আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গৌরবের টাইয়ে ক্যারিবীয়দের জয়ের স্বাদ

অধিনায়ক মিসবাহ কেন কেউই ভাবতে পারেননি যে ম্যাচটা শেষ অবধি পাকিস্তান জিতছে না। ৯৭ ওভার খেলা হয়ে যাওয়ার পর ম্যাচের ফলের পাল্লাটা যে পুরোপুরিই ঝুঁকে ছিল পাকিস্তানের দিকে। শেষ ৩ ওভাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ছিল ৩৯ রান; হাতে ২ উইকেট রেখে সেটাকে অসম্ভব এক লক্ষ্যই মনে হচ্ছিল। শেষ ওভারে এসে ক্যারিবীয়দের প্রয়োজন পড়ল ১৫ রান, ক্রিজে তখন তাদের শেষ দুই ব্যাটসম্যান-জেসন হোল্ডার ও কেমার রোচ। শেষ ওভারের উত্তেজনায় এই জুটি নিশ্চিত করল ম্যাচটা কেউই জিতছে না।

এক গৌরবজনক টাই দিয়ে শেষ হওয়া সেন্ট লুসিয়ার তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচটি যেন জানান দিচ্ছে ক্রিকেটের অনিশ্চয়তার গৌরবগাথা। একেবারে অন্ধকার থেকে দলকে আলোতে টেনে নিয়ে এসে পরাজয় এড়িয়ে ক্যারিবীয় খেলোয়াড়েরা যেন উপলব্ধি করছেন জয়ের স্বাদ। আর, তীরে এসে তরী ডোবানো মিসবাহ-বাহিনীর অবস্থাটা যেন তড়িতাহত, কিংকর্তব্যবিমূঢ় সিংহের মতো।
গায়ানা থেকে সেন্ট লুসিয়ায় এসে এই সিরিজের চরিত্র খুৃব একটা পাল্টায়নি। বাজে উইকেট যেন পিছুই ছাড়ছেনা এই সিরিজের।

পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন-আপও যেন ধনুক-ভাঙা পণ করে বসে আছে, বড় সংগ্রহের দিকে তাঁরা যাবেনই না। টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে ২২৯ রানের স্কোরটিকে ভালো বলার লোক খুব বেশি নেই ক্রিকেট দুনিয়ায়। অধিনায়ক মিসবাহ’র অনবদ্য ৭৫ রান না হলে তাও হতো না। মিসবাহ পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার মধ্যেও যেন আশ্চর্য ব্যতিক্রম। ৩৯ রানে প্রথম দুই ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বসা পাকিস্তানকে ধ্বংসস্তুপ থেকে টেনে তোলেন ওই মিসবাহ মোহাম্মদ হাফিজ ও অভিষিক্ত হারিস সোহেলকে সঙ্গে নিয়ে।

হাফিজের সঙ্গে ৫৩ ও সোহেলের সঙ্গে ৬০ রানের জুটিতে মিসবাহর অবদানই ছিল সিংহভাগ। হাফিজ ১৪ ও সোহেল ২৬ রান করেন। মিসবাহ’র ৭৫ রানের পাশাপাশি উমর আকমলের ব্যাট থেকে আসে ৪০ রান। এছাড়া নাসির জামশেদ ২০ এবং আহমেদ শেহজাদ ১৭ রানে করেন। শেষ ৪.২ ওভারে উমর আকমল ও ওয়াহাব রিয়াজ মিলে ৫২ রান তুললে পাকিস্তান স্কোরবোর্ডে পায় মোটামুটি লড়াই করার মতো সংগ্রহ।


ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ডেসন হোল্ডার এবং ডোয়াইন ব্রাভো যথাক্রমে ৪০ ও ৫০ রানের বিনিময়ে ২টি করে উইকেট দখল করেন। কেমার রোচ এবং ড্যারেন স্যামির সংগ্রহ একটি করে উইকেট।
২৩০ রানের লক্ষ্যমাত্রায় ব্যাট করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিংও ছিল তথৈবচ। লেন্ডল সিমন্সের ব্যাট থেকে আসে সর্বোচ্চ ৭৫ রান। মারলন স্যামুয়েলস করেন ৪৬ রান।

এই দুই ব্যাটসম্যানের পাশাপাশি ওপরের দিকে কিছুটা রান পান ড্যারেন ব্রাভো (১৭)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাকী গল্পটা এরপর পুরোটাই টেইল-এন্ডার কেন্দ্রিক। আগেই বলা হয়েছে শেষ ৩ ওভারে প্রয়োজনীয় ৩৯ রান তোলার জন্য তাদের হাতে ছিল মাত্র ২টি উইকেট। সুনীল নারাইন ১৪ রান করে ক্যারিবীয়দের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে দিয়ে যান অনেকটাই। কেমার রোচ অপরাজিত থাকেন ৬ রানে।

তবে শেষ পর্যন্ত কাজের কাজটি করেছেন ওই হোল্ডারই, ১৯ রান করে নিশ্চিতভাবেই প্রতিপক্ষের মুখ থেকে তিনি কেড়ে নিয়ে আসেন বিজয়ের মধুর স্বাদ। দল জিততে না পারলেও প্রতিপক্ষকে জিততে না দেওয়াও ক্রিকেটে গৌরব হিসেবেই ধরে নেওয়া হয়। সূত্র: রয়টার্স।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান ২২৯/৬ (৫০ ওভার)
মিসবাহ ৭৫, উমর আকমল ৪০
হোল্ডার ২/৪০, ডোয়াইন ব্রাভো ২/৫০
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২২৯/৯ (৫০ ওভার)
সিমন্স ৭৫, স্যামুয়েলস ৪০, হোল্ডার ১৯*
জুনাইদ খান ৩/৫৪, মোহাম্মদ ইরফান ২/৩৪, সাঈদ আজমল ৩/৩৬
ফলাফল: ম্যাচ ‘টাই’
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মিসবাহ-উল হক ও জেসন হোল্ডার যৌথভাবে। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.