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করবে। কথাগুলো এরকম হতে পারে..... পটল ঃ ইশ্ মনে করছিলাম, আইজকা দেরি কইরা ফালাইছি।

তাই দৌড়াইয়া আইছি.... রেশমা ঃ (কৌতুক মিশ্রিত হাসি) হি হি হি হি। কিন্তু আইসা দেহস, এহনো ম্যাডাম আহে নাই.... হি হি হি হি.... কদম ঃ (পাশে বসা ময়নার উদ্দেশ্যে) অই! নামতা মুখস্ত করছোস? আমি তো টাইমই পাই নাই। ম্যাডাম তো রাগ করবো.....। ময়না ঃ ইশ্! কব্বেকালে। রেশমা ঃ মুখস্ত করছস? ময়না ঃ হয়, করছি।

রেশমা ঃ (নামতা না মুখস্ত করার ব্যর্থতায় চেহারা মলিন দেখাবে) আমি মুখস্ত করতে পারি নাই। বাজানের জ্বর আছিল, হের দেখভাল করতে করতে সময় যে কোনদিক দিয়া চইলা গেল, বুঝলাম না। ময়না ঃ (সহানুভূতি দেখিয়ে) আইচ্ছা, আমি কই, তোরা আমার লগে লগে ক’। দেখবি মুখস্ত হইয়া গেছে.... ময়নার প্রস্তাবে সবাই রাজি হবে। ময়না সুর করে বলতে থাকবে..... চাইর এক্কে চাইর, চাইর দুগণে আষ্ট...ময়নার সুর অনুসরণ করে সবাই সুর করে নামতা মুখস্ত করতে থাকবে।

এমন সময় ওদের ম্যাডাম মোমতাজ প্রবেশ করবে। মোমতাজ ম্যাডামের পিছু পিছু বুলবুল ও ফজলু প্রবেশ করবে। ম্যাডামকে দেখার পর শিক্ষার্থীরা পড়া থামাবে এবং কৌতুহলী চোখে ফজলুর দিকে তাকিয়ে থাকবে। অবস্থাদৃষ্টে বোঝা যাবে, বুলবুল ওদের পরিচিত কিন্তু ফজলু নবাগত। বিষয়টি মোমতাজ ম্যাডামের দৃষ্টিগোচর হলে তিনি স্মিত হেসে সবার সাথে ফজলুর পরিচয় করিয়ে দেবে।

মোমতাজ ঃ কী! নতুন মুখ দেখে সবাই অবাক হয়ে গেলে? ঠিক আছে, এসো, ওর সাথে তোমাদের পরিচয় করিয়ে দিই। (ফজলুর দিকে ইঙ্গিত করে) নাও, তোমার নাম বলো ওদের কাছে, আর ওদের পরিচয়টাও জেনে নাও। শিক্ষিকার নির্দেশে ফজলু নিজের পরিচয় দেবে.. ফজলু ঃ মোর নাম ফজলু। মোগো বাড়ি বরিশাল... কথা খুঁজে না পেয়ে ফ্যালফ্যাল করে মোমতাজ ম্যাডাম আর বুলবুলের দিকে চেয়ে থাকবে। ওর এ অবস্থা বুঝতে পেরে মোমতাজ ম্যাডামই ওর পক্ষে কথা বলবে- মোমতাজ ঃ হ্যাঁ, এখন থেকে ও তোমাদের নতুন বন্ধু, তোমাদের সাথেই পড়বে।

এর পাশাপাশি মুখলেস ভাই’র গ্যারেজে ও হাতের কাজ শিখবে। (বুলবুল ও ফজলুর দিকে তাকিয়ে) তাহলে, তোমরা তোমাদের জায়গায় গিয়ে বসে পড়ো। শিক্ষিকার নির্দেশ মতো ওরা অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সাথে গিয়ে বসবে। দৃশ্যান্তর দৃশ্য তিন স্থান ঃ খেলার মাঠ কাল ঃ বিকেল পাত্র/পাত্রী ঃ পটল + রেশমা + ময়না + কদম + বুলবুল + ফজলু এবং সম্ভব হলে অতিরিক্ত ২/৩জন শিশুশিল্পী। নির্দেশিকা ঃ মঞ্চকে মাঠ উপযোগী করে সাজিয়ে তুলতে আগের দু’টি দৃশ্যের ব্যবহৃত সরঞ্জাম সরিয়ে ফেলে মঞ্চ খালি করে ফেলতে হবে।

খেলার মাঠের আবহ আনতে ঘন পাতাসমেত দু’তিনটে গাছের ডাল উইংসের পাশে সাজিয়ে রাখতে হবে। মঞ্চের পেছনের পর্দার সামনের অব্যবহৃত অংশে মঞ্চপৃষ্ঠ থেকে একদিকে ছ’ ইঞ্চি এবং অপরদিকে বারো থেকে আঠার ইঞ্চি উচ্চে সমান্তরালভাবে ৩০০ কোণাকোণী সাদা পলিথিন বিছিয়ে নদীর দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা যায়। এতে পলিথিনের দু’পাশে দু’টি বাঁশের চটি দিয়ে বাঁধতে হবে এবং বেড়া দেওয়ার গুণা তার দিয়ে পলিথিনের সমান্তরাল দু’পাশে আটকে দেওয়ার দরকার পড়বে। তবে পরিশ্রম হলেও দৃশ্যটি মনোরম হবে। নদীর বিপরীত দিকে গাছের ডালগুলো সাজানো যেতে পারে।

নদীর বুকে ঢেউ তুলতে উইংসের কোণায় একটা ছোট টেবিল ফ্যান চালু অবস্থায় রাখা গেলে বাতাসে পলিথিন ঝিরি ঝিরি কাঁপবে, যা দেখে দর্শক নদীর আবহ পাবে। মঞ্চের পর্দা সরে যেতেই ছেলেরা ফুলবল ড্রপ দিতে দিতে অথবা ক্রিকেট খেলার সরঞ্জাম নিয়ে প্রবেশ করবে। মেয়েরা মঞ্চের এককোণে সরে গিয়ে পুতুল নিয়ে বসতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে, মঞ্চে শুধুমাত্র খেলার ভান করবে মাত্র। সত্যি সত্যি খেলা জুড়ে দেবে না।

বুলবুল ঃ (ফুটবল ড্রপ দিতে দিতে আফসোসের সুরে) ইশশির্,ে বেইল গড়াইয়া গেলো গিয়া, অক্ষণো কেলা (খেলা) শুরু করইন না ক্যা? ফজলু ঃ বুলবুল বাই, মোর একখান পরশ্ন ছেলো... বুলবুল ঃ করইন না প্রশ্ন, আর (আমার) জানা থাকলে জবাব দিবাইম... ফজলু ঃ মুই কইতেছেলাম কি, মোগে হাজিসাব কি পেত্তেক দিন মোগরে খেলতে দেবে? পটল ঃ খালি তোমাগো হাজি সাব না, আমাগো হোটেলের মালিক বসির চাচাও আমাগো খেলতে দেয়। রোজ রোজ ইস্কুলে যাওনের তাগিদ দেয়। আমরা তো (কদমের দিকে ইঙ্গিত করে) বসির চাচা না থাকলে কই যে ভাইসা যাইতাম, জানি না (একটা দীর্ঘশ্বাস পড়বে। ওর অসমাপ্ত কথাগুলো কদম বলবে)। কদম ঃ (নোয়াখালির আঞ্চলিক ভাষায়) আঁই তো বসির কাগুর লাই নতুন জীবন ফাইসি।

হেতি আঁরে দোজখের থন তুলি লই আঁইছে..। বুলবুল ঃ অহন বুজুইন জ্যা.... হি হি হি হি। আঙ্গোরে কারো কিচ্ছু আছিল্ না। কদম ঃ (নাতিদূরে খেলারত রেশমা ও ময়নার দিকে হাঁক দিয়ে) ওঁহানে বঁই গুতাগুতি করস কিল্লাই। ইয়ানে আয়, দ্যাখ, আঙ্গো নতুন বাই কিতা কয়।

হুনি যা....। কদমের আহ্বানে ময়না ও রেশমা খেলা অর্ধসমাপ্ত রেখে ওদের কাছে আসবে এবং ওরা আসার পর সকলে মিলে মঞ্চে ইংরেজি ‘ইউ’ অক্ষরের রূপ ফুটিয়ে তুলে দাঁড়াবে, যাতে সবার চেহারা পরিষ্কার দেখা যায়। ময়না ঃ আমি আর রেশমা দুইটা বাসায় কাম করি। এর পাশাপাশি প্রতিদিন বিকালে আমরা ভার্কের স্কুলে পড়াশুনা করি। আমাগো বাসার মালিক আমাগো কামের সময়, পড়াল সময়, খেলার সময় আলাদা কইরা দিছে।

রেশমা ঃ হ, আমরা খুব বালা আছি। আমাগো মুনেই (মনেই) অয় না, আমরা মাইসের বাসায় কাম করি। ফজলু ঃ (চেহারা কাচুমাচু করে) মুই বাবতে আছিলাম, দুনিয়ার মানুষ এত বালা অইলে ক্যামনে? মোরা তো আগে মায়-পুতে মিলগ্যা রাস্তায় রাস্তায় ঘুইরগ্যা মরতে আছেলাম। কদম ঃ (ফজলুর কথায় কৌতুক অনুভব করবে এবং হিহি করে হাসতে হাসতে) দেহ, কিতা কয়? হ্যাতারা কি বেবাকে বালা আছিল্ নি? যাঁরা বালা আছিল্, তারা আগে থেই বালা আছিল্। কিন্তুক যাঁরা খারাপ তারা জীন্দেগীতেও বালা অইত ন।

তয় হ্যাঁ, আন্নেরা কইতাম হারেন, হেতেরা সচেতন অইচ্চে। হেতেগো সচেতন কইচ্ছে, আঙ্গো ‘জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ’। এ সনদ হরি (পড়ে) হ্যাতেরা বিয়াক কিছু শিখছে, বুজ্জেন নি? ময়না ঃ আর তাগো এই শিশু অধিকার সনদ দিয়া শিক্ষা দিছে সরকার। রেশমা ঃ খালি সরকারই না, কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সরকারের সাথে মিলা প্রথমে বড়গো সচেতন করছে। বড়রা সচেতন হইয়া এহন আমাগো অধিকারের দিকে নজর দিছে।

বুলবুল ঃ খাঁটি কতা কইচুইন...........। ফজলু ঃ কিন্তুক, মুই বাবতে আছি........ ময়না ঃ বুজতে পারছি। তয় তোমার ভাবনার জবাব পাইতে আগামি কাইল পর্যন্ত তোমার অপেক্ষা করতে অইবো। ফজলু ঃ (কৌতুহলী হয়ে) ক্যান, আগামীকাল ক্যান? রেশমা ঃ আগামীকাইল আমাগো ভার্ক স্কুলের মিটিং আছে। এই মিটিংয়ে সবাই থাকবো।

ভার্ক স্কুলের আপা থাকবো, অফিসার ভাই থাকবো। আমাগো বাড়ির মালিক থাকবো, তোমাগো হাজিসাব থাকবো, আর থাকবো বশির মিয়া। দৃশ্যান্তর দৃশ্য চার স্থান ঃ আগের দৃশ্যের খেলার মাঠ (বিশ্ব শিশু অধিকার দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে জনসভা)। কাল ঃ বিকেল পাত্র/পাত্রী ঃ মাহবুব আলম + মুখলেসুর রহমান+ আমজাদ আলী+ মোমতাজ ম্যাডাম+ পটল + রেশমা + ময়না + কদম + বুলবুল + ফজলু এবং সম্ভব হলে অতিরিক্ত ২/৩জন শিশুশিল্পী। নির্দেশিকা ঃ বিশ্ব শিশু অধিকার সংবলিত একটি ব্যানারের প্রয়োজন পড়বে।

ব্যানারটি যেন সরাসরি দর্শকরা দেখতে পায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পা-ুলিপির এ অংশটিই মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। এ দৃশ্যকেই উপস্থাপন করতে বাকি তিনটে দৃশ্যের অবতারণা করা হয়েছে। এ দৃশ্যটি মূলত শিশু অধিকার সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। জনসভাকে আকর্ষণীয় করে তুলতে দর্শকরাও পরোক্ষভাবে এ পর্বটিতে অংশ নেবে।

তাদের মাঝে ভার্ক কর্মকর্তা মাহবুব আলম, হাজি মুখলেসুর রহমান, আমজাদ আলী, বসির মিয়াসহ শিশুরা থাকবে। উল্লেখ্য, মোমতাজের ব্যবহৃত আগের পোশার পরিবর্তন দরকার। এখানে সে শিক্ষিকা নয়, বরং একজন উপস্থাপিকা হিসেবে ভূমিকা পালন করবে। মঞ্চের পর্দা সরে যেতেই হাতে হাতে মাইক্রোফোন নিয়ে মোমতাজ প্রবেশ করবে। উল্লেখ্য যে, সংলাপ আয়ত্ব করতে সমস্যা হলে এ অংশটুকু হাতে স্ক্রিপ্ট রেখে কৌশলে দেখে দেখে বলা যেতে পারে।

মোমতাজ ঃ আসসালামু আলাইকুম। সম্মানিত দর্শক ম-লী, আপনারা জানেন আজ বিশ্ব শিশু অধিকার সংরক্ষণ দিবস। এ দিবসটিকে ঘিরে আমাদের আজকের আয়োজনের মধ্যে রয়েছে কীভাবে বিশ্বের অন্যান্য শিশুদের মতো আমাদের দেশের শিশুরাও বিকশিত হয়, তার সার্বিক আলোচনা। তার আগে আলোচকদের সাথে সম্মানিত দর্শকদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি। এ পরিচয় পর্বের প্রথমে আমি আমাদের সম্মানিত কর্মকর্তা মাহবুব ভাইকে মঞ্চে আহ্বান করছি।

(মাহবুব দর্শক আসন থেকে উঠে মঞ্চে যাবেন, বাকিরা করতালির মাধ্যমে তাঁকে স্বাগত জানাবে)। এরপর আমি মঞ্চে আহবান করবো আমাদের সমাজের কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তিকে। যার প্রথমেই আছেন, হাজি মোঃ মুখলেসুর রহমান সাহেব। এরপর বশির মিয়া ও সবশেষে আমজাদ আলী ভাই। আমি একে একে তাঁদের মঞ্চে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।

ঘোষণা অনুযায়ী একে একে সবাই মঞ্চে গিয়ে দাঁড়াবেন। দর্শকদের মধ্যে থেকে করতালির মাধ্যমে সকলকে স্বাগত জানানো হবে। মোমতাজ পূনরায় শুরু করবেন- সম্মানিত দশক, আপনারা জানেন মঞ্চে দাঁড়ানো এ মানুষগুলো আপনাদের খুবই পরিচিত। কিন্তু এঁদের কর্মকা-ের ফলে এঁরা সমাজের আর দশজন মানুষের থেকে নিজেদের আলাদা করতে পেরেছেন। কেননা, এঁরা সামাজিক কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।

সম্মানিত দর্শক, আপনারা জানেন, দিনকে দিন আমাদের দেশে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা বাড়ছে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল একটি দেশে শিশুশ্রম রোধ করা কোন ক্রমেই সম্ভব নয়। কেননা, প্রায় প্রতিদিনই কোন না কোন কারণে ছিন্নমূল শিশুদের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। কিন্তু তাই বলে আমরা আমাদের শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ব্যবহার করতে পারি না। আমাদের মনে রাখা দরকার, আপনার আমার আদরের সন্তানের মতো ছিন্নমূল এসব শিশুরাও সমাজের একটা অংশ।

ওদের আদর ভালবাসার প্রয়োজন আছে। প্রয়োজন আছে ওদের মেধা বিকাশের। তাই শিশুদের জন্য এমন কাজ আমাদের বাছাই করে দিতে হবে, যা ওদের পক্ষে করা সহজ হয়। এর পাশাপাশি যারা এসব শিশুদের কাজে ব্যবহার করছেন, তারা যদি কাজে নিয়োগকৃত শিশুদের কাজের পাশাপাশি তাদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের সুযোগ করে দিতে হবে। যে সুযোগটি মঞ্চে উপস্থিত আমাদের বশির ভাই, মুখলেস ভাই এবং আমজাদ ভাই করে চলেছেন।

সুপ্রিয় দর্শক, আমরা বড়রা এখনও শিশু অধিকার সম্পর্কে তেমনটা ভাল করে জানি না। আমাদের এ অজ্ঞতাই আমাদের শিশুদের মারাত্মক ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এ প্রসঙ্গে শিশু অধিকার সনদ সম্পর্কিত বিষয়ে কিছু বলার জন্য আমি আমাদের মাহবুব ভাইকে আহ্বান করছি। মাহবুব ঃ সম্মানিত দর্শক, আসসালামু আলাইকুম। আপনারা জানেন, শিশু অধিকার সনদটি ১৯৮৯ সালে নভেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয় এবং ১৯৯০ সালের সেপ্টেম্বরে এটি আন্তর্জাতিক আইনের একটি অংশে পরিণত হয়।

ইতিহাসে এটি হচ্ছে সবচেয়ে ব্যাপকভাবে গৃহীত মানবাধিকার চুক্তি। জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৯১টি দেশ চুক্তিটি অনুমোদন করেছে। প্রথম যে সব দেশ এ চুক্তি স্বাক্ষর ও অনুমোদন করে, বাংলাদেশ তার মধ্যে একটি। এ সনদের ৫৪টি ধারায় শিশু কল্যাণ নিশ্চিত করাসহ সকল প্রকার শোষণ, বৈষম্য, অবহেলা এবং নির্যাতন থেকে তাদের রক্ষার বিবরণ রয়েছে। সনদে স্বীকৃত অধিকারের আওতায় স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শিশু ও মা-বাবার সম্পর্ক সাংস্কৃতিক কর্মকা-, নাগরিক অধিকার, শিশু শোষণ এবং আইনের সাথে বিরোধে জড়িত শিশুসহ অনেক বিষয়ই অন্তর্ভূক্ত হয়েছে।

তবে এ সনদ অনুযায়ী শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করতে হলে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। শিশু অধিকার রক্ষার দায়িত্ব কোন সরকারের একার নয়। এ দায়িত্ব শিশুদের সাথে কোন না কোনভাবে জড়িত প্রত্যেকেরই। এদের মধ্যে রয়েছেন মা-বাবা, দাদা-দাদী, বড় ভাই ও বোন, শিক্ষক এবং দাপ্তরিকভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিশুদের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ। শিশু অধিকার সনদের সংজ্ঞা অনুযায়ী ১৮ বছরের নিচে সবাই শিশু।

বর্তমান পরিসংখ্যান অনুসারে বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার শতকরা ৪৮ ভাগই এই দলে রয়েছে। অর্থাৎ এদেশে শিশুর সংখ্যা প্রায় ৫ কোটি ৯৫ লক্ষ। এ সংজ্ঞা অনুযায়ী শিশু সম্পকিত সকল আইন, নীতি ও চর্চা ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। শিশু অধিকার সনদের ধারাগুলোকে ৪টি গুচ্ছে ভাগ করা যায়। যেমন ১।

বেঁচে থাকার অধিকারঃ এর মদ্যে রয়েছে শিশুর জীবন ধারণে সহায়ক মৌলিক বিষয়াদির অধিকার, যেমন স্বাস্থ্য সেবা, পুষ্টিকর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং স্বাস্থ্যসম্মমত পরিবেশ। ২। বিকাশের অধিকারঃ এর মধ্যে শিশুর শিক্ষার অধিকার, শিশুর গড়ে উঠার জন্য উপযুক্ত একটি জীবন যাত্রার মান ভোগের অধিকার এবং অবকাশ যাপন, বিনোদন ও সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে অংশগ্রহণের অধিকার। ৩। সুরক্ষার অধিকারঃ এ শ্রেণিতে রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে শিশুদের অধিকারসমূহ যেমন শরণার্থী শিশু, পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন শিশু এবং শোষণ, নির্যাতন ও অবহেলার শিকার হবার সম্ভাবনা রয়েছে এমন শিশু।

৪। অংশগ্রহণের অধিকারঃ এ পর্বে শিশুদের স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকার, অন্যদের সাথে অবাধে সম্পর্ক গড়ে তোলার অধিকার এবং তথ্য ও ধারণা চাওয়া, পাওয়া ও প্রকাশের অধিকার। এ সনদে চারটি মূলনীতি রয়েছে যা এর বিধানগুলো ব্যাখ্যা ও প্রয়োগের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ১। বৈষম্যহীনতাঃ সকল শিশুর লিঙ্গ, অর্থনৈতিক অবস্থা, ধর্ম, ভাষা, জাতীয়তা, গোত্র, বর্ণ, শারীরিক সামর্থ অথবা জন্মের ভিত্তিতে কোনরকম বৈষম্য ছাড়াই সনদে বর্ণিত অধিকারসমূহ ভোগের অধিকার রয়েছে। ২।

শিশুর সর্বোত্তম স্বার্থ ঃ মা-বাবা, সংসদ, আদালত এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অবশ্যই শিশুর সর্বোত্তম স্বার্থে কাজ করবেন। ৩। শিশুদের অধিকার সমুন্নত রাখায় পিতা-মাতার দায়িত্বঃ সনদে বর্ণিত অধিকারসমূহ প্রয়োগের ক্ষেত্রে মা-বাবার একটি বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে। শিশুর বয়স এবং পরিপক্কতা অনুসারে তাকে পরিচালিত করতে হবে। শিশুর মা-বাবা দ্বারা পরিচালিত হওয়ার ঐতিহ্য বাংলাদেশে বেশ জোরালো।

এ নীতিতে যে ধারণাটি তুলে ধরা হয়েছে তা হচ্ছে শিশুদের অধিকার আছে এবং শিশুদের পরিচালনার সময় এসব অধিকার তারা কিভাবে প্রয়োগ করবে, তার উপর গুরুত্ব দিতে হবে। ৪। শিশুর মতামতের প্রতি সম্মান প্রদর্শনঃ নিজের মতামত গঠনের উপযোগী বয়সের শিশুর নিজস্ব বিষয়ে অবাধে মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। শিশুর মতামত কতটা গুরুত্ব পাবে, তা নির্ভর করবে শিশুর বয়স ও পরিপক্কতার উপর। ঘরে এবং স্কুলে প্রতিদিন যেসব সিদ্ধান্ত মুখে মুখে নেওয়া হয়, তার সকল ক্ষেত্রেই এ নীতি প্রযোজ্য।

আশা করি একটু দীর্ঘ হলেও আমার বক্তব্য আপনারা বুঝতে পেরেছেন। ধন্যবাদ সবাইকে। মোমতাজ ঃ ধন্যবাদ। (দর্শকের দিকে ফিরে) আমরা এতক্ষণ শিশু অধিকার বিষয়ক কথাগুলো শুনলাম আমাদের কর্মকর্তা জনাব মাহবুব ভাই’র কাছ থেকে। এবারে আমি কথা বলতে বলবো আমাদের আরেক ভাই আমজাদ আলীকে।

আমজাদ আলী ঃ আসসালামু আলাইকুম। দেখুন আমার বলার মত কিছু নেই। আমি মনে করি, এদেশের প্রতিটি মানুষ যদি শিশুদের প্রতি যতœশীল হই, ওদের প্রতি ভাল আচরণ করি এবং সর্বোপরি কোন শিশুর প্রতি বৈষম্য না দেখাই তবে কোন শিশুই অযতেœ অবহেলায় বেড়ে উঠবে না। আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা বড়রা সমাজের কাছে, সমাজের মানুষের কাছে ভীষণরকম দায় বদ্ধ। ধন্যবাদ।

মোমতাজ ঃ ধন্যবাদ আমজাদ আলী ভাই। এবার আমি মুখলেস ভাইকে কিছু বলতে অনুরোধ করছি। মুখলেস ঃ উপুস্থিত ছুধি ম-লী, আসসেলামু আলাইকুম। আমরা এতক্ষণ মূল্যবান অনেক কতা ছুনলাম। অনেক কিছু ছিখলাম।

মাগার খালি ছিখা কোন লাব অইবো না, যতক্ষণ না এই ছিক্ষাডা নিজেগো বিতরে (ভেতরে) কামে না লাগাই। আরে মিয়া, আমাগো যতটুক ছাধ্য আছে, আমরা তো ছেইটুকুই কামে লাগাই না। না লাগাইলে ছসাজ ছুন্দর অইবো কেমতে? তাই আমার মতে, ছমাজের যেহানেই যে থাকি না ক্যান, ছিছুগো লাইগ্যা কিছু একটা করন দরকার। কী করবেন? মানছিকতার পরিবর্তন করবেন। ঐ মিয়া! কেডা আপনের নিজের ছন্তান, আর কেডা আপনের নিজের না, ছেইটা লইয়া ভাবনের টাইম কৈ? মনে রাখতে অইব, ছিছু মানেই আপনের সন্তান।

আপনে শিক্ষিত, ধনী। আপনের ছন্তানের দিকে আপনে ভালা মত খেয়াল রাখবার পারতাছেন, মাগার যাগো কিছু নাইক্কা, ওরা ভি হালায় কোন জায়গায় যাইবো? আপনে তো আপনার ছন্তানরে স্কুলে পাঠাইয়া লেখাপড়া ছিখাইতাছেন, মাগার এইসব ছিছুরা, যারা এতিম, গরিব তারা স্কুলে যাইবো কেমতে? ওগো বাপ-মা নাই দেইখ্যাইতো কাম করতে অয়, শ্রম দিতে অয়। ওগো কয় ছিছু শ্রমিক। ঐ মিয়া, ছোট্ট একটা বাচ্চা পুলাপান, তাগো তো ছোট্ট ছোট্ট কামই বাইছা দিতে অইবো? নাকি মিছা কইলাম? প্যাটের দায়ে ওরা শ্রম বেচে, মাগার এই ছুযোগে আপনে মিয়া কেমতে ওগো লগে খারাপ আচরণ করবেন? তাই কইতেছিলাম কি, ওগো ঐ শ্রমটুকুর পরে ইট্টু খালি পড়াছোনার ছুযোগ কইরা দেন, দেখবেন ওরা ভি হালায় আপনার পুলাপানের চাইয়া কোন অংশে কম অইবো না। ওগো ভি মেধা আছে, সুন্দর মন আছে।

ছেইটারে ইট্টু প্রকাশ করার ছুযোগ কইরা দেন। দেখবেন, ওরাও আপনেরে ভাল পড়াছোনা কইরা টাসকি লাগাইয়া দিবো। ছুনের মিয়ারা, ওগো লিগা ভবিছ্যৎ দুনিয়াডারে ইট্টু ছাজাইয়া যাইতে অইবো। কী! কিছু কি বুজাইবার পারলাম? পারলে বালা, না পারলেও বালা। মাগার! আপনেগো ছামনে আগাইয়া যাওনের লাইগা একটা শ্লোগান শিখাইয়া যাই- “আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে আছে নাই কেহ অবনী ’পরে” পরের লাইনটা দর্শক সারিতে বসা শিশুরা (পটল, ফজলু, রেশমা, বুলবুল, ময়না কদম) একসাথে (কোরাস) বলে উঠবে- “সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।

” যবনিকা ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.