আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সহিংসতা লইয়া হীনযানী ফকিরের উদ্যেগ ও ধ্যানযাত্রা

হিন্দু না ওরা মুসলিম ঐ জিজ্ঞাসে কোনজন, কান্ডারি বলো ডুবিছে মানুষ সন্তান মোর মা'র kids! you ain't foolin' nobody - with the lights out! and the power's out in the heart of man, take it from your heart put it in your hand. and there's something wrong in the heart of man, you take it from your heart and put it in your hand! where'd you go?! ধ্যানরত হীনযানী ফকিরের ধ্যানে আজকে শান্তির খোজ পাওয়া যাইতাছেনা, যাইতাছেনা পাওয়া কোন সত্যের এদিক সেদিক, পুরা সত্য দূরে থাক। ঘুইড়া ফিড়া দ্যা আরকেড ফায়ার এর নেইবোরহুড-৩ সুরার চাইর খানা আয়াত তার কানে আর মাথার ভিতর অনবরত বাইজা চলছে। মোক্ষের পরমানন্দ আরাধ্য নাকি আরাধ্য শুন্যতার নির্বান, এই সত্যের খোজের মাঝে এহেন চাইর খানা আয়াত বিরাট তুফানের উদ্রেক করে ফকিরের মনে। মানুষের অন্তরে কি আসলেই এমুন কোন গড়ল আছে, যেই গড়ল হাতে নিয়া খুইলা দেখলে ভিরমী খাইতে হবে। এমুন কোন গড়ল যদি হয় মানুষের স্বভাবজাত, মানুষের আরাধনা কইরা তালে মোক্ষ হউক বা নির্বান কোন কিছুরই খবর হইবেনা।

শয়তানের ধ্যানের কোন বেইল নাই, শয়তানের মুক্তি হইল শয়তানীতে। এহেন আয়াত লইয়া নেংটা হীনযানী ফকিরের পাগলা হওয়ার কথা না। কিন্তু নিগৃহী হইয়া আকালের কালে নির্বান মিলিবেনা এই আয়াত তাহার উপরে নাজিল হইবার পর থেইকা স্বীয় ভাই বেরাদারদের মুক্তির লাইগা ফকির উদ্বিগ্ন হইয়া বর্ম গায়ে দিয়া যুদ্ধযাত্রারে তীর্থযাত্রা গন্য কইরা ভজন সাধনে রত এইখবর যারা জানেন তারা তার উদ্বেগের কারন সম্পর্কে অবগত আছেন। মাতা, মাতৃভূমী, ভ্রাতা-ভগ্নীর কল্যান কামনার লক্ষ্যেই তাই আজকাল হীনযানী ফকির নিয়ত ধ্যান মগ্ন হয়। কিন্তু আইজ তার মনে শান্তি নাই।

নেইবোরহুড-৩ সুরার চাইর খানা আয়াত তার অন্তরে যেই তুফান জাগায়া তুলছে তার জন্যে তার ভ্রাতা-ভগ্নীর ইদানিংকার সাধন ভজন পদ্ধতিও কম দায়ি না। উহারা ‘মারি হালা মারি হালা, পুলিশ কইছে মারি হালা’ কইয়া দেদারসে মানুষ মারি ফালাইতাছে। বড় মাছ যেমন ছোট মাছ খাইয়া ফেলে তেমনি রাজায় প্রজারে মারতাছে, প্রজা মারতাছে প্রজার বউরে, আর প্রজার বউ মারতাছে বাড়ির ছোট্ট বাচ্চা গৃহকর্মীরে, এ এক ঘোড় মাৎসান্যয়। এহেন ভাই বেরাদারের মুক্তির জন্যে বর্ম গায়ে চাপায়া যুদ্ধযাত্রার উপযোগিতা লইয়া হীনযানী ফকির ভাবিত হয়। নিজের শুন্যবাদী নিহিলিস্টিক তারুন্যে তার উপরে নাজিল হওয়া ‘শিকড় উপাখ্যান’ সুরা খানা এইবার সে জোড়েসোড়েই তেলাওয়াত করা শুরু করে- ফুটো হয়ে যাওয়া হৃৎপিন্ড, কিংবা দুমরে যাওয়া মাথার খুলি, আর বাতাসে আছড়ে পরা বেঁচে থাকার সর্বশেষ আকুতি।

আর একটি কম্পনহীন হাতের মতো একটি কম্পনহীন হৃদয়, যা কারো না কারো ভালোবাসার স্পর্শ পেয়েছিল, অট্টহাসী হাসে আদীম গুহামানব। অতঃপর পালটে যাওয়া দৃশ্যপটে, সভ্যতার বাধানো পথে চলে আদীম সমর নৃত্য। পোড়া পেট্রোল আর বাতাসে আছড়ে পরা পোড়া মাংস চামড়ার গন্ধ। আর অজস্র কম্পনহীণ হাতের মতো অজস্র কম্পনহীন হৃদয়, যা কখনো কখনো ভালোবাসার স্পর্শ পেয়েছিল। অট্টহাসি হাসে আদীম গুহামানব।

আর রক্ত অশ্রু ফেলে আমার ঘুমন্ত শিকড়। ঠা ঠা হাসির শব্দে সত্য সত্যই চমকায় এইবার হীনযানী ফকির। মানুষ নামক ভয়ঙ্কর জানোয়ারের সম্পূর্ণ বিলুপ্তি ছাড়া এই জগতে শান্তি সম্ভব না, এই পুরান বিশ্বাস তার মনে গুতাগুতি করা শুরু করে আবার। ফকির নিজেরে ধমকায়, নিহিলিজমরে বেইল দেয়া যাইবোনা, তাইলে কোন কাম হয়না। আর এইসব সুরা নাজিল হইছে আধুনিকতাবাদী আরশ কুরসী থেইকা।

এইসবের বেইল নাই। উদ্বিগ্ন ফকির আবার ধ্যানে মনোনিবেশ করে। মুসা নবীর যেমন ইলোহিমের লগে যোগাযোগ সম্বন্ধ ছিল, ফকিরের আছে তেমনি মহাপ্রভু ফ্রাঞ্জ ফানোর লগে যোগাযোগ সম্বন্ধ। ফকির সমস্যা মিটাইতে প্রভু ফানোর লগে যোগাযোগ সম্বন্ধ তৈরির চেষ্টা করে। ফকিরের মন ভাসতে ভাসতে খুজতে থাকে প্রভু ফানোর দিশা, সব শেষে পাওয়া যায় তারে সিনাই পর্বতের মাথায়।

প্রভু ফানো সেইখানে খাড়ায়া খাড়ায়া মহাপ্রভু ইলোহিম আর মহাপ্রভু নিৎসের মইধ্যে বাহাস দেইখা মিচকি মিচকি হাসতেছেন। সেইখানে নিৎসে ইলোহিমরে বারবার কইতাছে যে ‘তুমি মইরা গেছো, মানুষ তুমারে মাইরালাইছে’। ইলোহিম জবাবে কয়, ‘দূর বেডা, মরছস তো তুই, মরছে তর ‘ওভারম্যান’। মানুষ কুনোদিন ‘ওভারম্যান’ হইতে পারবেনা। আমি মানুষরে বানাইছি আমার প্রকৃতিতে, এরপরে সে কি কইরা তার নিজের শিকড়রে অস্বিকার করিবে”? বাহাসের ভিত্রে নাক গলানের ইচ্ছা জাগে ফকিরের মনে, ভাবে যদি অন্তরের তুফান নাশের কিছু খবর পাওয়া যায় এই দুই বাহাসকারীর কাছ থেইকা, কিন্তু তার আগেই প্রভু ফানো তারে কাছে ডাইকা জিগায়, “ওরে ফকির, তুমি এইখানে কি করো? কি বিষয় আশয়? ফকির ফানোর ডাকে খুশি হয়, সামনে খাড়ায়া জিগায়, হুজুর যদি গোস্তাখি মাফ করেন তাইলে দুইডা কথা জিগাইতাম।

ফানো কয়, জিগাও। ফকির কয়, হুজুর, আপনে কইছেন যে- “violence is a man recreating himself”। এই কথাটা বুঝলাম নাইলে নিদানের লাইগা ঠিক আছে, সহিংশতার বিরুদ্ধে সহিংশ না হইলে নিদান হইবে না, মানুষ মানুষ হইবেনা, মুক্তি দূরে থাউক। কিন্তু আমার ভাই বেরাদাররা নিজেরা নিজেগো মারিয়া নিজেগোরে কেমনে কইরা ভাঙিয়া চুড়িয়া আবার তৈরি করতাছে ইহা আমার মাথায় ঢুকিতেছেনা। প্লাস, মানুষ যদি খ্রাপ হয় তো মানুষ হওয়ার দরকার কি? তার চেয়ে কিট পতঙ্গ গরু ছাগলই তো ভালো।

ফানো মিচকি মিচকি হাসে। হেরপরে গলা খাকাড়ি দিয়া কয়, ওরে ফকির, তুমার প্রশ্ন অতিব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমি মইরা গেছি তোমার জন্মের বছর তিরিশেক আগে। আর জানোই তো আমি আমার সময়ের বাইরের বিষয় লইয়া গুতাগুতি করতে পছন্দ করিনা। তোমার নিপিড়িত নিগৃহিত ভাই বেরাদারের মুক্তির লাইগা লড়তে থাকো।

আগে তাগো শরীর, জমি, জিরাত, সম্পদ এইসবে মুক্তি আসুক, তোমার মায়ের শরীর থাইকা শকুন খেদাও। তারপরে যখন তোমরা গায়ে গতরে বাইরা উঠবা, থাবরার বদলে থাবরা দেয়ার শক্তি পাইবা বাহুতে, তখন বাহুর শক্তি কোন কামে লাগাইবা তা লইয়া চিন্তা করিও, তখন উহাদের আত্মার মুক্তি লইয়া ভাবিত হইয়। আপাতত এইসব মিডলাইফ ক্রাইসিস থিকা বাইর হইয়া আসো, তুমার বয়স অতনা, প্লাস লেংটা ফকিরের এইসব মানায় না। খামোস। হঠাৎ ধমকে থতমত খায় লেংটা ফকির।

ঝগড়া থামাইয়া মহাপ্রভু ইলোহিম আর মহাপ্রভু নিৎসে যে এতক্ষন উহাদের বাৎচিত শুনিতেছিল ফকির উহা ধরতে পারেনাই। ধমক খাইয়া সে সিধা হইয়া ইলোহিমের দিকে তাকায়, এই লোকেরে সে খুব একটা দেখতে পারেনা, কিন্তু এই লোকের ভোট বেশি, দুইন্যার ব্যাবাক মানুষরে তিনি তার রূপে বানাইছেন শুনা যায়, অথবা ব্যাবাক মানুষ তাগো যাবতিয় আকাঙ্খা দিয়া তিলে তিলে তারে গইড়া তুলছে বলা যায়। ইলোহিম কয়, শোন বেটা ফকির। আমি দুইন্যা বানাইছি শক্তির ভক্ত নরমের যম। প্লাস বিধর্মী বিদেশীগো লগে মারামারি না করিলে নিজেগো মইধ্যে হালকা পাতলা পুটু মারামারি হইবেই, ইডা স্বাভাবিক।

মনে কইরা দেখ আমার খাস বান্দা দাউদ নবীর কথা, কেমনে সে একখানা গুলাইল দিয়া গোলিয়াথরে মারছিল। বিধর্মীগোরে মাইরা কাইটা, লুট কইরা, ধর্ষন কইরা, দাস বানায়া বিনাস কইরা ফালাইছিল সে আমার নির্দেশে। দেখ, তার সময়ে আমার নির্বাচিত জাতি ইহুদিগো মইধ্যে নিজেগো মইধ্যে পুটু মারামারি কম আছিল, যেহেতু তারা বিধর্মী বিদেশীগো পুটু মারতো। আমার আরেক বান্দা মোহাম্মদের কথা চিন্তা কইরা দেখ। তার চাইর খলিফার প্রথম দুইজন বিরাট জোশে বিধর্মী বিদেশীগো পুটু মারছে তাই নিজেগো মইধ্যে কি সুন্দর শান্তি বিরাজ করছে, তিন নম্বর জন যেই যুদ্ধ বন্ধ করছে এরপরে দেখো নিজেরা নিজেরা পুটু মারামারি কইরা মইরছে।

নিৎসে এইবার হাঃ হাঃ কইরা আইসা দুইজনের মাঝখানে খাড়ায় আর কয়, ওহে ফকির, এই দুরাচারের কথায় কান দিও না। এই দুরাচার অলরেডী গন কেইস, মারা গেছে, এই যে যেইটায় এত কথা কইতাছে এইটা ঐ মরাডার ছায়া মাত্র, দুইন্যার তাবৎ মাইনষের ডরের জগতে সে ছায়া হইয়া বাইচা আছে। এই মরাডার ছায়া থেইকা তোমার জাতিরে বাইর কইরা আনো। নিশ্চয় তোমার জাতির ভেতরেই জন্ম নিবে ওভারম্যান, মানুষ তখন হবে অতিমানুষ। অতিমানুষের পাপ নাই।

এই ছায়া থেইকা তোমার জাতিরে মুক্ত করো। তাগোরে সত্য ক্ষমতার খোজ দেখাও, মানুষ মাত্রই ক্ষমতার লাইগা বাইচা আছে, আর কিছু নাই। সত্য ক্ষমতাবানরা দুর্বলএর উপরে অত্যাচার করেনা, বরং নিজের চেয়ে ক্ষমতাবানের লগে ফাইট দিতে চায়। এই পর্যন্ত কওয়ার পরে ইলোহিম নিৎসের মাথায় চাটি মাইরা কয়, আরে আল বলদ, ক্ষমতার শেষ মাথায় তো আছি আমি। আমি আমার প্রতিরূপে মানুষ বানাইছি, অথবা মাইনষের তাবৎ ক্ষমতা আকাঙ্খার প্রতিরূপ হইলাম আমি।

আমিই ওভারম্যান। মাথায় চাটি খাইয়া নিৎসে এইবার চেইত্যা যায়। চেইত্যা কয় যে তুমি হইলা মাইনষের ক্ষমতা আকাঙ্খার প্রিম্যাচিউর ইজেকুলেশন, আসল ওভারম্যান এখনো আসে নাই ওরে গাছ ভুদাই । এরপরে বেদম ঝগড়া লাইগা যায়, প্রভু ফানো খাড়ায়া খাড়ায়া ঝগড়া দেখে আর মিচকি মিচকি হাসে। ধ্যান থেইক জাইগা উঠে হিনযানী ফকির।

নেইবোরহুড-৩ সুরার চাইর খানা আয়াত তার কানে বাজতেই আছে। kids! you ain't foolin' nobody - with the lights out! and the power's out in the heart of man, take it from your heart put it in your hand. and there's something wrong in the heart of man, you take it from your heart and put it in your hand! where'd you go?! যত যাই হউক, প্রভু ফানোর কথা মতো ফকির বর্ম গায়ে এই জীবনে যুদ্ধ যাত্রায়ই মনস্থ করে। মানুষ নামক জানোয়ার অথবা দেবতার এই দুইন্যায় বাইচা থাকা মঙ্গল না অমঙ্গল এইটা তার পরের জন্মের ফিকির, এই জন্মের না। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.