আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সন্ন্যাসী কাঁকড়া

কাজ-কাজ আর কাজ। ক্ষমতার আগ্রাসন হতে মুক্তি। শাপলা বড়ুয়া সেই কখন থেকে পিছু লেগে রয়েছে শত্রুটি। শত চেষ্টাতেও পাশ কাটাতে পারছে না বেচারা কাঁকড়া। অমনি সমস্ত রাগ গিয়ে পড়লো গায়ের সঙ্গে লেপটে থাকা লেজটির ওপর।

কেননা নরম-শাঁসালো এই লেজটির জন্যই তো ওর যতো বিপত্তি। হঠাৎ কিছু দূরে শামুকের খোল দেখতে পেয়ে ধরে প্রাণ ফিরে পেলো যেন। তক্ষনি লম্বা লম্বা পা ফেলে লেজসহ শরীরটি খোলের মধ্যে ঢুকিয়ে নিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো ও। যাক নিশ্চিন্ত মন নিয়ে কিছুদিন অন্তত কাটিয়ে দেওয়া যাবে এখানে। আর এভাবে অন্য প্রাণীর খোলের মধ্যে বসতি গড়ে তোলে বলে পণ্ডিতেরাও এদের নাম দিয়ে বসেন ‘সন্ন্যাসী কাঁকড়া’ বা ‘হারমিট ক্র্যাব’।

তাই বলে এদের এই বসতি কিন্তু মোটেও নির্ঝঞ্ঝাট নয়। খোলের ওপর অন্য প্রাণীদের নজর পড়লেই হলো, আর রক্ষা নেই। এদিকে এরাও নিজেদের দখল ছাড়তে নারাজ। কাজেই কী আর করা ! লড়াইয়ের মধ্য দিয়েই মালিকানা ছিনিয়ে নেওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা চালাতে হয় সন্ন্যাসীদের। কেননা শামুকের এই খোলটিই যে এদের নিরাপত্তা বুহ্য।

তাই বলে খোলের মধ্যে শুয়ে-বসে থাকলেও তো আর চলে না। কাজেই বাড়তি ঢাকনা হিসেবে শামুকের খোলকে ঘাড়ের ওপর বসিয়ে দিয়ে নেমে পড়তে হয় খাদ্যের সন্ধানে। তবে বেশিদিন থাকা হয়ে ওঠে না এই বুহ্যে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীর বেড়ে গেলেই আবার নতুন করে সন্ধান করতে হয় বড় কোনো খোলের। আর যদি কোন স্পঞ্জের খোঁজ পাওয়া যায় তাহলে তো কথাই নেই।

নির্বিঘেœ কাটিয়ে দিতে পারে জীবনের বাকিটা সময়। বাড়তি শরীরের জন্যও ভাবতে হয় না তখন। কেননা স্পঞ্জের গায়ে অসংখ্য ছিদ্র থাকায় সহজেই এরা পানি টেনে নিয়ে ফুলে-ফেঁপে ওঠে যেজন্য জায়গারও কমতি হয় না কাঁকড়াদের। এমনকি এরা নিজেদের বাঁচাতে অন্য প্রাণীর শরণাপন্ন হতেও কুণ্ঠা করে না। তেমনি সাগরের তলদেশে ময়লা সাফ করবার বুরুশের মতো এক জাতের পোকা আছে যারা হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকে আশ্রয়।

আর সেই সময়টাই কাজে লাগায় সন্ন্যাসী কাঁকড়ারা। পোকারাও দিব্যি সন্ন্যাসীদের খোলের ওপর ডেরা গড়ে তোলে আর মনের খুশিমতো ঘুরে বেড়ায় এখানে-ওখানে। নাওয়া-খাওয়া নিয়েও তেমন ভাবতে হয় না বুরুশবেশী এই পোকাদের। হারমিটরা যা খায় তাতেই ভাগ বসায় এরা। আর সময় পেলেই খোলের ভেতরে ও বাইরে বুরুশের শরীর দিয়ে সাফসুতরো করে দেয় এদের শরীর।

শুধু তাই-ই নয় হারমিটদের লেজটি আড়াল করে শত্র“র হাত থেকেও রক্ষা করে এরা। যেজন্য সন্ন্যাসীরাও এই পোকাদের পিঠে চড়িয়ে নিয়ে মনের খুশিমতো ঘুরে বেড়ায় এখানে-ওখানে।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।