আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্টিভ জবসের পথ-১ : প্রস্তাবনা

অলসদের দিয়ে কী আর হয়। আলসেমি ছাড়া! একটি রেস্তোরার অপেক্ষমান কক্ষে অপেক্ষা করছেন জে এলিয়ট, ৪৪, সদ্য ইন্টেল ত্যাগ করা কর্মকর্তা। বসে বসে নিজের "দূর্ভাগ্যের কথা " পড়ছেন পত্রিকায়। ঈগল কম্পিউটার নামে একটি প্রতিষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য সম্প্রতি তিনি তার বস এন্ডি গ্রুভের কাছ থেকে বিদায় নিয়েছেন। পত্রিকায় ঈগল কম্পিউটারের মৃত্যুর খবর ছাপা হয়েছে! এই স্টার্টআপ কোম্পানি যেদিন গণ‌-প্রস্তাব ছাড়ে সেদিনই এর শীর্ষনির্বাহী কোটিপতি বনে যায়।

সহ-প্রতিষ্ঠাতাদের সঙ্গেনিয়ে সে যায় খানা-পিনা করতে। সেখান থেকে যায় নিজের জন্য একটি ফেরারী গাড়ি কিনতে! টেস্ট ট্রায়াল দিতে বের হয়ে দূর্ঘটনায় পড়ে এবং মারা যায়। শীর্ষ নির্বাহীর মৃত্যুতে কোম্পানিও মারা যায়। সে সঙ্গে জে যে কাজের জন্য চাকরি ছেড়েছেন, সেটিতে আর যোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। একই রুমে ২৫ বছর বয়সী এক তরুনও অপেক্ষারত ছিল।

তাদের আলাপের মাঝখানে তারা দু’জন আবিস্কার করে দুজনেরই দাড়ি আছ আর দুজনেই কম্পিউটার পছন্দ করে। যুবকটি নিজেকে স্টিভ জবস নামে পরিচয় দিয়ে বলে সে এপল কম্পিউটার নামে একটি কোম্পানির বোর্ড চেয়ারম্যান। জে তখনো সেভাবে এপলের নাম শোনেনি। শোনার কথাও নয়। কাজে ২৫ বছর বয়সী জবসের কোম্পানি নিয়ে তেমন আগ্রহও তার হয়নি।

অন্যদিকে জবস দেখেছে ৪৪ বছর জে'র মধ্যে এমন কিছু আছে যা সে খুঁজছে কিছু দিন ধরে। জে’র কাছ থেকে জেনেছে সে নতুন কিছু করতে আগ্রহী এবং আইবিএমের ধীরে চলা নীতি তার পছন্দ নয়। কাজে জবস জে কে এপল যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানায়! জে বিনীতভাবে জানায়,”আমাকে এফোর্ড করা তোমাদের দ্বারা সম্ভব নয়। " এ ঘটনার মাত্র কয়েকদিন পরে পূজিবাজারে আত্মপ্রকাশ করে এপল। এপলের বাজার মূল্য হয় ২৫০ মিলিয়ন ডলার! কোম্পানি আর স্টিভের পক্ষে জে কে কেনা সম্ভব হয়।

দুই সপ্তাহ পরের শুক্রবারে জে এলিয়ট এপলে কাজ করতে শুরু করেন, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট। বেতন সামান্য বেড়েছে, স্টেক অপশনও বেড়েছে। এবং সঙ্গে ইন্টেল গুরুর আশীর্বাদ, “এপল কোথাও যাবে না। তুমি একটা মস্ত বড় ভুল করছো" কম্পিউটার জগতের অন্যান্যদের সঙ্গে জবসের পার্থক্য তার শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত নিশ্চুপ থাকা। কাজে প্রথম দিন আলাপ আলোচনায় জে তার কাজ সম্পর্কে কিছই জানতে পারলো না! খালি জানলো স্টিভ পরদিন সকালে তাকে কোথাও নিয়ে যাবে।

পরদিন জবস তাকে পিএআরসি, জেরক্সের রিসার্চ সেন্টারে নিয়ে যায়। সেখানে এমন কিছু তারা দেখেন যা পরে মাউস নামে পরিচিত হয়। সে সময় পিএআরসি এমন মেইন ফ্রেম কম্পিউটার ডিজাইন করার চেষ্টা করছিল যার দাম হবে দশ থেকে বিশ হাজার ডলার! কারণ আইবিএমের সঙ্গে লড়তে হবে! তবে, স্টিভের মাধায় এমন কিছু ছিল না। তার মাথায় ছিল “ সবার জন্য কম্পিউটার”। এখন আমরা জানি, পার্কে ঐদিন স্টিভ জবস কম্পিউটারের ভবিষ্যত দেখেছেন।

দেখেছেন কীভাবে এই যন্ত্র দিয়ে মানুষের তিন ‘সি’কে (Connect, Consume and Communication) বদলে দেওয়া যাবে। সেদিন থেকে আসলে স্টিভ জবস ঠিক সে কাজটি করছেন!!! দুবাই এয়ারপোর্ট থেকে জে এলিয়ট আর উইলিয়াম এল সিমনের এই বইটা কিনে এনেছি। তর সইলো না দেখে পড়তে শুরু করে দিয়েছি। ক’দিন আগে ফেসবুকে গোলাম নবীর একটি স্ট্যাটাস ছিল এপল নিয়ে (আজকের প্রথম আলোতে একটা খবর আছে)। ভোরের কাগজে কাজ করার সময় (১৫ বছর আগে) সিলিকন ভ্যালির ওপর একটি বিশেষ পাতা করেছিলাম একুশ শতকে।

সে সময় সিলিকন ভ্যালি নিয়ে অনেক পড়াশোনা করতে হয়েছে। পরে, অবশ্য সার্ভিস ডেলিভারির চাপে পড়ে উদ্যোক্তাদের ব্যাপারগুলো থেকে সরে এসেছি। গত বছর থেকে আবার উদ্যোক্তা বিষয় নিয়ে কাজ করতে শুরু করেছি। সেজন্য হোমওয়ার্ক হিসাবে বিভিন্ন বই পড়তে শুরু করেছি। চেষ্টা করছি বইগুলো সম্পর্কে আমার নেটওয়ার্কের সকলকে অবহিত করতে।

যেখানে যেটুকু শেয়ার করার জন্য পাচ্ছি। খালি মুশ্কিল হল ‌ আমার মত অলস লোক চাইলেও অনেক কিছু করতে পারে না। দেখা যাক এটা কতদূর শেয়ার করা যায়। সবার সেকেন্ড ডিফারেন্সিয়াল নেগেটিভ হোক।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।